somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কৃত্রিম টেলিপ্যাথি, মন নিয়ন্ত্রণের মারণাস্ত্র! - ২

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম পর্ব

৫। ১৯৫৩ সালে সিআইএ, ইউএস নেভি এবং ইউএস আর্মি ক্যামিকেল কর্প প্রথম তাদের নিজস্ব নার্কো-হিপনোসিস প্রোগ্রাম শুরু করে যা দিয়ে তারা বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়েছে কারাবন্দী, মানসিক রোগী, বিদেশী, ভিন্ন আদর্শের সংখ্যালঘু এবং হিজড়াদের উপর। তাদের এইসব গবেষনায় প্রাপ্ত ফলাফল সিরিজ আকারে প্রকাশিত হয়েছে ১৯৯১ সালে নাপা সেন্টিনেল কর্তৃক প্রকাশিত আর্টিকেলে, যেগুলো লিখেছেন হ্যারি মার্টিন এবং ডেভিড কাউল।

৬। ১৯৭০ সাল পর্যন্ত প্রায় দুই দশক ধরে আমেরিকান মিলিটারি এবং ইন্টেলিজেন্স কমিউনিটি বিভিন্ন ধরণের গোপন গবেষণা চালান যার বেশিরভাগেরই প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ‘প্রোগ্রামেবল’ হত্যা। দ্বিতীয় উদ্দেশ্য ছিল নাগরিকদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করার একটা উপায় বের করা। এসব গবেষণায় যার নাম সবচেয়ে বেশি আসে তিনি হলেন ডঃ জোস ডেলগাডো। তিনি ‘স্টিমোসিভার’ (stimoceiver) ব্যবহার করে ‘সাইকো সিভিলাইজড’ (psycho-civilized ) সমাজ গঠন করতে চেয়েছিলেন। এই নিয়ে বিস্তর গোপন গবেষণা তিনি করেছেন। তার গবেষনালব্ধ আর্টিকেলে (Intracerebral Radio Stimulation and recording in Completely Free Patients) তিনি বলেছেন, "Radio Stimulation on different points in the amygdala and hippocampus in the four patients produced a variety of effects, including pleasant sensations, elation, deep thoughtful concentration, odd feelings, super relaxation (an essential precursor for deep hypnosis), colored visions, and other responses."With regard to the "colored visions" citation, it is reasonable to conclude he was referring to hallucinations -- an effect that a number of so-called "victims" allude to.”

