somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"নারী স্বাধীনতা বনাম নারী(জরায়ু)'র পবিত্রতা " - কোনটা নারীর জন্য অধিক সম্মান ও মর্যাদার এবং মানব জাতির জন্য কল্যাণের -( মানব জীবন - ৩ )।

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"মুসলিম নারীরাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সতী ও পবিত্র নারী" - মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইয়াহুদি "গাইনি ও ভ্রুণবিদ্যা "বিজ্ঞানী রবার্ট গিলাম। রবার্ট গিলাম শুধু এ ঘোষনার মাঝেই তিনি নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি।পবিত্র কুরআনে নারীদের (জরায়ুর)পবিত্রতা,সম্মান ও মর্যাদা সম্পর্কিত আয়াতগুলোতে ভ্রুণবিদ্যার স্পষ্টতা দেখে তিনি ইসলাম ধর্ম ও গ্রহণ করেন।কিসের প্রেক্ষাপটে এবং কেন তাঁর চিন্তার রাজ্যে এ বৈপ্লবিক উপলব্ধি তা জানার আগে আসুন দেখি তথাকথিত পাশ্চাত্য নারী স্বাধীনতা এবং মুসলমান নারীদের জীবনধারনের মাঝে কি পার্থক্য যা তাদেরকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সতী ও পবিত্র নারীর মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে একজন ইয়াহুদি বিজ্ঞানীর দৃষ্টিতে ।






মুসলিম এবং পশ্চিমা পরিবারের ছবি।

বর্তমানে পৃথিবীতে যে কথাটি সবচেয়ে উচচারিত হয় তা হল নারী স্বাধীনতা। নারী স্বাধীনতা আসলে কী? এই প্রশ্নটি যদি জনসম্মুখে করা হয়, তাহলে এ বিষয়ে প্রায় সবাই মতামত প্রদান করবে । নারী অধিকার নিয়ে, নারী স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলার লোকের অভাব হয় না এখন দুনিয়াতে। তাহলে অভাবটা কিসের এবং কোথায় ? আসুন আমরা দেখি এই নারী স্বাধীনতা মানে কি ?

আধুনিক বিশ্বে এমন কোন মুসলিম দেশই হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না, যে দেশ পাশ্চাত্যের নারী স্বাধীনতাবাদীদের মারাত্মক অপ-প্রচারণার স্বীকার হয়নি এবং পর্দা প্রথাকে একটি প্রতিক্রিয়াশীল,গোড়া ধর্মীয় বিধানরুপে চিহ্নিত করেনি, কিংবা তথাকথিত নারী স্বাধীনতাকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির অপরিহার্য অংশ হিসেবে মেনে নেয়নি। নারী স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনার আগে আসুন দেখি স্বাধীনতা বলতে কি বুঝায়?

স্বাধীনতা বলতে কি বুঝায় - স্বাধীনতা বলতে বুঝি, পরিবেশ, আমরা সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে আমি যে পরিমান সুবিধা বা সুযোগ ভোগ করব অন্যকে সেই সব সুবিধা পাওয়ার সুযোগ করে দিব। স্বাধীনতা হল নিজের চিন্তা ধারাগুলো কে সুন্দর ভাবে প্রকাশ ঘটানো। জীবনে সকল বাধা বিপত্তি কাটিয়ে সফলতা পাওয়া।। যে কোনো স্থানে , যে কোনো সময়ে ভালো কাজ করতে পারা , ভালো কথা বলতে পারাই হচ্ছে স্বাধীনতা।স্বাধীনতা হলো এক সুন্দর, মনোমুগ্ধকর, সবার,অনুমোদিত, নিয়মতান্ত্রিক, এক সুন্দর সমাজের নাম। অর্থাত্‍ মানুষ তার স্রষ্টার বিধানকে মাথায় রেখে নিয়ম শৃঙ্খলার সাথে সুন্দর পরিবেশে নিজের কাজ নিজের দায়িত্বে পালন করবে। আর সেই কাজের ফল ভোগ করবে সে ,তার প্রতিবেশি, তার সমাজ।

স্বাধীনতা কি শর্তহীন - এখন দেখা যাক স্বাধীনতা কি শর্তহীন বা যার যা মন চায় তা করার নামই কি স্বাধীনতা বা নর-নারী যার যা মন যায় তাই কি সে করতে পারবে স্বাধীনতার নামে।
আমরা দেখছি যে ,রাষ্ট্রের সংবাধান নাগরিককে মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রদান করছে,তবে তা অনেকগুলো শর্তের অধীনে বাস্তবায়নযোগ্য।এ শর্ত সমূহের ব্যাখ্যা বহুবিধ হতে পারে৷ যেমন জনশৃংখলা, শালীনতা ও নৈতিকতার স্বার্থে কিংবা মানহানি বা অপরাধ-সংঘটনে প্ররোচনা সম্পর্কে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা-নিষেধ-সাপেক্ষে নাগরিককে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রদান করছে সংবিধান।এ থেকে বোঝা যায় দুনিয়ার কোন রাষ্ট্রেই স্বাধীনতা শর্তহীন নয় ।অর্থ্যাত স্বাধীনতা ভোগের জন্যও রাষ্ট্রের কিছু নিয়ম নীতি মানুষকে মেনে চলতে হয়।



