ব্লগিং ও ব্লগ কি?
নিজের প্রাত্যহিক জীবনের কিছু ঘটনা অথবা কোন একটি নির্দিষ্ট ঘটনা নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে লিখা বা কোন একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর ধারাবাহিক ভাবে লিখার মাধ্যমে ইন্টারনেটে সবার সাথে শেয়ার করা কে বলা হয় ব্লগিং। যেসব ওয়েবসাইটে এই লিখা গুলো প্রকাশ করা হয় তাকে বলে ব্লগ। সাধারণ ভাবে যারা ব্লগ ও ওয়েব সাইট সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা রাখেন না তাদের কাছে ব্লগ ও ওযেব সাইট এর কোন পার্থক্য নেই বা তারা এদের মধ্যে কোন পার্থক্য খুজে পান না। তাদের জ্ঞাতার্থে বলি যে, ব্লগ হল এমন একটি ওয়েবসাইট যেখানে কো্ন ইউজার রেজিস্ট্রেশন করে কোন কিছু লিখতে পারে এবং অন্য কেউ সেই লেখা পড়তে পারে এবং সেই লেখাতে মন্তব্য করতে পারে। এটা হল সাধারণ বিষয় এছাড়া আরো অনেক বিষয় আছে যেগুলোর কারণে ওয়েব সাইট হতে ব্লগ কে সহজে পৃথক করে দেখা হয়।
ব্লগিং জগতে আপনি হয়তো নতুন। তাই মনে প্রশ্ন আসাই স্বাভাবিক। কি? কেন? কিভাবে? লিখবেন।
১. কি লিখবেনঃ কি নিয়া লিখবেন না এইটা বলেন! দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সাহিত্য, রম্যরচনা সব লিখতে পারেন আপনি এখানে। তাছাড়া আপনার একান্ত অনুভূতিগুলোও ছড়িয়ে দিতে পারেন এই ব্লগে।
২. কেন লিখবেনঃ মানুষ যেকোন কাজ করে ২টি কারণে। ১. লাভের জন্য, ২. আনন্দের জন্য। আমি আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে এই ব্লগে লেখালেখি করলে দুই উদ্দেশ্যই সফল হবে। এই ব্লগে লেখালেখি করে আপনি হয়ে যেতে পারেন বিখ্যাত ব্লগার। তাছাড়া লেখক হিসেবে আপনার ক্যাম্পাসে পরিচিতি লাভ করতে পারেন। আর সৃষ্টির আনন্দের কথা কি বলবো, আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন যখন ব্লগে আপনার লেখা ছাপা হবে।
৩. কখন লিখবেনঃ এইসবও কি বলে দিতে হবে! কিছু উত্তর নিজে বের করেন বেরেদার।
উত্তরগুলো তো পেলেন। তবে আর দেরি কেন? প্রবেশ করুন অন্তর্জালের ব্লগিং জগতে।
কি ভাবে নিজস্ব স্টাইলে ব্লগ পোষ্ট লিখবেন?
কৃতিত্ব রয়েছে। ব্লগ পোষ্ট যথা সম্ভব কৃত্তিমতা বর্জিত রাখা ভাল। সৃজনশীল ব্লগ পোষ্ট ভিজিটরদের মনে আকর্ষন সৃষ্টি করে। ফ্রিল্যান্সারদের দৃষ্টিকোণ থেকে, তাদের একটি বড় অংশ কাজ করেন কপিরাইটার বা গেষ্ট রাইটার হিসেবে। তারা বিভিন্ন ব্লগের জন্য আর্টিকেল, রিভিউ ইত্যাদি লেখেন। এ কাজে নিজের নাম ছড়িয়ে দেয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন হচ্ছে নিজের লেখার ষ্টাইল তৈরী করা।যদি আপনি বিখ্যাত লেখক ও শিল্পিদের বিবেচনায় নিয়ে আসেন তাহলে দেখতে পাবেন রবীন্দ্রনাথের লেখার ধরন ও কাজী নজরুল ইসলামের লেখার ধরণ এক নয়।
যে সব বৈশিষ্ট্য আপনার লেখার স্টাইল কে বিশেষ ধরণ এনে দিতে পারে তা নিম্নে আলোচনা করা হল :
