somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রিযিক (গল্প)

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রমা গ্রামে বেড়াতে এসে প্রতিবারের মত এবারও বড় চাচার বাড়িতে উঠল । দাদা-দাদি গত হয়েছেন। রমা এলে বড় চাচার বাড়িতে আতিথেয়তার ধুম পড়ে যায় গরিবের সামর্থের পরিধি উপচিয়ে।

রাত হলে মেহমানদের জন্য ঘরের বাশেঁর আড়ে লম্বা শিকেয় ঝুলানো বিছানা পত্রের আলাদা যে বুচকা থাকে, জরি সেখান থেকে লেপ, কাঁথা, বালিশ বের করে চকি ঝেড়ে বিছানা করে মশারি টাঙ্গিয়ে রমাকে বলে, লেও বু এবার ছাওয়াল পাল লিয়ে আরামে ঘুমাও।
তোরা কোথায় শুবি?
ক্যা মাটিত শোব।
মাটিতে শুলে ঠাণ্ডা লাগবে যে।
ঠাণ্ডা লাগবি ক্যা? বলেই জরি বাহির বাড়ির উঠোনের খরের পালা থেকে এক পাজা খড় খসিয়ে কাঁকে করে নিয়ে আসে। মাটিতে খড় বিছিয়ে তার উপর একটা খেজুর পাতার পাটি পেরে একটা কাঁথা বিছিয়ে দিল। খড়ের ধূলা নাকে ঢুকে রমা ও তার ছেলে হাঁচি করতে লাগলো।
কিরে জরি কি শুরু করলি?
-অভ্যেস নেই তো, তাই তুমারে মা-ব্যাটার আল্লাদি নাক ইকটু আদটু আপত্তি জানাচ্ছে। এহেনে কয়ডা দিন কাটাও তার পর গাঁও গিরামের রকমফের গা সওয়া, নাক সওয়া হয়ে গিলি পরে সব ঠিক হয়ে যাবিনি।
-তোদের বালশি কই?
-বালিশ লাগবি নানে, হাত শিথেনে দিই শোবনে। আর ইকটু বেশি আরামে শুবের চালি একটা গেরাম চলতি ব্যবস্থাও আছে। মাচায় উঠে পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে ভরকেন্দ্র স্থির করে হাত বাড়িয়ে চাতাল থেকে কয়েক হাতা পাট পেড়ে বিশেষ কায়দায় ভাঁজ করে পাটির নিচে দিয়ে বলে, এই দেখো বু আমারে সোনার বালিশ। এই বিছেনে শুয়ার মজাই আলাদা । তুমরা আসপে বলে ঘর লেপিছি, সেই লেপা মাটির ঘিরাণ, নিজির ক্ষ্যাতের পাটের ও খেরের ঘিরাণ, নিজ হাতে বুনানে খাজুর পাতার পাটি তারো একক্ষিণ আলাদা ঘিরাণ, সব মিলি এই বিছেনে শুতি ক্যাম্বা যিন আপন আপন লাগে, মার আঁচল আঁচল ঠেকে।
জরি জিহবায় কামড় দিয়ে বিছানা তুলে ফেলে ফের ফের পারতে লাগলো। কিরে জরি তোর মার আঁচলে পিঁপড়া উঠলো নাকি?
না না! শিথেন-পথিন উল্টে হয়ে গেছে। পশ্চিমে আমারে কেবলা। পশ্চিম তোরে পা দিয়ে শুয়া গুনার কাম। উত্তের দক্ষিণ সবচেয়ে যুতসই সিথেন পথেন।


পিঠা তৈরীর চাল ভিজাতে দেখে রমা বলে, চাচি শুধু শুধু কষ্ট করার দরকার কি।
জরি বলে, রমা বু তুমি তো চাঁদে চাঁদে আমারে বাড়িত লায়রে আস না। তাছাড়া, শহরে তুমি পিটে-আটা বানায়ি খাতি পার না।
আমরা মাঝে মাঝে কিনে খাই।
দোকানের পিটে-আটা খায়ে তো জিব্বের লালার জোয়ার ঠেক মানে না। পিটে-আটা, চিরে-মুড়ির লেগেন জমিও আলাদা ধানও আলাদা। ইরি কোম্পানীর ধানে না আছে গন্ধ-বাসনা না আছে স্বাদ। উএত পেট ভরে, তয় আশ মেটে না।

