হিন্দুদের দেবতা গণেশের বিভৎস মূর্তি দেখে ছোটবেলা থেকেই অবাক হতাম।মূর্তির ধড়টা মানুষের আকৃতির আবার মুন্ডুটা হাতির আকৃতির!সবমিলিয়ে এক বীভৎস,কিম্ভুতকিমাকার চেহারা,দেখলেই ভয় করে!প্রতিবছর দূর্গা পূজার সময় দূর্গার মূর্তির পাশে দেখতাম গণেশের এই উদ্ভট মূর্তি!গণেশের এই অদ্ভূত চেহারা কেন?মনে মনে এমন প্রশ্নের উদয় হলেও কখনোই পাইনি সে প্রশ্নের সদুত্তর!
এতদিন পর কৌতুহলবশত ব্রম্মবৈবর্ত পুরাণের কাহিনী পড়তে যেয়ে সৌভাগ্যবশত পেয়ে গেলাম সেই প্রশ্নের উত্তর!পড়ে বেশ পুলকিত হলাম!তাই পাঠক বন্ধুদের সাথে শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারছিনা!আমার বিশ্বাস আমার মতো অনেকের মনেই হয়তো গণেশের ভয়ঙ্কর মূর্তি দেখে এমন প্রশ্নের উদয় হয়েছিলো এবং গণেশের এমন উদ্ভট চেহারার কারণ জানতে পেরে আমার মতো তারাও পুলকিত হবেন!
গল্পটি বলার আগে ছোট্ট করে বলে নিই,হিন্দুদের বিশ্বাস দূর্গার আরেক নাম পার্বতী এবং পার্বতীর ছেলে এই গণেশ!
***গণেশের ইতিকথা***
পর্বতরাজ হিমালয়ের কন্যা পার্বতীর সাথে মহা ধুমধামে বিয়ে হয়ে গেলো শিবের।বহু তপস্যার পর মনের মতো স্বামী পেয়ে পার্বতীও খুশি।মনের আনন্দে দুজনে ঘর বেঁধেছেন কৈলাসে।বহু বছর কেটে গেলো বিয়ের পর কিন্তুু ছেলেপুলে হলোনা।ছেলেপুলে না হলে কি সংসার মানায়?
প্রথম একটি ছেলের মুখ যাও বা দেখার আশা ছিলো পার্বতীর,দেবতাদের চক্রান্তে তাও নষ্ট হয়ে গেলো।তাই পার্বতীর মনে খুব দুঃখ!পর্বতরাজ হিমালয় আর পার্বতীর মা মেনকার মনেও দুঃখ কম নয়!
যাই হোক,কিছুতেই আর ছেলেপুলে হয়না দেখে স্বামীর পরামর্শ নিয়ে পার্বতী ঠিক করলেন,পুত্র কামনায় পুণ্যক ব্রত করবেন।
শিবের ঘরনী করবেন ব্রত,এ কি যা তা ব্যাপার?বিশ্ব ব্রম্মান্ডে যিনি যেখানে ছিলেন খবর পেয়েই নানারকম খাবার দাবার থেকে শুরু করে যাবতীয় দ্রব্যসামগ্রী আনতে শুরু করলেন।খাদ্যদ্রব্যের পাহাড় জমে গেলো কৈলাসে।স্বর্গলোকে যতো দেবতা ছিলেন এসে হাজির হলেন।বড় বড় উনানে জ্বলল আগুন।ভালো ভালো তরিতরকারি থেকে পাত,পায়েস,পিঠে তৈরী হলো স্বয়ং লক্ষীদেবীর তত্বাবধানে। শিবের নির্দেশে পার্বতী সনৎকুমারকে করলেন যজ্ঞের পুরোহিত। একদিকে চলছে শ্রীকৃষ্ণের স্তবস্তুতি,থালার পর থালা পুড়তে লাগল ঘি অপরদিকে পার্বতী শুদ্ধাচারে বসে।দিন রাত শুধু শিবের কথামত বিষ্ণুকে স্মরণ করে চলছেন কুশের আসনে বসে।এক বছর ধরে চললো এই মহাযজ্ঞ।
ব্রতের শেষ দিন।খুব নিষ্ঠার সাথে সনৎকুমার যজ্ঞ করলেন।যজ্ঞ শেষ হলে সনৎকুমার বললেন পুরোহিতের দক্ষিণা দাও পার্বতী!
