somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

এই প্রথম কোন ব্লগারের সাথে আড্ডা :-B

২৯ শে নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ৭:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



জীবনের ১৬ বছর ব্লগে কাটিয়েও কারো সাথে কখনই আড্ডা দেয়ার সুযোগ হয়নি। বা বলা যায় দেখা করারই সুযোগ হয়নি। যাহোক, এবার সে সুযোগ করে দিয়েছে আমাদের আবহাওয়াবিদ ব্লগার মোস্তফা কামাল পলাশ। অনেকদিন থেকেই সে আমার শহরে আসবে আসবে বলে একটা ভাব তৈরী করেছিল। এবং শেষ পর্যন্ত আসলো, দেখা হলো, আড্ডা হলো।

অবশ্য এর আগে শুধু একজন ব্লগারে সাথেই স্বশরীরে দেখা করেছিলাম। বলতে গেলে নিজেই খুঁজে তাকে বের করেছিলাম কারন আমার মুখচেনা প্রিয় কিছু ব্লগারদের জন্য কয়েক কেজি চকলেট, বিভিন্ন ফ্লেবারের চা সাথে করে দেশে গিয়েছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল একদিন বইমেলায় যেয়ে ধুমছে আড্ডা দিবো আর চা চকলেট খাবো। কিন্তু দুক্ষের বিষয়, যে কয়জনকেই নক দিয়েছিলাম তারা কেউই কোন উত্তর দেয়নি। তখন কি আর করা, বইমেলায় যেয়ে সেই ব্লগারকে খুঁজে সবার নামে নামে লিখে প্যাকেট ধরিয়ে দিয়েছিলাম। যদিও ব্লগারদের কেউই ধন্যবাদ জানায়নি একমাত্র জী এস ভাই ছাড়া ;)

যাহোক, যা বলছিলাম, ব্লগ সবসময়ই আমার কাছে আবেগের জায়গা। ভার্চুয়াল জগতে চমৎকার একটা বন্ধন তৈরীতে ব্লগ সাহায্য করেছে। নিজের ভীষন ব্যাস্ততার মাঝে বা গুরুগম্ভীর কর্মব্যাস্ততার মাঝে ব্লগ বরাবরেই এক চিলতে শীতল বাতাস। নিজের ভালোলাগা মন্দলাগার ভাবনা চিন্তা শেয়ার করার খেরোখাতা এ ব্লগ। মন-মানসিকতায় অনেক কাছাকাছি আমরা। তাইতো অদেখা মানুষগুলোও এই সূতোর টানে আঁটকে থাকি দিনের পর দিন। আর ভালো লাগে যখন কারো সাথে দেখা মিলে।।

অনেক কষ্টে শিষ্টে শেষ পর্যন্ত পলাশের দেখা মিললো। আমার খুব ইচ্ছে ছিল পলাশ আসা উপলক্ষ্যে ব্লগ মিলনমেলার আয়োজন করা এখানে কিন্তু হুটহাট করে আসাতে সেটা সম্ভব হয়নি। পুরোনো ব্লগাররা পলাশকে খুব ভালোভাবেই চিনে কিন্তু নতুন ব্লগারদের কাছে পলাশের পরিচয়টা আবার একটু দিয়ে নেই।

সিলেট শাহজালাল থেকে পাস করে ইউনিভার্সিটি অব ওয়াটারলু, কানাডা, তারপর পিএউচডি করছে ইউনিভার্সিটি অব সাচকাচুয়ান, কানাডাতে। অনেক নেতাগিরির পাশাপাশি বিভিন্ন বিজ্ঞান, এনভায়রনমেন্ট কাজ কর্মের সাথে যুক্ত সে। বর্তমানে নেতাগিরির কাজটা চালিয়ে যাচ্ছে ইউনিভার্সিটি অব সাচকাচুয়ান স্টুডেন্ট এ্যাসোসিয়েশান এর ট্রেজারার হিসেবে। আমার এলাকায় একটা কনফারেন্স উপলক্ষ্যে তার আগমন। ব্লগে আছে প্রায় ১২ বছর ৮ মাস।

