বাবা চাকরী সূত্রে কাজ করতেন জেলা শহরগুলোতে। কিন্তু বছরে একবার হলেও আমরা পুরো পরিবার দলবেধেঁ গ্রামের দাদার বাড়িতে বেড়াতে যেতাম, বিশেষকরে ঈদের মৈাসুমে। দাদার বাড়ির সে কয়টা দিন মূহুর্তেই কেঁটে যেত স্বপ্নের মতো।
চাচা-ফুফু, কাজিন, গ্রামের পাড়া-প্রতিবেশীদের সাথে হৈহুল্লুড় করে কেটে যেত আমাদের দিনের বেলা। তৈতৈ করে বন-বাদাঁরে ঘুরে বেড়ানো, পেয়ারা আম জাম পেড়ে খাওয়া, চালতার ভর্তা কিংবা পুকুর ধারে বসে বসে বড়দের মাছ মারা দেখা কত কিছু করার ছিল আমাদের। কিন্তু মাগরিবের আজানের সাথে সাথেই বাড়ি ফিরতে হতো আমাদের ছোট বড় সবাইকে। গ্রামে তখন কোন বিদ্যুৎ ছিল না কিংবা হ্যাজাক লাইট বলেও কিছু ছিল না। সন্ধ্যে হলেই হারিকেন কিংবা কুফি বাতি নিয়ে বড়রা বসে পড়তো জম্পেশ আড্ডায় কিংবা লুডু খেলতে। আর আমরা ছোটরা জোনাকি পোকার পিছনে ছু্টে বেড়াতাম পুরো উঠোনময়। আর দাদী, চাচীরা, ফুফুরা, মা ব্যাস্ত থাকতো মজার সব খাবার রান্নায়। হরেক রকমের পিঠা, খেজুঁড়ের গুড়ের পায়েস কিংবা সারা বছর ধরে দাদীর জমিয়ে রাখা তালের শাঁস দিয়ে মজার পায়েস।
এক বান্ধবীর অনুপ্রেরণায় এবার চলে গেলাম ক্যাম্পিং। অনেক অনেক বছর পর শহর থেকে অনেক দূরে, মোবাইল নেটওয়ার্ক, বিদ্যুৎ ছাড়াই কাটিয়ে দিলাম চমৎকার তিনটি দিন। সে ছোটবেলার অনুভূতি পেলাম এবার ক্যাম্পিং এ যেয়ে। অন্ধকারে টর্চ নিয়ে জঙ্গলের মাঝে বাথরুমে যাওয়া, আগুন ধরিয়ে মশা তাড়ানো কিংবা মার্সমলো পোড়ানো, উনুন জ্বালিয়ে পিয়াজু ভাজা.................. পুরোপুরি গ্রামীন না হলেও অন্যরকম একটা পরিবেশ কাটিয়ে দিলাম ক'টা দিন।
তাই ভালোলাগা শেয়ার করলাম সবার সাথে।
ছবিগুচ্ছ: খাবার-দাবারের
ছবিগুচ্ছ: বন-বাদারের
ছবিগুচ্ছ: রাতের আধাঁর
ছবি: বাথরুমের
ছবি: দাবা খেলা কিংবা মার্সমলো পোড়ানো
সবাই ভালো থাকুন।
সোহানী
জুলাই ২০২৩
বি:দ্র: প্রাইভেসির কারনে কিছু ছবিতে কালি ঝুলি মেখেছি

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ৮:২৯