somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এ ব্রিফ স্টোরি অব কেভ আর্ট

৩১ শে মে, ২০০৭ বিকাল ৪:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রহস্যের দিকে হেঁটে গেছ তুমি
জেনেছ চিরকাল
মানুষের মনে
বিস্ময় ও বিস্মরণ ক্রিয়া করে।
পর্বতের গহীনে লুকানো
মুদ্রিত দিগ্বলয়
তিনটি চিত্কারে
উন্মোচন করেছ, মারিয়া!
ট্যারো, ট্যারো, ট্যারো!
'আলতামিরা'
তার দিকে ছুটে গেছে
পৃথিবী ও বিজ্ঞানীরা।
------------------আলতামিরায় প্রথম বিকেল : ১৮৭৯

সামনের দিনটি শুভ হোক- চিরকাল প্রত্যাশা করে মানুষ। আর সবচেয়ে কাতর থাকে নিজেরই বিগত দিনের ওমে। সীমাবদ্ধ সময় চেতনায় তার অন্তরে এক বিপুল আত্মপরতা খেলা করে। এই আত্মপরতা- অহমবোধের বশে ঐতিহাসিক যুগের মানুষ শিল্পকলাকে একান্তই নিজেদের আবিষ্কার ভেবেছে। আর আদিম মানুষকে বহুকাল কৃত্য ও শিল্প-বিবর্জিত বর্বর বলে ভেবে এসেছে। বত্রিশ হাজার দূরের কথা, মাত্র বার হাজার বছর আগেও যে প্রাগৈতিহাসিক মানুষের অভিজ্ঞতা শিল্পবোধে সিক্ত ছিল একথা বিশ শতকের গোড়াতেও মানতে চাননি বিজ্ঞানীরা। তাদেরকে বোঝানোর জন্য যথেষ্ট প্রমাণপত্রও ছিল না। প্রাগৈতিহাসিক মানুষের পক্ষ থেকে জীবন্ত প্রমাণ রূপে হাজির হলো আলতামিরার গুহাচিত্রগুলো। এক অবাক বিস্ময় খেলা করে গেল আধুনিক পৃথিবীর মানুষের চোখে। একই বিস্ময় খেলা করেছিল পাঁচ বছরের ছোট্ট মেয়ে মারিয়ার চোখেও। বাবা মার্ক্যুইস দ্য সাউটুওলা সৌখিন প্রত্নতাত্ত্বিক। বাবার সঙ্গে আলতামিরায় গিয়েছিল মারিয়া। বাবা ব্যস্ত ছিলেন অনুসন্ধানে আর মারিয়া লণ্ঠন হাতে বিক্ষিপ্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। লণ্ঠনের আলো ছাদ স্পর্শ করলে সেদিকে তাকিয়ে ভয়ে চিত্কার করে ওঠে মারিয়া- ট্যারো, ট্যারো, ট্যারো! ষাঁড়, ষাঁড়, ষাঁড়। মার্ক্যুইস ছুটে এসে দেখলেন গুহাচিত্রের এক জীবন্ত ষাঁড় তেড়ে আসছে মারিয়ার দিকে। সেই থেক প্রাগৈতিহাসিক চিত্রকলা- গুহাচিত্র, তাদের রূপ ও রস নিয়ে তাড়া করে ফিরেছে বিস্ময় বিহবল মানুষকে।

১৮৮০ সালে লিসবনের এক প্রত্নতাত্ত্বিক কনফারেন্সে মার্ক্যুইস দ্য সাউটুওলা বিজ্ঞানীদের কাছে উপস্থাপন করলেন এই চমকপ্রদ তথ্য। কিন্তু বিজ্ঞানীরা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন চার্চের ভাষায়- চার্চের ঠিক বিপরীতে দাঁড়িয়ে। বললেন, ডারউইনের বিবর্তনতত্ত্ব মতে- যে মানুষ মাত্র ক'হাজার বছর আগে হোমো সেপিয়েন্স হয়েছে, তার শিল্পকলা থাকতে পারে না, সাউটুওলা নিজে এঁকে প্রাগৈতিহাসিক মানুষদের নামে গল্প ফেঁদেছেন। বিজ্ঞানীরা অভিযোগ করলেন, ডারউইনবাদের বিপরীতে বাইবেলকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার অপচেষ্টা করছেন সাউটুওলা। সাউটুওলার মৃত্যুর পর ১৪ বছর কেটে গেলে ১৯০২ সালে তরুণ প্রত্নতাত্ত্বিক আবে হেনরি ব্রিউয়েল আলতামিরার গুহাচিত্র পর্যবেক্ষণ করে এর প্রাচীনতা সম্পর্কে নিশ্চিত হলেন। পরীক্ষা করে দেখা গেল এগুলো ১২,০০০ বছরের পুরনো। আলতামিরাকে অভিহিত করা হলো প্রাগৈতিহাসিক চিত্রকলার 'সিসটিন চ্যাপেল' রূপে।