পলাশের আসার খবর পাওয়ার পর ঝড় বৃষ্টি মাথায় করে ছুটলাম তার কনফারেন্স হোটেলে। কানাডায় এরকম অঝর ধারার বৃষ্টি সহজে দেখা যায় না। এমন বৃষ্টি যে গাড়ি চালাতেই খবর হয়ে যাচ্ছিল, সামনের কিছুই দেখছিলাম না। এতো বৃষ্টি মাথায় করে আনার জন্য পলাশকে ধন্যবাদ দিবো কিনা ভাবছিলাম :((। যাহোক, আমাদের আড্ডাতে পরিবারের খবারখবর নেয়ার পাশাপাশি দেশ ও দশের এবং অবধারিতভাব সামহোয়ারের খোঁজ খবর নিয়েছিলাম। আলাপের বিষয়বস্তু আর নাইবা প্রকাশ্যে আনি। তবে পলাশের গিফ্ট এর কথা বলি, আমার বাচ্চাদের জন্য চমৎকার টিশার্ট সহ আরো অনেক কিছুই এনেছিল সে। যা আমার বাচ্চারা খুব পছন্দ করেছে। আর এ সুযোগে তাকে ধরে আমার বই এর একটা বিজ্ঞাপনও করে নিলাম, যার ছবিটা দিলাম।

:-B :-B :-B :-B :-B

গল্প এখানেই শেষ তবে সাম্প্রতিক কিছু টানা-হ্যাচড়া দেখে একজন বয়স্ক অভিজ্ঞ ব্লগার হিসেবে কিছু কথা না বলে পারছি না। তার জন্য আগেই দু:খ প্রকাশ করছি।

১) ভার্চুয়াল জগতকে যে বাস্তবের সাথে গুলিয়ে ফেলবে তার জন্য এ জগত না। এখানে চলাফেরা করার মানসিক পরিপক্কতা যে এখনো অর্জন করতে পারেনি তার জন্য এ জগত না।

২) ভার্চুয়াল জগতে হাজার ধরনের মানসিকতার মানুষ আছে, হাজার উদ্দেশ্য নিয়ে মানুষ ঘুরে। কোনটা ভালো, কোনটা খারাপ সেটা আপনাকেই বেঁছে নিতে হবে, কেউই আপনাকে ধরিয়ে দিবে না। যদি ধরা খান সেটা আপনার ব্যার্থতা। যদি লাভবান হোন সেটা আপনার সফলতা।

৩) ব্যাক্তিগত সম্পর্ক ভার্চুয়াল জগতে নিয়ে আসা আরেকটা বিশাল বোকামী। কারো না কারো সাথে ভার্চুয়াল জগতের বাইরে সম্পর্ক থাকতেই পারে। সেটা এ জগতে এনে দশজনকে জানানোটা ভীষন দৃষ্টিকটু। আশা করি এতটুকু বোধ আমাদের ব্লগারদের আছে।

৪) ভার্চুয়াল জগতে কারো প্রতি এক্সপেকটেশান থাকা ভীষন বোকামী। আপন জনই আপনার এক্সপেকটেশান পুরন করতে পারে না, সেখানে সম্পূর্ন অপরিচিত মানুষজন কিভাবে তা পূরণ করবে?

