somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নানা রঙের মানুষগুলো

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৩:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার একমাত্র ছেলেটার বয়স সাড়ে চার। কাজের চাপে তাকে একেবা্রেই সময় দিতে পারি না। গতকাল সন্ধ্যায় একটু সময় পেয়ে তাকে নিয়ে হাটতে বের হলাম। বাসার কাছেই সংসদ চত্ত্বর। সেখানে পৌঁছাতেই শুরু হল ছেলের আবদার এ খেলনা কিনে দাও, ওই খেলনা কিনে দাও। খেলনাওয়ালারাও বেশ চালাক। তারা আমার ছেলে কাছ থেকে সরে না। তাই ছেলেকে কোলে নিয়ে ভিড় এড়িয়ে আসাদ গেটের দিকে হাটতে শুরু করলাম।
এক জায়গায় দেখলাম একটা লাইটের নিচে ওজন মেশিন নিয়ে একজন লোক বসে আছেন। সিগারেটও বিক্রি করেন। একটু হুজুর টাইপের, বেশভূষা পরিচ্ছন্ন। এগিয়ে গিয়ে ছেলেকে দাঁড় করিয়ে দিলাম ওজন মেশিনে। ওজন দেখার পর আশে পাশে অনেক ফাঁকা জায়গা দেখে ছেলেটাকে নামিয়ে দিলাম দৌড়াদৌড়ি করার জন্য।
আমি সিগারেট বিক্রেতা কাম ওজন পরিমাপকারীর পাশে বসে তার সাথে গল্প শুরু করলাম।
আমি - ভাই কী করেন? ( প্রশ্নটা করে ভাবলাম লোকটা তো বলবে ওজন মাপি আর সিগারেট বেচি।)
লোকটি - একটা চাকুরী করি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। সন্ধ্যার পরে এখানে বসি।
আমি- চাকুরী থেকে কত পান?
লোকটি - ৫০০০ টাকা।
আমি - কত আয় হয় ওজন মেপে?
লোকটি - ৪০-৫০ টাকা থাকে।
আমি - সিগারেট বেচে?
লোকটি - এইরকমই।
আমি - তাহলে দৈনিক ১০০ টাকা থাকে?
লোকটি - কোনদিন ৮০ - কোনদিন ১০০ ঠিক নাই।
আমি - পুলিশে ঝামেলা করে না?
লোকটি - না।
আমি - পুলিশে টাকা পয়সা নেয় না?
লোকটি - না, তবে যখন উইঠা যাইতে বলে তখন সাথে সাথেই উইঠা যাইতে হয়।

এর মধ্যে এক দুজন সিগারেট নিলো, ওজন মাপালো। গ্রাম্য টাইপের দুজন লোক এসে বসলো। লোক দুটিকে দেখে আমার টাউট প্রকৃতির মনে হল। যা হোক কিছুক্ষণ পরে লোক দুটো বিদায় নেয়ার পরে আবার শুরু করলাম আলাপচারিতা।

আমি- লোকগুলো কি আপনার পরিচিত।
লোকটি - না
আমি- আমার কাছে কিন্তু দুজনকে টাউট মনে হয়েছে।
লোকটি - কত পদের মানুষ এখানে আসে। একবার একজনে একহাজার টাকার জাল নোট দিয়া গেছে।
আমি - কেমনে?
লোকটি - এক প্যাকেট বেনসন সিগারেট নিয়া এক হাজার টাকার নোট দিছে। আমার একবার সন্দেহ হইছে। পাশে আরেকটা বেডারে দেখাইলাম, সে কইলো টাকা ঠিক আছে, জাল না। আমিও চিন্তা করলাম একটু দোনোমোনো কইরা ৮৬০ টাকা ফেরত দিলাম। ১৩০ টাকা কিনা ১৪০ টাকা বেচলাম। পরের দিন ব্যাংকে নিয়া গেলাম টাকাটা ভাঙ্গাইতে। ব্যাংকের ক্যাশিয়ার টাকাটা নিয়া দেইখাই কইল জাল। ম্যানেজাররে দেখাইল। তারপর টাকাটা ছিদ্র কইরা দিল। ( আমি মানস চক্ষে লোকটার কলিজা ছিদ্র হয়ে যেতে দেখলাম)


৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামাস বিজয় উৎসব শুরু করেছে, ইসরায়েল বলছে, "না"

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:০৮



গতকাল অবধি হামাস যুদ্ধবিরতী মেনে নেয়নি; আজ সকালে রাফাতে কয়েকটা বোমা পড়েছে ও মানুষ উত্তর পশ্চিম দিকে পালাচ্ছে। আজকে , জেরুসালেম সময় সন্ধ্যা ৮:০০টার দিকে হামাস ঘোষণা করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×