( " মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ "
প্রিয় পাঠক ও ব্লগার বন্ধু গণ, আসুন আমরা একটা ভালো কাজকে সবাই সমর্থন করি। দাবিটি যৌক্তিক মনে হলে, সকলেই Comments ও Share করুন)
ভাবা স্বাভাবিক, এ কেমন অসভ্য শ্রীহীন নামকরণ! আসলে, বাঁধ ভাঙা আবেগ এমন নামকরণের দুর্ভাগা জন্মদাতা! আলোচনায় পা বাড়াচ্ছি বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমকে ঘিরে। কিছু বিষয়,ঘটনা আর ব্যক্তি নিশ্চয়ই পারিবারিক কিংবা নেহাত ঘরোয়া সম্পদ নয়। বরং একটি দেশ ও জাতির সর্বকালের ইতিহাস আর সংস্কৃতির পতাকা উড্ডয়নের চিরস্মরণীয় শক্ত স্তম্ভ হয়ে উঠে। রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের মত মনীষীগণ দেশে- দেশে প্রকৃতি আর মানুষের কৃষ্টি, সাহিত্য -সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করে স্মরণীয় বরণীয় হয়েছেন, হয়েছেন সমাদৃত।
এমনি করে, বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম আন্তর্জাতিক বিশ্বে না হলেও তিনি অন্তত বাংলা ভাষাভাষি মানুষের জীবন দর্শন, ধর্ম আর মানবতার জয়ধ্বনি করেছেন তাঁর রচিত গানে গানে! বাউল সম্রাট আজ বড়ই একা! তাঁর সাথে নেই দেশ,জাতী এমনকি তাঁর জন্মভূমি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের উজানধল গ্রামের অভাগা মানুষেরাও!
বাউল সম্রাট আবদুল করিম দুনিয়াতে নেই আজ বহুদিন! তবু তিনি বেঁচে ছিলেন তাঁর রচিত গান আর সুর নিয়ে মানুষের হৃদয় কোঠায়! আজ তাঁর সম্মান ধুলিস্যাৎ করে চির কবর রচনায় মেতে উঠছে কিছু কুচক্রী মহল।
২১ শে পদক প্রাপ্ত ভূমিহীন বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমকে ১৯৬৪ খ্রি. সালে প্রশাসন প্রায় ৫৭ বছর আগে জালালপুর গ্রামের পাশে জালালপুর মৌজায় ২ একর ১১ শতক জমি স্থায়ীভাবে বন্দোবস্ত দেয় বলে জানা যায়। বাউল সম্রাটের নামে রেকর্ড ভূক্ত এ জমির খাজনাও অদ্যাবধি পরিশোধ করছেন বাউল সম্রাটের অভাগা পুত্র শাহ নূর জালাল। সম্রাট বেঁচে থাকতে নিজস্ব একটু মাটির ঠিকানা খুঁজতে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েও দখল পাননি এ জমির। নিয়তির নিষ্ঠুর খেলায় পরাজিত সম্রাট পুত্র শাহ নূর জালাল আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে ডুকরে কাঁদছেন দুয়ারে-দুয়ারে! জানা যায় তাড়ল গ্রামের বাসিন্দা প্রভাবশালী খলিল চৌধুরীর পরিবারের (তথ্য সুত্রঃ প্রথম আলো) পেশিশক্তি সম্রাট পুত্র শাহ নূর জালালকে বীরদর্পে আজও জমি দখল নিতে বাধা প্রদান করছে।
এ অবস্থায় সরকার সম্রাটকে ২১ শে পদক দিয়ে দায়িত্ব সেরে হাত- গুটিয়ে নিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্ন বাউল সম্রাট প্রেমি অগণিত মানুষের!
ভেবে দেখুন তো, জাতীয় সম্মান প্রাপ্ত (২১শে পদক) বাউল সম্রাটের মত একজন নিঃস্ব ভূমিহীন মনীষি গোটা দুনিয়ায় আছে কতজন? বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম কেঁদে কেঁদে আক্ষেপে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করলেও দখল মুক্ত হয়নি বলে চির নিদ্রায় শুতে পারেননি নিজস্ব সাড়ে তিন হাত কবরে! এটা কেমন ইসরাইলি শক্তি যে ৫৭ বছরেও দখল মুক্ত করা যায়নি বাউল সম্রাটের ন্যায্য অধিকারের ২ একর ১১ শতক জমি! বোধ হয়, সে কারণেই শাহ আবদুল করিম মৃত্যু শয্যায় গানে গানে সুরে সুরে বলে গেছেন -"বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে!
সুধী পাঠক, বিশ্বাস একান্তই আপনার ব্যক্তিগত বিষয়। আমি যেমনি বাউল সম্রাট পরিবারের কেউ নই তেমনি দালালও নই।আমি সম্রাটের বিষয়ে খুব বেশি কিছু জানি তাও নয়। সম্রাট পুত্র শাহ নূর জালাল সাবকেও জানা নেই অদ্যাবধি!
মানবতার পূজারী এমন একজন মহান ব্যক্তিকে ৫৭ বছর ধরে অসম্মানের ধারালো নখে বুক চিরে রক্ত গিলছি এটা ভেবে দারুণ ভাবে আমি হয়েছি আহত! আর লজ্জায় ধিক দিয়েছি নিজেকে!
প্রতিভা মূল্যায়নে অভ্যস্ত সাহিত্য প্রেমী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বেশ কবার লিখেছি। বাহবাও দিয়েছি কলংক মোচনী ইতিহাসের সুকন্যা বলে! আজ আর সেদিকে যাব না--। বড় আশা নিয়ে আজ ভরসা করছি জননেত্রীকে। একমাত্র অসুর মর্দিনী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীই পারেন ৫৭ বছরের অপমানের হাত থেকে বাউল সম্রাটকে বাঁচাতে! পেশি শক্তির হাত থেকে পুণঃউদ্ধার করে উপহার দিতে পারেন ২ একর ১১ শতক জমি সম্রাট পুত্র শাহ নূর জালালকে!
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার ধারণা প্রকৃতি গত ভাবেই আপনি এমন যে, এ বিষয়টি সুরাহায় নিজেই উদ্যোগি হয়ে শক্ত হাত প্রসারিত করবেন!
কি সাংঘাতিক বিস্ময়কর! জালালপুরের কতিপয় বাসিন্দা গণ আবারো কুবাক্যে মেতেছেন! ২ একর ১১ শতক জায়গাটি গোচারণ ভূমি হিসেবে ব্যবহার করতে চান!তারা চান সম্রাটের ২ একর ১১ শতক জায়গাটি গবাদিপশু চড়াবার রাস্তা বানাতে!
বিষয় টি এমন যেন, মনুষ্য নয় বরং অধম গরুই উত্তম ---!!
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০২১ রাত ১০:৪৯