দেশজুড়ে গত বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ শুরু হয়েছে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা। দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের প্রথম দিনের পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল ১৯ হাজার ৩৫৯ পরীক্ষার্থী।
সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসিতে প্রথম দিনে বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা হয়েছে। দেশের ২ হাজার ২৬৪টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৪ লাখ ১৮ হাজার ২৯২ জন। অনুপস্থিত ছিল ৯ হাজার ৭৩১ জন।
এদিন ঢাকা বোর্ডের ২ হাজার ৩৪৫ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৮০৯, রাজশাহী বোর্ডে ১ হাজার ১৮১, বরিশাল বোর্ডে ৬৮২, সিলেট বোর্ডের ৫৬৪, দিনাজপুর বোর্ডে ১ হাজার ৪৩, কুমিল্লা বোর্ডের ১ হাজার ৩৭০, ময়মনসিংহ বোর্ডে ৬০৪ ও যশোর বোর্ডে ১ হাজার ১৩৩ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল।
পাশাপাশি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন দাখিলে কুরআন মজিদ বিষয়ের পরীক্ষা হয়। এ বোর্ডে ৭ হাজার ৬৬০ অনুপস্থিত ও নানা অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে ৭ জন বহিষ্কার হয়েছে। আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি ভোকেশনাল ও দাখিল ভোকেশনালে বাংলা ২য় পত্র পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। এ বোর্ডে ১ হাজার ৯৬৮ অনুপস্থিত ছিল, আর বহিষ্কার হয়েছেন ১১জন।
শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার প্রধান কারণগুলো হলো অভিভাবকের অসচেতনতা, দারিদ্র্য, মেয়েশিশুর প্রতি অবহেলা, বাল্যবিবাহ, শিশুশ্রম, বিদ্যালয়ের সময়সূচি, ভৌত সুবিধাদি; সর্বোপরি আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা।
প্রাথমিক-মাধ্যমিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ে শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধ করতে হলে নাগরিকের জীবনমান উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষা খাতের অব্যবস্থাপনা, অদূরদর্শিতা, দুর্নীতি এসবও দূর করতে হবে।
একটি বেসরকারি সংস্থার সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ।
সমাজের দরিদ্রতম ব্যক্তিটিও চান তার সন্তান লেখাপড়া করুক। কিন্তু লেখাপড়ার ব্যয়ভার বহন করতে না পারার কারণেও অনেকের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না। দারিদ্র্য দূর করা না গেলে শিক্ষাক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করা কঠিন হবে। শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করা ও ধরে রাখার জন্য সরকার ইতোমধ্যে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে; বিনামূল্যে বইও দেওয়া হচ্ছে। তারপরও শিশুদের ধরে রাখা যাচ্ছে না।
এ অবস্থায় বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনেও বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর অনুপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। ধরে নেওয়া যায়, তাদের অনেকে ঝরে পড়বে। মানুষের জীবনমান উন্নয়নের একটি গুরুত্বর্পূণ হাতিয়ার হলো শিক্ষা। কাজেই দেশে প্রত্যেক শিক্ষার্থী যাতে শিক্ষা সম্পন্ন করে সম্পদে পরিণত হতে পারে সেজন্য নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।
তথ্য ও ছবিঃ দৈনিক যুগান্তর, দৈনিক দেশ