Date:25.02.2016
আজ আমার জন্মদিন। দেখতে দেখতে ১৬ বছর পার করে ১৭ এ পা দিলাম। এই ১৬ বছর পৃথিবী আমাকে বহু কিছু দিয়ে গেল কিন্তু পৃথিবীকে কিছু দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই।তাই ভাবলাম ব্লগে একটি নতুন গল্প প্রকাশ করি।
এই প্রথম আমি কোন বড় গল্প লিখতে যাচ্ছি। আশা করি ভাল লাগবে।ভুল হলে একটু ধরিয়ে দেবেন।আর ছোট ভাইটাকে ক্ষমা করে দেবেন।
আজকে যে গল্প টা লিখতে যাচ্ছি সেটি আসলে গোয়েন্দা গল্প।অনেকগুল পর্বে বিভক্ত। আজ প্রথম পর্ব নিয়ে লিখছি।
আমি গোরা(ছদ্মনাম)। আজ আমি অপু দা র কথা লিখব।নাম অপূর্ব মন্ডল।আমার জ্যাঠামশাই এর ছেলে।ও আমার থেকে প্রায় ৭ বছরের বড়।ও এবার গ্রাজুয়েশন পাস করল আর আমি ক্লাস ৮ এ পড়ি।গ্রাজুয়েশন পাস করার সাথে সাথে ও বেস ভাল একজন গোয়েন্দা হয়ে উঠছে।ও বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও গ্রাজুয়েশন সব যায়গায় ওর রেজাল্ট খুব ভাল।ও নিজের পড়ার বই সহ বিভিন্ন ইংরেজী ও বাংলা গোয়েন্দা বই পড়ে, এবং টিভিতে গোয়েন্দা চ্যানেলের শো গুল দেখে বেশ ভাল গোয়েন্দা শিখছে।কিন্তু আমি ছাড়া কেউ সেটা জানে না কারন অপুদা ওর জ্ঞানর প্রতিফলন দেয় নি। ও মাঝে মাঝে বলে ওর যদি উচ্চতা ঠিক থাকত তাহলে ও CBI এর চাকরও করত।
ওর গ্রাজুয়েশন পরীক্ষার আগেই আমরা পাসপোর্ট করতে দিয়েছিলাম, যাতে পরীক্ষার পাস খানেক পরই হাতে চলে আসে।তাই হল।রাতের বেলা পাসপোর্ট হাতে নিয়ে অপুদা কি যেন দেখছিল। আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম নতুন পাসপোর্ট, প্রথম কোন দেশে যাবে?ও বলল কালই ভাবছি ভিসা করতে দেব।আমি বললাম কোন দেশের?ও বলল বাংলাদেশ। আমি বললাম এত দেশ থাকতে বাংলাদেশ কেন? ও বলল বাগেরহাটের ষাট গম্বজ মসজিদ দেখতে যাব।আমি মনে মনে খুশি হলাম, অনেকদিন পর ভ্রমন তাও আবার বিদেশ, খুব মজা হবে।
ও আমাদের বাড়ির পরিচয় তো দেওয়া হল না, আমাদের বাড়ি বারাসাত এর চাপাডালি মোড় ২নং কলোনি। আমার বাবা একজন সরকারি কর্মচারী, সবসময় বাড়ি থাকে আর বাড়ি থেকেই অফিস করে।অপুদা র বাবা বা আমার জ্যাঠামশাই একজন ব্যবসায়ী। কাপড়ের ব্যবসা, বারাসাত আমাদের একটি কাপড়ের শোরুম ও আছে।মা কাকিমা বাড়িতে থেকে বাড়ির কাজ কর্ম করে।
সাত দিন পর ভিসা চলে এল।মাত্র ১৫ দিনের ভিসা।একদিন সকালে আমাদের জিনিস পত্র গুছিয়ে নিয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।এর আগে অবশ্য অপুদা একটি বই কিনেছিল বাংলাদেশ সম্পর্কে, যাতে বাংলাদেশের পথ, ট্রেন বাস ইত্যাদির ছাড়া ও ফেরার সময় দেওয়া ছিল।অপুদা বনগাঁ লোকালে উঠে বইটি পড়তে পড়তে বলল,বাংলাদেশের লোক বেশি একটা ট্রেনে চলাচল করে না,আর আমরা যে যায়গায় যাব সেইদিকে ট্রেন লাইন ই নেই।আমাদের বাসে করে যেতে হবে।তবে সীমান্ত থেকে যে দূরত্ব দেখছি তাতে বিকেলের চা টা আমরা ওখানে গিয়েই খেতে পারব।
সীমান্তে বেশি ভিড় না হওয়ায় আমরা তাড়াতাড়ি বাংলাদেশ পৌছে গেলাম।বাংলাদেশ পার হয়েই আমরা প্রথমে বাগেরহাট গামি বাসের টিকিট কাটলাম।বাসের নাম BRTC, ছাড়বে বেলা ১ টায়।আমরা প্রায় ১১টার সময় বাসের টিকিট কেটেছিলাম তাই ভাবলাম দেড় ঘন্টা বসে না থেকে পাশের ইন্টারনেটের দোকান থেকে বাগেরহাটের একটি হোটেলের ডাবল বেডের একটি রুম বুক করে নিলাম।বাসে যেতে যেতে দেখলাম ইন্ডিয়ার থেকে কম কিছু নেই।অপুদা কে জিজ্ঞেস করলাম ষাট গম্বুজ মসজিদে যাচ্ছি কিন্তু আগে থেকে যায়গাটার কোন ইতিহাস বললে না তো?ও বলল পুরন রাজ রাজাদেশ আমলে ওখানে ছিল যুদ্ধক্ষেত্র আর ঐ মসজিদ ছিল সৈন্যদের থাকার যায়গা,এখন অবশ্য মসজিদ নামে পরিগণিত হয়েছে।মসজিদ এর পাশে একটি দিঘি বা লেক আছে, নাম ঘোড়াদিঘি।তখনকার আমলে ঘোড়ারা ওখান থেকে জল খেত।মসজিদের উপর ষাট খানা গম্বুজ আছে তাও আবার সমান আকৃতির।তাছাড়া আশে পাশে খননের ফলে যসব মুদ্রা, ঢাল তরয়াল,হাড়ি,কলসি যা পাওয়া যায় তা নিয়ে গড়ে উঠেছে একটি জাদুঘর। আরও অনেক কিছু দেখতে পাবি আর দেখে খুব ভাল লাগবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:১৯