অসীম শুন্যতায় কেউ নেই, কিছু নেই
আপন প্রকাশের গোপন জ্বালা
চারিদিকে সৃস্টির ফিসফাস গুঞ্জন
কুন। ফাইয়াকুন।
আবির্ভাব হয় সৃস্টির
স্বত্বার। অনস্তিত্বে অস্তিত্বের;
জগতবাসি দেখে এক পবিত্র জনম-
অভিবাদন- হে ইমাম হোসাইন।
শানে হোসাইন বলেন প্রিয় হযরত খাজা মুঈনউদ্দিন –
“শাহ আস্ত হোসাইন, বাদশাহ্ আস্ত হোসাইন
দিন আস্ত হোসাইন, দিন পানাহ আস্ত হোসাইন
সারদাদ নাদাদ দাস্ত দার দাস্তে ইয়াযীদ
হাক্কাকে বিনায়ে লা ইলা আস্ত হোসাইন”
অনুবাদে অনুভবে বুঝে নেই বান্দা নাদান-
“জগতের সম্রাট হলেন হোসাইন, বাদশাহ হোসাইন,
ধর্ম হলেন হোসাইন, ধর্মের আশ্রয় দাতা হোসাইন,
দিলেন মাথা, না দিলেন হাত ইয়াযীদের হাতে
সত্য তো এই যে, লা-ইলাহার স্তম্ভ হোসাইন”
আপনি মহান অন্যতম অনন্যগুচ্ছে পবিত্র পাঞ্জাতন
গ্রহণ করুন এই নিবেদন জানাই গুনাহগার নাদান
মহাকাল কুর্নিশ করে স্মরনের মিনারে জপে ইয়া হোসাইন,২
শুভ জন্মদিনে সকলে জানায় অভিবাদন, জানাই অভিবাদন।
হে ইমামুল জান্নাতাইন, ইমামুশ শোহাদা
যুবকদের সর্দার, কারবালার পবিত্র প্রাণ
আত্মত্যাগের মহিমায় ভরপুর; শুভ জন্মদিনে
সালাত ও সালাম চরণে আপনার।
সংক্ষিপ্ত কিছু তথ্য:
আজ ৫ শাবান। ইমাম হোসাইন আ: এর জন্মদিন। উনার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে অধম গুনাহগারের সামান্য নিবেদন। ইমাম আল-হোসেইন ইবন আলী ইবন আবি তালিব (হুসেইন বানান-ও প্রচলিত) ৩/৫ শাবান ৪ হি. জন্ম গ্রহন করেন। তিনি ছিলেন ইসলামের খোলাফায়ে রাশিদীন-এর সর্বশেষ খলিফা ও ইমাম আলী ইবন আবি তালিব এবং হয়রত মোহাম্মদ সা : এর কন্যা ফাতিমা জাহরা-এর পুত্র ও হাসান ইবন আলী-এর কনিষ্ঠ ভ্রাতা। হোসেইন ইমাম হিসেবে ও আহল আল-বায়াত বা নবী পরিবারের সদস্য এবং আহল আল-কিসা* -এর সদস্য হিসেবে ইসলামের একজন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব।
* হাদিস আল কিসা বা চাদরের হাদিস
হাদীসটিকে হাদীস আল-কিসা” (চাদরের হাদীস) বলা হয় , কারণ আয়াতে তাতহীর যখন নাজিল হচ্ছিল তখন মহানবী (সাঃ) এবং তার আহলে বাইতের সদস্যবর্গ একটি চাদর– দ্বারা নিজেদের আবৃত করে রেখেছিলেন ; এর মাধ্যমে তারা অন্য লোকদের হতে নিজেদেরকে পৃথক করে চিহ্নিত করেছিলেন । আরবী ভাষায় ঐ ধরণের চাদরকে‘ আবা’ বা‘ কিসা’ বলা হয় এবং অধিকাংশ হাদীসেই‘ কিসা’ শব্দ– দ্বারা ঐ অর্থ বুঝানো হয়েছে । এই কারণে তাদেরকে আসহাব আল-কিসা” এবং পাঞ্জাতন আলে আবা” হিসেবেও ভূষিত করা হয়”
প্রথমে আমরা হাদিস টি দেখি।
১ম বর্ণনা কারি হজরত আয়েশা (রাঃ)
একদিন মহানবী (সাঃ) তার একটি ছাপা চাদর নিয়ে ঘর হতে বের হলেন । এমন সময় হাসান (আঃ) তার নিকট আসলেন এবং মহানবী (সাঃ) তাকে কাছে নিলেন এবং চাদরের নিচে আবৃত করে নিলেন । তারপর হুসাইন (আঃ) আসলেন এবং মহানবী (সাঃ) তাকেও চাদরের নিচে আবৃত করে নিলেন । অতঃপর ফাতেমা (আঃ) কাছে আসলেন এবং তাকেও চাদর দিয়ে আবৃত করা হলো । সবশেষে আসলেন আলী (আঃ) এবং তাকেও চাদরের নিচে আবৃত করে নেয়া হল । অতঃপর তিনি (মহানবী সাঃ) এই পবিত্র আয়াতটি তেলাওয়াত করলেনঃ হে আহলে বাইত! আল্লাহ তো কেবল চাহেন তোমাদিগ হতে অপবিত্রতা দুর করতে এবং তোমাদিগকে সম্পূর্ণ রূপে পবিত্র করতে” (সূরাঃ আহযাব ৩৩) ।
২য় বর্ননা (বর্ননাকারি উম্মে সালমা (রাঃ)
তাবারী তার তাফসীর গ্রন্থে এই পবিত্র আয়াত সম্পর্কে উম্মে সালামা’ র নিম্নরূপ বক্তব্য উদ্ধৃত করেছেনঃ “যখন এই আয়াত, হে আহলে বাইত (নবী পরিবার)!.. নাজিল হল , মহানবী (সাঃ) আলী ,ফাতেমা , হাসান , এবং হুসাইন (তাদের সকলের উপর শান্তি বর্ষিত হোক)-কে তার নিজের কাছে ডাকলেন এবং তার চাদরের নিচে তাদেরকে আবৃত করলেন” ।
অন্য একটি হাদীসে উম্মে সালামা বলেছেনঃ তিনি তার চাদর– দ্বারা তাদেরকে আবৃত করলেন ।” এই হাদীসটি সুয়ূতিও তার তাফসীর গ্রন্থে উদ্ধৃত করেছেন এবং ইবনে কাসির তার তাফসীর গ্রন্থে একই ধরণের বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেছেন ।
মহান আল্লাহ তা’আলা আহলে বায়াতের সদস্যদের, পাক পাঞ্জাতনের সদ্যসদের কত মর্যাদায় মর্যাদাবান ককরেছেন আল কোরআনে। উনাদের নামে আয়াত নাজিল হয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু আলেম কেন এই মহা সত্য তুলে ধরছে না অবাক হয়ে ভাবি । ইয়াজিদি হিংসার অনল কি তবে এখনো কিছু পোষাকি আলেমদের মাঝে রয়ে গেছে?
কিন্তু তারা কি ভুলে যায়, যে নবীর মাধ্যমে মহা সত্য পেল, তাঁর কথা অমান্য করলে কি আর সেই সত্যে থাকা যায় না। পোষাকে নয়, আত্মার গহনে যে সত্যি আমরা সেই সত্য সন্ধানী। সবার জন্য শুভকামনা।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৯:২৬