জরি ও তার মা ভোর রাতে উঠে ঢেকিতে চাল কুটে। পলোর নিচে খুদ ছিটিয়ে খাশি করা বড় মোরগটা ধরে।
রমা আপত্তি করে বলে, চাচী আমার জন্য মোরগ জবাই করার দরকার নাই। ওটা আপনি রেখে দিন, অত বড় মোরগ ঠেকা অঠেকায় হাটে বেচলে আপনের কাজে লাগবে।
তা লাগবি, তয় আমি যদি তুমার লেগিন চিরে-মুড়ি, ফল-মূল, ইডা-সিডার ব্যবস্থা না করি, বাড়ির সেরা জিনিষটা তুমার সামনে তুলে না ধরি, ইএর মানে কি হবি জানো? ইএর মানে হবি তুমি বাপ-মা মরা মিয়ে যারে বাড়ি বেড়াবের আইছেও তারাও মরে ভুত হয়ে গেছে। লে জরি ছুরি লিয়ে বিসমিল্লা কর।

রমা গ্রামে আসলেই এরা প্রতিবারই এইভাবে ক্ষেতাল আয়জনের ঘ্রাণ ছুটিয়ে দেয়। চাচা-চাচির এই উমা উমা আন্তরিক আয়জনের টানেই রমার মনে যখনই ফাফর ছুটে যায়, তখনই দোম ফেলতে গ্রামে ছুটে আসে।

জরি বেলা উঠার আগে কোদাল ঢাকি নিয়ে তার ছেলে মেয়েকে সাথে করে পতিত জায়গায়, ঝোর-জঙ্গলে কচু তুলতে যায়। রমা বেলা করে ঘুম থেকে উঠে দেখে তিন মা-পুত-ঝি মাটি মাখা শরীরে কচু থেকে মাটি পরিষ্কার করে কচুর মোথা আর মুখি আলাদা করে রাখছে। এই কচু রোদে শুকিয়ে ঘরের মাচার নিচে বালুর মধ্যে রেখে দেবে, মাঝে মধ্যে তরকারী হিসাবে খাবে আর আকালের সময় ভাত, রুটি অসম্ভবে শুধু কচুই ঘেটে খাবে। যাতে গলা না ধরে সে জন্য কচুতে একটু চুন মেখে তেঁতুল দিয়ে রাঁন্না করবে।

জরি ফেরিওয়ালার কাছ থেকে পুরাতন বই খাতা কিনে এনে অবসর সময়ে কাগজের ঠোংগা বানায়। এস.এস.সি পরীক্ষার আগেই তার বিয়ে হয়ে গেলেও পড়ার অভ্যেস তার এখনো আছে। পড়ার উপযোগী বই পেলে হারিকেনের আলোতে রাত জেগে সে বই পড়ে শেষ করে, দুই চার দিন পরে সেটা দিয়ে ঠোংগা বানায়। ভাল বই হলে সেটা সংরক্ষণ করে।

বিকালে জরি রমার ছোট ছেলেকে ধুইয়ে মুছিয়ে তেল-জল দিয়ে, পাশ কপালে টিপ দিয়ে চোখে কাজল টেনে দিল।
রমা বলে, কি করছিস জরি ওর কপালে টিপ দিলি কেন?
বু, তুমার অত সুন্দের টুকটুকে নাদুস নুদুস ছাওয়ালডা কারো নজর লাগে অসুখ-বিসুক করবের পারে, তাই নজর টিপ দিয়ে দিলেম।
ধ্যাত পাগলী, নজর-টজর বলে কিছু নেই। আমি ওসবে বিশ্বাস করি না।
তুমি বিশ্বেস কর না তাই কী, তাই বলে তো আর কারো কুনজর বসি থাকবি নানে। কুনজর ঠিকই লাগবিনি।
রমা হাসে।
আসো বু তুমার চুল বাঁধে দি, বলে জরি রমাকে একটা টুলে বসিয়ে নিজে ঘরের পঠের ধাপে বসে।
জরি ঘরের পঠেতে বসতে নেই, সংসারের অমঙ্গল হয়।
ও! তুমি নজর মান না অমঙ্গল মান। কিছু হবি নানে, আর হলেইবা। আমারে আবার অমঙ্গল।
রমার চুল বাঁধতে বাঁধতে জিজ্ঞেস করে করে শহরের গল্প, রমার বাসার গল্প শুনতে থাকে। চুল বাঁধা শেষ হলে চুলগুলি জড়িয়ে তাতে থুথু দিয়ে বেড়ার বাতায় গুজেঁ রাখে।
কি বিশ্রি ব্যাপার, চুল বেড়ায় গুঁজলি ক্যান?
সন্ধের সুময় চুল বাইরে ফেলানে দোষ।
দোষ কিসের?
ক্যা জানো না! রাতের আঁধারে কত ভূত প্যাত ঘুরে বেড়ায়, আর ভূত প্যাতের চেয়েও ভয়ংকর জাদু টোনা তুক তাক করে যারা। মাথার চুল, পড়নের কাপরের সুতে, গার ময়লা, হাত পায়ের নখ এই সব লিয়ে মানুষ মানুষেক লষ্ট করে।