....কি দক্ষিণা পেলে আপনি খুশি হবেন?জানতে চাইলেন পার্বতী।
....তোমার স্বামী শিবকে আমায় দক্ষিণা দাও,নিঃসংকোচে বললেন সনৎকুমার।শুনেই পার্বতীর চোখের সামনেটা যেন অন্ধকার হয়ে গেলো।স্বামীকে দক্ষিণা হিসেবে দেয়া কি কোনো স্ত্রীর পক্ষে সম্ভব?ব্রম্মা,বিষ্ণু,মহেশ্বর থেকে দেবগুরু বৃহস্পতি পর্যন্ত পার্বতীকে বোঝাতে চেষ্টা করলেন,ব্রতের যা নিয়ম তা তো পালন করতে হবে।ব্রাম্মণ দক্ষিণা পেয়ে যদি সন্তুষ্ট না হন তাহলে যে ব্রতের ফল পাবেন না পার্বতী।পার্বতীও সমানে করে চললেন তাদের বিরোধিতা।আগের জন্মে এই স্বামীর নিন্দা সহ্য করতে না পেরে দক্ষের ঘরে প্রাণ দিয়ে এ জন্মে অনেক তপস্যায় তাকে পেয়েছেন।না,সেই স্বামীকে ছেড়ে তিনি কোনোমতেই থাকতে পারবেন না।এদিকে পুরোহিত সনৎকুমারও নাছোড়!ঠিক সেসময় বৈকুন্ঠ থেকে চতুর্ভূজ নারায়ণ এসে হাজির হলেন সেখানে।তাঁকে দেখে তো সকলেই তটস্থ হয়ে উঠলেন।ব্রম্মা মহেশ্বর থেকে যত দেবতা উপস্থিত ছিলেন, তাঁকে রত্ন সিংহাসনে বসিয়ে তাঁর স্তবস্তুতি করলেন।একটু জিরিয়ে নিয়ে দেবগণকে বললেন নারায়ণ,ছিঃ ছিঃ পার্বতীকে নিয়ে তোমরা একি কান্ড করলে বলো তো?স্বামীকে ছাড়া কি স্ত্রী থাকতে পারে?দুজনে একসঙ্গে না থাকলে কি আমি সৃষ্টি করতে পারি?আর তোমরা তাতেই বাধা দিয়ে বসলে?আবার ব্রাম্মণ সন্তুষ্ট না হলে যজ্ঞের ফলও পাওয়া যায় না!তারপর পার্বতীকে বললেন,পার্বতী উনি যা চাইছেন দিয়ে দাও।ভয়ের কিছু নেই,বলে চলে গেলেন নারায়ণ!অগত্যা কি আর করেন পার্বতী!স্বামীকে দক্ষিণা হিসেবে তুলে দিলেন পুরোহিত সনৎকুমারের হাতে!সনৎকুমারও বগলদাবা করলেন শিবকে,দেবতারাও সন্তুষ্ট হলেন কিন্তুু পার্বতীর মনে সে কি কষ্ট!এক মনে ডাকতে লাগলেন শ্রীহরিকে।কোনো অপরাধ তো করিনি ভগবান,তবে কেন এমন হলো?কি আর করবো এ জীবন রেখে?ঠিক এমন সময় মাঘ মাসের কুয়াশা ভেদ করে আকাশ যেন দুলে উঠলো আলোর বন্যায়।সচকিত হয়ে উঠলেন দেবতারা।পার্বতী দেখলেন কিশোর শ্রীহরি এসে দাঁড়িয়েছেন তার সামনে।মুখে তাঁর সুন্দর হাসি।সঙ্গে সঙ্গে পার্বতীর মন বলে উঠলো আহা!ঠিক ঐরকম যদি একটা ছেলে হতো তাঁর।অন্তর্যামী ভগবান মিটিমিটি হেসে বললেন,তোমার ইচ্ছা অবশ্যই পূর্ণ হবে।আমারই মতো ছেলে হবে তোমার।দেবোতারাও শুনলেন সে কথা।সনৎকুমারকে ডেকে বললেন ফিরিয়ে দাও শিবকে,পার্বতীর কাছে।ভগবানের ইচ্ছা পূর্ণ করো!আবার স্বামীকে ফিরে পেয়েছেন পার্বতী,দিন কাটে তাই মহানন্দে!
