১. ফেনীর ত্রাস ছিলেন জয়নাল হাজারী। ২০০১ সালের আগে সাংবাদিক টিপু সুলতানকে নির্মম ভাবে অত্যাচার করে আহত করে হাজারীর স্টিয়ারিং কমিটি'র সদস্যরা। তারপর থেকে ক্রমাগত ভাবে হাজারীর বিরুদ্ধে রিপোর্ট করেছিল প্রথম আলো। ১৯৯৬-২০০১ টার্মের আওয়ামী লীগের জন্য যেসব ব্যক্তি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাদের নিয়ে ক্রমাগত প্রথম আলো রিপোর্ট করত। যেমন -
* কলাবাগানে আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর বাড়ি দখল করার খবর
* ব্যবসায়ী শিপু হত্যার জন্য কামাল হোসেন মজুমদার বিরোধী খবর
* মোহাম্মদপুরের মকবুল হোসেন
* পুরান ঢাকার হাজী সেলিম
* জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা মানিকের সেঞ্চুরী
* লক্ষ্মীপুরের আবু তাহের
* নারায়ণগঞ্জের শামীম উসমান, আলতাফ হোসেন গোলন্দাজ
ইত্যাদি
২. এদের নিয়ে কিছুদিন পর পরই প্রথম আলো খবর ছাপত। ফলোয়াপও ছাপত। ঐ সময় আওয়ামী লীগ বিরোধী জনমত গঠনে পরোক্ষ ভাবে ভূমিকা রেখেছিল প্রথম আলো। সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা হিসেবে জনগণও আওয়ামী লীগকে ঘৃণা করতে শুরু করে। যার ফলে ২০০১ সালে বিএনপি জোট ল্যান্ড স্লাইড ভিক্টোরি অর্জন করে...
৩. ২০০১-২০০৬ টার্মের বিএনপি'র সময় প্রথম আলো আবার তার নীতি পরিবর্তন করে। এবারও তারা সরকারী দলের(বিএনপি) এমপি/মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক সংবাদ ছাপতে শুরু করে। কার্টুন, সমালোচনা ছাপতে থাকে। যেমন -
* আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গিয়েছে
* বাংলা ভাই, জেএমবি নিয়ে খবর। অথচ এদের গ্রেফতার ও বিচার বিএনপি-ই করেছিল( ফাঁসি কার্যকর হয়েছিল ১/১১'র সরকারের সময়)
* হাওয়া ভবন
* কানসাট
* ১০ ট্রাক অস্ত্র
* লুৎফুজ্জামান বাবর
* নাজমুল হুদা
* ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা
ইত্যাদি
৪. স্বাভাবিক ভাবেই তখন আবার বিএনপি বিরোধী মনোভাব বৃদ্ধি পায়। পরে স্বাভাবিক নির্বাচন আর হয়নি ২ বছর। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। সব সময় সব সরকারের সঠিক সমালোচনা করে বলেই প্রথম আলো সবচেয়ে জনপ্রিয় পত্রিকা। যদিও যত নিরপেক্ষই হোক না কেন, তারা যে বিএনপি পন্থী নয় এটাও সবাই জানে...
৫. ১/১১'র পেছনেও এই দুই সম্পাদকের ভূমিকা ছিল বলে অনেকে মনে করে থাকেন। এবার ভোটের কয়েকদিন আগে মেজর মান্নানকে পচানো, ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিয়ে খবর, ব্যাংকিং খাতের লুটপাট নিয়ে খবর, সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়ার আশংকা নিয়ে নিয়মিত কলাম ইত্যাদি মনে হয় অন্য কোন ইঙ্গিত বহন করছে। প্রথম আলো বরাবরই কামাল হোসেনের মত প্রগতিশীলদের মতবাদ ধারণ করে থাকে। ডান পন্থীও না, বামপন্থী হলেও আওয়ামী লীগ না। তাই, কামাল হোসেন গং-দের ঐক্যফ্রন্টে যাওয়ার কারণে প্রগতিশীলদের একটা ব্লক এবারে অন্ধ ভাবে আওয়ামী লীগের পক্ষে নেই...
৬. শেখ হাসিনা কিছু আঁচ করতে পারছেন কিনা জানি না। ৩ আসনে দাঁড়ানোর সুযোগ থাকলেও মনোনয়নি জমা দিয়েছেন ২ আসনে। পরে ১ আসন ছেড়ে দিয়ে প্রথমবারের মত মাত্র ১ টি আসনে নির্বাচন করছেন। জোট হওয়ার পরও জাতীয় পার্টি ১৩২ আসনে আওয়ামী লীগের সাথেই ভোটে থাকছে! কাজেই, সব কিছু ঠিক ঠাক থাকলে ৩০ ডিসেম্বর মনে হচ্ছে খেলা হবে...