আর্জেন্টিনার ডাই হার্ড ফ্যান রুদ্র, একই সাথে ব্রাজিলের ঘোর বিরোধী।
বাবা পাকিস্তান আন্দোলনের কর্মী তাই মন মানসে কিছুটা পশ্চিমপন্থী। জয় বাংলা ডাকে তার খুব আবেগ আসে না; তাই বাংলা মুলুককে নিজের একচেটিয়া সম্পত্তি ভেবে দারাজ গলায় বলতে পারে না ‘অমুক দেশের দালালেরা এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়!’ মোদ্দকথা ছাড়াছাড়িতেও নেই সে; নেই সে জোড়াতালিতেও।
মুসলিম হওয়ায় তার খ্রিস্টান সহপাঠিরা তাকে এড়ায় না ঠিক; তবে খুব কাছেও ঘেষে না। দোষ তারও কম না। গায়ের বর্ণ হোয়াইট হাউজের সমার্থক হওয়ায় কালো আর শ্যামলা বর্ণের বন্ধুদের তার শ্যামলীমা মনে হয় না; মনে হয় দূরের কেউ; কখনো বা খোট্টার দেশের ভাষায় ‘ছোট ঘরের পোলাপান’ মনে হয়। হিত্রো ইউনিভার্সিটিতে পড়লেও মনে কসমোপলিটানকে জায়গা দিতে শেখে নি। দোষ হয়তো তারও নয়; বিশ্ববিদ্যালয়েরও নয়। সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর। যারা ভিন্ন দলের ফ্যানদের ঘায়েলের শিক্ষা দেয়। যে ক্ষুদ্রমনা ধর্ম তাকে শেখায় অন্যধর্মীদের ল্যাং মারতে হয়। বাম হলে ডানে ঠেলতে বলে। আর ডানপন্থি হলে শোষকজাতি বলে গাল দিতে চায়। দাঁড়ি না থাকলে জাহান্নামে ফেলতে হয়; থাকলে সপটে ধরে হেছকা টান দিতে চায়। দুনিয়া রাশি রাশি মতবাদ আর ধর্মের ভীড়ে বাদ পড়েছে এক ‘বাদ’।
নাম তার মানবতাবাদ। হাতে গোনা কয়েকটা ধর্ম বাদে সার্বজনীন রাষ্ট্রের ধারণা কোথাও নেই। কেউ কেউ তাদের রাজ্যে ভিন্নমতাবলম্বীদের করে ফেলে বেওয়ারিশ। সব ধর্ম, সব কালের উর্ধে একটি জিনিস মানুষকে করে একাকার। রক্ত সেটা রক্ত। এক ফোটা রক্ত ঝরাও যদি করা যায় বন্ধ তবেই সার্থক মানবজাতি। সারা দুনিয়ার যত ফ্যান আর নানানধর্মীদের যা এক করতে পারে নি; ফিলিস্তিনের নিষ্পাপ শিশুদের নীলরক্ত গোটা দুনিয়া এক করে ফেলেছে। এ মানবতাবাদের জন্যই মানুষ প্রাণী নয়। বরং মানুষ!!
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০১৪ ভোর ৫:১৯