কপি পেসট..
শাহবাগি ও তাদের দোসররা যে কিভাবে চিন্তা করে তা ভাবতেই আমার অবাক লাগে। তাদের অনেক চিন্তার সাথে আমার যুক্তি মিলে না। আমার মনে হয় বেশির ভাগ মানুষের চিন্তার সাথেই সেটা মিলার কথা নয়। তারা যে কি দৃষ্টিতে সব কিছু দেখে আমি বুঝে উঠতে পারিনা।
আমার দৃষ্টিতে তাদের অযৌক্তিক কিছু চিন্তা বা দাবী এখানে তুলে ধরছি, যেগুলি আমার মাথায় ধরেনা, কিভাবে তারা এগুলিকে যৌক্তিক মনে করে।
১। হাজার হাজার মানুষ মারা গেলেও তা তাদের চোখে পড়েনা। সেগুলি নিয়ে তারা কোন কথা বলে না। মানবতার ফেরিওয়ালা হিসাবে নিজেদেরকে পরিচয় দিলেও এখানে তারা ঠি-ক চুপচাপ। কি যুক্তি তাদের থাকতে পারে এরকম মানবতা বিরোধি কাজে চুপ থাকার মধ্যে!!
২। কিছু একটা তাদের কোন ক্ষতি হলেই তারা ততক্ষনাত জামায়াত শিবিরকে দুষে, কিন্তু পরে যখন উলটা প্রমানিত হয় তখন আর তাদের কোন কথা থাকেনা। প্রথমে তারা যুক্তি দেয় ত্বকি বা গীতিকার বুলবুলের ভাইকে বা থাবা বাবাকে জামায়াত শিবির মেরেছে। কারন কি? এরা জামায়াত শিবিরের বিরুদ্ধে। কিন্তু এটা কি কোন যুক্তি হইল! পরবর্তিতে ঠিকই থলের বিড়াল বের হয়। তখন আর খুনের বিচার চাওয়ার জোর আগের মত থাকেনা। কিন্তু কেন?
২। তাদের অনেক যুক্তি-ই আমার কাছে খুব হাস্যকর মনে হয়। যেমন তারা কিছু গন কবরের ছবি দেখিয়ে বলে এইযে গন কবর দেখালাম। সো প্রমানিত হইল যে জামায়াত এর লোকেরা এদেরকে খুন করেছিল। কি প্রমান হইলো এখান থেকে!
তারা কি জামায়াতের কোন নেতার খুন করার কোন দৃশ্য দেখাতে পারে? যদি না পারে তাইলে এসব ভিডিও দেখিয়ে “সাঈদীর বর্বরতা দেখুন” জাতিয় শিরোনাম লিখে এসব ভিডিও দেয়ার অর্থ হয়! শিরোনাম দিতে পারেন, “৭১ সালের বর্বরতার প্রমান”। কিন্তু সে ঘটনা কে ঘটিয়েছিল তা তো আর ভিডিও থেকে প্রমানিত হয় না।
৩। ট্রাইব্যুনালে যেসব জেরা হয়েছে সেগুলি দেখলে যে কেউ বুঝে যে এ সব মামলায় অভিযুক্তরা বেকসুর খালাস পাওয়ার কথা, কিন্তু রায় হয় ঠিক উলটা। ওদের ঘরানার পত্রিকা এসব জেরা পুরোপুরি ছাপেও না। সাক্ষিকে গুম করা হয়- কিন্তু এ ব্যাপারে শাহবাগিদের কোন কথা নাই। বিচার চান নাকি প্রহসন চান তারা?
৫। জাফর ইকবাল সাহেবরা যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য খুব দাবী পেশ করছে, করে চলছে। খালি মানুষের মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খেতেই কি তাদের মজা লাগে? নিজের বাবার খুনের জন্য দায়ী ব্যক্তির বিচার চলাকালীন সময়ে যখন তার সাক্ষ্যি দেয়ার পালা, তখন তাকে খুজে পাওয়া গেল না। আবার তার মা ৭২ সালে যখন স্বামীর খুনের বিচার চেয়েছিল তখন তিনি যাদের নামে কেইস করেছে তাদের মধ্যে সাঈদী সাহেবের নাম নেই। বরই তাজ্জব হই যখন আবার এই জাফর ইকবাল শাহবাগিদের সাথে এসে একাত্মতা পোষন করে। আর সেখান থেকে সামান্য কয়েক ক্রোশ দূরের ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে পারে না। কি যুক্তি এতে? কি যুক্তি তার ট্রাইব্যুনালে না হাজির হওয়ার মধ্যে!!
৪। ঘাতক দালাল-নির্মুল কমিটি (ঘাদানিক) খুব লাফায় তারা নাকি যুদ্ধাপরাধের বিচার চায়। কিন্তু নামের মধ্যে দিয়ে রাখছে- “নির্মূল”। নির্মূল শব্দটি কি বিচারের বানীর সাথে যায়! নির্মূল তো একটি সন্ত্রাসী শব্দ। এ শব্দ ধারন করে তারা কিভাবে বিচারের কথা বলবে?
৫। স্কাইপি কেলেংকারী প্রকাশ করার দায়ে মাহমুদুর রহমানকে আটক করা হয়, আর স্কাইপি কেলেংকারী ঘটিয়ে যে ব্যক্তি অপরাধ করল এবং স্বীকৃতি দিয়ে পদত্যাগ করল, তার বিচারের জন্য কোন যুক্তি ওরা খুজে পায় না। তাকে বরং পদোন্নতি দেয়া হয়।
৫। অনুমতির সময় পার হওয়ার পরেও শাপলা চত্বরে উপস্থিতি নিয়ম বহির্ভুত আখ্যা দিয়ে হেফাজতের কর্মীদের উপর নির্বিচারে গুলি করা হয়। কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশনার পরও শাহবাগিদেরকে সেখান শাহবাগ থেকে উঠাতে কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায় না। সেখানে অনিয়ম হয়না!
৬। মানবাধিকার কমিশন বা এ জাতীয় কিছু প্রতিষ্ঠান মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের সময় কোন কথা বলে না, কিন্তু শাহবাগে গিয়ে একাত্মতা পোষন করে আসে মানবতা বিরোধী বিচারের দাবীতে।
আরো কত যে অসঙ্গতি! আসলে ওরা কি সত্য সত্যই এরকম ভাবে তাদের কার্যকলাপ কে সঠিক মনে করে নাকি যুক্তির বাইরে তারা নিজেদের কথাগুলিকে বলে চলে জোড় করে?