somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জিরো বাজেট ফিল্মে সাউন্ড ডিজাইন (শুধুমাত্র বেগিনার ও ইন্ডি মেকারদের জন্য প্রযোজ্য)

১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার মুঠোফোনের প্রাকটিস ফিল্ম গুলোতে আপনারা সবচেয়ে পছন্দ করেছিলেন সাউন্ড ডিজাইন । আজ শেয়ার করব কোন প্রসেসে সম্পূর্ণ সহজ ও ফ্রি তে প্রফেশনাল কোয়ালিটির সাউন্ড ডিজাইন করতে পারবেন । আমি নিজে সকল সাউন্ড ইউটিউব থেকে নিয়ে থাকি । এক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা লাগে ।

প্রথমত একটা ফিল্মে ৫ প্রকার সাউন্ড দরকার হয় ।
“ডায়লগস, এমবিয়েন্ট, ফলি, ব্যাকস্কোর ও মিউজিক”

এগুলোর একটা মিসিং থাকলে আপনার সিন বা শট স্বাভাবিক মনে হবে না, দর্শকের এটেনশন পাবে না এবং মুভি মনে হবে না । এবার বলা যাক কোন সাউন্ড কি ও কোথায় পাবেনঃ

১. ডায়লগসঃ

প্রথমেই এক্টরদের সংলাপ দরকার হবে যা ফিল্মের মূখ্য বিষয়। বুম মাইকে লাইভ রেকর্ডিং করে অথবা পরে ডাবিং করে সাউন্ড নিতে পারবেন ।

লাইভ রেকর্ড নিলে এডিটিং সহজ হবে, কিন্তু অনুপযোগী পাবলিক প্লেসে নয়েজ বেশি হবে, বড় মনিটরে পাবলিকের ভয়েস শোনা যাবে । অপরদিকে ডাবিং করলে ক্লিন সাউন্ড হবে, কিন্তু অভিনেতা ও এডিটিং পার্সন এক্সপার্ট না হলে ভয়েস সিংক হবে না, আর্টিফিশিয়াল শোনাবে ।

বুম রেকর্ড ও ডাবিংয়ের প্রসেস নিয়ে আমার একটা পোস্ট আছে । এখানে সুবিধা অসুবিধার কথা বিস্তারিত বর্ণনা করা আছে ।

২. এমবিয়েন্ট সাউন্ডসঃ

শুধু ক্লিন ভয়েস থাকলেও মুভিতে ফিল থাকবে না । কারণ রিয়েল লাইফে আমাদের আশেপাশে অনেক ধরণের শব্দ থাকে । যেমন রাতে ঝিঁঝিঁপোকার শব্দ, রাস্তায় গাড়ির শব্দ, পার্কে পাখির কিচিরমিচির, সমুদ্রের ঢেউ ইত্যাদি ।

এসব এনভাইরনমেন্টাল নয়েজ একটা সিন কে রিয়েলিস্টিক করে । তাই অবশ্যই এমবিয়েন্ট সাউন্ডস থাকতে হবে । ইউটিউবে সার্চ করলে সকল প্রকার সাউন্ড এফেক্ট পাবেন ।

যেমনঃ birds whirling sound, stormy wind sound, city traffic sound

৩. ফলি সাউন্ডঃ

যখন এক্টর কিছু করে তার একশনের শব্দ, কিছু পড়ার শব্দ, দরজা খোলার শব্দ এগুলো হলো ফলি সাউন্ড ইফেক্টস । মুভি রিয়েলিস্টিক করতে এমবিয়েন্টের সাথে সমান দরকার ফলি সাউন্ড । এক্টরের কথা ক্লিয়ার শোনা যাচ্ছে, অথচ সেম ডিসট্যান্সে তার হাঁটার শব্দ না থাকলে রিয়েলিস্টিক লাগবে না

মুভি স্টুডিওতে ফলির জন্য আলাদা ডিপার্টমেন্ট থাকে । তারা বিভিন্ন সলিড এলিমেন্টস, মাংস, সবজি, মেটাল, ওয়াটার হিট করে এগুলো রেকর্ড করে । আপনি বাসায় বসে ইউটিউবেই সকল সাউন্ড এফেক্ট পাবেন ।

যেমনঃ paper rubbing sound effect, walking on dry leaves sound effect, door opening sound effect.

