somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি মিস কল বদলে দিতে পারে অনেক কিছু... (মিস কল)

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটি মিস কল বদলে দিতে পারে একটি ছেলের জীবন। আমার বন্ধু রাশেদ এর জীবনেও তেমটা ঘটে ছিল। একদিন রাশেদের মোবাইলে একটি মিস কল আসে। কিন্তু রাশেদ সেই মিস কল এর কোন উত্তর দেয়নি, যেহেতু সেটা একটা অপরিচিত কল ছিল। দুইদিন পর সেই নাম্বার থেকে আবার একটি মিস কল। তারপর আবার। এভাবে সেই নাম্বার থেকে তিনটি মিস কল আসলো। কিন্তু রাশেদ তাতে কোন উত্তর করলো না। বিরক্ত হয়ে সেই মিস কল প্রদানকারি নিজেই কল করলো রাশেদকে।

নিলিমাঃ হেলো, আপনি কে বলছেন? আপনার নাম কি?

রাশেদঃ জি আমি একটা মানুষ, আর আমার নাম রাশেদ। আপনি কাকে চাচ্ছেন?

নিলিমাঃ আপনাকে কতগুলো মিস কল দিলাম। আপনি আমাকে কল করলেন না যে, এটা কিন্তু ঠিক না। কোন জরুরী ফোনও তো হতে পারতো।

রাশেদঃ দেখেন। আমি অপরিচিত নাম্বার থেকে মিস কল করলে, সেই মিস কলের নাম্বারকে ফোন করি না। আর আপনি বললেন না যে, কোন জরুরী ফোন ও তো হতে পারত। কোন জরুরী ফোন হলে আমাকে ফোন করত। মিস কল করতো না। আর ভালো কথা আমি কিন্তু আপনাকে চিনিনা। তাই আপনাকে সব কথা বলার প্রয়োজন মনে করছি না। আপনি কিন্তু আমার প্রশ্নের উত্তর দেননি। আপনি কে? আর আপনি কাকে চাচ্ছেন?

নিলিমাঃ আমার নাম নীলিমা। আমি কি আপনার সাথে কথা বলতে পারি?

রাশেদঃ আমি কি আপনাকে চিনি? আমার তো মনে হয় আমি আপনার সাথে কখনও কথা বলিনি। দেখেন আমি অপরিচিত কারো সাথে কথা বলি না। আমি এখন ফোন টা রাখবো।

নিলিমাঃ এত ঢং করেন কেন? বেশি দেমাগ দেখানো ঠিক না।

--- এই বলে মেয়েটি ফোনটা রেখেদিল। রাশেদ তো অবাক হয়ে ফোন টার দিকে চেয়ে থাকল। তারপর সে তার কাজে মনোনিবেশ করলো। রাত তখন ১২টা বেজে ১০ মিনিট। সেই নাম্বার থেকে আবার ফোন। না এবার কোন মিস কল দেইনি।

নিলিমাঃ হেলো, রাশেদ ভাই বলছেন?

রাশেদঃ হ্যাঁ, আপনি কে বলছেন?

নিলিমাঃ আপনি আমাকে চিনতে পারছেন না? আমি নীলিমা। কিছুক্ষণ আগে আপনার সাথে আমার কথা হয়েছিল।

--- রাশেদ একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরী করে। সে সেখানে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে আছে। সে একটা প্রোজেক্ট নিয়ে খুবই বেস্ত আছে। তাই সে একটু অন্য চিন্তিত ছিল।

রাশেদঃ ও হ্যাঁ। চিনতে পেরেছি। কেমন আছেন?

নিলিমাঃ আমি ভাল আছি। একটা কথা বলার জন্য আপনাকে আমি এত রাতে কল দিয়েছি। আপনি কিছু মনে করছেন নাতো?

