somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সার এর মুল্য হ্রাস প্রসংগেঃ

১৭ ই জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ১১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গত ১৫ তারিখ জনপ্রিয় ব্লগার ফকির ইলিয়াস সাহেব "সারের দাম কমেছে , কৃষকের হাতে পৌঁছবে তো !"- একটা পোস্ট দিয়েছিলেন। তার প্রপ্রেক্ষিতে আমার মন্তব্যের জবাবে দুজন ব্লগার (জনাব মকবুল পাটোয়ারী এবং অচেনা বাংগালী)আমাকে কটাক্ষ করে মন্তব্য করেছেন-"সার"র ডিলারশীপ যেনো বাবুয়া সাহেবকে দেয়া হয়"। ওই দুইজন ব্লগারের অবগতির জন্য জানাচ্ছি-বাবুয়া সাহেবের ডিলারশীপ প্রয়োজন নেই।

এবার সার'র দাম কমানো প্রসংগে কিছু তথ্য আপনাদের অবগতির জন্য তুলে ধরছিঃ
বাংলাদেশে সরকারি প্রতিস্টহান বিএডিসি সহ বেসরকারি আরো ৪১ টি তালিকা ভুক্ত প্রতিস্টহান বিএডিসি তথা কৃষি মন্ত্রনালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে সার ইম্পোর্ট করে থাকে। সার আমদানী বেশ একটা জটিল প্রক্রিয়া। ইচ্ছা করলেই যে কেউ, যেকোন সার যে কোন দেশ থেকে ইম্পোর্ট করতে পারেনা। গত ৩ বছর আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম অস্বভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় এবং সার আমদানীতে ভাটা পরায় গত বি এন পি সরকারের সময় সার নিয়ে ব্যাপক তুলকালাম কান্ড হয়ে যায়। সেনা সমর্থিত তত্তাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এসে তালিকাভুক্ত সার আমদানী কারকদের ভিতর থেকে তাদের পছন্দের বিশেষ ১২ টি কোম্পানীদ্বারা (যারা প্রকৃত ব্যাবসায়ী নন, কিন্তু বিশেষ প্রক্রিয়ায় সার আমদানীর জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছিলো) প্রায় ৬ লক্ষ টন সার মরোক্ক, বেলারুশ, তিউনিশিয়া থেকে আমদানী করায়। তখন আন্তর্জাতিক বাজারে সারের মুল্য ছিল প্রতি টন ৭৫০ ডলারের উর্ধে। বেশী দামে আমদানী কারকগন সেই সার দেশে আনার পর সভাবতই সারের দাম অস্বাভাবিক বেশী হয়ে যায়। বেশী দামের কারনে কৃষকেরা প্রয়োজনের তুলনায় ৬ ভাগের ১ ভাগ সার ব্যাবহার করতে বাধ্য হয়। ফলে সেই সব মৌসুমী আমদানী কারকদের সার অবিক্রিত অবস্থায় গুদামে পরে থাকে।

আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম স্বাভাবিক হয়ে আসলে রেগুলার আমদানীকারকগণ সার আমদানী প্রক্রিয়া শুরু করলেও সেই ১২ জন আমদানী কারকের প্রেসারে এবং তাদের স্বার্থে তত্ত্বাবধায়ক সরকার অন্য কাউকে সার আমদানী করতে জিও প্রদান করেনি বা করতে পারেনি। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম প্রতি টন মাত্র ২৪০-২৭০ ডলার। সরকার এখন বেসরকারি আমদানী কারকদের (সেই ১২ টি কোম্পানীকে)৫৫ শতাংশ ভর্তুকি দিয়ে শুধুমাত্র নন ইউরিয়া সারের মুল্য কমিয়েছেন। যার জন্য সরকারের ক্ষতি হবে ১ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা। এখানে উল্ল্যেখ করা যেতে পারে-বেসরকারি ব্যাবসায়ীরা লাভ এবং লোকসানের ঝুকি নিয়েই ব্যাবসা করে। সেখানে ১২ জন্য ব্যাবসায়ীর উপকারের জন্য সরকারি কোষাগার থেকে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা গচ্ছা না দিয়ে বর্তমানে আন্তরজাতিক বাজার থেকে কম দামে সার আমদানী করে সরকারি টাকা সাশ্রয় করা যেত।

সকার শুধুমাত্র নন ইউরিয়া সারের মুল্য কমিয়েছে। নন ইউরিয়া সার হলো-ট্রিপল সুপার ফসফেট(টি এস পি), মিউরেট অব পটাশ(এম ও পি) এবং ডাই এমোনিয়া ফসফেট(ডি এ পি)। কিন্তু এই মূহুর্তে কৃষকের নন ইউরিয়া সারের খুব বেশী প্রয়োজন নেই। কারন, নন ইউরিয়া সার ব্যাবরিত হয় ফসল বোনার পুর্বে। অর্থাৎত ফসল বোনার জন্য জমি প্রস্তুত করার সময়। এখোন প্রয়োজন ইউরিয়া সারের। সরকার যদি ইউরিয়া সারের ভর্তুকি বাড়িয়ে কৃষকদের সার সরবরাহ করতো তাহলে কৃষকগণ প্রকৃত পক্ষে বেশী উপকৃত হতেন। বর্তমানে সকার (বি এ ডি সি)যদি চীন, মরোক্ক, বেলারুশ, তিউনিশিয়া থেকে আমদানী সার আমদানী করলে সর্বোচ্চ ৩০ টাকায় সার বিক্রি করা সম্ভব। তবে ব্যাবসায়ীরা আমদানী করলে তাদের অন্তত ৫% লাভ সহ সামান্য বেশী দাম অর্থাত সাড়ে ৩১ টাকার বেশী হবেনা।

সব চাইতে মজার খবর হলো-সরকার যেসব কোম্পানীকে ভর্তুকি দিয়ে সার কিনছে-সেই সব কোম্পানীগুলো তাদের অবিক্রিত সার লোকসান দিয়ে প্রতি কেজি মাত্র ২৮-২৯ টাকায় বিক্রি করার জন্য গত ১৫ তারিখ বিভিন্ন খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলো! অথচ সরকার কাদের স্বার্থে ব্যাবসায়ীদের কাংখীত ২৮/২৯ টাকার সার ৩৫/৩৬ টাকায় (কে জি প্রতি অতিরিক্ত ৬/৭ টাকা বেশী লাভ দিয়ে) সেই সব কোম্পানীকে ১২৩৬ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে কৃষকদের সার দিচ্ছে-তা বিশিস্টজনেরা নাবুঝলেও সাধারন ব্যাবসায়ীরা বোঝেন। সঙ্গত কারনেই এ বিশয়ে আমার মত একজন সাধারন ব্যাবসায়ীর এর চাইতে বেশী কিছু বলা/লেখা সম্ভব হচ্ছেনা!
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ১১:২৮
৬২টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×