ব্রতের ফলে যথাসময়ে সন্তান পেলেন পার্বতী।আনন্দ আর ধরেনা।খবর পেয়েই দেবতা,গন্ধর্ব,কিন্নর,মুনি,ঋষি যে যেখানে ছিলেন ছুটে এলেন আশীর্বাদ করতে।ব্রম্মা জানালেন আশীর্বাদ।বললেন সবার আগে তুমিই হবে পুজ্য!বিষ্ণু আশীর্বাদ জানিয়ে বললেন তুমি জ্ঞানী হও।এলেন দাদু হিমালয়।আদর করলেন,আশীর্বাদ করলেন। বাবা মহাদেব আশীর্বাদ করে বললেন আমার মতো তুমি দাতা হও।লক্ষী দেবী প্রাণ খুলে আশীর্বাদ করলেন,আমার মতোই সতী সাধ্বী বৌ হোক তোমার।
অন্দরমহলে গণেশকে কোলে নিয়ে পার্বতী।কৈলাসে শিবের প্রাসাদে দেবসভায় যখন চলছে এমন আমোদ প্রমোদ তখন এলেন সূর্য পুত্র শনি।শনিকে এত পরে আসতে দেখে মহাদেব বললেন ছিঃ ছিঃ তুমি কেমন গো শনি?আমার ছেলে হয়েছে,কতদূর থেকে সবাই ছুটে দেখতে এসেছেন কত আগে।আর তুমি এলে এখন?আমার উপর অভিমান হয়েছে বুঝি?না না তা নয়।যদি অনুমতি দেন তো ছেলের মুখ দেখে আসি।অনুমতি?যেন আকাশ থেকে পড়লেন মহাদেব!যাও যাও।
ভেতরে ঢুকলেন বটে শনি,গেলেনও কাছাকাছি।কিন্তুু গিয়েই মাথা নিচু করে থমকে দাঁড়িয়ে পড়লেন।দেখে পার্বতী তো অবাক।হঠাৎ কি হলো তোমার শনি?মুখ তুলে আমার ছেলের দিকে তাকাচ্ছো না কেন?
-----আমি দেখলে যদি আপনার ছেলের ক্ষতি হয়?
---একথা বলছো কেন?জিজ্ঞেস করে পার্বতী।
---দুর্ভাগ্য আমার।শ্রীকৃষ্ণের জপে মগ্ন ছিলুম,আমার স্ত্রী কি যেন একটা অনুরোধ করেছিলো।শুনতে পাইনি।রেগে গিয়ে তাই সে অভিশাপ দিয়েছিলো,যার দিকে তাকাবো তারই সমূহ ক্ষতি হবে!সেই থেকে ঐ অভিশাপ আমি বয়ে বেড়াচ্ছি!এখানে আসার আগে সেটা ভুলেই গিয়েছিলাম--বলে শনি বললেন আপনার ছেলের মঙ্গল হোক আমি যাই!
সব শুনেও কিন্তু বাধা দিলেন পার্বতী।
---দাঁড়াও শনি।আমি বলছি আমার ছেলের মুখের দিকে তাকাও।তাকে আশীর্বাদ করো।
এবার শনি পড়লেন মহা ফ্যাসাদে।তাকালেও সর্বনাশ,আবার না তাকিয়ে ফিরে গেলেও পার্বতী হবেন রাগ।আর সেই রাগের বশে যদি আবার কোনো অভিশাপ দিয়ে বসেন?
ভয়ে ভয়ে মুখ তুলে একটা চোখ বুজে অপর চোখ একটু খুলে যেই না শনি তাকালেন পার্বতীর কোলে গণেশের দিকে অমনি মুহুর্তে ঘটে গেলো সর্বনাশ!অমন টলটলে চাঁদের মত মুখ গণেশের কে যেন গলা থেকে কেটে উধাও করে দিলো সেখান থেকে!প্রাণ হারিয়ে ছেলে ঢলে পড়লো মায়ের কোলে।সঙ্গে সঙ্গে শনিও ভয়ে চোখ বুজে কাঁপতে লাগলেন।না জানি এবার তার কপালে কি আছে!
ছেলের অবস্থা দেখে পার্বতী তো হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলেন....একি করলে নারায়ণ!