নারী স্বাধীনতা তত্ত্বের উদভব ও তার বিকাশ - নারী স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম প্রবক্তা হচ্ছেন সাম্যবাদের প্রতিষ্ঠাতা মার্কস ও এঙ্গেলস। ১৮৪৮ সনে প্রকাশিত তাদের কমিউনিস্ট মেনিফেস্টো বইয়ে তারা লিখেন, "গৃহ ও পরিবার একটি অভিশাপ ছাড়া কিছুই নয়। কারণ, এটি নারীদেরকে চিরস্থায়ীভাবে দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে রাখে" ।তারা আরো বলেন, "নারীদেরকে পারিবারিক বন্ধন থেকে মুক্তকরে দিতে হবে এবং কল-কারখানায় সার্বক্ষনিক কর্মসংস্থানের মাধ্যমে তাদেরকে পুরোপুরি অর্থনৈতিক স্বয়ংম্ভরতা অর্জনের সুযোগ দিতে হবে"তাদের পরবর্তী নারীবাদী প্রবক্তারা সহশিক্ষা, ঘরের বাইরের একই কর্মস্থলে সহ কর্মাবস্থান, সামাজিক অনুষ্ঠানাদিতে নারী-পুরুষের একত্র মিলন, অর্ধনগ্ন পোশাকে বিবাহপূর্ব প্রেম-অভিসার এবং যৌথ সামাজিক অনুষ্ঠানাদিতে মদ্যপান, নেশাপান ও নৃত্যগানের মাধ্যমে নারী-পুরুষের অবাধ যৌনাচারের সুযোগদানের জন্য জিদ ধরেন। এক্ষেত্রে তারা সরকারি ব্যবস্থাপনায় জন্মনিরোধক সামগ্রী, বন্ধাকরণ ব্যবস্থা, অবাঞ্ছিত গর্ভের বিমোচন, অবৈধ সন্তানদের লালন পালনের জন্য রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত নার্সারী ও বোর্ডিং- এর ব্যবস্থা রাখার দাবী করেন। এটাই হচ্ছে আধুনিক "নারী অধিকার" তত্ত্বের মূলগত ধারণা।

আমেরিকান এক ঐতিহাসিক ও কলামিস্ট ম্যাক্সলার্নার বলেন, "আমরা একটি বেবিলিনীয় সমাজে বাস করছি। ইন্দ্রিয় সেবার প্রতি গুরোত্বারোপ ও যৌন স্বাধীনতার ফলে সমাজের সকল পুরাতন নীতি-নৈতিকতার বন্ধন ভেঙ্গে গেছে"। কিছুদিন আগেও বা মধ্যযুগে কি জনসম্মুখে প্রকাশ করা যাবে কিংবা যাবে না তা নির্ধারণ করতো চার্চ, রাষ্ট্র, পরিবার ও সম্প্রদায়। কিন্তু অধুনা এ সকল প্রতিষ্ঠানগুলো জনসাধারণের দাবির কাছে পরাজিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর এখন দায়িত্ব দাঁড়িয়েছে শুধুমাত্র শোনা ও দেখা। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্র দর্শকরা প্রতিদিন আর্ট গ্যালারী ও নাট্য গৃহসমূহে একত্রিত হচ্ছে উলঙ্গপ্রায় সুইডিশ নায়িকার "আমি এক নারী" সিরিজের পর্ণ নাচ গান দেখে যৌন উত্তেজনা প্রবল করার জন্য। ইটালীয় সিনেমা পরিচালক ম্যাকিল্যানজেলো এন্টোনিওনি তার "ভেঙ্গে দাও" ছায়াচিত্রে নগ্নতা বিরোধী সকল ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞার মাথা খেয়েছেন। ফরাসী কৌতুক প্রিয় নায়িকা জেনফন্ডা সীমাহীন প্রলোভনধর্মী ছায়াছবি "বারবারেলায়" মুক্ত প্রেমাভিসারের গুণ কীর্তন করতে করতে একটি নগ্নতার দৃশ্য থেকে পরবর্তী অধিকতর আর একটি নগ্নতার দৃশ্যে ভেসে বেড়াচ্ছেন। কমপক্ষে দু’ঘণ্টা স্থায়ী "জেসনের প্রতিকৃতি" নামক ছায়াচিত্রে একজন নিগ্রো বেশ্যা পুরুষের বিকৃত আত্মার ভ্রমণ কাহিনী এখন আমেরিকার প্রায় সকল পেক্ষাগৃহগুলোতেই খোলাখুলিভাবে দেখানো হয়ে থাকে, যা মানব জীবনের দিকগুলোকে সংকুচিত করেছে। খৃষ্টীয় ধর্মতত্ত্ববিদ ফাদার ওল্টার জে. ওং বলেন, "আমরা শীঘ্রই জানা অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে অধিক মাত্রায় স্বাধীন জীবন যাপনের সুযোগ পাচ্ছি….."। (রিডার্স ডাইজেস্টের ১৯৬৮ সালের এপ্রিল সংখ্যায় প্রকাশিত “সমাজ যেদিকে যাচ্ছে আমাদের সব কিছু সেদিকে যাচ্ছে” নামক নিবন্ধ থেকে)।