১) আপনার নিজের বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করুনঃ আমরা অনেকেই নিজের ত্রুটি নিজে দেখি না। অন্যরা আপনাকে কোন দৃষ্টিতে দেখেন সেটা নিজে যাচাই করা খুব কঠিন কাজ। এক্ষেত্রে আপনার কোন ঘনিষ্ট বন্ধু থাকলে তার সাথে শেয়ার করুন।তাকে বলেন আপনার ভুল গুলো ধরিয়ে দিতে এবং তারসাথে আলাপ করুন, আপনার ভাল-মন্দ নিয়ে| আপনার কোন বিষয়গুলি ভাল, কোনগুলি মন্দ সেগুলি লিখে নিন। তার কথা বলার স্টাইল দেখুন, নিজেকে তার সাথে তুলনা করুন|
২) নিজের সাথে নিজেই কথা বলুনঃ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আপনি কি করতে চান কিভাবে করতে চান সে কথা বলুন। অথবা কাগজে লিখুন। নিজের লক্ষ ঠিক করার জন্য এটা অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন পদ্ধতি। একবার নিজের লক্ষ ঠিক করলে যখন লিখতে বসবেন তখন দেখবেন আপনার লেখা অনেক সহজ এবং নির্দিষ্ট হবে।
৩) নিজেকে হিরো হিসেবে ব্যাবহার করুনঃ আমরা অনেক সময় বিভিন্ন মুভি দেখি। এই মুভির হিরোকে নিজের সাথে মিলান। ওর ভাল দিক গুলো আপনার মাধ্যমে পুটিয়ে তুলুন।
৪) গল্পের মত আকর্ষনীয় করে লিখুন: আপনি হয়তো টেকনিক্যাল বিষয় নিয়ে লিখছেন। গল্পের মত আকর্ষনীয় করে লিখে আপনি অনায়াসে তাকে অন্যদের থেকে পৃথক করতে পারেন। মানুষ গল্প পছন্দ করে, সেটা বই হতে পারে, মুভি হতে পারে, অথবা গান হতে পারে যাই হোক না কেন এদের বৈশিষ্ট কি জানুন।গল্পের শুরু থাকে, মধ্যম অংশ থাকে, শেষ থাকে। এক জায়গায় এমনভাবে লেখা হয় যেন পরের অংশ নিয়ে আগ্রহ জন্মে। গল্পের শেষ কি জানার ইচ্ছে হয়।লেখার সময় এই নিয়ম মেনে লিখুন। এভাবে আপনি নিজের লেখার মধ্যে নানা রকম স্টাইল নিয়ে আসতে পারবেন।
৫) নিজের মন থেকে লিখুনঃ যখন যেটাই লিখেন সব সময় মন থেকে কিছু লেখার চেষ্টা করুন। লেখা পড়ে পাঠক যাতে বুঝতে পারেন লেখক যে কথাগুলি লিখেছেন সেগুলি মন থেকে লিখেছেন নাকি দায়িত্বপালন করেছেন। এরই ওপর কিণ্ড লেখকের সফলতা নির্ভর করে। যে বিষয় নিয়ে লিখবেন সেই বিষয় যদি আপনার পছন্দ না হয় তাহলে তার প্রভাব লেখায় দেখা যাবে। সেক্ষেত্রে বরং এমন বিষয় বেছে নিন যা আপনি ভালবাসেন এবং আপনার পছন্দ।
৬) গল্পের মত অনিশ্চিত বক্তব্য রাখুনঃ আমার মনে হয় কথাটি শুনে যে কেউ অবাক হবেন। আমরা যখন কোন গল্পের বই পড়ি তখন শুরুতে কেউ বুঝতে পারিনা যে শেষে কি হবে। গল্প পড়ার সময় যদি পাঠক শুরুতেই বুঝে নেন যে শেষে কি হবে তাহলে কারো কাছে সেই গল্প আকর্ষনীয় মনে হয় না। বরং কি হতে পারে এই চিন্তা যখন কাজ করে তখন তিনি আরো পড়েন এবং জানার চেষ্টা করেন। বিখ্যাত উপন্যাস কিংবা মুভির ক্ষেত্রেও এই নিয়ম মেনে চলা হয়। এমন কিছু ঘটে যা প্রত্যাশার বাইরে। আপনিও এই রীতি মেনে চলতে পারেন।
অামার প্রচন্দের একটি বাংলা ব্লক "অামার প্রতিভা ডট কম"। ব্লগিং জগৎ এ এগিয়ে যান শুভ কামনা রইল ।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:১০