
১. ৫ই আগস্টের মত মুহূর্ত কোন দেশে ১৫/২০ বছর পর পর একবার আসে। বাংলাদেশে এর আগে ১৯৯০-এ এরশাদের পদত্যাগের পর, ২০০৭ সালে ১/১১-এর সময় এরকম সুযোগ এসেছিল। সুযোগটা হল, দেশটাকে নতুন করে গড়ে তোলা। কিন্তু ১৯৯০ আর ২০০৭ সালের সুযোগপ্রাপ্তরা ছিলেন আগের জমানার চেতনা ব্যবসায়ী ও স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনীতির অগ্রজ বলে দাবিদারেরা। তেনাদের বয়সও তেমন বেশী ছিল না ও খাওয়র লোভও কমেনি তখনও। তাই তেনারা সুযোগ পেয়েই আবার আগের দুর্নীতি, লুটপাট করে দেশ চালিয়েছেন...
২. তবে ২০২৪ সালের ৩৬শে জুলাইয়ের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এবার সুযোগ হাতের কাছে এসেছে একদম তরতাজা তরুণদের হাতে যারা কিনা ’সুযোগ পাওয়ার আগ পর্যন্ত সৎ’ নাগরিক হিসেবে গণ্য। যারা কিনা ’ঘুষ খাওয়ার জন্য বিসিএস, পুলিশ’(সবাই না) না হওয়া যুবক গোষ্ঠীর অন্তর্ভূক্ত। যারা কিনা বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিল...
৩. তাদের শুরুটাও চমৎকার ছিল। তারা চাইলে ৫ই আগস্টে বিপ্লবী সরকার গঠন করতে পারত (অনেকের মতে সেটাই করা উচিত ছিল)। ড. ইউনুসকে সিলেক্ট করাটাও তাদের সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল বলে মনে করি। তাদের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল অন্তবর্তী সরকারের মধ্যে উপদেষ্টা যাদের নেয়া হয়েছে সব আগের জমানার লোকদের। ঐ সময় উপদেষ্টাদের মধ্যে ছাত্রদের প্রতিনিধি মাত্র ২ জন ছিল। অথচ যদি ৮/১০ জন ছাত্র সেদিন উপদেষ্টা হত, তাহলে আজকে জুলাই শহীদদের ক্ষতিপুরণ আদায় হত, সংস্কার শেষ হত, নির্বাচনে আবার নতুন করে পুরোনো দুর্নীতিবাজরা আসার সুযোগ পেত না....
৪. কিন্তু না, তেনারা রাজনীতি করবেন। নাহিদ বের হয়ে গেল উপদেষ্টা মন্ডলী থেকে। নতুন দল করল ছাত্ররা। সাথে সাথেই তারা আর আগের আবেগের জায়গায় থাকল না। দল করার আগেই সমন্বয়কদের কেউ কেউ হয়ে গেল চাঁদাবাজ, কোটি টাকার মালিক। দল করার পর তাদের এত ফান্ডিং কিভাবে হচ্ছে তার কোন যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যা নেই। তাদের লাইফস্টাইল বদলে যাওয়ার কোন ব্যাখ্যা নেই। জুলাই শহীদদের ক্ষতিপূরণ আদায়ও হয়নি। জুলাই আহতদের জন্য স্থায়ী কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। যেসব প্রস্তাব আসছে, সেগুলো নতুন সরকার চালিয়ে নিবে কিনা যথেষ্ট সন্দেহ আছে...
৫. তাদের উচিত ছিল প্রেসার গ্রুপ হিসেবে উপদেষ্টা মন্ডলীতে থাকা। সঠিক সংস্কারগুলো সংবিধানে যুক্ত করা। আজাইরা আলী রিয়াজের শত শত সংস্কার নয়। বিশেষ করে এত গুলো মানুষ যে প্রাণ দিল, তাদের পরিবারগুলোকে এককালীন ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা। যেন এটা নিয়ে ভবিষ্যৎে নতুন ব্যবসা না দাঁড়ায়। এসব না করে এখন আগের সিস্টেমে ভোটে দাঁড়িয়ে যাকে তাকে নমিনেশন দিয়ে স্ট্যান্ডবাজি করে গোল্ডফিস মেমোরির জনগণের কাছে কোন পাত্তা পাওয়া যাবে না...
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:০৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


