somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

ডাংকি মুভি: যা আমাদের জানা উচিত (নো স্পয়লার এ্যালার্ট ;) )

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



তুষার ঝড়ে প্রান হারানো জগদিশ প্যাটেলের পরিবার



হিন্দি মুভি সহজে দেখতে চাইনা। কারন কাহিনী সেই একই। তার উপর সেই বাচ্চাকাল থেকে শাহরুখ/সালমান/আমির আংকেলদেরকে দেখতে দেখতে টায়ার্ড। চারপাশের সবার ভালো রিভিউ দেখে ভাবলাম ছুটিছাটা চলছে, এই ফাঁকে সময় কাটাই। কিন্তু টিকেট কাটতে যেয়ে দেখি মাথায় হাত। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কোন শো এর টিকেটই নাই। অনেক কষ্টে একেবারে সামনের সারির টিকেট কোন রকমে ম্যানেজ করলাম। আর সাথে দুই পোলাপানকে জোর করে নিয়ে গেলাম। যদিও দু'জনের কেউই হিন্দি বোঝে না। মেয়ে আগেই ঘোষনা দিলো যে ঘাড় বাঁকা করে হিন্দি ছবি দেখার কোন মানে নাই তাই সে আমার ঘাড়েই আড়াই ঘন্টা ঘুমাবে। কিন্তু একটানে আড়াই ঘন্টা আমরা সবাই মুভিটা দেখলাম একটা সিনও মিস না করে। এবং অনেকদিন পর একটা ভালো এবং সমোপযোগী মুভি দেখলাম।

গত বছর জানুয়ারী মাসের ১৯ তারিখ। আমার স্পষ্ট মনে আছে তখন তুষার ঝড় হচ্ছিল। বাইরে প্রায় মাইনাস ৪০ এর কাছাকাছি ঠান্ডা। আমরা দীর্ঘদিন কানাডায় বাস করেও এরকম ঠান্ডায় সহজে বের হই না ঘর থেকে। সেদিন সকালে উঠে খবরের পাতায় চোখ বুলিয়ে আঁতকে উঠলাম, খুব কষ্ট হতে লাগলো খবরটা দেখে। কানাডা আর ইউএস বর্ডারে চারজনের লাশ পাওয়া গেছে। ধারনা করা হচ্ছে তারা ঠান্ডায় জমে মারা গেছে এবং সম্ভবত একই পরিবারের। এর মাঝে ১১ বছর ও ৩ বছরের দু'টি শিশু রয়েছে।

তারপরের খবর আসতে সময় নেয়নি। পরিবারটি ছিল জগদিশ প্যাটেল এর। গুজরাটের স্কুল শিক্ষক জগদিশ এর স্বপ্ন ছিল আমেরিকায় স্থায়ী হবে। তাই কানাডার ভিজিট ভিসায় এসে অবৈধভাবে পাড়ি দিচ্ছিল আমেরিকায়। কিন্তু কানাডার মতো দেশে তুষার ঝড়ে কেমন ঠান্ডা হতে পারে তা নিয়ে বিন্দুমাত্র ধারনা হয়তো ছিল না তার। কিংবা যে দালাল তাদেরকে এ পথে নামিয়েছিল সেই হয়তো কিছু জানতে দেয়নি। এমন বৈরী আবহাওয়ায় অন্ধকারে মাইলের পর মাইল পায়ে হাঁটা প্রায় অসম্ভব একটা কাজ। কানাডিয়ানরাই সাহস করে না সেখানে নতুন আসা এশিয়ানদের জন্য কি ভয়াবহ কঠিন হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।

এক জগদিশ প্যাটেলই নয়, প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ অবৈধ পথে ইউরোপ, আমেরিকা সহ উন্নত দেশে জীবনের তাগিদে আসার চেস্টা করে। আর সে অবৈধ পথ যে কতটা কঠিন তা এক কথায় বলে বোঝানো যাবে না। এ অবৈধ পথকেই ডাংকি রুট বলা হয়। পাহাড়, জঙ্গল, সমুদ্র, হিংস্র পশু, হিংস্র মানুষ, বর্ডার বাহিনী, গুলি, কাঁটা তার, ইলেকট্রিক তার..................... মাইলের পর মাইল হেঁটে, কখনো গাড়ির বাম্পারে, কখনো কার্গোতে, কখনো সাঁতার কেটে, কখনো গভীর সমুদ্রে নৈাকায় পাড়ি দেয় দিনের পর দিন। তার উপর আছে খাবারের অভাব, পানির অভাব, অসুন্থতা...। কতজন মারা যাচ্ছে কেউই তার হিসেব রাখে না। কারন তাদের খবর কেউই জানে না। যারা পৈাছাতে পারে তারা কি সবাই থাকার অনুমতি পায়? না পায় না। সেখানেও আছে নতুন খেলা।

যেহেতু আমি প্রায় মাইগ্রেশান নিয়ে লিখালিখি করি তাই উপলব্ধি করতে পারছি মুভিটি। যাহোক, অনেক কথা বলে ফেললাম। ডাংকি মুভিটা এমনই কিছু নিয়েই নির্মিত। যারা অবৈধ পথে বিদেশ যাবার চিন্তা করছে তাদের জন্য একটা সাবধান বাণী। এরচেয়ে বেশী বলে ছবি দেখার আনন্দটা নষ্ট করতে চাই না। আর হাঁ, শাহরুখ আংকেলকে ভালোই লেগেছে। প্রত্যেকেই তাদের সেরা অভিনয় করেছে বলেই মনে করি। আর রাজকুমার হিরানীর ছবি মানেই বাড়তি আনন্দ।

কিছুটা হলেও সত্যটা জানবেন এ মুভিতে তাই সাবধানতা হিসেবে সবাইকে মুভিটি দেখার আমন্ত্রন রইলো। আর ভালো থাকুন সবাই এ ঠান্ডায়।

সোহানী
ডিসেম্বর ২০২৩
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৭:৫৭
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×