পৃথিবীতে মানুষের মৃত্যুর প্রধান কারনগুলোর মধ্যে তিন নম্বরে 'ক্যান্সারের' অবস্থান৷ (এক নম্বরে হার্ট ডিজিস, দুই নম্বরে সেরেব্রোভাস্কুলার ডিজিস (স্ট্রোক)৷)
'ক্যান্সার' রোগটি পড়তে গেলেই ডাক্তারীবিদ্যার ব্যর্থতার দিকটি সামনে চলে আসে৷ কোন ক্যান্সার ধরা পড়ার পর সেখান থেকে পুরোপুরি সুস্থ হয়েছে এমন ঘটনা খুব বেশি ঘটে না৷ বরং বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই রোগীকে ধুকে ধুকে মরতে হয়৷
প্রাথমিক স্টেজে কোন কোন ক্যান্সারের পুরোপুরি নিরাময় সম্ভব ৷ কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হলো, বেশিরভাগ ক্যান্সারই ধরা পড়ে সেটি শরীরের অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ার পরে৷ যখন আর কিছুই করার থাকে না নিশ্চিত মৃত্যুকে বরণ করে নেওয়া ছাড়া ৷ আর একজন মানুষ যখন জানতে পারে আমি আর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই মারা যাবো, তার প্রতিটি দিন কিভাবে কাটে তা সহজেই অনুমেয়৷৷
আমার দৃষ্টিতে সব ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ হলো, যেগুলো কিশোর বা যুবক বয়সে হয়৷
এমনি একটি ক্যান্সার হলো 'লিউকেমিয়া' বা 'ব্লাড ক্যান্সার'৷ মাঝে মাঝেই এ রোগে আক্রান্ত কোন কলেজ বা ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া স্টুডেন্টের জন্য আমরা সাহায্য চাইতে দেখি৷ কারন, এ রোগে Bone Marrow Transplantation ছাড়া মৃত্যুর নিশ্চয়তা শতভাগ! আর যেটি করতে আমাদের যেতে হয় ভারত বা সিঙ্গাপুর, লাগে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ থেকে এক কোটি টাকা৷৷ এরপরও কিন্তু জীবনের আশা থেমে থাকে না৷
--------------------
অত্যন্ত আনন্দের ব্যাপার হলো, দেশে প্রথমবারের মতো ঢাকা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের কাজ শুরু হবে। অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের
(বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন)
মাধ্যমে শুধু লিউকোমিয়া নয় থ্যালাসেমিয়া, লিম্ফোমা, মাল্টিপল মাইলোমা,
অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়াসহ জটিল রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব৷
আরো আশাব্যঞ্জক কথা হলো এ কাজটিতে সিঙ্গাপুরে যেখানে খরচ হয় প্রায় এক
কোটি টাকা সেখানে বাংলাদেশে খরচ পড়বে পাঁচ
থেকে সাত লাখ টাকা।
আর এ সবকিছু সম্ভব হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান ও বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন ইউনিটের প্রধান এম এ খান এর জন্য। ২০০৭ সালে সৌদি আরবের কিং ফয়সাল হাসপাতালে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন বিভাগে যিনি ডাক পেয়েছিলেন, কিন্তু লাভজনক হলেও সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন দেশেই একদিন এই সেবা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে। আজ তিনি সফল৷ স্যালুট এমন কিছু মানুষের জন্য, যাদের জন্য দেশটা এখনো এগিয়ে চলছে৷
আসুন স্যারের জন্য দোয়া করি তিনি যেন সফল হন । ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত আমাদের প্রিয় ছোট্র ভাই বা বোনটিকে টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় আর মরতে হবেনা। এবার বাংলাদেশের ডাক্তাররাই দিবে মরন ব্যাধি ব্লাড ক্যান্সারের সুচিকিৎসা খরচ পড়বে মাত্র ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা।
প্রতিটি ডাক্তার এমন সফল ভাবেই নিজেকে গঠন করে নিক। এদেশের তরুন প্রজন্ম একদিন একটি স্বনির্ভর বাংলাদেশ গঠন করবেই ইনশাআল্লাহ।
পোস্ট কৃতজ্ঞতা মুবাশ্বির হাসান লিমন
(Shaheed Suhrawardy Medical College,Dhaka)