অন্দরমহল থেকে পার্বতীর কান্না এসে পৌঁছলো দেবসভায়।রত্ন সিংহাসন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে হকচকিয়ে দেবতা থেকে মুনি ঋষিরা পর্যন্ত উঠে ছুটে আসতে লাগলেন সেখানে...কি হলো,কি হলো?
গণেশের অমন সুন্দর মুখটা কোথায় গেলো?কেউ জানতেও পারেননি যে গণেশের মুন্ডুটা ইতোমধ্যে চলে গেছে গোলোকে।আর ভগবান শ্রীহরি সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে পড়েছিলেন গোলোক ছেড়ে!
কাঁদতে কাঁদতে পাগলের মত হয়ে গেলেন পার্বতী।কটমট করে তাকালেন তিনি শনির দিকে।তুমি আমার এতবড় সর্বনাশ করলে শনি।পার্বতীর গলা যেন গর্জন করে উঠলো।আমি তোমায় অভিশাপ দিলাম।তুমি সারাজীবন খোঁড়া হয়ে থাকো।
শনির বাবা সূর্য দেবও সেখানে দাড়িয়ে!ছেলের উপর পার্বতীর অভিশাপ শুনে তিনিও গেলেন রেগে।তিনিও সঙ্গে সঙ্গে গর্জন করে উঠলেন!আমার ছেলে কি অপরাধ করেছে যে পার্বতী তুমি ওকে অভিশাপ দিলে?তুমি অনুমতি দিয়েছিলে তাই ও তোমার ছেলের মুখ দেখতে গিয়েছিলো,নচেৎ ও তো তোমার ছেলেকে দেখতে চায়নি।বিনা অপরাধে তোমার অভিশাপে আমার ছেলে খোঁড়া হলো।শোনো আমিও তোমাকে অভিশাপ দিচ্ছি তোমার ছেলে ভালো হবে বটে তবে বিকলাঙ্গ হবে।অভিশাপ দেবার পরই কিন্তু পার্বতীর রাগ পড়ে গিয়েছিলো।অনুশোচনাও হয়েছিলো।কিন্তু এখন তো আর কিছুই করার নেই,তাই সান্ত্বনা দিয়ে বললেন তোমার ছেড়ে খোঁড়া হলেও গ্রহরাজ হবে।
এদিকে কৈলাসে যখন ঘটছে এসব কান্ড তখন ভগবান নারায়ণ বিমানে হু হু করে ছুটে আসছেন কৈলাস পানে।আসছেন চারিদিকে তাকাতে তাকাতে।জ্ঞান বুদ্ধি নিরহংকার দয়া মায়া ইত্যাদি যেসব গুণ নিয়ে জন্মেছিলো গণেশ তারই উপযোগী একটা মাথা যে এখনই জুড়ে দিতে হবে গনেশের ধড়ে।এদিকে লক্ষ্যও রাখতে হবে ভগবানকে যে যেমন কাজ করেছে তাকে সেরকমই ফল দিতে হবে!সূর্যশাপে গনেশ হবে বিকলাঙ্গ তা যেমন অজানা নেই শ্রীহরির তেমনি অজানা নেই শিবের উপর মহামুণি কশ্যপের অভিশাপও!
