somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢাকায় উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের পর্দা উঠছে আজ বৃহস্পতিবার

২৯ শে নভেম্বর, ২০১২ সকাল ৮:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





ঢাকায় উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের পর্দা উঠছে আজ বৃহস্পতিবার। আর্মি স্টেডিয়ামে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় উৎসব শুরু হবে। উৎসবে বাংলাদেশের সংগীতরসিকেরা বিদুষী গিরিজা দেবী, পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া, পণ্ডিত শিব কুমার শর্মা, পণ্ডিত বিরজু মহারাজ, ওস্তাদ রশিদ খান, ওস্তাদ শহীদ পারভেজ ও পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর মতো জগৎখ্যাত শিল্পীদের রাগদারি দেখার ও শোনার সুযোগ পাবেন।
‘বেঙ্গল-আইটিসি এসআরএ ক্লাসিক্যাল মিউজিক ফেস্টিভ্যাল’ শীর্ষক চার দিনের এই উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁকে। এ ছাড়া উৎসবের প্রথম দিনটি উৎসর্গ করা হয়েছে সংগীতসাধক ওয়াহিদুল হককে, দ্বিতীয় দিন ওস্তাদ বিলায়েৎ হোসেন খান, তৃতীয় দিন পণ্ডিত উদয় শংকর এবং শেষ দিন ওস্তাদ আলী আকবর খাঁকে।
বাংলাদেশের মানদণ্ডে উচ্চাঙ্গসংগীতের বড় ধরনের এ আয়োজনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে বাজাবেন ও গাইবেন ওস্তাদ শাহাদাত হোসেন খাঁ (সরোদ), এবাদুল হক (সেতার), প্রিয়াঙ্কা গোপ (কণ্ঠ), আলিফ লায়লা (সেতার) ও মুর্তজা কবির (বাঁশি)।
উৎসবটি আয়োজন করেছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন ও আইটিসি সংগীত রিসার্চ একাডেমি। উৎসবের প্রধান সহযোগী প্রথম আলো। সহযোগিতায় আছে ডেইলি স্টার ও মাছরাঙা টেলিভিশন।
আজ অনুষ্ঠানের শুরুতে থাকবে বাংলার লোকসংগীত, চর্যাপদ, বাউলগান ও পঞ্চকবির গান থেকে শাস্ত্রীয় সংগীতে উত্তরণের ইতিহাস। বিষয়টি আলো, শব্দ ও ছবির মাধ্যমে তুলে ধরবেন নাসিরুল হক।
এরপর শুরু হবে উৎসবের মূল পর্ব। শুরু হবে ওস্তাদ আলী আহমেদ হোসেনের সানাই বাদনের মধ্য দিয়ে। তিনি ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খাঁর প্রয়াণের পর সানাইয়ের ভারতীয় উত্তরসূরিদের অন্যতম। আজকের আসরে আরও বসবেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, শিল্পী শহীদ পারভেজ ও বাবা আলাউদ্দিন খাঁর সৃষ্টি সেনিয়া ঘরানার তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদার এবং উপমহাদেশের ধ্রুপদের জন্য বিখ্যাত ডাগর ঘরানার শিষ্য পণ্ডিত উদয় ভওয়ালকর।
উৎসবের দ্বিতীয় দিন শুক্রবারের প্রধান আকর্ষণ হয়ে থাকবেন কাশ্মীরের পাহাড়ের উপত্যকা থেকে শততন্ত্রী বীণাকে সন্তুরে রূপদানকারী পণ্ডিত শিব কুমার শর্মা। এদিন সংগীতরসিকদের মাতানোর জন্য আরও থাকবেন রামপুর সহসওয়ান ঘরানার ওস্তাদ রশিদ খান, কিরানা ঘরানার ওস্তাদ মশকুর আলী খান, পণ্ডিত বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত (সরোদ) ও কৌশিকী দেশিকান।
শনিবার খেয়াল, ঠুমরি, টপ্পা, ভজন, চৈতি কিংবা কাজরিতে আসর মাতাবেন বেনারস ঘরানার বিদুষী গিরিজা দেবী। কত্থক নাচে মুগ্ধ করবেন এই নাচের রাজা পণ্ডিত বিরজু মহারাজ। পণ্ডিতজি সদয় হলে নাচের পাশাপাশি দর্শক-শ্রোতাদের এক-দুটি ঠুমরিও গেয়ে শোনাতে পারেন। এ ছাড়া এককভাবে তবলায় লহরা তুলবেন পণ্ডিত কুমার বোস এবং খেয়াল কিংবা ঠুমরি গাইবেন বিদুষী শুভ্রা গুহ।
বড় মাপের শিল্পীদের উপস্থিতির কারণে উৎসবের শেষ দিনটি (২ ডিসেম্বর, রোববার) আলাদা বিশেষত্ব পাবে। এদিন উৎসবের মধ্যমণি হয়ে বাঁশি বাজাবেন বাবা আলাউদ্দিন খাঁর ঘরানার শিল্পী পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া। মৃদঙ্গমের তালে ভরতনাট্যমের ঝড় তুলবেন বিদুষী আলারমেল ভাল্লি। পণ্ডিত উলহাস কাসালকর আর দুই সহোদর পণ্ডিত রাজন মিশ্র ও পণ্ডিত সাজন মিশ্রের মতো শিল্পীরাও এদিনের আসরে গাইবেন।
উৎসবে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের বেশ কয়েকজন প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পীকেও দেখা যাবে। এঁদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন ওয়াসিম আহমেদ খান (কণ্ঠ), পূর্বায়ন চট্টোপাধ্যায় (সেতার), আরশাদ আলী খান (কণ্ঠ), ব্রজেশ্বর মুখোপাধ্যায় (কণ্ঠ), আবির হোসেন (সরোদ) প্রমুখ।



***********************

এবার চটজলদি জেনে নেওয়া যাক তাঁদের কয়েকজনের সম্পর্কে...

