somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আনহ্যাপী ভ্যালেনটাইনস্‌ ডে-০২

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ১২:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(পূর্ব প্রকাশিতের পর-আনহ্যাপী ভ্যালেনটাইনস্‌ ডে-০১ )

তুমি প্রেমের ব্যাপারে Rigid থেকেও আমার সাথে কেন রাজি হলে - তা আমার কাছে বিশাল এক প্রশ্ন ছিলো। তুমি জানিয়েছিলে-“আপনার প্রস্তাবে কিভাবে রাজী হলাম সে ব্যাপারেও সত্যি কথাটাই বলব। জানিনা আপনি কিভাবে নিবেন। আপনার দুরাবস্থার কথা শুনে; আমাকে ভাললাগে জেনে আপনার প্রতি একরকম ভিতর থেকেই আমি অনুভব করলাম - মায়া জন্মেছে। সে জন্য রাজী হয়েছি। তারপর ক্যাম্পাসে আপনাকে দেখে, আপনার দেয়া চিঠিগুলি পড়ে সেই মায়াটার সাথে বর্তমানে ভালবাসা যোগ হয়েছে।” আমি তোমার উপযু্‌ক্ত কিনা আমার এ প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছিলে - “আর উপযুক্ততার কথাতো আমার পক্ষ থেকে আসবে, আদৌ আমি আপনার উপযুক্ত কিনা? সেটা আপনার মাথায় আসল কেন? বরং আমি ভয়ে ভয়ে আছি। এতো ভালো ছেলেটি আমাকে পছন্দ করে ঠকলো কিনা?” খুব জানতে ইচ্ছে করে তোমার এ ধরনের মনোভাব এখনও বর্তমান কিনা?

বিভাগে আমার একটা সুনাম ছিল। সেই সাথে ক্যাম্পাসেও। তাই সেটি ছিল তোমার ভাষায় “ভাল ছেলে।” কেননা আমি তখন আমার ক্লাসের First Boy| স্নাতকে আমি আল্লাহর কৃপায় ও তোমার অনুপ্রেরণায় আমার ফলাফল ধরে রাখতে পেরেছিলাম। কিন্তু স্নাতকোত্তরে সেটা আর সম্ভব হয়নি। কেননা আমাকে যে সবাই পছন্দ করতো তা কিন্তু নয়। কেননা অন্যের তাবেদারি করা আমার অপছন্দনীয়। তাই আমাকেও অনেকেই অপছন্দ করতো। তাই যা হবার তা হলো- স্নাতকোত্তরে আমি স্থান হারালাম। সেই সাথে আমার কপাল পুড়ল। আমি আমার স্বপ্নের কক্ষপথ হতে বিচ্যূত হলাম। আমার পক্ষে আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া সম্ভব হলনা। তার উপর রাজনৈতিক লেজুড় বৃত্তিও পছন্দ করতাম না, তাই রাজনৈতিক সহায়তা আমার জোটেনি।

তোমাকে আমি পছন্দ করেছিলাম - তোমাকে দেখে, ক্যাম্পাসে তোমার চালচলন দেখে। কিন্তু তোমার ধারণা হয়েছিলো যে আমি হয়তো তোমার চুল দেখে পছন্দ করেছি। কিন্তু তোমার সে ধারণা ভূল ছিল। তুমি লিখেছিলে - “খোদাতালার কাছে আমি দোয়া করি আপনার ভালবাসা যেন আমি আজীবন ধরে রাখতে পারি। আর তা নিঃশেষ হওয়ার পূর্বেই যেন আমার মৃত্যূ হয়। এ শুধু লিখার সুবাদে লিখা নয়, আমার অন্তরের অর্ন্তঃস্থল থেকে বলা। আপনার ভালবাসার স্বীকৃতি যেন আল্লাহ্‌ দেন, এই দোয়া আমরা দু’জন করব। আমার শুধু একাংশের প্রতি আপনার ভালবাসা নেই জেনে নিশ্চিন্ত হলাম।” কিন্তু তোমার আজকালকার চিন্তাভাবনা, চালচলন, কথাবার্তায় পূর্বের সেই আবেগ, অনুরাগের বিন্দুমাত্র ছাপ আমি খুঁজে পাইনা। কেন তুমি এত বদলে গেলে!!