নারী স্বাধীনতা বলতে কি বুঝায় - নারী স্বাধীনতা যে কী, তা উপলব্ধি করার মানুষের বড় অভাব।বর্তমান সমাজে দুই ধরনের জনগোষ্ঠী খুব তৎপর। এক ধরনের জনগোষ্ঠী উগ্রতার দোহাই দিয়ে নারী স্বাধীনতাকে কৌশলে ধ্বংস করার চেষ্টায় মত্ত। আরেক ধরনের জনগোষ্ঠী নারী স্বাধীনতার আড়ালে উগ্রতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে ব্যস্ত। নারী স্বাধীনতা মানে উগ্রতা নয়। তাই নারী স্বাধীনতায় বিশ্বাসী হোন, উগ্রতায় নয়।
নারী স্বাধীনতা অর্থ হলো, নারীর নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং নিজের সুস্থ চিন্তার সঠিক বাস্তবায়ন করতে পারা।নারী স্বাধীনতা মানে হল নারী তার জীবনে পবিত্রতা,সম্মান ও মর্যাদা নিয়ে বাঁচবে এবং পরিবারে ও সমাজে তার যোগ্যতা-সামর্থ্য অনুযায়ী ভুমিকা রাখবে। বিষয়ের জটিলে না গিয়ে নারীবাদ নিয়ে একটা কথা না বললেই নয়। নারীবাদের সৃষ্টি নারীকে পুরুষের মর্যাদায় তুলে আনার জন্য বা নারী পুরুষের সমান অধিকারের দাবিতে এবং নারীর প্রতি শারীরিক ও মানসিক অপরাধ কমানোর লক্ষ্যে। কিন্তু নারীবাদী চেতনার মধ্যে দিনের পর দিন ধীর গতিতে স্থান করে নিয়েছে একটি শরীরকেন্দ্রিক চেতনা, যা নারীকে আবার শরীরমাত্র করে তুলছে।



নারী-স্বাধীনতা বিষয়ক সকল দাবী এবং মূল বিষয় অনুসারে নারীর নিজের অধিকার আছে তার শরীরের । একান্তই তার ইচ্ছার উপর নির্ভর করবে যে, সে তার শরীর নিয়ে কি করবে — বিয়ের আগে সেক্স করবে, নাকি বিবাহ-বহির্ভূত যৌন সম্পর্ক তৈরি করবে। “শরীর আমার, চয়েজ আমার” নামক এই ধরনের একটি অত্যন্ত নোংড়া এবং আশালীন মেসেজ ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয় তাদের বক্তব্যে ।
এই আপাত - নারী স্বাধীনতার বানীও আসলে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের হর্ত্তা কর্তা বিধাতা পুরুষের উদগ্র কামনারই প্রকাশ। কেন ? কারণ, দেখতে পাচ্ছি নারী স্বাধীনতার নামে অদ্ভুত ভাবে নারীর শরীরের দিকেই জোর দেওয়া হয়েছে। কেননা নারী স্বাধীনতার ধবজাধারীরা নারীর সত্তাকে নারী শরীরের সমতুল্য করে দেখাতেই উতসাহী। নারী মানেই যেন নারীর শরীর। তাই শরীরের স্বাধীনতাতেই নারীর স্বাধীনতা । আর একথা যুক্তি–বহির্ভূত ভাবে কেবল স্কুল কলেজের মেয়েদের আবেগে সুড়সুড়ি দেওয়ার জন্য বারবার সমস্ত চ্যানেলে বলা হচ্ছে। এখানে একটা বিষয়, নারীর স্বাধীনতার কথা কেন শরীরে এসেই থেমে যাবে? কেন এটা তাদের শিক্ষার স্বাধীনতা, কর্মের স্বাধীনতা পর্যন্ত পৌঁছাবে না ?




একটা কথা বলে রাখা ভাল যে, নারীবাদের সৃষ্টি কিন্তু নারীকে পুরুষের মর্যাদায় তুলে আনার জন্য বা নারী পুরুষের সমান অধিকারের দাবীতে এবং নারীর প্রতি শারীরিক ( বিশেষত যৌন) ও মানসিক অপরাধ কমানোর লক্ষ্যে । কিন্তু নারীবাদী চেতনার মধ্যে দিনের পর দিন ধীর গতিতে স্থান করে নিয়েছে একটি শরীর কেন্দ্রিক চেতনা, যা নারীকে আবার শরীরমাত্র করে তুলছে। কৌশলে অসম্ভব করে তুলছে নারীর সত্যিকারের স্বাধীনতার সম্ভবনাকে।