এরপর সহস্র সহস্র বছরের সুপ্তি ভেদ করে জেগে উঠলো স্পেন, ফ্রান্স, ইতালি, সাহারা, আফ্রিকা, এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া জুড়ে থাকা গুহাচিত্রেরা। রোমাঞ্চকর উন্মোচন ঘটলো প্রাগৈতিহাসিক শিল্প এবং কৃত্যের।

Racaux Sorciers, Cap Blanc ইত্যাদি গুহায় Magdalenean পর্বের; Pair Non Pair, Grott de Cervi, La Greze, Hornos de La pena তেAurignatian পর্বের চিত্রকলা পাওয়া গেল। সবশেষে গ্রোতে শোভেতে আবিষ্কৃত হলো ৩২,০০০ বছরের সর্বপ্রাচীন গুহাচিত্র। এখন আর মানুষ প্রাক-ইতিহাস থেকে বিচ্ছিন্ন করে নিজেকে শিল্পজ্ঞ ভাবতে পারছে না। বরং তার গন্ডী বিস্তৃত হলো বহু যুগের ওপার অবধি।

গ্রোতে শোভেতে চিত্রগুলোর পরিপ্রেক্ষিতের ব্যবহার, আলোছায়ার কাজ এবং চমত্কার কৃতকৌশল তাকে আধুনিক চিত্রকলার সামনে একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। অতি সম্প্রতি*, ১৯৯৯ সালের মে মাসে এই গুহাচিত্রগুলো আবিষ্কৃত হয়েছে। এখানকার চিত্রগুলো সাবেকী আমলের অতিবিজ্ঞানীসুলভ গুহাচিত্র বিশ্লেষণের ছকে বাঁধা নিয়ম-নীতিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।

এই ছককৃত ধারণার প্রবক্তা আদ্রেঁ লেরই গুরহা ও তার অনুসারীরা গত ৩২ বছর ধরে কালিক পরম্পরার ভিত্তিতে প্রাগৈতিহাসিক গুহাচিত্রগুলোকে বিশ্লেষণ করে আসছিলেন। বিজ্ঞানীদের ছককৃত বিশ্লেষণ মতে, প্রাগৈতিহাসিক চিত্রের প্রথম পর্বে অর্থাৎ ৩২ হাজার বছর আগে এগুলোতে বিন্দু, পরিপ্রেক্ষিত ও ডিটেইলসের ব্যবহার এবং জৈবিক সক্রিয়তা সহকারে পশুগুলোর উদ্ধত ও প্রাণবন্ত উপস্থিতি অসম্ভব ছিল। এই বিজ্ঞানীরা প্রাগৈতিহাসিক মানুষের হিংস্র প্রাণীর ছবি আঁকার সম্ভাবনাকেও উড়িয়ে দেন।

বত্রিশ বছর ধরে প্রাগৈতিহাসিক গুহাচিত্র বিশ্লেষণের একচ্ছত্র অধিপতি গুরহার মতের বিপরীতে তথ্যপ্রমাণ নিয়ে হাজির হলেন গ্রোতে শোভের খনক ও গবেষক ইয়াকিন লে গুইলো, জ্যাঁ ক্লোতেস এবং মার্গারেট কঙ্কেইয়ের মতো প্রত্নবিজ্ঞানীরা। ৩২ হাজার বছরের পুরনো হওয়া সত্ত্বেও গ্রোতে শোভের চিত্রগুলোর বিন্দুর সাহায্যে অঙ্কিত বাইসন, এমনকি মানব প্রতিকৃতিও পাওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি অঙ্কিত চিত্রের প্রাণীগুলোকে জৈবিক সক্রিয়তা সহকারে দৌড়ানো, লাফানো, আক্রমণরত, সাঁতাররত অবস্থায় লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা গুরহার মতে আরও ২০ হাজার বছর পরের গুহাচিত্রের বৈশিষ্ট্য। গ্রোতে শোভের চিত্রের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যতিক্রমধর্মী বৈশিষ্ট্য হলো, এখানে ব্যাপক সংখ্যক গণ্ডার, সিংহ, ভল্লুক, পেঁচা এবং ম্যামথের মতো শিকারী, হিংস্র প্রাণীর উপস্থিতি। এই শিল্পী জনগোষ্ঠীর পশু সম্পর্কিত সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গী পর্যালোচনা করলে দেখা যায়- শিকারজীবী, হিংস্র পশুর প্রতিকৃতি আঁকতেই এখানকার শিল্পীদের আকর্ষণ বেশি ছিল।