রাশেদঃ না। কি বলবেন তাড়াতাড়ি বলবেন। আমি এখন ঘুমোতে যাব। সকালে আমার অফিস আছে।

নিলিমাঃ আচ্ছা আপনি এতো মুড দেখান কেন? আমি আপনার ঘুম নষ্ট করব না। আমি সকালের ব্যবহারের জন্য লজ্জিত এবং দুঃখিত। পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। ভাল থাকবেন। শুভ রাত্রি।

--- রাশেদকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফোনটা রেখে দিল। রাশেদ বুজতেই পারল না সে কি কোন স্বপ্ন দেখছে নাকি অন্য কিছু? কিছুক্ষণ ভাবতে ভাবতে রাশেদ ঘুমিয়ে পরল...

যাই হোক, ভাবলাম বাকি কথা গুলো এবার লেখা শুরু করি.।

ঘুম থেকে উঠে রাশেদ নাস্তা করে অফিস চলে গেলো। তারপর দুই দিন কেটে গেলো। একটি মিসকল পেয়ে রাশেদ মোবাইল এর স্ক্রীন এ চোখ যায়। রাশেদ তখন অফিস বসে কাজ করছিল। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে আবার কাজে করতে লাগলো।

--- এখন সন্ধ্যা ৬:৩০ বাজে। রাশেদ সবে মাত্র অফিস থেকে বাসায় আসে। ফ্রেশ হবার ও সুযোগ হইনি তার। একটা মিস কল আসে। তারপর কিছুক্ষণ পর সেই নাম্বার থেকে আবার ফোন আসে, এবার কিন্তু মিস কল না।

রাশেদঃ হেলো। কে বলছেন?

নিলিমাঃ আমি নিলিমা। আপনি কি রাশেদ ভাই বলছেন?

রাশেদঃ জি বলছি।

নিলিমাঃ আমি নিলিমা। চিনতে পেরেছেন?

রাশেদঃ ওহ নিলিমা। জি চিনতে পেরেছি। কেমন আছেন?

নিলিমাঃ জি আমি ভাল আছি। আপনি?

রাশেদঃ আমিও ভাল আছি। তারপর কিরছিলেন?

রাশেদ এর কথার উত্তর না দিয়ে...

নিলিমাঃ আজকে আপনাকে আগেও ফোন করেছিলাম। আপনি ফোন ধরেন নাই।

রাশেদঃ কই নাতো। কিছুক্ষণ চিনটা করে ওহ আপনি ফোন দেয়েছিলেন? আসলে আপনি আমাকে মিস কল দিয়েছিলেন। আর আমি তখন একটা কাজে বেস্ত ছিলাম।

নিলিমাঃ ও দুঃখিত, আপনি তো আবার মিস কল দেখলে ফোন করেন না। আচ্ছা আপনি আমার নাম্বারটা সেভ করে রাখেননি? তাই না? বুজলাম

রাশেদঃ আসলে আপনার সাথে আমার যে আবার কথা হবে, সেটাই তো জানতাম না।

নিলিমাঃ আচ্ছা! আপনি কি সবার সাথে এইভাবেই কথা বলেন?

রাশেদঃ কেন বলেন তো?

নিলিমাঃ না এমনিতে।

--- এইভাবে তারা প্রায় ১০ মিনিটের মত কথা বলে ফোনটা রেখে দিলো।

তিনদিন পর ---
রাশেদ একটা মিস কল পায়। এবার রাশেদ সেই নাম্বার টা চিনতে পারে। কারণ নাম্বার টা রাশেদের মোবাইলে সেভ করা ছিল। নাম্বার টা ছিল নিলিমার। বরাবরের মত সে কোন কল করলো না। তবে রাশেদের ঠোটের কোনে একটা হাসি ফুটে এলো। এবার মেয়েটি মিস কল না দিয়ে কল করলো রাশেদকে।
নিলিমাঃ হেলো, রাশেদ ভাই বলছেন?

রাশেদঃ জি বলছি।

নিলিমাঃ চিনতে পেরেছেন আমাকে?

রাশেদঃ জি, চিনতে পেরেছি। আপনি কেমন আছেন?

নিলিমাঃ জি আমি ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?