এখানে একটা কথা আমাদের মনে রাখতে হবে যে, শরীরকেন্দ্রিক চেতনা, তা সে যৌনশিক্ষাই হোক, অবাধ যৌনতা বা নারী শরীরের অকারন প্রদর্শন – কোনটাই কখনোই যৌন অপরাধকে কমাতে সক্ষম হয়নি। বরং বৈষম্য-জনিত অপরাধকে বাড়িয়ে তুলেছে অনেক। নারীকে পুরুষের সমান মর্যাদায় স্থাপন করতেও এই চেতনা সম্পুর্ন ব্যর্থ হয়েছে। পাশ্চাত্য দেশগুলি এই বিষয়ে আমাদের কাছে শিক্ষার উদাহরন হতে পারে। তাই "শরীর প্রদর্শনে আমার অধিকার আছে" বা "বিবাহ বহির্ভুত শারীরিক সম্পর্ক রাখার আমার অধিকার আছে" জাতীয় সস্তা কথাগুলি কখনোই ‘নারী স্বাধীনতার প্রকাশ’ হিসাবে মেনে নেওয়া যায় না ।



তথাকথিত নারী-স্বাধীনতাবাদীদের অর্জন -দুনিয়ার কোন রাষ্ট্রেই যেমন স্বাধীনতা শর্তহীন নয় তেমনি মানব সমাজেও নারী স্বাধীনতা শর্তহীন নয়। কিছু কিছু সমাজের নারী তথাকতিত স্বাধীনতা ভোগ করছে।এখন আমরা দেখি তারা কি শর্তের বিনিময়ে বা কিসের বিনিময়ে তাদের সেই তথাকথিত স্বাধীনতা ভোগ করছে।
পশ্চিমা দুনিয়ায় নারীরা তাদের সম্মান ,মর্যাদা ও পবিত্রতার বিনিময়ে তথাকথিত স্বাধীনতা ভোগ করছে । ইউরোপ-আমেরিকায় ব্যক্তিস্বাধীনতার নামে নারী-পুরুষ সবাই অবাধ জীবন যাপন করে।আর তাইত সেখানে পরিবারের চেহারাটাই পরিবর্তন হয়ে গেছে বা নেই। সেখানে বেশীরভাগ শিশুরই পিতৃ পরিচয়হীন তথা সিংগেল মায়ের ঘরে।অধিকাংশ শিশুরই যেমন পিতা থাকেনা তেমনি বেশীরভাগই নারীই জানেনা তার শিশুর পিতা কে।তাদের জন্মে খুশি হওয়ার কেউ নেই এবং মরনের পরেও শোক প্রকাশের জন্য কেউ থাকেনা। তাদের জন্ম আপনজনদের সাহচর্য ছাড়া, বেড়ে উঠা রাষ্ট্রিয় এতিমখানা(সমাজকল্যান কেন্দ্র)য়,১৮ বছরের পর প্রাপ্তবয়স্ক এবং তার পর নারী-পুরুষ নির্বিশেষে স্বাধীন তথা বলগাহীন জীবনযাপন। পুরো যৌবনকাল এখানে-সেখানে,জনে-জনে নানাজনে মধুকরের মত জীবনযাপন করে বার্ধক্যে একাকী,মানব সংগহীন নিঃসঙ্গ অবস্থায় মৃত্যুবরন। আর যতদিন জীবিত থাকে ততদিন যৌন সম্পর্ক ছাড়া কারোর সাথে কোন আত্মার সম্পর্ক গড়ে উঠেনা এবং তারা তাদের নিঃসঙ্গতা ও একাকী অবস্থা কাটানোর জন্য বিড়াল-কুকুরের মত প্রাণীদের উপর নির্ভরশীল হয়।তাদের কোন পারিবারিক-সামাজিক জীবন যাপন নেই।সেখানে নারীর নেই কোন সম্মান ও নেই মর্যাদা অথবা আপনজন।আর লজ্জা? লজ্জা তাদের জীবন থেকে এমনভাবে উধাও হয়েছে যে,তাদের জীবন যাপন দেখলে লজ্জাও এখন লজ্জায় পালায়।কাপড় সংক্ষিপ্ত হতে হতে বিকিনিতে ,বিকিনি থেকে টপলেস-বটমলেস এবং সবশেষে ফুললেস। অর্থ্যাত যে যত বেশী কাপড় খুলে উলংগ হতে পারবে সে ততবেশী স্বাধীন ও আধুনিক।আর যৌনতা ? সেটার জন্যও কোন আড়ালের প্রয়োজন তাদের নেই।লেনে-পার্কে-ক্লাবে-বারে-ট্রেন-বাস যেখানে তাদের ইচ্ছা হয় সেখানেই করার স্বাধীনতা তাদের ।আর তাদের এ কাজ দেখে পশুরাও হয়ত লজ্জা পাবে কিন্তু আশেপাশের বাকী মানুষদের কোন বোধোদয় হয়না কারন সেই তথাকথিত ব্যক্তি স্বাধীনতা ও নারী স্বাধীনতা ।আর তার সাথে নানা বিকৃত যৌনাচার ।সমকামীতার নোংরামী তাদের নিজেদের মাঝেই সীমাবদ্ধ না থেকে তা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পুরুষে-পুরুষে, নারীতে-নারীতে বিবাহের আইন করে মানব সমাজের চিরকালীন পরিবারের মুলে কুঠারাঘাত করে পারিবারিক সুস্থ্য-স্বাভাবিক এবং পবিত্রতার পরিবেশ ধবংস করে পরিবার-সমাজ-আপনজন বিহীন এক অস্বাভাবিক সমাজ কায়েম করেছে।



