জেনিভায় সাম্প্রতিক এক পরীক্ষার সুবাদে হিগস বোসন কণা বহুল আলোচিত বিষয়৷ জেনেভার সেই আবেগের ঢেউ আমাদের বাংলাদেশেও ছুয়ে গেছে। হুজুগে বাংগালী বলে খ্যাত অনেকেই আবার দাবি করছেন
"বিজ্ঞান বিশ্বের এই উত্তেজনার সাথে আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গৌরবময় অধ্যায় জড়িত। এ কণার আবিষ্কারের উত্ফুল্ল বিজ্ঞানীরা স্মরণ করতেই ভুলে গেছেন বোসন কণা যাঁর নাম অনুসারে রাখা হয়েছিল, সেই বাঙালি বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসুকে।" হা, ‘বোসন’ নামটি এসেছে এ বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক সময়ের অধ্যাপক সত্যেন্দ্রনাথ বসুর নাম থেকে। কিন্তু হিগস বোসন এর আবিষ্কারের পেছনে সত্যেন্দ্রনাথ বসুর কোন অবদান নেই। ওবামার প্রেসিডেন্ট হওয়ার সাথে যেমন কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কারের সম্পর্ক, তেমনি সার্নের হিগস বোসন আবিষ্কারের সাথে সত্যেন্দ্রনাথ বসুর সম্পর্ক।
হিগস বোসন বোস-আইনস্টাইনের পরিসংখ্যান তত্ত্ব মেনে চলে, যে পরিসংখ্যান তত্ত্ব সত্যেন্দ্রনাথ বসু আজ থেকে প্রায় ৯০ বছর আগে আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে বসেই কল্পনা করেছিলেন। এটা আমদের জন্য অব্যশই গর্বের বিষয়। কিন্তু এর বেশী বাড়াবাড়ি বা দুঃখ পাওয়া বোধহয় একটু বেশীই বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে।
সত্যেন বোসকে নিয়ে আমার কিছু অভিঞ্জতা:
১) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা থেকে বি এস সি (অনার্স) এবং এস এস
সম্পন্ন করেছি। থার্মোডাইনামিক্স এবং স্ট্যাটিসটিক্যাল মেকানিক্স নামক ২টা সাবজেক্টে বোস-আইনস্টাইনের পরিসংখ্যান তত্ত্ব পড়তে হয়েছে। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে ২ প্রফেসর শুধু কয়েকটি ইকু্য়েশন পড়িয়েই শেষ করেছেন -- কেউই বোস কে বা কি বলে যায়নি।
২) আমরা যখন বি এস সি (অনার্স) প্রথম বর্ষের ছাত্র (১৯৯৯-২০০০), তখন জগন্নাথ হলে আমরা একটা এসোসিয়েশন করেছিলাম -- এস এন বোস ফিজিক্স এসোসিয়েশন । যদিও শুধুমাত্র সরস্বতি পূজা করার জন্য
এসোসিয়েশনটির জন্ম হয়েছিল, পরবর্তীতে এর কার্যক্রম বর্ধিত করা হয়েছে। ধন্যবাদ দিপংকর দা (বর্তমানে আমেরিকার কোন একটা ইউনিভার্সিটিতে পি এইচ ডি করছেন অথবা শেষ করেছেন) কে, যিনি এস এন বোস নামটি আমাদের মাঝে অবতারনা করেছিলেন।
৩) ২০০৯ এ আমি নিউঈ্য়র্কের একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি পি এইচ ডি করার জন্য। এখানকার এক প্রফেসর এস এন বোস কে নিয়ে একটা বই লিখছলেন। Satyendra Nath Bose: His Life and Times, by Kameshwar C. Wali (Editor) । Wali যখন শুনলেন আমি ঢাকা থেকে এসেছি, তিনি নিজে থেকে এসে জানতে চেয়েছিলেন এখন ঢাকাতে কেমন গবেষনা হয়, ইত্যাদি।