জরি অবাক হয়ে চেয়ে থাকে যখন রমার ৪ বছরের ছেলে ক্যাট মানে বিড়াল, টাইগার মানে বাঘ, অরেন্জ মানে কমলা এক দুই, ওয়ান টু, রাইম, ছড়া একের পর এক ইংরেজি বাংলা গর গর করে বলে যায়। এত টুকু ছেলের বিদ্যের বহর দেখে জরি তাজ্জব বনে যায়।

চাচার বাড়ির সবাইকে রমার খুব ভালো লাগে। বিশেষ করে তীর্যক ভাবে ভালো লাগে জরিকে। জরি দুই বাচ্চাসহ তিন বছরের আত্মসমাহিত বিধবা। সংসারের সুখ-দু:খ হাসি কান্না সব কিছুতেই সে নির্বিকার। একটা শান্তভাব সবসময় তার আচরণ পাত্রের কানায় কানায় ছুঁয়ে থাকে, কখনো ছলকে উঠে না।

রমা চাচার কাছে প্রস্তাব করে, চাচা জরির এখানে খুব কষ্ট হচ্ছে, আমি ওকে আমার কাছে নিয়ে রাখি। ও খুব ভালো মেয়ে, এই বয়সে দুই বাচ্চা নিয়ে এখানে এত কষ্ট করার কোন মানে হয় না। ওর মেয়েটা এখানে থাক, ছেলেটাকে সাথে নিয়ে যাক। মেয়ে বড় হলে বিয়ে দেবার ভার আমার; আর ছেলেটি আমার বাসায় থেকে লেখাপড়া শিখবে।
জরিক কয়ে দেখো মা, ও কি কয়।
জরি আমার সাথে গিয়ে বাসায় থাকবি?
শহরে যায়ে সারা বেলা ঘরে দুয়ের দিয়ে খিল আটে বাসার ভিতরে মুখ গুঁজি পড়ি থাকতি পারবো লায়।
জরির বাবা ঘর থেকে বের হয়ে গেলো।
মুখ গুঁজে পড়ে থাকবি মানে। আমরাতো আছি, আমরা মানুষ না।
বাসা বাড়ি আমার কাছে গরু ছাগলের খয়োর খয়োর লাগে। আমাক দিয়ি ও কাম হবি নানে। তার চে এক বেলা খাই বা না খাই, যখন ইচ্চে হলি তখন পাড়াডা একটা চক্কর মারে আসলেম, এক আধক্ষিণ পান পাতা মুখি দি পাড়া পড়শির সাথে সুখ-দুকির কতা কতি কতি বাপের ভাঙা সংসারে, জ্বলে যাওয়া এই গতরডা লি বাকি জীবনডা গুন টানেই পার করে দেবো।
জরির মা ঘরে ঢুকলে তার কাছে রমা জানতে চায়, চাচি আপনি কি বলেন?
আমি আর কি কবোরে মা, ও মিয়ি আমার বড় আল্লাদের মিয়ি। জুয়েন স্বামীডাক সাপে কাটলে। উর কারো বাড়িত থাকার নজির নেই। আমার বাড়ির বাইরে শ্বশুর বাড়ি ছাড়া ও কোনো দিনো কারো বাড়িত রাত বাসি করে নেই। যতই তুমি উএর বুন হও, তাও তুমার কাছে থাকতি উএর খস খস ঠিকই করবি।
অনেক বলে কয়ে মাসিক তিন হাজার টাকা বেতনের বিনিময়ে জরিকে রাজি করালো।

সকাল সকাল গাড়ি ধরার জন্য একটা নসিমন ভাড়া করা হলো। নসিমনের গতি বাড়ার সাথে সাথে বিদায় দিতে আসা-বাবা-মা-মেয়ের অশ্রু গড়ান চোখ মুখ ক্রমশই দিগন্ত রেখায় বিন্দু হয়ে যেতে থাকে; নতুন আশায় ঠাসা অশ্রুবাষ্পে ঝাপসা হয়ে আসা জরির চোখে। পথের বাঁক ঘুরতেই হাওয়ায় দোলা লাগা আস্তে আস্তে উর্ধমুখে উঠা নাটাই ছেঁড়া ঘুড়ির মত মন নিয়ে নছিমনের গতির সাথে পাল্লা দিয়ে বিহঙ্গ দৃষ্টিতে দেখতে থাকে দুধারের ধান ক্ষেত, ঘড়-বাড়ি, মানুষ- জন, কিন্ত; এর কোন কিছুই জরির চোখে আলাদা করে ধরা দিল না। তার কাছে সব কিছুই ফিকে ও পানসে মনে হচ্ছে।