ইসলামে নারীর অধিকার - নারী অধিকার সম্পর্কে মত প্রকাশ করতে গিয়ে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, “পুরুষরা হচ্ছে নারীদের তত্বাবধায়ক। কারণ, আল্লাহ্ পুরুষদেরকে নারীদের চেয়ে বেশী যোগ্যতা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন এবং পুরুষেরা নারীদের জন্য তাদের অর্থ ব্যয় করে।”(সূরা নিসা,আয়াত- ৩৪)।

কোরআনের শিক্ষা অনুযায়ী স্বামী তার স্ত্রীর জন্য বন্ধু ও কর্তা। স্বামীর কর্তব্য হলো স্ত্রীর প্রতি ন্যায়নিষ্ঠা, ভালোবাসা ও দয়া প্রদর্শন করা এবং এর প্রতিদানে স্ত্রীর দায়িত্ব হলো স্বামীর প্রতি বাধ্য ও অনুগত থাকা এবং স্বামী যাতে চরিত্রহীন হতে না পারে সে জন্য তার প্রতি অকৃত্রিম আস্থা নিবেদন করা।

সুরা আন-নুরের ১-২৪ নং আয়াতে অবাধ ও বিবাহপূর্ব যৌন সম্পর্ক শুধু নিষিদ্ধই করা হয়নি বরং যারা বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্ক রাখে তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে কঠোর-কঠিন শাস্তি প্রদানের ভয় দেখানো হয়েছে। ইসলামে এ ব্যাপারে কোন দ্বৈত মাপকাঠির ব্যবস্থা নেই। যারা অবৈধ যৌন সম্পর্ক রাখে সে সকল নারী ও পুরুষের শাস্তির মধ্যে কোরআন ও হাদীসে কোন পার্থক্য করা হয়নি। উভয়ের জন্যই একই রূপ কঠিন শাস্তির উল্লেখ করা হয়েছে। কোরআন ও হাদিসের এই প্রমাণ ছাড়া পর্দার সপক্ষে ইসলামের অধিক আর কি প্রমাণ দরকার হতে পারে ? মুসলিম মহিলাদের চলাফেরার ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র নারীদের প্রতিরক্ষা এবং পুরুষদেরকে তাদের প্রতি অশুভ পদক্ষেপ থেকে সংযত রাখার উদ্দেশ্যেই আরোপিত হয়েছে। পৃথিবীতে ইসলামই হলো একমাত্র ধর্ম যা শুধু অনৈতিকতাকে মন্দ বলেই ক্ষান্ত হয় না বরং অনৈতিকতাকে উদ্দীপ্ত করে এমন যে কোন সামাজিক কর্ম থেকে বিশ্ববাসীদেরকে ফিরে থাকতে আদেশ দেয়।



আমাদের প্রচলিত সমাজে নারীর মর্যাদা - আমাদের সমাজে যেখানে নারীদের তথাকথিত স্বাধীনতা নেই ,সেই সমাজের মূল ভিত্তি পরিবার যা একজন নারীকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়। পরিবারে সবচেয়ে সম্মান ও মর্যাদার আসনে থাকে দাদী/নানী (একজন নারী),আর যাকে কেন্দ্র করে পুরো পরিবার চলে সে মা (একজন নারী)।পরিবারের কর্তা/বাবার রাজকন্যা-মায়ের আদর-ভাইয়ের ভালবাসার ধন সে বোন (একজন নারী) এবং পরিণত বয়সে যখন একজন পুরুষ বিবাহিত জীবনে তথা পরিবারে প্রবেশ করে,যাকে জীবন দিয়ে আগলে রাখে-ভালবাসে ,যার সব চাহিদা পূরন করতে সর্বদা হাসিমুখে সকল ত্যাগ করে থাকে সে হল স্ত্রী (একজন নারী)।পরিবারিক পরিবেশে নারী তার বিভিন্নরুপে তথা দাদী-মা-বোন-স্ত্রী রুপে শ্রদ্ধা সম্মান ও মর্যাদার আসনে তাদের জীবন অতিবাহিত করে। তাদের কোন সুখে পুরো পরিবার সুখি হয় ,দুঃখে পুরো পরিবার দুঃখী।



আর সর্বোপরী নারীদের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার জন্য পরিবারের পুরুষরা অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিতেও পিছপা হয়না।তারপরেও নারীর তথা আপনজনদের জীবনে সম্মান ও মর্যাদা তথা প্রতিষ্ঠার জন্য পরিবার থেকে সকল সমর্থন ও সহায়তা প্রদান করা হয় যাতে নারী তার জীবনে সম্মান ও মর্যাদার সাথে বেঁচে থাকতে পারে।আর যখন একজন নারী গর্ভবতী হয় তখন পুরোপরিবারে আনন্দের বন্যা বয়ে যায় এবং সবাই অধীরআগ্রহে অপেক্ষা করে নতুন অথিতিকে সাদরে বরন করার জন্য যা ইউরোপ-আমেরিকাতে অলীক কল্পনা ।



