আরাকানে রোহিংগা নিপীড়নের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মিয়ানমার সফরে রোহিংগা নিপীড়ন নিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি,এমনকি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটির সময়ে ভোটদানে বিরত থেকে পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের বিপক্ষে অবস্থান নেবার কারন এখন সামনে দেখা যাচ্ছে।
ভারতের আসাম রাজ্যের মোট জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মুসলিম।বিজেপি নেতারা দাবি করেন যে ভারতের আসাম রাজ্যে প্রায় বিশ লাখ মুসলিম রয়েছেন যাদের পূর্বপুরুষরা বাংলাদেশের। নরেন্দ্র মোদি যখন ২০১৪ সালে ভারতের ক্ষমতায় আসেন, তখন এই নির্বাচনের সময় আসাম রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা শুরু হয়েছিল। মারা গিয়েছিল ৪০ জনের বেশি। নির্বাচনী প্রচারণার সময় নরেন্দ্র মোদি হুমকি দিয়েছিলেন যে তিনি জিতলে 'অবৈধ অভিবাসীদের' ব্যাগ গোছাতে হবে, তিনি তাদের ফেরত পাঠাবেন।
কিন্তু ক্ষমতায় এসে নরেন্দ্র মোদির সরকার বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ এবং খ্রীষ্টানদের জন্য নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ করেছেন। আইনে এমন সংশোধনী আনার প্রস্তাবও করা হয়েছে যে ২০১৬ সালের আগে যে হিন্দুরা, কিংবা মুসলিম ব্যতীত অন্য সংখ্যালঘুরা ভারতে এসেছেন, তাদের অবৈধ অভিবাসী বলে গণ্য করা হবে না। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) গত বছর আসামে সরকার গঠন করে। অনুপ্রবেশকারীরা স্থানীয় হিন্দুদের কর্মসংস্থান নষ্ট করছে দাবি করে ‘অবৈধ’ মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার শপথ নেন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় একটি আদমশুমারি চালানো হয়। ১৯৫১ সালের পর এটিই আসামে পরিচালিত প্রথম আদমশুমারি। অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্ত ও বিতাড়িত করার অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে আজ রবিবার ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স' (এনআরসি) তালিকাটির খসড়া প্রকাশ করবে আসামের বিজেপি সরকার। নাগরিক নিবন্ধনের দায়িত্বে থাকা আসামের অর্থমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, আসামে বসবাসরত অবৈধদের চিহ্নিত করতেই এনআরসি করা হয়েছে। এতে যাদের নাম থাকবে না, তাদের ফেরত পাঠানো হবে। ভারতীয় নাগরিক হিসেবে প্রমাণ করার জন্য তাদের পরিবার যে ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে থেকে সেখানে বাস করছেন তার প্রমাণ দিতে হবে। এ সংক্রান্ত কাগজপত্র জমা দিতে হবে। তবে মুসলিমদের কেউ কেউ বলছেন, তাদের পূর্বসূরীরা এসব প্রমাণ বা নথি সংরক্ষণ করার কথা বুঝতে পারেননি।তাহলে কি আমরা আরেকটা রোহিংগা সংকটের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি?
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১৪