জরি তার দু:খে ছাওয়া চেহারা পিছন থেকে টেনে সামনে ফিরায়। বহু দূরের আবছা জিনিষ খুব দ্রুত স্পষ্ট হতে হতে আবার আবছা হয়ে যায়। গতি ও দূরত্বের এই আবছা-স্পষ্টের কারসাজি দেখতে দেখতে তার মনের পর্দায় নিজের ভাগ্যের অতিত-বর্তমান-ভবিষ্যতের চলচ্ছবির ফেডইন ফেডআউট চলতে থাকে।
নছিমন আতকা এক গাদা কালো ধোঁয়া ছেড়ে গতি বাড়িয়ে দিলে রুনু কেঁদে উঠে, জরি আঁচলের নিচে রুনুকে ঢেকে দেয়, রুনু পরম তৃপ্তিতে পা নাড়ে। সে রুনুকে আরো নিবিড় করে নেয়। স্তন্য দানের শারিরিক পুলকের আমেজে জরির চোখ বুঁজে আসে।

শহরে দুদণ্ড না যেতেই জরির প্রশান্ত মুখমণ্ডলের উপর যে পোড়া কপাল সেখানে বলি রেখা গভীরতর হতে লাগলো। পলাশী উত্তর কাণ্ডে দক্ষ ও চতুর সেনাপতি মীর জাফর আলী খা লর্ড ক্লাইভের আচরণ পাল্টে যাওয়ায় যে পরিমাণ বিষ্মিত হয়েছিল; শহুরে আচরণে অনভিজ্ঞ পল্লী রমণী তার চেয়েও কয়েক রশি বেশি বিষ্মিত হলো রমা কাণ্ডের সূচনাতেই।

রমা ৫ বেড রুমের বাসার সব ঘর ঘুরায়ে জরিকে সব কাজকর্ম সংক্ষেপে বুঝিয়ে দিয়ে বিশেষ একটি কথা আরো সংক্ষেপে বুঝিয়ে বলল, ‘রুনু রাতে তোর সাথে রান্না ঘরে থাকবে, দিনে বারান্দায় খেলবে; এদিকে যেন একদম না ভেড়ে’। জরি এত বড় বাড়িতে রমার আঁকা গণ্ডির মধ্যে পড়ে সাপুড়ের ঝাপিতে পোরা জংলার তেজি সাপের মত তেজ নত হয়ে এক দিনেই ঝিম মেরে গেল।

মেঝেতে শুয়ে রুনুর কাশি ক্রণিক হবার পথে। মশার অত্যাচারে ঘুম হয় না দেখে রমার স্বামী মশারি ও তোষক কিনে আনে। রমা বলে তোমাকে কি ভীমরতি ধরেছে!
কেন?
এগুলি আনলে যে?
ওরাও তো মানুষ, তা ছাড়া তোমার আত্মীয়। ওদের কষ্ট দেখে আমারো কষ্ট হয়।
একি তোমার আত্মার কষ্ট নাকি জরির উপর নজর পড়ার কষ্ট।
তোমার মুখে কোন টোনা নাই। মুখে যা আসে তাই বল।
জরি এসবের কিছু শুনলোও না বুঝলোও না। এই সুবাদে মাশারীর হলো আলমারী চালান, আর নতুন তোষক রমার খাটের তোষকের উপর চড়ে রমার শয়ন সুখ আরো বাড়িয়ে তুললো।

