বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলে মুহাম্মাদ।
আমার মত অজ্ঞ ব্যক্তি থেকে মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর মাক্বাম পর্যন্ত যতটুকু আধ্যাত্মিক দুরুত্ব রয়েছে আমার ব্যাখ্যা থেকে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর ব্যাখ্যা পর্যন্ত ততটুকু উচ্চতার পার্থক্য রয়েছে।
কোরআনের গভীর অর্থ ততটুকু অনুধাবন করা যায় যতটুকু মানুষ নিজের সত্তাকে পবিত্র করেছে। কোরআনের বাহ্যিক যেমন একটি অর্থ রয়েছে তেমনি এর ভিতরে অর্থ রয়েছে যার গভীরতা মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সত্তার আধ্যাত্মিক পরিপূর্ণতা ও উচ্চতায় গিয়ে মিশেছে। কোরআনের অক্ষরগুলো যেমন বস্তু জগতকে ব্যাখ্যা করে তেমনি এর ভেতরের অর্থ মানুষের আত্মার জগতকে ব্যাখ্যা করে। কোরআনের মূল উদ্দেশ্য মানুষের আত্মা ও এর কেন্দ্র বা ক্বলবকে উচ্চতর জগতের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া যার সর্বশেষ মাক্বাম আল্লাহর সাথে মুলাকাত যা আল্লাহর ওয়ালীদের ভাষায় 'ফানা ফিল্লাহ' বা আল্লাহর অস্তিত্বের ভিতরে মানুষের রুহ বিলীন হয়ে যাওয়া। যখন এই অবস্থা স্থায়ী হয়ে যায় তখন তাকে বলা হয় 'বাক্বাবিল্লাহ'। যেমন, আল্লাহর রাসূলকে (সাঃ) সাহায্য করতে গিয়ে যারা শহীদ হয়েছিলেন এবং হন তারা 'বাক্বাবিল্লাহ'-তে পৌছেছেন। যুদ্ধ ক্ষেত্রে শত্রুর অস্ত্রাঘাতে যাদের আত্মা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয় তারা এই অবস্থায় পৌছান। আল্লাহর বন্ধুরা আত্মশুদ্ধি ও সাধনার মাধ্যমে দেহ থেকে আত্মাকে বিচ্ছিন্ন করে এই অবস্থায় পৌছান। যিনি এই পথে প্রাথমিক স্তরটি অতিক্রম করেছেন তিনি সূরা আর রাহমানের বিসমিল্লাহ থেকে আর রাহমান-এ প্রবেশ করেছেন। শূক্র বা নাপাক ফোটা থেকে শারিরীক মানুষের শুরু অর্থাৎ 'বিসমিল্লাহ' এবং যে দিন সে জন্ম নেয় পূর্ণ মানুষ হিসাবে সেদিন আমরা বলি 'আলহামদুলিল্লাহ'। শারিরীক মানুষটি তার পশুত্বকে আল্লাহর সাহায্যে হত্যা করে যেদিন আধ্যাত্মিক জগতে প্রবেশ করে সেদিন সে আধ্যাত্মিক জগতে একটি শিশু এবং প্রকৃত মানুষ। আল্লাহর এই সিফাত 'রহমান' (দয়ালূ খোদা)-কে সে এই প্রথম আত্মা দিয়ে অনুভব করে। এরপর সে অদৃশ্য জগতের সাথে পরিচিত হতে থাকে।
সূরা আর রাহমানে আল্লাহ এই ঐশী শিশুটিকে একত্রিশটি ধাপের সাথে সরাসরি পরিচয় করান এবং প্রত্যেক ধাপের পরেই আল্লাহ তাকে এই প্রশ্নটি (অতএব তোমাদের প্রভুর কোন্ অনুগ্রহ তোমরা উভয়ে অস্বীকার করবে? ) জিজ্ঞাসা করেন বান্দার কৃতজ্ঞতাকে বের করে আনার জন্য।
কেন দুজনকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে তার আলোচনা এখন থাক।
আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। ওয়াস্সালাম।