somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইডিপাস: যার জীবনের শেষ সুরটি ছিল বিষাদের ...

০৬ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ২:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ইডিপাস। গ্রিক উপকথার থিবসের রাজা-যিনি নিষ্ঠুর নিয়তির ঘূর্ণিপাকে পতিত হয়ে ভোগ করেছিলেন তীব্র মানসিক যন্ত্রণা । বিবেকের তাড়নায় নিজেকে অন্ধ করে ফেলেছিলেন। প্রাচীন গ্রিকরা বিশ্বাস করত যে - কোনও কোনও মানুষ না চাইলেও অন্ধ নিয়তির ইঙ্গিতে পাপে লিপ্ত হয় এবং দেবতা সেই পাপাচারের শাস্তিও দেন। ইডিপাস-এর বিয়োগান্তক কাহিনী যেন তারই উজ্জ্বল নিদর্শন। ইডিপাস-এর এই বিয়োগান্তক কাহিনীর আকর্ষন এতই তীব্র যে প্রাচীন গ্রিক নাট্যকার সফোক্লেস (খ্রিস্টপূর্ব ৪৯৬-৪০৬) থেকে আরম্ভ করে বিংশ শতকের মনঃবিশ্লেষক সিগমন্ড ফ্রয়েড (১৮৫৬-১৯৩৯) অবধি বিয়োগান্তক আখ্যানটি ব্যবহার করেছেন । মনে রাখতে হবে এই ট্র্যাজিক উপাখ্যানটির কিন্তু নানা ভাষ্য রয়েছে। আমি কেবল বোঝার সুবিধার্থে একটিই গ্রহন করেছি ...সামানও রংও চড়িয়েছি ...

ইডিপাস-এর বিয়োগান্তক কাহিনীটি আবর্তিত হয়েছিল প্রাচীন গ্রিসের থিবস নগরীতে।
কিন্তু কোথায় ছিল থিবস?



থিবস নগরীর মানচিত্র। থিবস নগরী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ফিনিসিয় রাজপুত্র ক্যাডমাস। ক্যাডমাস এর বোন ইউরোপাকে হরণ করেছিল দেবতা জিউস। ক্যাডমাস তার কে খুঁজছিল। দেবতা অ্যাপোলোর উপাসনালটি রয়েছে ডেলফাই তে । সেখানে দৈববাণী শোনার জন্য ক্যাডমাস যায়। দৈববাণীতে ইউরোপার সন্ধান না করে বরং একটি নগর প্রতিষ্ঠা করতে বলা হয়। উল্লেখ্য, একই নামে প্রাচীন মিশরেও একটি নগর ছিল।

ক্যাডমাস এর বংশধর লাইয়াস ছিলেন থিবস নগরের রাজা । রানীর নাম জোকাস্টা। রাজদম্পতি নিঃসন্তান ছিলেন। সেকালে দৈববাণী শোনার জন্য ডেলফাই তে অবস্থিত দেবতা অ্যাপোলোর উপাসনালয়ে যাওয়ার চল ছিল । দৈববাণী করে পুরুষ নয়, নারী পুরোহিতরা-এদের বলে পিথিয়া। থিবস এর রাজদম্পতি সন্তানহীনতার কথা বলা হল। পিথিয়ার মাধ্যমে ভয়ানক এক দৈববাণী হল: লাইয়াস এর ছেলে হবে এবং সে ছেলে লাইয়াস কে খুন করে জোকাস্টা কে বিয়ে করবে।



প্রাচীন গ্রিসে ডেলফাই এর অবস্থান। এই উপাখ্যানে বারবার ডেলফাই এর আলোর দেবতা অ্যাপোলোর উপাসনালয়ের কথা আসবে। কোরিন্থ উপসাগরের ৬ মাইল উত্তরে ও পার্নিসাস পাহাড়ে দক্ষিণ ঢালে দেবালয়টি অবস্থিত।