রমার কলেজ পড়ুয়া মেয়ে লিজ রুনুকে কাছে ডেকে বলে, তোর মাজায় কালো সুতা আর গলায় অত তাবজি কেন?
জরি বলে মাজার কালা যে সুতে উডার নাম কার, সুতে ছাড়া গতর ল্যাংটার শামিল, জন্মের সময় সকলেই উদলে হয়েই আসে একেবারে বে আব্রু অবস্থায়। তখন মাজায় এই কার দিয়েই গ্যাদা প্যাদার পর্দার উষ্টুম(শুরু) হয়। ইডা লোকচক্ষুর পর্দা না ইডা হলি শরিলির নিজের কাছে নিজির পর্দা। তাছাড়া সাপে কাটা অন্যান্য আপদের সময় বাঁধা-ছাঁদার কাজে এই কার কামে লাগে।
তাবিজ ভরে আনে দিছিলেম উপের দিষ্টি থে বাচানের লেগেন।
উপের দৃষ্টি কি?
জীন পরীর আছর, উরা যার পর আছর করে তাক চুষে চুষে খায়ে ছোবড়া বানা ফেলে। বাচ্চারা আর বাড়ে না। দিন দিন শুকে কুঞ্চি হয়ে যায়। তাই চড়াডাংগার পীর সাবের কাছ থে তাবিজ আনে দিছি।
লিজ ব্লেড দিয়ে কেটে তাবিজ ও কার ফেলে দেয়। প্রতিবাদ করতে গিয়ে জরির কয়েদ করা মন থেমে যায়। কিন্তু রুনু গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে এই বয়সে শেখা গ্রাম্য কিছু গালি অর্থ না বুঝেই লিজের উদ্দেশ্যে ঝেড়ে প্রতিবাদ করতে থাকে। জরির অবদমিত রাগ তার শিশুর পিঠের উপরে প্রকাশ পেল।

জরির বাবা শীতের শুরুতেই মাটির হাড়িতে করে পিঠা নিয়ে জরিদের দেখতে এল। নানার গলা শুনেই রুনু দৌড়ে যাবার পথে ডাউনিং রুমে রমার সাথে দেখা হতেই তার সব সাহস ফুটো হয়ে গেল। বজ্রাহত লোকের মত রমার সামনে চলন শক্তি রহিত হয়ে দাড়িয়ে রইল। নানা ড্রয়িংরুম থেকে কইরে রুনু বলে ডাক দিতেই এক দৌড়ে নানার কোলে আশ্রয় নিয়ে নানার গলা জড়িয়ে ধরতেই তার কান্নার বাঁধ ভেঙ্গে গেল।
এ নানা আমাক বাড়ি লিয়ে যা, হেনে আমার ইকটুও ভাল্লাগে না। গরুর মত সারা দিন আমাক খালি বারান্দার ফাটকে আটকা থোয়। বাইরে যাতি পারিনি, ইকটুও খেলবের পারিনি।
হেনে থাকলি ভালো ভালো খাবের পারবু, ভালো ভালো জামা কাপড় পড়বরে পারবু, স্কুলে যায়ে লেখা-পড়া শিখে অফিসার হবু, হেনেইতো ভালোরে পাগল।
আমর কিচ্চু হওয়া লাগবি নানে, আমি হালে হব। শালারা খালি মারে, হেনে আমার ইকটুও ভাল্লাগে না, এই তোর মাথা ছুঁয়ে কচ্চি। এ নানা আমার গুল তান্না, বড়শি কাউক দিশনি তো, বাড়িত যায়ে গুলতান্না খেলবো, মাছ মারবো। তুই আমাক একখুনি বাড়িত লিয়ে চল, মাকো লিয়ে চল, মারো হেনে মন বসে না। কখন যাবো, তাড়াতাড়ি ক।
রমা ঘরে ডুকে বলে, চাচা কেমন আছেন?
ভালোরে মা। তুমি ক্যাম্বা?
ভালো। চাচী কেমন আছেন? তাকে আনলেন না।
বাড়িত তো আর লোক নেই, বাড়িতো আর শুকনি ফ্যালা আসা যায় না।
চাচা হাত মুখ ধুয়ে খেতে বসেন, আমি বাচ্চাকে স্কুলে দিয়ে আসি।
কোন কিলাশে পড় নানা ভাই?
ওকে একটা ইংলিশ স্কুলে নার্সারীতে দিয়েছি।
খুব ভালো।
রুনুর খবর কি?
ওকে সামনের বছর প্রাইমারীতে দেব।
হয় আমারে লেগেন দেশি লেহাপড়াই ভালো।

সকালে ঘুম ভেঙ্গে নানাকে দেখতে না পেয়ে রুনু কান্না জুড়ে দেয়। এ নানা আমাক লিয়ে যা, হেনে আমার দোম আটকে আসে। শালারা আবার আমাক মারবিনি। নানারে, নানা আমাক লি যা..। জরি রুনুকে বারান্দায় দিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। রুনু বারান্দায় শুয়ে শুয়ে তার বড়শি লাটাই, ঘুড়ি, গুলতান্না, খেলার সাথীদের কথা কান্না ভেজা অনুভুতি নিয়ে ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে।