অবাধ যৌনাচার কিভাবে নারী-পুরুষ, পরিবার,শিশু তথা গোটা মানবজাতির জন্য ক্ষতিকর - অবাধ ও অবৈধ যৌনতার ক্ষতিকর দিক এইডসের মতো মারণব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার পথ খুলে দেয় এবং তা মানবতা ও মানব জীবনের বিশুদ্ধতার জন্য হুমকি। ইসলাম কোনো গর্হিত কাজই অনুমোদন দেয় না,আর বিবাহবহির্ভূত নারী-পুরুষের আসক্তি কিংবা সম্পর্ক সবচেয়ে গর্হিত নিষিদ্ধ কাজ।অবাধ ও অবৈধ যৌনতার ফলে নারী-পুরুষ সিফিলিস,গনোরিয়া ,ক্ল্যামাইডিয়া,ট্রাইকোমোনিয়াসিস,জেনিটাল হার্পিস ,জেনিটাল ওয়ার্টস,হেপাটাইটিস বি এবং সি ,এইডস (এইচ আইভির জীবাণু), যৌনাঙ্গে আঁচিল বা ওয়ার্ট, ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস ইত্যাদি নানা রকম রোগে আক্রান্ত হয়।আর এসব রোগে আক্রান্ত বাবা-মায়ের শিশুরাও এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে।

এর এ জন্যই ইসলামে বিবাহবহির্ভূত নারী-পুরুষের যৌন সম্পর্ক এবং একসাথে একাধিক জনের সাথে যৌন সম্পর্ক চরমভাবে নিষিদ্ধ।তা যে শুধু নারী-পুরুষের নিজেদের সুস্ততার জন্য তা নয় বরং সমগ্র মানব জাতির ভবিষ্যত বিশুদ্ধতা তথা নর-নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্যও তা প্রয়োজন।

কুরআনে ভ্রুণবিদ্যার স্পষ্টতা দেখে ইহুদি ভ্রুণ বিশেষজ্ঞ রবার্ট গিলাম ইসলাম গ্রহণ -

রবার্ট গিলাম প্রায় পুরো জীবনটাই গাইনি ও ভ্রুণবিদ্যা সম্পর্কিত গবেষণায় ব্যয় করেছেন। তার জীবনের বড় অংশ কেটেছে প্রজনন প্রক্রিয়া, সন্তান জন্ম ও তার পূর্ববর্তী ধাপসমূহ, জরায়ুতে ভ্রুণের বেড়ে ওঠার বিভিন্ন পর্যায় ইত্যাদি সম্পর্কিত গবেষণাতে কুরআনে ভ্রুণবিদ্যার স্পষ্টতা দেখে ইসলাম গ্রহণ ভ্রুণ বিশেষজ্ঞ রবার্ট গিলাম।

মুসলমান নারীর একাধিক পুরুষের সাথে যৌন সম্পর্ক নিষিদ্ধ ।এমন কি স্বামী মারা গেলে ৪মাস ১০ দিন ইদ্দত পালন (অপেক্ষা) করতে হবে ।
এ প্রসংগে আল কোরআনে বলা হয়েছে, "তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মারা যায় তাদের স্ত্রীদেরকে চারমাস ১০ দিন অপেক্ষা করতে হবে। ইদ্দত বা এই নির্ধারিত সময় শেষ হবার পর তারা বিধিমত নিজেদের জন্য কোন কাজ করলে (বিবাহ করলে) তাতে তোমাদের (অভিভাবকদের) কোন পাপ হবে না। তোমরা যা কর, আল্লাহ সে সম্পর্কে সবিশেষ অবহিত।" (সুরা বাকার,আয়াত - ২৩৪) ।

এবং তালাকের পর তিন মাস পর্যন্ত ‘ইদ্দত’ (অপেক্ষা) পালনের বিধান আল কোরআনে।

এ প্রসংগে আল কোরআনে বলা হয়েছে,"আর তালাকপ্রাপ্তা নারী নিজেকে অপেক্ষায় রাখবে তিন হায়েয পর্যন্ত। আর যদি সে আল্লাহর প্রতি এবং আখেরাত দিবসের উপর ঈমানদার হয়ে থাকে, তাহলে আল্লাহ যা তার জরায়ুতে সৃষ্টি করেছেন তা লুকিয়ে রাখা জায়েজ নয়। আর যদি সদ্ভাব রেখে চলতে চায়, তাহলে তাদেরকে ফিরিয়ে নেবার অধিকার তাদের স্বামীরা সংরক্ষণ করে। আর পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের উপর অধিকার রয়েছে, তেমনি ভাবে স্ত্রীদেরও অধিকার রয়েছে পুরুষদের উপর নিয়ম অনুযায়ী। আর নারীরদের ওপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। আর আল্লাহ হচ্ছে পরাক্রমশালী, বিজ্ঞ। [ সুরা বাকারা ,আ্য়াত - ২২৮ ]।