এই ব্যতিক্রমী বিষয়গুলো বিজ্ঞানীদের বেশ কিছু গুরুতর প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়েছে। প্রাগৈতিহাসিক চিত্র বিষয়ে বিশেষজ্ঞ গুরহা এবং তার অনুসারীদের প্রতিষ্ঠিত তত্ত্বের গণ্ডদেশে এই গুহাচিত্রগুলো রীতিমতো চপেটাঘাত করছে। ফলে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে গুহাচিত্রের কালিক বিন্যাস ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে। তাতে গুরহার তত্ত্বকে নতুন করে বিন্যস্ত করতে হবে, এমনকি পাল্টেও দিতে হতে পারে।

১৮৭৯ থেকে আজ অবধি আবিষ্কৃত এই অসংখ্য গুহাচিত্র পৃথিবীর মানুষকে মুহূর্মুহূ ভাবিয়েছে- কেন এই চিত্রগুলো অঙ্কিত হয়েছিল? বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করতে চেয়েছেন এই শিল্পকলার উদ্দেশ্য ও বিধেয়। হতাশ হননি তারা। গভীর অভিনিবেশ তাদেরকে পৌঁছে দিয়েছে প্রাচীন মানুষের ধর্ম, কৃত্য, বিশ্বাস আর মিথের আরও গভীর অন্তর্লোকে। উন্মোচিত হয়েছে প্রাক-ইতিহাসের রহস্যঘেরা জীবনচিত্র।

আজকের শিল্পতত্ত্বের বিবেচনায় গুহার আঁধারঘেরা প্রাগৈতিহাসিক চিত্রাবলি অত্যন্ত উৎকৃষ্ট মানসম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও 'শিল্পের জন্য শিল্প' এই উদ্দেশ্যে রচিত হয়নি, নির্দ্বিধায় এই ঘোষণা দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই শিল্পের সঙ্গে প্রয়োজনের সম্পর্ক জড়িত ছিল। অর্থাৎ এর মধ্য দিয়ে ধর্মবিশ্বাস, কৃত্য এবং প্রকৃতির প্রতি নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গী প্রকাশিত হয়েছিল। বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন কৃৎকৌশলগত উৎকর্ষ অর্জনের বদলে শিল্পীর সহজাত প্রকাশ হিসেবে ব্যক্ত হয়েছিল। গুহাচিত্রগুলোর অধিকাংশই দুর্গম পর্বতাঞ্চলে, জলাশয় পেরিয়ে গোপন পর্বত কন্দরে বিশেষভাবে অঙ্কিত হয়েছিল। চিত্রগুলোর এই অবস্থান থেকে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন, এগুলো গোপনীয়তা ও পবিত্রতার সাথে সম্পর্কিত। পাশাপাশি প্রকৃতির গাছপালাসহ অন্যান্য অনুসঙ্গ এবং মানুষের চিত্র না একেঁ ব্যাপকভাবে পশুচিত্র আঁকায় ধারণা করা হয়- এ চিত্রগুলো মানুষের পশু সম্পর্কিত চিন্তাভাবনা ও দর্শনের সাথে সম্পর্কিত। গুহাচিত্রের এসব উদ্দেশ্য বোঝাবার জন্য বিজ্ঞানীরা সার্বজনীনভাবে Magico-Religious অভিধাটি ব্যবহার করেন।

বিখ্যাত মিথতাত্ত্বিক জোসেফ ক্যাম্পবেল এবং কয়েকজন প্রত্নবিজ্ঞানীর মতে, আদিম মানুষের শিকার-পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে গুহাচিত্রগুলোর বিশেষ গুরুত্ব ছিল। তাদের টোটেম বা জাদুবিশ্বাস সম্পর্কিত ধারণা এগুলোর সাথে জড়িত। শিকারের পূর্বে শিকারের ছবিকে আহত করতে পারলে মূল পশুটিও আয়ত্তে আসবে, এরকম বিশ্বাস থেকে তারা শিকার-পূর্ব কৃত্য পালনের উদ্দেশ্যে গুহাগুলো ব্যবহার করতো। মিথতাত্ত্বিক জেমস ফ্রেজার বর্তমানের অনেক আদিবাসী নৃগোষ্ঠীর মাঝে অনুরূপ জাদু বিশ্বাসের উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। অনেক নৃগোষ্ঠী তাদের শত্রুকে ঘায়েলের উদ্দেশ্যে তাদের প্রতীকে আঘাত করে জাদু-টোনা করে থাকে।