লিজ কি একটা কাজের জন্য রুনুকে ডাকে। রুনু-
কি?
আবার কি বলিশ, জ্বী বল, বল জ্বী।
রুনু চুপ করে থাকে।
লিজ আবার ডাকে, রুনু
কি?
এই রুনু।
কি?
রুনুর কান ধরে বলে কি জংলারে বাবা, প্রতিদিন এত করে বলি, ডাকলে জ্বী বলবি, কি বলবি না। তাও শুধু কি কি বলে।
বল জ্বী, কানে একটা হ্যাচকা টান দিয়ে বলে, বল জ্বী।
চেঁচিয়ে বলে, কবো লা।
কবি না।
লা কবো লা।
দূর হ ঠ্যাটা কোথাকার, তোর ভাষা ঠিক করা গেল না। তুই গাইয়াই রয়ে গেলি।
জরি বলে, খালা তুমি কয়জনের বুলি ঠিক করে তুমার সুরে সুর মিলাবে। পিথিবীর এক এক গাঁয়ের মানষের এক এক বোল। জংলার গাছ য্যাম্বা আতজালা(আপনা আপনি জন্মে) হয়ে আপন আপন সুবিধা মত এক গাছ আরেক গাছেক জড়াকুড়ে বাড়ে ওটে, বাঁচে, মরে। কারুর চাপানে আইন সেখেনে নেই, ভাষাও আপন দরকার মত জম্মে, বাড়ে, বাঁচে, মরে। তুমার বুলি লিয়ে তুমি থাকো, উয়েক উর রাজ্য লিয়েই থাকপের দেও।

রমা ছেলেকে নানা রকম গল্প বলে খাওয়ানোর চেষ্টা করে, কিন্তু কছুতেই খেতে চায় না। পাগলের ভয়, ভূতের ভয় কোন মণ্ত্রেই যখন কাজ হয় না তখন জোর করে খাওয়াতে গেলে বমি করে দেয়। রুনু জানালা দিয়ে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে। রমা খেকিয়ে উঠে, এই চোখ দিবি না। ছেলেটা আমার না খেতে খেতে এমনিই শুকিয়ে যাচ্ছে, তার উপর আবার হাভাতে আবার রোজ রোজ চোখ দেয়। তালে তালে থাকিস, না খেলেই তো আমাকে দিয়ে দিবে, খেয়ে খেয়ে তো নুদি(ভুঁড়ি) বাঁধিয়ে ফেলেছিস। একদম চোখ দিবি না।

রুটিন করা কাজ শেষ করতে রাত একটু বেশি হয়ে গেল। রমার ঘরে প্রতি দিনের মত পানির জগ গ্লাশ দিতে গিয়ে জরির চোখে পড়ে যায় রমা তার স্বামীর সাথে উদোম হয়ে আছে। জরির হাত থেকে গ্লাশ পড়ে খান খান হয়ে যায়। সে দৌড়ে পালায়। রান্না ঘরের আলো নিভিয়ে সে অনেকক্ষণ নিথর হয়ে থাকে। তার পর বিছানায় শুয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করে, কিন্তু; উত্তেজনার বশে ঘুম কিছুতেই আসে না। মৃত স্বামীর স্মৃতি মনে পড়ে মনের মাঝে চিমটি কাটতে থাকে। বিশেষ উত্তেজনায় মাথার বালিশ টেনে জাপটে ধরে পাশ ফেরে, তবু নিন্তার পায় না। ক্রমেই যন্ত্রণা বাড়তে থাকে প্রহরের সাথে পাল্লা দিয়ে। মনে পড়ে, পথম ঋতুবতী হবার কয়েক দিন পর খালাতো বোনের সাথে আলোচনা প্রসঙ্গে শরীর মন জারিত হওয়ার অনুভুতির কথা বিনিময় করতে গিয়ে দুষ্টমি মাখা হাতে তাকে জাপটে ধরে বলেছিল, ‘ক্যাম্বা যে ঠ্যাকেরে বু! ক্যাম্বা যে ঠ্যাকে’! জরি এখন এই পরাণ গতর উথাল পারা একলা রাতের আওলা কথা কাকে জানিয়ে বলবে, ‘ক্যাম্বা যে ঠ্যাকেরে বু’! আর কাকেই বা জাপটে ধরবে। সামনের এই মন কেমন করা উজান ঠেলা যৌবনের দীর্ঘ মঙ্গা কেমন করে যে সে পাড়ি দেবে, মন দরিয়ায় লগি ফেলে ফেলে জরি তার তল তালাশ করে।

