somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সহজে সুন্দর স্বাস্থ্যের অধিকারী হতে চান? হিতে বিপরীত হতে পারে

২১ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ৭:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আপনি মোটা? স্থুলতা কমাতে চাচ্ছেন? মেদ ভূড়ি কি করি, স্লিমিং পয়েন্ট বা সোয়ানা বেল্টের অ্যাড দেখলেই আপনার চোখ আর সরে না, আপনি নিয়মিত স্লিম চা পান করছেন? না ভাই যারা শর্ট কাটে ভাল ফিগারের অধিকারী হতে চান তারা এই পোষ্ট থেকে দূরে থাকেন। কারণ ‘স্বাস্থ্য কমানো’ এই শব্দটাই ভুল, সঠিক হচ্ছে স্বাস্থ্য মেইনটেন করা। আর এটা করতে হয় সারা জীবন ধরে; দুই মাস বা তিন মাসে্র ঝটিকা কমান্ডো টাইপ একটা প্রোগ্রাম হাতে নিলেন আর সুন্দর একটা ফিগার পেলেন, কিন্তু ধরে রাখলেন না। তাহলে হবে না ।দেখবেন আপনি আগের চেয়ে বেশী সুস্বাস্থ্যের (?) অধিকারী হয়ে গেছেন।

স্থূলতা কি?
আমরা যখন নিয়মিত নিজের শারীরিক চাহিদার চেয়ে বেশী খাবার খাই তখনই স্থুলতার শিকার হই। ২-৪ কেজি বেশীকে আসলে স্থূলতা বলে না, স্থূলতা হচ্ছে যখন আপনি আপনার রেঞ্জকে শতকরা ২০ ভাগের বেশী অতিক্রম করবেন। (অবশ্য গার্লফ্রেন্ড বা বয়ফ্রেন্ডের কাছে ২-৪ কেজি ই স্থূলতা)

বি এম আই (বডি মাস ইনডেক্স)
জানি এই যুগে (ফিগার সচেতনতার যুগ) এটা সবাই জানে তারপরেও পোষ্টটি অসম্পূর্ন থেকে যাবে তাই দিচ্ছি।
বি এম আই= ওজন (কিলোগ্রাম)/ উচ্চতা২ (মিটার)
আদর্শঃ
২২-২৪ (ছেলে)
২১-২৩ (মেয়ে)
মোটা (বি এফ বা জি এফ এর চোখে না আসলেই মোটা)
সাড়ে ২৮ এর উপরে (ছেলে)
সাড়ে ২৭ এর উপরে ( মেয়ে)
বেসম্ভব রকমের মোটা
৩৩ এর উপরে (ছেলে)
৩১.৫ এর উপরে (মেয়ে)

বেশী খাওয়া ছাড়াও আরও কিছু ব্যাপার আছে যা আমাদের সাথে শত্রুতা করে ওজন নিয়ন্ত্রনে আনার ক্ষেত্রে। যেমনঃ-

১। ফ্যাট সেলঃ এটা আমাদের সকলের শরীরেই গড়ে ৩০ -৪০ মিলিয়ন থাকে, যারা স্থূল তাদের থাকে স্বাভাবিকের চেয়ে তিনগুন বেশী। আর এগুলোর একেকটার সাইজও থাকে স্বাভাবিক মানুষের ফ্যাট সেলের চেয়ে দুই থেকে তিনগুন বড়। মজার ব্যাপার হল ফ্যাট সেল মরেনা। ডায়েটিং করলে এরা সাইজে ছোট হয়ে যাবে কিন্তু মরবেনা। আরও খারাপ সংবাদ হল এই বদমাশ সেল গুলো আপনি ডায়েটিং শুরু করলেই অনবরত আপনার ব্রেনে খাই খাই টাইপের মেসেজ পাঠাতে থাকে। এই জন্যই ডায়েটিং শুরু করলেই খালী ক্ষুধা লাগে।

২। নির্দিষ্ট ওজনঃ আমাদের শরীর একটা প্রিডিটারমাইন্ড ওজন ঠিক করে রাখে। যারা কখনও ডায়েটিং করেছেন তারা জানেন প্রথম কয়েকদিন ওজন কমলেও একটা পর্যায়ে এসে ওজনটা আর কমতে চায় না। এর কারণ এই প্রিডিটারমাইন্ড ওজন। এই নির্দিষ্ট ওজনটা কার কত হবে সেটা নির্ভর করে যে সকল বিষয়ের উপর তার একটা হল বংশগত, আরেকটা হল Body Metabolic Rate (শারীরিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখার আভ্যন্তরীন প্রক্রিয়া)। আমাদের ক্যালরির দুই তৃতীয়াংশ খরচ হয় শরীরের তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি এর আশে পাশে রাখতে। কিছু মানুষের এই প্রক্রিয়ায় বেশী ক্যালরি খরচ হয় আবার কারও কম হয়। যাদের বেশি খরচ হয় অর্থাৎ যাদের Body Metabolic Rate বেশি তাদেরকেই আমরা দেখি খায় কিন্তু সেই অনুযায়ী মোটা হয় না আর যাদের Body Metabolic Rate কম তারা অল্প খেলেই গায়ে লেগে যায়।
কি এই নির্দিষ্ট ওজন আর Body Metabolic Rate এর উপর মেজাজ গরম হচ্ছে? মনে হচ্ছে এরা আপনার শত্রু। আসলে এরা আপনার জীবন বাচিয়ে রাখছে। আপনাকে যা করতে হবে তা হল এই ওজনের লিমিট এবং Body Metabolic Rate এর মাত্রাটা নতুন করে শরীরকে সেট করে দিতে হবে অর্থাৎ ওজনের লিমিটকে নামাতে হবে আর Body Metabolic Rate বাড়াতে হবে।