দৈববানী শুনে রাজকীয় পরিবারের সবাই এবং থিবস এর জনগন দারুন বিমর্ষ হয়ে পড়ল। যা হোক। জোকাস্টার এক ছেলে হল! হলে কী হবে। রাজা লাইয়াস নবজাতকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেবেন বলে কঠিন সিদ্ধান্ত নিলেন। (এই কঠিন সিদ্ধান্তের প্রতি রানী জোকাস্টার কী প্রতিক্রিয়া ছিল; বড় জানতে ইচ্ছে করে।)
এক বিশ্বস্ত দাসকে ডেকে রাজা লাইয়াস বললেন, এটাকে সাইথিরন পাহাড়ে ফেলে রেখে আয়।
ধরা যাক সেই দাসের নাম ডায়োমিডিস। ডায়োমিডিস বলল, এক্ষুণি যাচ্ছি প্রভু।
আর শোন।
বলুন প্রভূ।
প্রান্তরে ফেলে এটার দুই পায়ে তীক্ষ্ম শলাকা প্রবিষ্ট করবি।
আমি তাইই করব প্রভু। ডায়োমিডিস বলল।
ডায়োমিডিস নবজাতককে কাপড়ে মুড়িয়ে সাইথিরন পাহাড়ে নিয়ে আসে। চারিদিকে ঘন অরণ্য, রুক্ষ প্রান্তর; ডায়োমিডিস নবজাতককে রুক্ষ প্রান্তরে ফেলে এবং কচি পায়ে শলাকা বিদ্ধ করে। নবজাতকের আর্ত চিৎকারে বনভূমি কেঁপে ওঠে। ডায়োমিডিস নবজাতককে ফেলে রেখে চলে যায়।
ভেড়ার পাল নিয়ে করিন্থের এক মেষপালক ধারে কাছেই ছিল । ধরা যাক তার নাম থিওক্লাইমেনাস। থিওক্লাইমেনাস শিশুর কান্না শুনে কৌতূহলী হয়ে ওঠে। রুক্ষ প্রান্তরের ওপর নবজাতককে কাঁদতে দেখে যা বোঝার বুঝল সে । চকিতে মনে পড়ল কোরিন্থ এর রাজা পলিবিয়াস আর রানী মেরোপ-এর কথা; তারাও ছিল পুত্রকন্যাহীন। রাজা-রানী কি এই ফুটফুটে শিশুকে দত্তক নেবেন। নবজাতককে কোলে তুলে নিতে নিতে মেষপালক থিওক্লাইমেনাস ভাবল।
সে নবজাতককে কোরিন্থ নিয়ে আসে।
কিন্তু, কোথায় কোরিন্থ?



কোরিন্থ এর মানচিত্র।

ফুটফুটে শিশুটিকে দেখেই রানী মেরোপ বুকে তুলে নিলেন। রাজা পলিবিয়াস -এর মুখচোখও উজ্জ্বল হয়ে উঠল। শলাকা বিদ্ধ করায় শিশুটির পা ফুলে গেছে। পা ফোলা বলে শিশুটির নাম রাখলেন ...স্ফীতপদ বা Oedipus । শরীরের কোনও অংশে পানি জমে ফুলে ওঠাকে বলে শোথ। এর ইংরেজি Oedema বা edema ... এ দুটোর শব্দের উদ্ভবও ওই Oedipus শব্দ থেকে।
যাক।
এরপর অনেক বছর কেটে গেল।



কোরিন্থের একটি প্রাচীন প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ ; এখানেই হয়ত এক রক্তাক্ত পায়ের শিশুকে নিয়ে এসেছিল মেষপালক থিওক্লাইমেনাস ...

একদিন এক মাতাল, সম্ভবত মেষপালক থিওক্লাইমেনাস-এর বন্ধু, সে ইডিপস কে বলল, শোন ইডিপস। রাজা পলিবিয়াস আর রানী মেরোপ; তোমার আসল বাবা-মা নন।
মানে!
আমার কথা বিশ্বেস হল না তো? যাও ওদের কাছে গিয়ে জিগ্যেস করো গে যাও।
ইডিপাস রাজারানীর কাছে গিয়ে জিগ্যেস করল, তোমরা কি আমার সত্যিকারের মা-বাবা নও? তোমরা কি আমার পালক মা-বাবা?
না তো। রাজারানী শ্রেফ অস্বীকার করলেন।
মাতালের কথাটা মাথার ভিতরে ঘুরছিল।
ইডিপাস ডেলফাই এল।



জন কোলিয়ার এর আঁকা ডেলফাইয়ের নারী পুরোহিত (পিথিয়া)