রুনু এক দিন কৌতুহল ধরে রাখতে না পেরে টিভি দেখতে গেলে রমা তাকে টানতে টানতে বারান্দায় এনে শাশিয়ে যায়।

রুনুর ক্যাট মানে বিড়াল, ডগ মানে কুকুর শেখা আর হলো না, শিখলো সমুচা, সিংগারা, পেটিস, বার্গার, স্যাণ্ডুইচ, হট ডগ প্রভৃতি ফাষ্টফুডের নাম । তবে কোনটির নামই আস্ত অবস্থায় শিখল না, শিখল ভাঙ্গা আধ খাওয়া ওয়ালে(এঁটো) সংস্করণে।

রমার প্রকৌশলী স্বামীকে মাঝে মাঝে কৌশলী হতে হয়। ইচ্ছে করেই সে অতিরিক্ত খাবার প্লেটে চাপিয়ে খিধে নেই বলে সরিয়ে রাখে। কারণ সে জানে জরিদের ভালো খাদ্যের রিজিক কখোনো সদর দরজা দিয়ে আসে না, আসে রিযিকের এঁটো খিরকি দিয়ে।

প্রতি শুক্রবার রমা তালিমে গিয়ে যে সমস্ত ধর্মের কথা শুনে আসে, তা কাজ করার সময় নিজস্ব কায়দায় বয়ান করে জরির কাছে। প্রায়ই একই কথার পুনরাবৃত্তি করে বলে, পর্দা করবি, দুলাভায়ের সামনে বেশি যাবি না, কোন কিছু পাবার জন্য ব্যাকুল হবি না, ধৈর্য্য ধরবি। তোর রিযিকে যা আছে তা তুই পাবিই পাবি।
জরি হাসে।
হাসলি যে।
এম্বাই।


জরি তুই বাড়ি যাব যাব করছিস, বাড়িতে গিয়ে খাবি কি ? জমি যে টুকু ছিল শুনলাম পদ্মা এবারের ভাঙ্গনে সেটুকুও ইজারা নিয়েছে। তোর বাবা নিজেই অসুস্থ, হাল বলদও নেই, তোর পাঠানো টাকাই তাদের শেষ ভরষা। তোর নিজেরও তিন পেট, শেষ ভাবনাটা ভাব। তোদের জন্য এত করি, তোকে এত ভালবাসি আর তুই অর্ধেক ভালও বাসিস না।
হুহ্,
আমার লেগেন অ্যাতই সুকী
পান্তা ভাতে কচুর মুকী।
কি বললি?
ও কিচ্চুলা, এম্বাই এক্কিন শোলোক কাটলেম।
মাথা ঠা্ণ্ডা করে একটু ভাব। থাকবি না যাবি?
আচ্ছা ইকটু ভাবে লেই।
বাড়িতে গিয়ে আমচুর হওয়ার চেয়ে এখানে থেকে তোর শরীরটা ঠিক রাখ, বাড়ির লোকদেরও শুটকি হওয়ার হাত থেকে বাঁচা

কানায় কানায় চালে ভরা ড্রাম থেকে চাল নিয়ে, চাল ধুতে ধুতে চোখে শ্লেষ মাখা হাসি ঢেলে জরি শ্লোক কাটে-

তবু মার কাছে যাবো,
আর কিছু না পালি মার গা কামড়া খাবো।


রুনু জানালার কাঁচের মধ্যে দিয়ে দেখে কাঁচের বয়েম থেকে চামচে করে নিয়ে সবাই ভাতের সাথে মেখে মেখে কি যেন খাচ্ছে। জিনিষটা কি তা ভালোভাবে বুঝার জন্য সরে গিয়ে অন্য জানালায় চোখ লাগিয়ে দেখে, কিন্তু অদ্ভুত লাগা খাদ্য বস্তুটা সে চিনতে পারে না। রুনু রাতে মার কাছে শুয়ে বলে, ই মা, মাঞ্জা দেওয়ার আটার লেইয়ের ল্যাকান(মত) কি জিনি, ভাতের সাথে মাখে মাখে উরা খায়। ওতা কি মা?
ঘি।
কি?
ঘি।
কিহ্‌?
ঘি ঘি।
ধোত্ কখুন থে খালি কি কি করতেছে। কানে শোনে না, ঠসা হলু নাকি?
কি কি করতিছিনি, কচ্ছি ঘি। উরা যেতা খায় উএর নাম ঘি।
ও-অ ঘি!
হয় হয়, ঘি ঘি।
তাই ক ! আমি মনে করিছি যে তুই আমর কতা বুচতি না পারে কি কি করতিছিস। তা ওতা খাতি ক্যাম্বা লাগে?
তুলনা করার মত কোন কিছু না পেয়ে জরি চুপ করে থাকে।
কলু না মা, ক্যাম্বা লাগে।
ভাতের ফ্যানের ল্যাকান।
ধ্যাত, ফ্যানের ল্যাকান- উরা ফ্যান খালিই তো পারে। তা’লি ওতা খায় ক্যা?
রাত কালে প্যাচাল পারিস নে লক(চুপ) কর, লক করে মুখ বুজে ঘুমা।
রুনু পাশ ফিরে শোয়। অনেকক্ষণ পরে রুনু দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, ফ্যানের ল্যাকান লা। ফ্যান তো আমাক আর তোক দিয়েই খাওয়ায়, ঐ তা তো এক দিনও দেয় না।
এ প্যাঁচাল থামা, কপালে থাকলি এক দিন ভুতে আনে দিবি। এহন ঘুমা।