বহুকাল আগে মালী ও সুমালী নামে দুজন শিব ভক্তের উপর সূর্যদেব হঠাৎ ক্ষেপে গিয়ে বেশ কয়েক ঘা বসিয়ে দিয়ে মেরে ফেলতে গিয়েছিলেন!শিব আর স্থির থাকতে পারলেন না!রেগে গিয়ে ছুঁড়ে মেরেছিলেন শুল সূর্যদেবকে।শুলের আঘাতে সূর্যদেবের প্রাণ যায় যায় অবস্থা।সূর্যদেবের বাবা কশ্যপ মাথা ঠিক রাখতে না পেরে শিবকে দিয়েছিলেন নিদারুন অভিশাপ.....তোমার ছেলে মুন্ডুহীন হবে!যদিও স্বয়ং নারায়ণের অংশে জন্ম হয়েছে গণেশের,তবুও পাছে ব্রম্মবাক্য মিথ্যা হয়,তাই সবই করতে দিতে হচ্ছে ভগবানকে!এবার সূর্যদেবের অভিশাপ,বিকলাঙ্গ সন্তান।যাই হোক সর্বজ্ঞ নারায়ণ গরুড়ের পিঠে চেপে হাজির হলেন পুষ্পভদ্রা নদীর তীরে।দেখলেন শুয়ে আছে গজরাজ,একমাত্র তার মাথাই হতে পারে গণেশের।উত্তর দিকে মাথা রেখে চিৎপাত হয়ে গজরাজ ঘুমাচ্ছে।গজরাজের কুতকুতে দুটো চোখ,বিরাট ধবধবে সাদা দুটো দাঁতের মাঝে বেশ মোটাসোটা বলিষ্ঠ একটা শুঁড়।দুপাশে বিরাটাকায় কুলোর মতো দুটো কান।জাতে হাতি এমনিতেই বোকা!তাই বলে, হস্তিমূর্খ!কিন্তু এই গজরাজ ছিলো একটু অন্য জাতের।সে ছিলো দেবরাজ ইন্দ্রের বাহন ঐরাবত।একদিন ইন্দ্র আসছিলেন ঐরাবতে।পথের মাঝে মহামুণি দুর্বাসা ইন্দ্রকে দিয়েছিলেন একটা পারিজাতের মালা।দিয়ে বলেছিলেন দুর্লভ এ মালা গলায় রাখলে জ্ঞানে,গুণে,ঐশ্বর্যে সে হবে সবার সেরা।সবার পুজো পাবে সে।দেবরাজ সেটি নিয়ে তাচ্ছিল্যের সাথে পরিয়ে দিয়েছিলেন নিজের বাহন ঐরাবতের গলায়। দেখে দুর্বাশা মুণি রেগে গিয়ে যেই অভিশাপ দিয়েছিলেন ইন্দ্রকে,"লক্ষীছাড়া হও " অমনি শুরু হয়ে গিয়েছিল ইন্দ্রের চরম দুর্দশা।এমনকি ঐরাবতও চলে গিয়েছিলো তাঁকে ছেড়ে।
নারায়ণ ঐরাবতকে দেখা মাত্রই ঝপ করে তার দুর্লভ মাথাটা কেটে নিয়ে সেখানে অন্য একটি মাথা বসিয়ে দিয়ে সাঁ করে চলে গেলেন কৈলাসে।সোজা অন্তঃপুরে গিয়ে মাথাটা যেই গনেশের গায়ে লাগিয়ে হাত বুলিয়ে দিলেন অমনি উঠে বসলো গনেশ।গনেশের মুখটা হাতির হয়ে গেলো দেখে পার্বতীর যে একটু দুঃখ হলোনা তা নয় কিন্তু উপায়ই বা আর কি আছে?স্বয়ং ভগবান তো এসে বাঁচিয়ে তুললেন ছেলেকে।পার্বতীর দুঃখ বুঝতে পেরে নারায়ণ বললেন এর জন্য মনে ক্ষোভ রেখোনা পার্বতী।তোমার ছেলেকে যেমন চেয়েছিলে তেমনি হবে গনেশ। তোমার ছেলে শুধু গনেশ নামেই পরিচিত হবেনা...লম্বোদর,গজানন,একদন্ত,শূর্পকর্ণ,হেরম্ব,বিঘ্নেশ,বিনায়ক ইত্যাদি নামেও সবার আগে পুজো পাবে।ভাগ্যকে মেনে নিয়ে মনের আনন্দে ছেলেকে কোলে তুলে নিলো পার্বতী।
সেই থেকে গজানন হয়েও বাবা মায়ের সাথেই রইলেন গনেশ অতি প্রিয় ছেলে হয়ে এবং পৃথিবীতে সিদ্ধিদাতা গনেশ হিসেবে পুজো পেতে শুরু করলেন।(কল্কি ও ব্রম্মবৈবর্ত পুরাণের গল্প:96-106)
এই হলো হিন্দুধর্মের বিশ্বাস!এসব কাল্পনিক রুপকথা নাকি সত্য কাহিনী তা বিবেচনা করবে পাঠক।তবে ইসলামের পরিভাষায় এগুলোই পরিস্কার শিরক!আল্লাহর একক রাজত্বে অন্য কারো কোনো কতৃত্ব বা অংশ আছে বলে বিশ্বাস করাই হলো শিরক।আর যারা শিরক করে তাদেরকেই বলা হয় মুশরিক!