বিদুষী গিরীজা দেবী
ঠুমরির শেষ জীবন্ত কিংবদন্তি গিরীজা দেবী। জমিদারকন্যা তিনি। ১৯২৯ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশে জন্ম। পূরব অঙ্গের গায়কি পরম্পরায় একমাত্র জীবিত শিল্পী তিনি। পদ্মভূষণে ভূষিত এই মহীয়সী শাস্ত্রীয় সংগীত উৎসবের তৃতীয় দিন ১ ডিসেম্বর বসবেন আসরে।

পণ্ডিত বিরজু মহারাজ
তাঁর নাম বললেই কত্থকের ঘুঙুরের শব্দ কানে বাজে। পণ্ডিত বিরজু মহারাজ নামেই খ্যাত তিনি। এই নামের আড়ালে ঢাকা পড়ে গেছে তাঁর বাবা-মায়ের দেওয়া ব্রিজমোহন মিশ্র নামটি। কত্থকে অষ্টম প্রজন্মের ঐতিহ্য বহন করা এই নৃত্যকরের নাচের বৈশিষ্ট্য হলো, লক্ষেৗ ঘরানার নাটকীয়তা, দ্রুততা ও আভিজাত্য। উৎসবের তৃতীয় দিনে দর্শক তাঁর সেই নাটকীয় নৃত্যের আভিজাত্যেই মন ভেজাবেন আরেকবার।

পণ্ডিত কুমার বোস
তবলার বোল ও রাগ সংগীতের মূর্ছনায় বেড়ে উঠেছেন পণ্ডিত কুমার বোস। তাঁর মা ছিলেন শিল্পী—ওস্তাদ আলী আকবর খানের ছাত্রী। তাঁদের বাড়িতে শচীন দেববর্মণসহ বড় বড় শিল্পীর আনাগোনা ছিল। তবে বেনারস ঘরানার এই শিল্পী তবলায় প্রথম তালিম পেয়েছেন বাবা বিশ্বনাথ বোসের কাছে। এবার তিনি তবলায় নান্দনিক আবহ জাগাবেন ১ ডিসেম্বর।

ওস্তাদ রশিদ খান
হতে চেয়েছিলেন ক্রিকেটার কিন্তু হয়ে গেলেন শাস্ত্রীয় সংগীতের শিল্পী—ওস্তাদ! কে এই ব্যক্তি? তিনিই রশিদ খান। পণ্ডিত ভীমসেন যোশী তাঁকে এ প্রজন্মের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় উচ্চাঙ্গসংগীতশিল্পী বলে উল্লেখ করেছেন। চলচ্চিত্রেও গান গেয়ে থাকেন তিনি। রশিদ খানের গান শোনা যাবে উৎসবের দ্বিতীয় দিন ৩০ নভেম্বর।

পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী
অজয় চক্রবর্তীর পূর্বপুরুষ বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জের অধিবাসী। তাঁর বাবা সব যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও গাইয়ে হতে পারেননি। তাই ছেলেকে শিল্পী বানিয়ে ‘পণ্ডিত’ হিসেবে গড়ে তুলেছেন। সেই পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর গান শুনতে হলে চলে আসুন আজ উৎসবের প্রথম দিনে।

পণ্ডিত হরপ্রসাদ চৌরাসিয়া
তিনি আসছেন আগামী ২ ডিসেম্বর, উৎসবের শেষ দিনে। কুস্তিগীর পিতার সন্তান হয়েও চেষ্টা ও অধ্যবসায়ের গুণে পেয়েছেন শ্রেষ্ঠ বাঁশিবাদকের সম্মান। তাঁর বাঁশি সামনাসামনি বসে শোনার জন্য নিশ্চয় এখন থেকেই মন আনচান করছে সবার।

বিদুষী আলারমেল ভালি
ভারতের চেন্নাইয়ে জন্ম। ভারতের পদ্মশ্রী ও পদ্মভূষণ উপাধি পাওয়া এই নৃত্যশিল্পী দ্বীপশিখা নামের কলাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছেন, যেখানে তিনি ভরতনাট্যমের শিক্ষকতাও করেন। ভরতনাট্যমে দক্ষ এই শিল্পীর পরিবেশনা থাকবে উৎসবের শেষ দিনে।

ওস্তাদ শাহাদাত হোসেন খান
বাংলাদেশের কুমিল্লায় জন্ম ওস্তাদ শাহাদাত হোসেন খানের। তিনি ওস্তাদ আবেদ হোসেন খানের একমাত্র ছেলে। ওস্তাদ আয়েত আলী খান ছিলেন তাঁর পিতামহ। শাহাদাত হোসেন খান সরোদে পারদর্শী। বাবার কাছেই সরোদে হাতেখড়ি। তাঁর বাদন শুনতে পাবেন আজ ২৯ নভেম্বর উৎসবের প্রথম দিন।



সুত্র - প্র আ
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×