somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জোনাথন এবং ডাইনী

১৭ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ১২:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অনেক অনেক দিন আগে জোনাথন নামে এক ছেলে ছিল। সে ছিল সুদর্শন, সাহসী ও বুদ্ধিমান। তার বাবা ছিল মুচি।
এক দিন তার বাবা তাকে বলল, “জোনাথন তুমি যথেষ্ট বড় হয়েছ। তোমার এখন স্বাবলম্বী হওয়া দরকার”।
জোনাথন চিন্তা করল যাই তাহলে রাজার কাছে গিয়ে কাজ খুঁজি।

সে বের হয়ে গেল।
যাবার সময় তার একটা খরগোশের সাথে দেখা হল। যা ছিল আসলে ছদ্মবেশী পরী। ভীত-সন্ত্রস্ত প্রাণীটির পেছনে ছিল শিকারীর দল। লাফ দিয়ে খরগোশটা তার কোলে উঠে পড়ল। শিকারীর দল যখন কাছে এল উত্তেজিত কন্ঠে সে বলতে লাগল, “ওই দিকে! ওই দিকে!”
শিকারীরা চলে যাবার পরে খরগোশটি বলল, “তুমি আমার জীবন বাঁচিয়েছো। এই জন্য আমি তোমাকে তিনটি বর দিব। কি বর চাও তুমি?”
কিন্তু জোনাথন চিন্তা করে কিছু বের করতে পারলো না। তার যখন বর দরকার হবে তখন তাকে দেয়া হবে এই শর্তে রাজী হয়ে পরী বিদায় নিল।
রাজার কাছে না পৌঁছান পর্যন্ত সে হাঁটতেই থাকল।
অবশেষে সে রাজদরবারে পৌঁছাল এবং রাজার কাছে কাজ চাইলো।
কপাল খারাপ! ওইদিন রাজার মেজাজ ছিল চরমে। রাজা রাগ তার উপর ঝাড়লো।
“হ্যাঁ তোমার করার মত একটা কাজ আছে। ওই পাহাড়ে তিনটা ডাইনি বুড়ি থাকে। তুমি যদি তাদের মারতে পারো আমি তোমাকে ৫০০০ স্বর্ণমূদ্রা দেবো। আর যদি মারতে না পারো আমি তোমার মাথা কেটে নেবো। তোমাকে ২০ দিন সময় দিলাম। যাও”।
আমি এখন কি করব সে চিন্তা করতে লাগলো।
তখন তার তিনটা বরের কথা মনে পড়ে গেলো। সে পর্বতের দিকে অগ্রসর হতে থাকল।

দুই

পর্বতে পৌঁছানোর পরে সে যেই না একটা ধারালো তলোয়ারের জন্য বর চাইতে যাবে তখনই দৈববাণী শুনতে পেল,
“প্রথম ডাইনীকে কোন কিছু দিয়ে কাটা যায় না,
দ্বিতীয় ডাইনিকে শ্বাসরোধ করা ও কাটা যায় না,
তৃতীয় ডাইনীকে শ্বাসরোধ করা ও কাটা যায় না এবং সে অদৃশ্য”।
এইকথা শোনার পর সে চারিদিকে তাকিয়ে কাউকে দেখতে পেল না। তার পরীর বরের কথা মনে পড়ে গেলো আর মনে মনে মুচকি মুচকি হাসতে লাগলো।
সে প্রথম ডাইনীর খোঁজে গেল।
অবশেষে তাকে খুঁজে পাওয়া গেল। ডাইনী পাহাড়ের পাদদেশের এক গুহায় ছিল। তার চেহারা ছিল খুবই কুৎসিত।
তার দৈববাণীর কথা মনে পরে গেল। ডাইনি বুড়ি তার কুৎসিত দৃষ্টি দেবার আগেই সে মনে মনে ভাবল- ডাইনিকে শ্বাসরোধ করা হোক। আরে! চোখের পলকে তার ইচ্ছা পূরণ হয়ে গেল।
এরপর সে দ্বিতীয় ডাইনির খোঁজে উপরে উঠতে লাগলো। কিছু উপরে দ্বিতীয় একটা গুহা ছিল। ওখানে ডাইনিটা বসে ঝিমাচ্ছিল। ভুল করে সে ডাইনীকে যেই না শ্বাসরোধ করতে যাবে তার মনে পড়ে গেল; আরে দ্বিতীয় ডাইনীকে তো শ্বাসরোধ করা যাবে না। ডাইনি বুড়ি যেই না তার দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকাল সে মনে মনে ভাবল- ডাইনিকে পিষে মেরে ফেলা হোক। আবার চোখের পলকে তার ইচ্ছা পূরণ হয়ে গেল।
বাকি রইল শুধু তৃতীয় ডাইনি। যাকে মারলেই সে ৫০০০ স্বর্ণমূদ্রা পেয়ে যাবে। কিন্তু কি করে? যেতে যেতে সে চিন্তা করতে লাগল।
হঠাৎ দারুণ এক বুদ্ধি মাথায় খেলে গেল।
সে শেষ গুহাটা দেখতে পেল। বাইরে অনেক ক্ষণ ধরে অপেক্ষা করতে লাগল। অপেক্ষার প্রহর আর শেষ হতে চায় না। অবশেষে অদৃশ্য ডাইনির পায়ের আওয়াজ শুনা গেলো। আস্তে করে সে কয়েকটা বড় বড় পাথর তুলে নিল।
সে মনে মনে ভাবল- ডাইনি বুড়িকে সাদামাটা সাধারণ এক মহিলায় পরিণত করা হোক।
ডাইনি বুড়ি ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হল। জোনাথন তাকে পাথর দিয়ে মেরে ফেলল।
জোনাথন তার প্রাপ্য পুরষ্কার গ্রহণ করল আর তার পরিবারের সাথে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে লাগল।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×