এই ভাবেই অন্ধকার-লেপা মেঝেতে মায়ের পাশে শুয়ে, জানালা দিয়ে আসা পানসে আলো মাখা রান্না ঘরে ‘ঘি’র সাথে রুনুর নাম পরিচয় ঘটে। ঘির সম্ভাব্য স্বাদ আস্বাদনের নেশায় রুনুর কচি মন কল্পনায় রক্ত খাওয়া জোকের মত ফুলে উঠে। ঘির কথা চিন্তা করতে করতে রুনুর আশৈশব দারিদ্র কাতর চোখ-মুখ জুড়ে বার বার হাই উঠতে থাকে। ঘরে তখন রাত ১২টা পরের নিস্তব্ধতা।

রুনু প্রতিদিন অপেক্ষায় থাকে কবে সে ঘি খাবে। কিন্তু তার পরেই দাড়ি। অসমর্থ শিশুহাতের নাগালের বাইরে যে ঘির শিকে তা অনেক শক্ত, সহজে ছেঁড়ার না। আর শবে বরাতের রাতে যে ফেরেস্তা ভাগ্য লিখে, ধনীদের এক এক জনের মোটা মোটা ভাগ্যের খাতা লিখতে সুবহে সাদিকে এসে হঠাত যখন দেখে যে একজন অনাধ দুগ্ধপোষ্য বাদ পড়ে গেছে, সাথে তার মাও। তখন তিনি নিতান্তই অবহেলায়, ভর রাত জাগার আলিশ্যি নিয়ে যখন তাদের জন্য নির্ধারিত মাত্র এক পৃষ্ঠার ছেঁড়া মলিন খাতায় ভাগ্যের আঁচড় কাটতে যায়, তখন দেখে কালি শেষ, তবুও কালির শেষ বিন্দু দিয়ে সংক্ষেপে যা লেখে তা খুবই আবছা হয়ে যায়, এক মাত্র ঐ ফেরেস্তা দ্বারাই এর পাঠোদ্ধার সম্ভব।

রুনু প্রতি দিন জানালা দিয়ে চেয়ে থাকে কে কখন ঘি এঁটো করে। কিন্তু হায়! কেউ ভুলেও ঘি এঁটো করে না। রুনু একদিন আসল কারণ আবিষ্কার করে ফেলে; ঘি সবাই ভাত খাবার শুরুতেই খায়, তাই এঁটো হয় না। তবুও আশায় থাকে।

রমা স্বামীর পাশে বসে খাওয়াচ্ছে, ঘি দিতে গিয়ে হাতের গুতা লেগে ঘি পড়ে যায়। তার স্বামী টিসু দিয়ে মুছতে গেলে রমা উঁহু উঁহু করতে করতে রান্না ঘরের দিকে যায়। তার স্বামী ব্যাপার আঁচ করতে পেরে ওখানে আরেকটু ঘি ঢেলে দেয়। রমা বাটি এনে যত্ন করে ঘি বাটিতে তুলতে থাকে। রুনু উত্তেজনায় দুপায়ের বুড়ো আঙ্গুলের উপর দাঁড়িয়ে জানালা দিয়ে উঁকি মারতে থাকে, আগাম বুঝতে পেরে সে নি:শ্বাস নিতে ভুলে যায়। রমা জরিকে ডেকে বলে, নে এটুকু তোদের জন্য। একদম খাঁটি ঘি। খুব স্বাদ।
জরি ফ্যাকাশে হাসি হাসে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:২৪
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×