তালাকের পর বা স্বামী মারা গেলে এ‘ইদ্দত’ পালনের পালনের বিধানসংশ্লিষ্ট রহস্য ভেদ করে অপার বিস্ময়ে অভিভূত হন ভ্রুণ বিশেষজ্ঞ রবার্ট গিলাম। রবার্ট গিলাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি হেলথ ইনস্টিটিউটে গবেষণারত আছেন। সম্প্রতি তিনি ইয়াহুদী ধর্ম ত্যাগ করে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। নারীদের সম্ভ্রম প্রহরায় গোটা বিশ্বে ইসলামের অবস্থান একক ও অতুলনীয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি স্বীকার করতে বাধ্য হন, ইসলামের বিধান বাস্তব অর্থেই স্বাস্থ্যবিধি ও বিজ্ঞানসম্মত। আর কুরআনই পৃথিবীর বুকে একমাত্র গ্রন্থ যা নিজের মধ্যে এরূপ অসংখ্য গুঢ়রহস্য ধারণ করে আছে।

মিসরীয় ওয়েবসাইট ‘আল মুহিত’ এর দেয়া তথ্য মতে, মিসরের ন্যাশনাল হেল্থ সেন্টারের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবদুল বাসেত তার নিজস্ব ওয়েবসাইটে লেখা এক নিবন্ধে বলেছেন, "কুরআন অধ্যয়নই ইয়াহুদি বিজ্ঞানী রবার্ট গিলামের ইসলাম গ্রহণের পথ তৈরি করেছে। তাঁর চিন্তার রাজ্যে বিপ্লব এনেছে তালাকের পর স্ত্রীর পবিত্রতা অর্জনের জন্য তিন মাস অবধি ইদ্দত পালনের এর বিধান সম্বলিত আয়াত। বিখ্যাত এই বিজ্ঞানী আলোচ্য বিষয়ের আয়াতগুলো অধ্যয়ন করে অপার বিস্ময়ের স্রোতে ভেসেছেন। ইসলাম গ্রহণের ব্যাপারে তিনি আর কালক্ষেপণ করতে পারেননি"।
প্রতিবেদন মতে, রবার্ট যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন শহরে ইয়াহুদিদের পরিচালিত একটি গাইনোলজিক্যাল ইনস্টিটিউটে ভ্রুণ গবেষণায় রত ছিলেন। ২০১২ সালের জুলাই মাসে ইসলাম গ্রহণের প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়ে তিনি সকলকে অবাক করে দেন। তিনি শুধু ইসলাম গ্রহণ করেই থেমে যাননি, বরং সঙ্গে সঙ্গে তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করেন, "মুসলিম নারীরাই পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ পবিত্র মহিলা"। তাঁর ইসলাম গ্রহণের রহস্য কিনারা করতে অনেকেই অনুসন্ধানে নেমে পড়েছেন।

বৃদ্ধ রবার্টকে ইসলামের দুর্বল করে ফেলার মতো বিষয়টা কী ছিল? সেই কৌতুহল নিবারণে তৎপর হয়েছেন অনেকেই। সেই রহস্যের পর্দাটি উন্মোচন করেছেন মিসরীয় চিকিৎসক আবদুল বাসেত। তিনি বলেন, ইসলামে একজন নারী যদি বৈবাহিক বন্ধন ছিন্ন হবার পর আরেকজন পুরুষকে স্বামী হিসেবে গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়ার বেলায় তিন মাস অপেক্ষা করার বিধানসম্বলিত কুরআনের আয়াত ও হাদিসগুলোর অধ্যয়নই রবার্টের ইসলাম গ্রহণের কারণ। যেহেতু রবার্ট নিজস্ব গবেষণায় এ সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত পর্যায় উপনীত হয়েছিলেন যে, "তিন মাসের আগে জরায়ুতে ভ্রুণের আলামতসমূহ পরিস্কার বা নিঃশেষিত হয় না। এ সময়টি অতিবাহিত হবার পর জরায়ু সম্পূর্ণ পরিস্কার হয়ে যায় এবং নারী অপর স্বামীর বিবাহে আবদ্ধ হবার উপযুক্ত হয়ে উঠে। এ সময়টি অতিক্রান্ত হবার আগেই যদি মেয়েটি নতুন পুরুষকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করে তখন পূর্বের শুক্রাণু জরায়ুতে থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে যা মারাত্মক ক্ষতিকর বিবেচিত হয়। চিকিৎসাবিদ্যা ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণে একজন স্বামীর সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হবার পর অথবা অন্যকোনও পন্থায় শারীরিক সম্পর্ক স্থাপিত হবার পর উল্লিখিত পুরো সময়টি বিরতি না দিয়ে পরবর্তী স্বামীর সঙ্গে দাম্পত্য জীবন শুরু করে তখন তা গর্ভবতী মা এবং নবজাতক উভয়ের জন্য নানান বিপদের ঝুঁকি বহন করে। এর ফলে স্বাস্থ্যগত বিবিধ সমস্যার সংক্রমণ ঘটে এবং এক পর্যায়ে রোগগুলো বংশপরম্পরায় বয়ে বেড়াতে হয়"।