মিথতাত্ত্বিক জোসেফ ক্যাম্পবেল এবং মনোবিজ্ঞানী সিগমুন্ড ফ্রয়েড ধারণা করেন, আদিম মানুষ পশুকে তার প্রতিবেশী এবং আপনজন রূপে গণ্য করতো। বিশ্বাস করতো, পশুরা তাদের সমান সমান, কখনও শক্তিমত্তায় কিছুটা বেশি। তাই তারা পশুর কাছে শক্তি প্রার্থনা করতো। এ মতের সমর্থন মেলে প্রত্নতাত্ত্বিক ক্লোতেস এবং কঙ্কেইয়ে কথায়। গ্রোতে শোভেতে ক্লোতেস লক্ষ্য করেছেন- 'পেইন্টিংগুলোর ধরন দেখে বোঝা যায়, এগুলো কোনোভাবেই প্যালিওলিথিক খাবারের মেন্যুকে উপস্থাপন করেনি; বরং ঝুঁকি, শক্তি আর ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।' কঙ্কেইয়ের মতে, 'যদি আধ্যাত্মিক অন্বেষা পেইন্টিংগুলো অঙ্কনের প্রথম উদ্দেশ্য হয়, তবে এগুলোকে প্রণাম জানানো এদের দ্বিতীয় কাজ।' এর সঙ্গে জড়িত ছিল পশুর প্রতি প্রাগৈতিহাসিক মানুষের কৃতজ্ঞতাবোধ। কারণ তারা একতরফাভাবে পশুকে হত্যা করে তার মাংস ভক্ষণ করে। ফলে ছবি একেঁ সম্মান করে তারা এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতো। এদেরকে সাধারণত মাতৃভাবাপন্ন বৈশিষ্ট্য সহকারে সম্মানীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আঁকা হতো। এর সাথে প্রাগৈতিহাসিক মানুষের উর্বরতা-তান্ত্রিক বিশ্বাস জড়িত ছিল বলে ধারণা করা যায়।

প্রত্নতাত্ত্বিক মার্গারেট কঙ্কেই মত প্রকাশ করেছেন, 'গুহাগুলো বহু মানুষের সম্মিলিত অভিজ্ঞতা বিনিময়ের কেন্দ্র রূপে ব্যবহৃত হয়েছে অথবা চিত্রকলার পণ্ডিতরা এখানে শিক্ষানবিশদের শিক্ষা দিতেন।' জোসেফ ক্যাম্পবেল একই রকম ব্যাপার লক্ষ্য করেছেন অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের মধ্যে। বর্তমান আদিবাসীরা চিত্র সম্বলিত গুহাগুলোকে সদ্য বয়োপ্রাপ্ত ছেলেদের প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহার করে। ক্যাম্পবেল ধারণা করেন, অতীতেও গুহাগুলো চিত্রকলা ও গোত্রের প্রথা পদ্ধতি ও টোটেম সম্পর্কে জ্ঞানদানের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতো। অনেকটা গোত্রের ধর্মকেন্দ্র বা বিদ্যালয় রূপে। কঙ্কেই গ্রোতে শোভেতে মানুষের বার বার আগমনের উল্লেখ করেছেন- যা থেকে এর ধর্মকেন্দ্র অথবা শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবার সম্বন্ধে অনুমান করা যায়। আগেও কেউ কেউ ভেবেছেন ইওরোপের গুহাশিল্পীরা পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করতেন। আদিদৈবিক ধ্যান-ধারণা নির্ভর অনুষ্ঠানগুলি গুহার অভ্যন্তরেই অনুষ্ঠিত হতো।

এত সব প্রামাণিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ সত্ত্বেও বুর্জোয়া কাঠামোবাসী পাশ্চাত্যের লোকেরা বহু বছর দ্বিধা দ্বন্দ্ব এবং নিমরাজির ভাব কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হননি। জড়বাদীর চোখে পৃথিবীর দিকে তাকাতে গিয়ে মিথ, পুরাণ, রূপকথা আর বিশ্বাসের মতো হোমো সেপিয়েন্স মানুষের মনোমুগ্ধকর রহস্যেঘেরা শিল্পকেও 'ওয়্যাস্ট বাস্কেটে' ছুঁড়ে দিতে চেয়েছিল। এভাবে ঈশ্বরবিহীন বিশ্বে ডারউইনবাদকে বর্ম পরানোর গুরুত্বটা অনুধাবন করতে পেরেছিল ইওরোপের বুর্জোয়া-বণিক সংস্কৃতি। কিন্তু সে উপায় আর রইলো না। গুহার অন্ধকার তিরোহিত হলে আরও কিছু বিপন্ন আঁধার, অমীমাংসা রয়ে গেল-

দিবসের শেষ সূর্য
শেষ প্রশ্ন উচ্চারিল
পশ্চিম সাগর তীরে
নিস্তব্ধ সন্ধ্যায়
কে তুমি?
মেলেনি উত্তর।**



*এই লেখাটি ১৯৯৯ সালের ১৪ জুলাই প্রকাশিত হয়েছিল।
** রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০০৭ রাত ১২:২১
১১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×