এর জন্য যা যা করতে হবে তা হলঃ

১। ডায়েটিংঃ ডায়েটিং কি কি ভাবে করতে হয় সেটা আমার ধারনা সবাই জানে। আমি এখানে ডায়েটিং এর কিছু ভুল প্রক্রিয়া এবং ডায়েটিং কিভাবে Body Metabolic Rate কমায় বা বাড়ায় সেটা বলব।
- ডায়েটিং আর ওজন আবার আগের বা তার চেয়ে বেশী করে ফেলা খুব কমন একটা ব্যাপার। এর নাম হল ‘ইয়ো ইয়ো সিনড্রোম’। এর প্রধান কারণ হল বিঞ্জিং বা এক সাথে প্রচুর খাবার খেয়ে ফেলা। দেখা গেছে বিঞ্জিং এর অভ্যাস নন ডায়েটারদের চেয়ে ডায়েটারদের বেশী।অনেকক্ষন না খেয়ে থেকে ডায়েটাররা যখন খেতে বসে এক সাথে অনেক খেয়ে ফেলে। এই ডায়েট তারপর বিঞ্জিং তারপর আবার ডায়েট এই চক্রটাই সবচেয়ে ক্ষতিকারক। কারণ এই চক্রই অতিরিক্ত ফ্যাট সেল তৈরি করে। আর ফ্যাট সেল কি পরিমান দুষ্ট তা আগেই বলেছি।
- ডায়েটিং এর সময় আরেকটা ব্যাপার খেয়াল করতে হবে তা হল আপনার ওজন যেন খুব কম সময়ে খুব বেশী ওঠা নামা না করে, কারণ শরীরের ওজন খুব বেশি ওঠা নামা করলে Body Metabolic Rate কমে যায়। আর Body Metabolic Rate কমে গেলে ওজন কমানো খুব কঠিন একটা ব্যাপার।
তার মানে হল যে সব খাবার খেলে বা যেভাবে খাবার খেলে ওজন দ্রুত কমে যায় সেটা পরিহার করে ওজন কমাতে হবে দীর্ঘ সময় ধরে এবং এটাকে দীর্ঘ সময় ধরে রাখতে হবে।

২। ব্যায়ামঃ ব্যায়াম করলে ক্যালরি খরচ হয় এটা সবারই জানা। স্বাভাবিক গতিতে এক মাইল দৌড়ে ৪০০- ৫০০ ক্যালরি খরচ হয়। কিন্তু আবার খেলেই তো এই ক্যালরি শরীরে চলে আসবে। তাহলে কি ব্যায়াম বাদ? আসলে ব্যায়াম ক্যালরি খরচ করার পাশাপাশি আরেকটা কাজ করে তা হল Body Metabolic Rate বাড়ানো। এর ফলে শরীরের প্রিডিটারমাইন্ড ওজনের মাত্রাটাও নেমে আসে।

৩। খাদ্যাভাস পরিবর্তনঃ

খাদ্যাভাস পরিবর্তনের মাধ্যমে আমরা ক্ষুধা লাগা এবং Body Metabolic Rate দুটোই নিয়ন্ত্রন করতে পারি। এখানে শারীরিক ইনসুলিনের একটা বড় ভূমিকা আছে। এই ইনসুলিন খাওয়ার পর রক্ত থেকে সুগার বের করে শরীরের অন্য জায়গায় নিয়ে যায়, ফলে রক্তে সুগার কমে যায় এবং আমরা ক্ষুধাবোধ করি। যেটা করতে হবে তা হল এমন খাবার খেতে হবে যা রক্ত থেকে বের করতে ইনসুলিনের বেশী সময় লাগে। আপনি যদি চকলেট বা ডোনাট খান (এগুলোতে থাকে গ্লুকোজ) সেটা আপনার রক্তে যতক্ষন থাকবে তার চেয়ে অনেক বেশী থাকবে যদি আপনি ফল খান ( ফলে থাকে ফ্রুক্টোজ- যা প্রথমে গ্লুকোজে পরিনত হতে হয়- ফলে বেশী সময় রক্তে থাকে) এবং বেশীরভাগ হাই ক্যালরি ফুডের ক্ষেত্রেই একি ঘটনা ঘটে।

এখন হয়ত আপনারা বলবেন একটা আপেল খেলে তো এই থিওরী অনুযায়ী ক্ষুধা দেরীতে লাগার কথা, কিন্তু আমার তো আগে লাগে। এর কারণ হল আমাদের মানসিকতা। আমরা বড় হয়েছি ফল প্রধান খাবারের পাশাপাশি খেয়ে। তিনবেলা ভাত না খেলে আমাদের মনে হয় কিছু খাইনি। এই মানসিকতার কারণেই আপনার শুধু ফল খাবার পর ক্ষুধা লাগে।

সবশেষে বলব ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখতে চাইলে কোন সংক্ষিপ্ত এবং আরামদায়ক পদ্ধতি নেই।আপনাকে কিছুটা ঘাম ঝরাতে হবে, খাবার দাবারে একটু নিয়ম মানতে হবে।

এই পোষ্ট টি দেয়ার উৎসাহ পেয়েছি এইখানে
মন্তব্য করতে গিয়ে দেখি আসলে খুব অল্প কথায় সারা যাচ্ছে না তাই ভাবলাম পোষ্ট দেই।

সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৩:১৪
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×