৭। ১৯৬৯ সালেই ডালগাডো আশা প্রকাশ করেন এন্দিন কম্পিউটারের মাধ্যমে ব্রেইনের দ্বিপাক্ষিক রেডিও যোগাযাগ স্থাপন করা সম্ভব হবে এবং খুব বেশিদিন পরে নয়, ১৯৭৪ সালেই লরেন্স পিনিও ব্রেনের ইইজি সিগন্যালকে কিছু কমান্ডের মাধ্যমে সিমুলেশান করে মনিটরে প্রদর্শন করতে সক্ষম হন। যার মাধ্যমে ব্যক্তির মন পড়ে নেবার কম্পিউটার প্রযুক্তি আবিষ্কার হলো। এরপর ধীরে ধীরে এ প্রযুক্তির আরো উন্নতি ঘটানো হয়। বিভিন্ন ফ্রিকুয়েন্সী ব্যবহার করে ব্রেন সিগন্যালকে ইএসবি (ESB) সিমুলেটরে ইনপুট হিসেবে নেয়া হয়।
৮। এরপর ডঃ শার্প এবং ফ্রে কারো বলা কথা্র ভাইব্রেশানকে পালসড মাইক্রোওয়েভের মাধ্যমে দূরবর্তী স্থানে পৌঁছাতে সক্ষম হন, যেটাকে ‘ফ্রে ইফেক্ট’ বলা হয়। আর এটি পরিচিত ‘মাইক্রোওয়েভ শ্রুতি’ হিসেবে, আর পেন্টাগনে এটি ‘কৃত্রিম টেলিপ্যাথি’ হিসেবে পরিচিত।
এরপর ডঃ রোস এডে মানুষের আবেগকে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক সিগন্যাল দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করার গবেষণা করা শুরু করেন। ব্রেন যেহেতু বিভিন্ন ইলেক্ট্রিক্যাল সিগন্যাল বিকিরণ করে তাই তিনি একটি ক্যারিয়ার ফ্রিকুয়েন্সী (carrier frequency) পাঠিয়ে ব্রেন সিগন্যালকে প্রয়োজনীয় রকমে মডুলেশান করিয়ে (desired EEG frequency) মানুষের বিভিন্ন আচরণ ও আবেগীয় অবস্থা পরিবর্তনের চেষ্টা করেন। তিনি ৪.৫ মাত্রার থেটা সিগন্যাল ব্রেনে প্রয়োগ করতে সক্ষম হন, বিভিন্ন ধরণের ফ্রিকুয়েন্সী এবং পালস রেট ব্যবহার করে তারা দেখেন যে এগুলো মানুষের মন এবং নার্ভাস সিস্টেমের উপর প্রভাব ফেলছে।
এডে খুব অল্প মাত্রার ক্যালসিয়াম এফফ্লাক্স (calcium efflux) ব্রেনে প্রয়োগ করেন এবং ইইজি রিদমের রাডার মডুলেশান করে বিভিন্ন ধরণের আচরঙত পরীক্ষা নিরীক্ষা চালান। তিনি পরীক্ষা করে দেখেন যে ১ থেকে ৩০ হার্জের ফ্রিকুয়েন্সী নিম্নমানের ফ্রিকুয়েন্সী হিসেবেই হোক বা এম্পলিচিউড মডুলেশানের (Amplitude Modulation – ক্যারিয়ার ফ্রিকুয়েন্সীর ভোল্টেজের মান বাড়ে কমে প্রায়োগিক ফ্রিকুয়েন্সীর দ্বারা) মাধ্যমেই হোক, ব্রেন যখন খুব অল্প পাওয়ার ঘনত্বে থাকে, তখন ব্রেনে প্রয়োগ করা হলে টার্গেটের ব্রেনের মালিক ব্যক্তিটি শারীরিকভাবে ইন্টারেক্ট করে।
৯। ডঃ ক্যামেরন সিআইএ-র ফান্ডের সহায়তায় বিভিন্ন রোগীদের অনুমতি ব্যতিরেকে তাদের স্মৃতি মুছে দেয়া এবং নতুন ব্যক্তিত্ব প্রয়োগ করার গবেষণা চালান। এটাকে বলে “psychic driving”.
১০। অপারেশান প্যান্ডোরা
১৯৬৫ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত Defense Advanced Projects Research Agency (DARPA) রাশিয়ার আমেরিকান দূতাবাসে মিলিটারি এবং সিআইএ-র সহায়তায় স্বল্পমাত্রার মাইক্রোওয়েভ মানুষের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর কি রকম প্রভাব ফেলে সেটা নিয়ে গবেষণা শুরু করে। এটা শুরু হয় মার্কিন দূতাবাসে তারা স্বল্পমাত্রার মাইক্রোওয়েভ আবিষ্কারের পরে যেটাকে তারা “মস্কো সিগন্যাল” বলে আখ্যায়িত করেছে। ডঃ মিল্টন জারাত সোভিয়েট বিভিন্ন লিটারেচার স্টাডি করে বলেন রাশানরা বিশ্ব্বাস করে যে অ-তাপীয় অবস্থায় মাইক্রোওয়েভ রেডিয়েশান ব্রেন সেলের পর্দায় প্রভাব তৈরী করে, ধীরে ধীরে সেটা নার্ভ সেলগুলোকে উত্তেজিত করে তোলে। এভাবে এক সময়ে হার্ট অ্যাটাক, রক্তপর্দায় বা ব্রেনের পর্দায় ছিদ্র তৈরী করে এবং অডিটরি হ্যালুসিনেশান তৈরী করে।

১১। ১৯৭৪ সালে জে.এফ. স্ক্যাপিটজ রিমোট হিপনোসিস প্রস্তাব করেন যার মাধ্যমে হিপনোটিস্টের কথা মডুলেটেড ইলেক্ট্রম্যাগনেটিক শক্তির মাধ্যমে কোনরকম টেকনিক্যাল যন্ত্র ছাড়াই সাবজেক্ট ব্রেনের সাবকনশাস অংশে পাঠানো যাবে এবং এর উপর গ্রহীতার কোন সচেতন নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। এর ফলাফল পরে আর পাওয়া যায়নি।

১২। ১৯৭৬ সালে রাশিয়ানরা চেরনোবিল নিউক্লিয়ার পাওয়ার কর্তৃক পরিচালিত ইউক্রেনের সাতটি বড় বড় ট্রান্সমিটার থেকে ১০০ মেগাওয়াতের রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি পশ্চিমে পাঠায়, যেটা ছিল ১০ হার্জের ELF মন নিয়ন্ত্রক ফ্রিকুয়েন্সি। ডঃ বব বেক প্রমাণ করেন যে সেটা ছিল একটা মারণাস্ত্র।

এভাবে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রযুক্তি আবিষ্কার হতে থাকে।

Click This Link পর্ব

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৩১
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

সম্পর্ক

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২


আমারা সম্পর্কে বাঁচি সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন কে সুখ বা দুঃখে বিলীন করি । সম্পর্ক আছে বলে জীবনে এত গল্প সৃষ্টি হয় । কিন্তু
কিছু সম্পর্কে আপনি থাকতে চাইলেও থাকতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×