৫) ভার্চুয়াল আড্ডা দেয়া আনন্দময় কিন্তু অবশ্যই এর সীমারেখা থাকা উচিত। ব্যাক্তিগত বিষয়, অন্যের কোন বিষয়, নেগেটিভ কোন বিষয় চলে আসলে তার ফলাফল বিরুপই হবে। তাই একটানা আড্ডার ফলে অনেক সময় সাধারন সীমারেখা থাকে না। বিশেষকরে যাদের ম্যাচিউরিটি কম তারা সবদিক বিবেচনায় নাও রাখতে পারে।

আগে কেউ ব্লগ ছাড়ার ঘোষনা দিলে আমি ব্যাক্তিগতভাবে তাকে অনুরোধ করতাম। এখন করি না কারন ব্লগে আপনি এসেছেন মানে আপনি ম্যাচিউরড্ একজন। কোন ক্যাচালে জড়ায়ে ব্লগ ছাড়া, রাগ-অভিমান করে ব্লগ ছাড়ার দায় সম্পূর্ণই আপনার। এটা ভার্চুয়াল জগত, বাস্তব নয়। দিন শেষে আমরা কেউই কাউকে চিনি না। রাগ-অভিমানের মূল্য নেই এখানে।


আর কথা বাড়াই না, আমার বক্তৃতা এখানেই শেষ করি। কারন ঘরে বাইরে ২৪ ঘন্টা ফুল টাইম বুয়ার কাজ করে ব্লগে সময় দেয়া কঠিন। যারা রাত দিন ব্লগে পড়ে থাকে বা আড্ডায় মেতে থাকে ঘন্টার পর ঘন্টা তাদেরকে আমার লাল সালাম। তাই ব্লগ নিয়ে বেশী কথা আমাকে মানায় না।

সবাই ভালো থাকুন। এবং আসুন আনন্দ নিয়ে ব্লগিং করি, নো মারামারি, নো কাটাকাটি।

সোহানী
নভেম্বর ২০২৩

ছবি: আমার মোবাইলে। আর অনুমতি!!! ধার ধারি নাই কারন পলাশ এমনিতেই পাবলিক ফিগার :-B
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে নভেম্বর, ২০২৩ ভোর ৬:২০
৩৩টি মন্তব্য ৩৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিশাল বড় সৃষ্টি তোমার

লিখেছেন প্রামানিক, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:৩৪


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

বিশাল বড় সৃস্টি তোমার
মানুষ ক্ষুদ্রতম
চন্দ্র সূর্য দেখার পরে
করছে নমঃ নমঃ।

নানা রকম সৃস্টি দেখে
হচ্ছে চমৎকার
দুইটা চক্ষু উর্দ্ধে তুললে
দৃস্টি যায়না আর।

কোথায় সৃস্টির শেষ সীমানা
কোথায় বা তার শুরু
দূর সীমানায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিছু কিছু মানুষ বলার শুরু করেছে, "আমরা আগেই ভালো ছিলাম"।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ২:০২



একাধিক কারণে মানুষ ইহা বলার শুরু করেছেন: (১) সাধারণ মানুষ কোমলমতিদের ক্রমেই চিনতে পারছেন, ইহা ভীতি ও অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করছে; কোমলমতিরা সরকারের গুরুত্বপুর্ণ অনেক পদে আছে ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি - একাল সেকাল

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮



টানা বৃষ্টির মধ্যে মরিচের দাম বেড়ে হয়েছে ৪০০ টাকা কেজি । অন্যদিকে ফার্মের মুরগির এক পিছ ডিমের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫ টাকা।শুধু মরিচ নয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কমলা যদি পরাজিত হয়, "দ্রব্যমুল্য"ই হবে ১ নম্বর কারণ

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৭



দ্রব্যমুল্য হচ্ছে অর্থনৈতিক সুচকগুলোর ১ টি বড় প্যারামিটার; ইহা দেশের অর্থনীতি ও চলমান ফাইন্যান্সের সাথে সামন্জস্য রেখে চলে; টাস্কফোর্স, মাস্কফোর্স ইহার মুল সমাধান নয়; ইহার মুল সমাধন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকস্বাধীনতা মানেই- যা খুশী তাই লেখা বলা নয়....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৩ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৯:৩১



বকস্বাধীনতা মানেই- যা খুশী তাই বলা/ লেখা নয়। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং জনসংহতি নষ্ট করা রাষ্ট্র দ্রোহিতার শামিল। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের দোসর সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশের গণবিপ্লব পরবর্তী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×