ডেলফাই। এখনকার ছবি

ডেলফাই-এর নারী পুরোহিত পিথিয়া। সে ইডিপাস- এর প্রকৃত মা বাবা কে -সেটি না বললেও বলল যে ইডিপাস বাবাকে হত্যা করে বিয়ে করবে মাকে।
এই কথা শুনে ইডিপাস ঠিক করল সে আর কোরিন্থ ফিরে যাবে না।
থিবস নগরীর দিকে যেতে থাকে ইডিপাস ।
এবং ডাভলিয়া নামে একটি জায়গায় এসে দাঁড়াল সে । আসলে ডাভলিয়া একটি তিন রাস্তার মোড়। একটি রথ আসছিল। রথে ছিলেন মাঝবয়েসী একজন অভিজাত ব্যক্তি । রাস্তা পেরুনো নিয়ে তার সঙ্গে ইডিপাস এর বাঁধল তর্ক। এক পর্যায়ে আত্বরক্ষার্থে ইডিপাস তাকে হত্যা করে ফেলে।
ইডিপাস যাকে হত্যা করল সেইই ছিল তার বাবা- লাইয়াস!
তারপর ইডিপাস থিবস নগরীর দিকে হাঁটতে থাকে। থিবস নগরীর তোড়ণ দ্বারের বাইরে একটি স্ফিংকস-এর দেখা পেল। স্ফিংকসটি দেখতে অদ্ভূত! অর্ধেক নারী অর্ধেক সিংহর মতন- আবার পাখির মতো ডানাও আছে। সে প্রায়ই থিবস এ এসে অত্যাচার করত। স্ফিংকস এর জ্বালায় থিবসবাসী অতিষ্ঠ । স্ফিংকস সবাইকে ধাঁধা জিগ্যেস করে। সঠিক উত্তর দিতে না পারলে খেয়ে ফেলে।



স্ফিংকস ও ইডিপাস


ধাঁধাটি হল: একটি মাত্র কন্ঠস্বর সকালে চার পায়ে হাঁটে আর দুপুরে দু পায়ে আর তিন রাতে-কি?
মানুষ। ইডিপাস বলল। আরও বলল, নবজাতক চার পায়ে হামাগুঁড়ি দেয়, বড় হয়ে মানুষ দুই পায়ে হাঁটে, আর বৃদ্ধ হলে লাঠি ব্যবহার করে।
ধাঁধার উত্তর পেয়ে স্ফিংকস নিজেকে হত্যা করে।
থিবস বিপদমুক্ত হল।
ইডিপাস থিবস এর রাজা হল। সদ্য বিধবা রানী জোকাস্টা কে বিয়ে করল। জনগন ভাবল- স্ফিংকসই লাইয়াসকে হত্যা করেছে ।
এরপর সুখে দিন কাটতে লাগল।
ইডিপাস-এর ঔরসে জোকাস্টার গর্ভে দুই ছেলে- ইটিওক্লেস ও পলিনেইসিস এবং দুই মেয়ে- ইসমেন ও অ্যান্টিগনির জন্ম হয়।
এরপর থিবস-এ প্রাণঘাতী মরক দেখা দিল; সে ভয়াবহ মহামারীতে জনপদ উজার হতে লাগল।
থিবস নগরে বাস করতেন এক অন্ধ পয়গম্বর; নাম তাঁর টাইরেসিয়াস। টাইরেসিয়াস বললেন, মরকের হাত থেকে বাঁচতে হলে রাজা লাইয়াস হত্যার বিচার করতে হবে। সম্ভবত দাস ডায়োমিডিস-যে কিনা শিশু ইডিপাসকে সাইথিরন পাহাড়ে খোলা প্রান্তরে রেখে এসেছিল- টাইরেসিয়াস কে সব খুলে বলেছিল। দাস ডায়োমিডিস ইডিপাসের পায়ের ক্ষত দেখে চিনতে পারে। অন্ধ পয়গম্বর টাইরেসিয়াস ইডিপাস কে সব ইতিবৃত্ত খুলে বলে। ইডিপাস জানতে পারল সেইই পিতার ঘাতক ও আপন মায়ের সঙ্গে অজাচারী সম্পর্কে লিপ্ত। সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে।
থিবস নগরে অজাচারের কথা ছড়িয়ে যায়।
রানী অজাচারী জীবনের কথা ভেবে ক্ষোভে ঘৃনায় আত্বহত্যা করলেন। রানী আর বেঁচে নেই আর সন্তানেরা অভিশপ্ত ... প্রবল ধিক্কারে নিজের চোখ উপড়ে ফেলে ইডিপাস ... এরপর সিংহাসন ত্যাগ করে ...
গ্রিক নাট্যকার সফোক্লেস ‘ইডিপাস দি কিং’ নাটকে এই বিষয়টি নিয়েই লিখেছেন। ‘ইডিপাস দি কিং’ নাটকটি সফোক্লেস রচিত সাতটি ট্র্যাজিডির অন্যতম। সফোক্লেস কেই অন্যতম গ্রিক নাট্যকার বলে মনে করা হয়; যিনি বলেছিলেন: I depict men as they ought to be, but Euripides (আরেকজন গ্রিক নাট্যকার) portrays them as they are.
কী অসাধারন কথা!
‘ইডিপাস দি কিং’ নাটকে থিসব নগরীর অন্ধ পয়গম্বর টাইরেসিয়াস কে দিয়ে সফোক্লেস বলিয়েছিলেন:

How dreadful knowledge of the truth can be
When there’s no help in truth!

কী অসাধারন কথা!



সফোক্লেস

সফোক্লেস -এর ‘ইডিপাস দি কিং’ নাটক থেকে কিছু অংশ পাঠ করলে গ্রিক নাটকের সৌন্দর্য ও নাট্যকার সফোক্লেস -এর অনন্য সাধারণ প্রতিভা সম্বন্ধে আঁচ করা যায় ...

OEDIPUS: Ah! Ah! Where has this misery brought me? Is this my own voice I hear—carried on the wings of the air? O Fate! What have you done to me?
CHORUS: Terrible! Too terrible to hear! Too terrible to see!
OEDIPUS: O cloud of darkness! Cruel! Driven by the winds of fate! Assaulting me! With no defense to hold you back! O God! The pain! The pain! My flesh aches from its wounds! My soul aches from the memory of its horrors!
CHORUS: Body and soul—each suffers and mourns.
OEDIPUS: Ah! You still remain with me—a constant friend. You still remain to care for me—a blind man now. Now there is darkness and I cannot see your face. But I can hear your voice and I know that you are near.
CHORUS: O my Lord, how could you have done this? How could you blind yourself? What demon drove you?
OEDIPUS: Apollo! It was Apollo! He brought this pain, this suffering to me. But it was my own hand that struck the blow. Not his. O God! Why should I have sight when all that I would see is ugliness?
CHORUS: It is as you say.
OEDIPUS: What is there for me to see and love? What sight would give me joy? What sound? Take me away! Take me out of this land! I am cursed! Doomed! I am the man most hated by the gods!
CHORUS: You have suffered equally for your fortune and for your disaster. I wish that you had never come to Thebes.
OEDIPUS: Damn the man who set me free! Who loosed the fetters from my feet and let me live! I never will forgive him. If he had let me die, I would never have become the cause—the grief ...
CHORUS: I wish that it had been this way.
OEDIPUS: If it had been, I would not have come to this—killer of my father, bridegroom of the woman who gave me birth, despised by the gods, child of shame, father and brother to my children. Is there any horror worse than these—any horror that has not fallen upon Oedipus?
CHORUS: My Lord, I cannot condone what you have done. You would have been better dead than alive and blind.
OEDIPUS: I did what I had to. You know I did. No more advice. Could these eyes have looked upon my father in the house of Hades? Could these eyes have faced my mother in her agony? I sinned against them both—a sin no suicide could purge. Could I have joy at the sight of my children—born as they were born? With these eyes? Never! Could I look upon the city of Thebes? The turrets that grace her walls? The sacred statues of her gods? Never! Damned! I—the noblest of the sons of Thebes—I have damned myself. It was I who commanded that Thebes must cast out the one who is guilty, unholy, cursed by the heavenly gods. I was the curse of Thebes! Could these eyes look upon the people? Never! And if I could raise a wall to channel the fountain of my hearing, I would spare nothing to build a prison for this defiled body where sight and sound would never penetrate. Then only would I have peace—where grief could not reach my mind.