কুরআন যখন কঠোরভাবে নিষেধ করলো যে, কোনও নারী স্বামীর সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদের পর ইদ্দতের সময়টি সম্পূর্ণ শেষ হবার আগে যেন কোনোক্রমেই পরবর্তী স্বামীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ না হয় এবং হাদিসেও যখন নির্দেশনা প্রদান করা হল যে, "যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ওপর ঈমান এনেছে সে যেন অন্যের ক্ষেতে সেচ না দেয়"। অর্থাৎ ইদ্দত শেষ হবার আগে যেন তালাকপ্রাপ্তা নারীর সঙ্গে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ না হয়।



ডা. রবার্ট আমেরিকায় এশীয় ও আফ্রিকান অভিবাসী মুসলিম নারীদের ওপর ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়ে সেইসব বিবাহিত মহিলাদের জরায়ুতে কেবলই একজন পুরুষের (স্বামী) শুক্রাণুর অস্তিত্ব মিলেছে। অথচ মার্কিন সমাজে বেড়ে উঠা হাজার হাজার উন্মুক্ত জীবনযাপনে অভ্যস্ত অমুসলিম নারীর জরায়ুর অবস্থা তার সম্পূর্ণ বিপরীত। এতে তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন, আমেরিকান ও ইউরোপীয় নারীদের সঙ্গে একাধিক পুরুষের যৌনসম্পর্কের রেওয়াজ চালু আছে। অন্যদিকে ইসলামি অনুশাসন মেনে চলেন এমন মুসলিম নারীরা তো প্রথমত, বিয়ে বহির্ভূত যৌনসম্পর্ক বৈধই মনে করে না। দ্বিতীয়ত, একজন স্বামীর সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেলেও তিন মাস অপেক্ষা না করে নতুন পুরুষকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করে না।

প্রতিবেদনের বরাতে জানা গেছে, বিষয়টিতে নিকটজনদের অবস্থা যাচাই করতে গিয়ে উঠে আসা হতাশাব্যঞ্জক রিপোর্টে।পশ্চিমা সমাজের অন্তর্নিহিত চেহারা তাঁর মনকে আরও বিষিয়ে তোলে। খোদ নিজের তিন পুত্র সন্তানের মধ্যে কেবল একজনই তাঁর ঔরসজাত - এই রিপোর্ট ছিল তার জন্যে বজ্রঘাততূল্য।

পরিশেষে তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছুলেন-"মুসলিম নারীরাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সতী ও পবিত্র নারী"। তিনি যেই হারানো সম্পদের খোঁজে জ্ঞান-বিজ্ঞানের অলিগলি তন্ন তন্ন করেছেন তা কতো সরল ও ঋজু ভাষায় কুরআনের আয়াতে বিবৃত হয়েছে, হাদিসের প্রাঞ্জল ভাষায় বর্ণিত হয়েছে, এ বিস্ময়ের ধাক্কা তাঁকে পৌঁছেদেয় বিশ্বাসের ভূবনে। সেখানে তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিল আলোকিত জীবনের সুবহে সাদিক।



একথা কোন সন্দেহ ছাড়াই বা নিঃসন্দেহে বলা যায় ,নারীর জন্য তথাকথিত স্বাধীনতা অসম্মান ও অমর্যাদার।নারীদের ইসলামই দিয়েছে সবার চেয়ে সবচেয়ে বেশী সম্মান ও মর্যাদা। আর তা সবচেয়ে বেশী রক্ষিত হয় পারিবারিক পরিবেশে তথা ইসলাম ধর্মে । আর তাই বলা যায় যে, নারীর জন্য তথাকথিত স্বাধীনতা নয় বরং নারীর পবিত্রতাই নারীর জন্য সম্মান,কল্যান ও মর্যাদার এবং মানব জাতির বিশুদ্ধতার জন্য তাই সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন যুগ থেকে যুগান্তরে ।


চলবে -
============================================================

পূর্ববর্তী পোস্ট -

মানব জীবন - ২ " মাতৃগর্ভ (জরায়ু)" - Click This Link
মানব জীবন - ১ "মানুষের জন্ম প্রক্রিয়ার ইতিকথা"- Click This Link


তথ্যসূত্র - আল কোরআন,বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল এবং ছবি - গুগল।


উৎসর্গ : এই পর্বটি উৎসর্গিত সেই সব নারীদের জন্য ,যারা শত প্রলোভনের মাঝেও নিজেদের সম্মান,মর্যাদা ও পবিত্রতা রক্ষার জন্য যুগ যুগ ধরে তথাকথিত নারী স্বাধীনতাকে পায়ে দলে আপন মহিমায় এগিয়ে যাচছেন
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:১১
৪০টি মন্তব্য ৪১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×