কিন্তু তুমি যখন আমার প্রস্তাবে সম্মতি জানালে তখন আমাদের ভালবাসার একটা সীমারেখা বেধে দিয়েছিলে। ক্যাম্পাসে আমরা দু’জন একসাথে দেখা করতে পারতাম না। পারতাম না একসাথে রিক্সা করে ঘুরতে। যারা আমাদের সহায়তা করেছিলো তারা ব্যতীত আর কাউকে তুমি এ বিষয়ে জানাতে নিষেধ করলে। আমি বিষয়টা আমার আর কোন সহপাঠী বা বন্ধুদের কাছে না জানালেও ধীরে ধীরে পরিবারের সদস্যদের কাছে জানাতে লাগলাম। এক্ষেত্রে তোমার আপত্তি থাকলেও পরে বাস্তবতার কারণে তোমার আপত্তি তুলে নিয়েছিলে। কেননা পরিবারের সহযোগিতা ব্যতীত তোমাকে নিজের করে পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু তুমি তোমার পরিবারের ভয়েই এবং ক্যাম্পাসে তোমার Image ক্ষুন্ন হওয়ার ভয়ে তোমার প্রেমের কথা গোপন করে গেলে। ফলে আমার জন্য তুমি রচনা করলে বিধি-নিষেধের বেড়াজাল। তোমার প্রতি আমার একনিষ্ঠ ভালবাসা এবং ভালবাসার প্রতি Commitment এর কারণে কষ্ট সহ্য করেও আমি সে বিধি-নিষেধ মেনে চলেছিলাম এবং আমাদের ভালবাসার কথা গোপন রাখতে সক্ষম হয়েছিলাম। কিন্তু নিজের বন্ধুদের কাছে আমাদের ভালবাসার কথা প্রকাশের ব্যাপারে তোমার মনোভাব এখনও অনমনীয়। যদিও আমি এই ব্যাপারে তোমার সাথে একমত নই। বিধি-নিষেধের ব্যাপারে তোমার বক্তব্য ছিল - “আমাদের দু’জনের মধ্যে থাকনা কিছু বিধি-নিষেধের বেড়াজাল, পরে একসাথে সব সুদে-আসলে মিটিয়ে দেব। আর আমার বিধি-নিষেধের বেড়াজাল অতিক্রম করার অধিকার তো শুধু আপনাকেই আমি দিয়েছি। সমর্পন করেছি নিজেকে।”

তোমার ধারণা ছিল তুমি কালো। এ ব্যাপারে তুমি লিখেছিলে - “আমার বড় দুই আপু ফর্সা। শুধু আমি কালো। তাই আমি ঠিক করেছিলাম ফর্সা কোন ছেলেকে বিয়ে করবনা। কালো ছেলে বিয়ে করলে সে-ই আমাকে আদর করবে বেশী। ধারণাটা ছিল এরকম।” আমি জানিনা তোমার এই ধরনের একটা অহেতুক ধারণা পরবর্তী সময়ে আমি ভাঙতে পেরেছিলাম কিনা?

“আমিতো জানি আমার ধৈর্য্য কম, আমি অস্থির প্রকৃতির, ভালবাসার ক্ষমতা আমার প্রচন্ড রকমের। তাই আপনার সঙ্গে এরকম কোন সম্পর্কে জড়াতে চাইনি।” সত্যি এই কিছু দিন আগ পর্যন্তও তোমার অনেক কম ধৈর্য ছিল, কিন্তু তুমি এখন এতটাই ধৈর্যশীল যে আমি নিজেই অধৈর্য হয়ে উঠছি। আর ভালবাসার ক্ষমতার কথা সম্পর্কে বলব তোমার সে প্রচন্ড রকমের ক্ষমতা এখন পরিবারের চাপে, তোমার বাস্তবতার দর্শনের কাছে ম্রিয়মাণ প্রায়।

আমাদের দু’জনের দেখা করা স্থান, সময় এবং সুযোগের ছিল যথেষ্ট অভাব। কিন্তু দাদার কল্যাণে আমরা মাঝে মধ্যে দেখা করার সুযোগ পেতাম। দাদা তার নিজের বাসায় আমাদের সে সুযোগের ব্যবস্থা করে দিতো। আমাদের দেখা করার ব্যাপারে তোমার চিন্তাধারা ছিল এমন - “বলেছিলাম না, ঈদের পরে আপনাকে একদিন সময় দেয়ার চেষ্টা করব। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে আপনার সাথে নিভৃতে কিছু সময় কাটালে তো বার, বার আমি অস্থির, অধীর হয়ে শুধু অপেক্ষায়ই থাকব আবার সে ক্ষণ কখন আসবে। তাই একটু ভয়েই আছি, সে অমৃতের স্বাদ নেব কি, নেব না - এই ভেবে।” হ্যা আমরা দু’জনই অমৃতের স্বাদ নিয়েছিলাম। পান করেছিলাম ভালবাসার সঞ্জীবনী সুধা। একবার নয়, বহুবারই; এমনকি ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে বিভিন্ন স্থানে। আর তা করতে গিয়ে আমাদের অনেকেই একসাথে দেখে ফেলেছিলো। তাই ধীরে ধীরে আমাকে-তোমাকে নিয়ে গুঞ্জন শুরু হলো তোমার বন্ধু মহলে এবং আমার বন্ধু মহলেও। কিন্তু তোমার দৃঢ়তার কারণে কেউ তোমাকে জিজ্ঞেস করতে না পারলেও আমাকে বহুবার মুখোমুখি হতে হয়েছে নানা প্রশ্নের। কিন্তু তোমার অনমনীয়তার কারণে আমি বিভিন্নভাবে এড়িয়ে যেতাম সেসব প্রশ্ন।

(চলবে.........)
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ১:০৩
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজ রমনায় ঘুড়ির 'কৃষ্ণচূড়া আড্ডা'

লিখেছেন নীলসাধু, ১৮ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬




আজ বিকাল ৪টার পর হতে আমরা ঘুড়ি রা আছি রমনায়, ঢাকা ক্লাবের পর যে রমনার গেট সেটা দিয়ে প্রবেশ করলেই আমাদের পাওয়া যাবে।
নিমন্ত্রণ রইলো সবার।
এলে দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×