৪. ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকঃ

মুভির আবহ তৈরি করতে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের জুড়ি নেই । সীনে এক্টরের মনের ভাব, টেনশন, ক্লাইম্যাক্স-এন্টি ক্লাইম্যাক্স এসব প্রকাশ পায় বিজিএম এ । মুভিতে মিউজিক ডিরেক্টর এই স্কোর করে থাকে । বিভিন্ন স্টক সাইট ও ইউটিউবে সার্চ করলে কপিরাইট ফ্রি মিউজিক পাবেন ।

যেমনঃ suspense background music, romantic background music

তবে এসব নিলে বারবার চেক করে দেখতে হবে কোনটা পারফেক্ট । একটা ভূল মিউজিকে আপনার শর্টফিল্ম ছেলেমানুষি লাগবে, মুভি স্ট্যান্ডার্ড হারাবে ।

মুভির জনরার সাথে, বিভিন্ন সিকোয়েন্সের সাথে নির্দিষ্ট টাইপের মিউজিক লাগবে । সবসময় হলিউড ও বলিউড মুভির সাউন্ড ডিজাইন লক্ষ করবেন, ওদের ফিল্মে টেকনিকাল নলেজ এপ্লাই হয় বেশি । একই সেটিংয়ে আরবান ও ফক টাইপ বিজিএম মিক্স করবেন না যে ভূলটা ইয়ং ইউটিউব কেন্দ্রিক ফিল্ম মেকার রা করে থাকে ।

৫. মিউজিকঃ

বাংলাদেশি প্ক্ষোপটে গান ছাড়া মুভি, ড্রামা এসব হয়না ! গান মুভির শুটের আগে রেডি করে রাখা লাগে । হয় নিজে কোনো মিউজিশিয়ানকে দিয়ে গান করাতে হবে অথবা কপিরাইট/অনুমতি নিয়ে কোনো গান ইউজ করতে হবে ।

গানের সময় সাধারণত অন্য সকল সাউন্ড ইফেক্ট অফ থাকে । গান শুটের আগে রেডি করা লাগবে । গানের কোন লাইনে কি অ্যাকশন হবে তার শট ডিভাইড বা কোরিওগ্রাফি করে রাখতে হবে ।

কপিরাইট রিলেটেড কিছু সতর্কতাঃ

• সবসময় ব্যবহারের অনুমতি আছে এমন সাউন্ড ও মিউজিক ইউজ করতে হবে । নো কপিরাইট মিউজিক লেখা না থাকলে ব্যবহার করাই যাবে না । ক্রিয়েটরের থেকে পারমিশন নিতে হবে । সাধারণেত ফলি সাউন্ড ইফেক্টে কোনো সমস্যা হয় না ।

• অনুমতি থাকলেও ইউটিউবে আবার আপলোড করার পর অডিও স্পেকট্রামে ম্যাচ পেয়ে অটোমেটেড কপিরাইট স্ট্রাইক আসবে । এটা এড়াতে সব এডিটের পর পুরো টাইমলাইন জুড়ে -৪০ বা -৫০ ভলিউমে নয়েজ অ্যাড করে দিতে হবে যা সাধারণ কানে শোনা যাবে না কিন্তু ব্লেন্ড হয়ে অডিও স্পেকট্রাম চেঞ্জ করে দেবে ।

• আমরা পাইরেসি সাপোর্ট করিনা । তাই অনুমতি না নেওয়া গেলেও ক্রেডিটে ক্রিয়েটরের নাম উল্লেখ করে দেওয়া উচিত মনে করি । ক্রেডিট থাকলে আপনার ফিল্ম ও প্রফেশনাল মনে হবে । ফিল্মে যার যার অবদান আছে, এমনকি শুভকামনা থাকলেও মূল্যায়ন করুন ।
উন্ড নিতে পারবেন ।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:৪০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জঙ্গি শক্তির ছায়া, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×