somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কারেন্ট

২৯ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সারাদিন সূর্যের সেই কি তেজ! শইলে আগুন ধরে ধরে অবস্থা। মাথার উপড়ে সূর্যডা চড়াইয়া কামলা খাটুনির
দিন গেসে মুকুলের। মাইজ রাইতে ঘরে ঢুইকা বসতেই শইলতে মরঘাম ছাড়ে। বরফ পানি দিয়া গোসল দিব
ভাবে। কলে এক ফোটা পানি নাই। কারেন্ট নাই। মোটর চালুর পথ নাই। মুকুলের বউ ছেছাইয়া কয়,"দূর গিয়া
বও। শইলতে চ্যাপা শুটকির বাসনা উঠতাসে''। পোড়া কপাল মুকুলের। স্বামী সোহাগী বউ কপালে জুটল না।
সারাদিন খাটনি কইরা আসে ভাবে একটু প্লাষ্টিকের হাতপাখাটা নিয়া বাতাস করব। উল্টা বউ ঝিমায়। মুকুল
নিজে নিজে বাতাস করে। বউয়ের শইলেও একটু একটু বাতাস লাগায়। এম্নে আর ভাল্লাগেনা।কারেন্ট আওনের
খবর নাই।

মুকুল গলির মোড়ে ছদরুলের চা স্টলে আইসা বসে। মুকুলের লেদাকালের দোস্তরাও এই মাইজ রাইতে
আড্ডা দিতাসে। মুকুলরে দেইখা জিগরি দোস্ত বকুল জিগাইল,'' দোস্ত, ভাবি সাব লগে শুইবার দেয় নাই বুঝি। "আরে না,
গরমের মইদ্দে ধস্তাধস্তি ভাল্লাগেনা। ভাবলাম তোমগো লগে একটু কথা কয়" মুকুল কইল। ছদরুল কাপে চামিচ
নাড়াইতে নাড়াইতে কইল, " ভাল করছ। আইজ আর দোকান লাগাইতেছিনা। এইনেই ভালআছি। আইজ দরজা লাগাইলে
সিদ্ধ হইয়া যামু। তার উপড়ে কারেন্ট ঘন ঘন নাইওর যাইতেসে"।'' দোস্তরে চা দেও'', বকুল কইল।
মুকুল: চা খামু না। এম্নেই শইলডা আইজ মাছভাজা হইছে।

বকুল: এক কাপ খাও। চা'র গরম গরম কমায়।

''আর কয়ডা দিন কষ্ট কর।হাসিনা আপায় কইসে রামপালে বড় বিদ্যুত অফিস হইতাসে'', ফখরুল কইল। বকুল কইল,'' দূর বেডা, অফিস না। বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। দুমাইয়া কারেন্ট হইব''।

মুকুল : ফেসবুকে হগলে স্ট্যাটাস মারতাসে। কেউ ভালা কয়, কেউ মন্দ। বুঝতাসি না। আমি
এহনও কিছু কয় নাই। আগে হওক। ফলাফলডা দেহি।

হারেস : হরে ভাই, দেখতে দেখতে সুন্দরবনডানি ফালাফালাহইয়া যায়।

ফখরুল: সরকার বড়ই চালাক। লোডশেডিং হইলে পাবলিক গিয়া ওইনে ভাংচুর করতে পারব না। তারউপড়ে বাঘের ডর আছে
না। খামছায়া ধরব।

বকুল: নারে ভাই, হুনতাসি বাঘেরা সুন্দরবন থাইকা সমানে রিজাইন নিতাসে।
ছদরুল : রিজাইন নিব কে?

ফখরুল : বাঘ কি কয়লা খায় থাকব নি!!

ছদরুল : বাঘগো এলাকায় এত বড় কাম। তাগো সুবিধা দিব না। বনের ভিত্রে লাইটিং করুক। রাইতেও হরিণ ফকফকা দেখা যাইব।

ফখরুল : ওইনে খালি বাঘগো দেখলে হইব। হরিণগো অধিকার নাই।

বকুল: দুইন্নাত অসহায়ের দাম নাই। আমগো অত চিন্তা কইরা লাভ নাই। আমগো খুশির খবর একটাই অতি শীঘ্র ফেসিয়াল মাস্ক আসতাসে।

মুকুল মনে মনে কয় বউ বশে আনার জিনিস আসতাসে। হারেস কইল,'' লও, সুন্দরবনডা দেইখা আয়। যে যুগ পড়ছে দেখবা আমরা
বাইছা আছি। বনডা নাই''।

মুকুলের কপালে চিন্তার ভাজের চড় উঠে। দেখতেতো মনডা চায়। বউয়ের পারমিশন পাওয়াডা বড়ই টাফ।

সকলে হ হ কয়। সুন্দরবন যাইতে হইব। ছদরুল কাপ ধুইতে ধুইতে কয়,'' দোকান ফালাইয়া কেমনে যামু? দূর, যা আছে কপালে লও।মিস করা ঠিক হইব না''।

উন্নয়নের লাগাম ধইরা রাখা যাইতেছে না। আতকা শুনা যাইব রামপালের নিকটবর্তী আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম হইতাসে। পরে বাংলাদেশ ইন্ডিয়া ম্যাচ। ফ্লাড লাইটে মাঠ জ্বলজ্বলা।ফ্লাড লাইটের হাফ আলো ইন্ডিয়াগো হাফ আমগো। হোওয়াট এ কম্বিনেশন।

একটা জোনাক পোকা ছদরুলের দোকানে উড়তাসে। ঢিম ঢিম বাতি জ্বলতাসে।
বকুল চিক্কুর দিয়া ওঠে, দেখ! দেখ! জোনাকি। কতদিন পরে দেখলাম!
মুকুল : হ। ছোডবেলা কত দেখতাম! ঝোপের মধ্যে। হাজার হাজার। জ্বলত, নিভত। ওই সময় কারেন্ট লাগত না। তারপরেও বাত্তি জ্বলত।

এনার্জি বাল্বের আলোর নিচে জোনাকিডা হারায় গেছে।
কারেন্ট আইসা পড়সে। রামপালের কারেন্ট।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:২৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নারী একা কেন হবে চরিত্রহীন।পুরুষ তুমি কেন নিবি না এই বোজার ঋন।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১২:৫৪



আমাদের সমাজে সারাজীবন ধরে মেয়েদেরকেই কেনও ভালো মেয়ে হিসাবে প্রমান করতে হবে! মেয়ে বোলে কি ? নাকি মেয়েরা এই সমাজে অন্য কোন গ্রহ থেকে ভাড়া এসেছে । সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=সকল বিষাদ পিছনে রেখে হাঁটো পথ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৮



©কাজী ফাতেমা ছবি

বিতৃষ্ণায় যদি মন ছেয়ে যায় তোমার কখনো
অথবা রোদ্দুর পুড়া সময়ের আক্রমণে তুমি নাজেহাল
বিষাদ মনে পুষো কখনো অথবা,
বাস্তবতার পেরেশানী মাথায় নিয়ে কখনো পথ চলো,
কিংবা বিরহ ব্যথায় কাতর তুমি, চুপসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×