উৎস:: Sophocles. Oedipus Tyrannus, trans. and ed. by Luci Berkowitz and Theodore F. Brunner. New York: W.W. Norton & Co., 1970.

অনুতপ্ত ইডিপাস আরও কয়েক বছর থিবসে বাস করেন।
এরপর বিতাড়িত হন।
কন্যা অ্যান্টিগোনের সঙ্গে বহু বছর একত্রে গ্রিসের এখানে-ওখানে পরিব্রাজকের জীবন যাপন করেন।



কন্যা অ্যান্টিগোনের সঙ্গে থিবস নগর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন ইডিপাস।

একদিন। পথে দেবতা অ্যাপোলোর সঙ্গে দেখা হল। দেবতা বললেন, এথেন্সের দিকে যেতে।
কেন বললেন? দেবতারা চিরকালই রহস্যময়।
অবশেষে কোলোনাস নামে এক বৃক্ষকুঞ্জতে উপস্থিত হল ইডিপাস ও অ্যান্টিগোনে। কোলোনাস ছিল এথেন্সের কাছে আর জায়গাটা ছিল পবিত্র দেবী ইউমেনিদেস এর পীঠস্থান ।



মানচিত্রে এথেন্স।এথেন্সের রাজা তখন থিসিউস। রাজা থিসিউস ইডিপাস কে আশ্রয় দান করেন ।

ইডিপাস কাতর কন্ঠে রাজা থিসিউস কে জিগ্যেস করলেন, আমি যদি এখানে মারা যাই তাহলে স্থানটি কি পবিত্র থাকবে?
হ্যাঁ। আপনি এখানে দেহ রাখলে এথেন্স নগরের প্রভূত উন্নতি হবে। রাজা থিসিউস বললেন।
এর কিছু কাল পরে ইডিপাস শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।
বিষন্ন অ্যান্টিগোনে ফিরে যায় থিবস-এ ।
শুরুতে বলেছিলাম: ইডিপাস-এর এই বিয়োগান্তক কাহিনীর আকর্ষন এতই তীব্র যে প্রাচীন গ্রিক নাট্যকার সফোক্লেস থেকে আরম্ভ করে বিংশ শতকের মনঃবিশ্লেষক সিগমন্ড ফ্রয়েড অবধি বিয়োগান্তক আখ্যানটি ব্যবহার করেছেন । যে কারণে ইডিপাস-এর বিয়োগান্তক কাহিনী এখানেই শেষ হয়ে যায়নি।
ফ্রয়েড কথিত মনঃসমীক্ষণে ইডিপাস গূঢ়ৈষা বা Oedipus Complex বলে একটা পরিভাষা রয়েছে। উনিশ শতকের শেষের দিকে অস্ট্রিয়ান মনস্তত্ত্ববিদ ও মনঃসমীক্ষণের পথিকৃৎ সিগমুন্ড ফ্রয়েড ইডিপাস গূঢ়ৈষা পরিভাষাটি প্রথম উল্লেখ করেন। ফ্রয়েডের মতে একটি বালকের জীবনে ইডিপাস গূঢ়ৈষা সবচে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা । যা পরবর্তীকালে তার প্রাপ্ত বয়স্ক জীবনকেও প্রভাবিত করে। শিশুকালে মায়ের প্রতি ছেলের অবচেতন যৌন আকর্ষন এবং তার ফলে বাবার প্রতি ঈর্ষাই হল ইডিপাস গূঢ়ৈষা এবং এই ইডিপাস গূঢ়ৈষার ফলেই বালক গ্লানি বোধ করে সেই সঙ্গে তীব্র আবেগীয় সংঘাত টের পায়।



আধুনিক গল্প/উপন্যাসে ফ্রয়েড কথিত মনঃসমীক্ষণ ঘুরেফিরেই আসে কাজেই ইডিপাস গূঢ়ৈষা ...যে ধারণা মূলে রয়েছে ইডিপাস নামে এক হতভাগ্য পুরুষ: যার জীবনের শেষ সুরটি ছিল বিষাদের ...
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ২:১৩
৩৩টি মন্তব্য ৩২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×