রাশেদঃ আমি ভালো আছি।

নিলিমাঃ আচ্ছা আমি কি আপনার সাথে কথা বলতে পারি। তবে এখন না। রাতে আপনাকে কল করব আপনি কিছু মনে করবেন না তো।

রাশেদঃ না। তবে আমি একটু তাড়াতাড়ি ঘুমতে যাই। আমি রাতে বেশীক্ষণ কথা বলতে পারি না।

নিলিমাঃ আচ্ছা। আমি আপনাকে বেশি রাত পর্যন্ত জেগে রাখব না। কেন জানি আপনার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে। আচ্ছা এখন রাখি পরে কথা হবে। ভালো থাকবেন।

রাশেদঃ আপনিও ভালো থাকবেন।

--- ফোনটা কেটে গেলো। রাশেদ ভাবছে মেয়েটি আমার সাথে কি কথা বলতে চায়? কিছুক্ষণ চিনটা করে সে তার কাজে মনোনিবেশ করে।

রাশেদ সন্ধ্যা ৭ টায় বাসায় ফেরে। বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে বিছানায় আসে। একটা গল্পের বই পরতে পরতে রাশেদের চোখে ঘুম চলে আসে। তখন বাজে রাত ৯ টা ৫০ মিনিট। হটাত ফোনের শব্দ পেয়ে রাশেদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। কে যেন মিস কল দিলো। মোবাইলের স্ক্রীন টা জ্বলে আবার নিভে গেল। রাশেদ ফোন টা হাতে নিয়ে দেখল যে নিলিমা মিস কল দিয়েছে। রাশেদ দেখতে না দেখতে আবার কল আসলো। তবে এবার মিস কল না। সত্যিকারের কল।
নিলিমাঃ রাশেদ ভাই বলছেন?

রাশেদঃ জি বলছি।
নিলিমাঃ দুঃখিত। আমি মনে হয় বেশি দেরি করে ফেলেছি।

রাশেদঃ না না ঠিক আছে।

নিলিমাঃ কি করছিলেন?

রাশেদঃ না তেমন কিছুনা। একটা বই পরতে পরতে ঘুমিয়ে পরেছিলাম। আপনার ফোন পেয়ে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল।

নিলিমাঃ আমি সত্যি দুঃখিত। আপনার ঘুমটা ভেঙ্গে দিয়েছি বলে। আসলে আমি একটা কাজে বেস্ত হয়ে পরেছিলাম। তাই আপনাকে ফোন করতে দেরি হয়ে গেল। আপনি কিছু মনে করেন নাই তো।

রাশেদঃ না না ঠিক আছে। আপনার কথা বলেন। আপনি কি করেন? কোথায় থাকেন? ইত্যাদি ইত্যাদি…

নিলিমাঃ আরে আরে আপনি তো আমাকে জেরা করা শুরু করলেন। বলবো বলবো সব ই বলবো। এতো তারা হুরার কি আছে। আচ্ছা একটা কথা জিজ্ঞাসা করতে ইচ্ছে করছে। করব?

রাশেদঃ বলুন কি জানতে চান?

নিলিমাঃ আপনি একা থাকেন? না মানে , আপনার সাথে আর কে কে থাকেন?

রাশেদঃ একটু হেসে। আমি একাই থাকি। আমার বাবা মা আমেরিকা থাকেন।

নিলিমাঃ আপনি বিয়ে করেন নাই?

রাশেদঃ আমি বিয়ে করলে কি এতো রাতে আপনার সাথে কথা বলতে পারতাম। হটাত এই প্রশ্ন?

নিলিমাঃ না এমনিতেই।

রাশেদঃ আচ্ছা আপনার যদি কথা শেষ হয়ে থাকে তাহলে আমি কি এখন ঘুমাতে যেতে পারি?

নিলিমাঃ একটু মন খারাপ করে। দুঃখিত আপনাকে এতো রাতে বিরক্ত করার জন্য। গুড নাইট।

--- মেয়েটি রাশেদকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফোন টা রেখে দিলো

বাকিটা এই লিঙ্ক এ ক্লিক করুন - https://shutorang.com/blog/
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:৫৮
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×