এই জীবনে অনেক বাংলা উদ্ধৃতি পড়েছি। আবার এটা ও বলা যায় অনেক শুনেছি! আমার দাদী এবং তার এক বান্ধবী প্রায় কথায় কথায় উদ্ধৃতি বা শ্লোক বলে যেতো। ভালোই লাগতো। তবে শ্লোকের গুরু গম্ভীর ভাব এবং অর্থ ছিলো যা সহজে বুঝা যেতো না। যাই হোক এত শ্লোক শুনলাম জীবনে তবে গতকাল কে শুনলাম জীবনের শ্রেষ্ট শ্লোক বা উদ্ধৃতি!
আমি প্রায় কয়েক মাস আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান হাসান মাশহুদের পদত্যাগে ব্যথিত হয়ে ছিলাম! যেমন হয়ে ছিলাম অন্য আরেক জনের নিয়োগে তিনি সাবেক আমলা জনাব গোলাম রহমান। যাই হোক গত কয়েক মাস গোলাম রহমানের কোন সাড়া শব্দ পায় নি! ভাব ছিলাম হেতে বুঝি হারি গেছে। দেশ নিয়ে শত হতাশার মাঝে ও কিছু কিছু ব্যক্তির সত্য বলার অভ্যাস দেখে হতাশা কেটে যায়। আবার কিছু কিছু রাজনীতিবিদ নামের জনতার সেবক'দের কাজ কর্ম দেখে ভাবি মীর জাফর কি করে এই দশকে! সত্য কথা বলতে কি বাংলাদেশের আজকের এই অবস্হার জন্য বাংলাদেশের বিচার বিভাগ কম দায়ী নয়। আমাদের আদলতের অনেক বিচারক কে দেখেছি আবেগী হয়ে বক্তিতা দিতে! দলের সেবায় গনতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে সংবিধানের গুরু গম্ভীর অনুচ্ছেদ বয়ান করতে। তখন ভাবতাম আহ্ কি সুন্দর আমাদের সংবিধান। অনেক আইনজীবির সাদাকালো চুলের বাহার এবং দলের প্রতি দায়বদ্ধতা দেখে ভাবতাম এই ব্যবসার মধ্যে আর পতিতার এজেন্টদের পার্থক্য কি? দুই জন-ই তো কিন্তু পেটের জন্য নামছে! একজনের চাহিদা ব্যাপক আরেক জনের চাহিদা কয়েকটা কাষ্টমার। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এক আইনজীবির দুই শাপ-শিয়াল সম্পর্কের নেত্রীদ্বয়ের সেবা দিতে দেখে মনে হয়েছে সবই সম্ভব রফিক। যাগ্গে বলে কি হবে? আমাদের রাজনীতিবিদ,আমলা, ব্যবসায়ী এমন কি জাতীয় ঘাট মাঝি লীগ বা দলের সভাপতি ও দুর্নীতি করে দলীয় অধিকারের ট্যাগ পায়। আর যদি আপন দল ক্ষমতায় থাকে তাহলে তো কথাই নাই! সাথে আছে সাবেক না! বর্তমান আ.লীগ বা বিএনপির হাইকোর্টপতি। এই ঘুরে ফিরে গোলকার পৃথিবীর কয়েকটা ঘর ফাড়ি দিয়ে মাসের মধ্যেই জননেতা হাজির জনগনের সেবায়। রাজনৈতিক হয়রানি মূলক, জনগণ অন্যায় মেনে নিবে না! জননেতা সেলিম ভাইয়ের নিঃশর্তের মুক্তিতে জনগণের বিজয় হয়েছে। নিজের মতো করে বিচার পেয়েছি এটা অবশ্য বলে না!
মাথায় যদি উকুন থাকে চুলকানী বা অস্হিরতা তো থাকবেই। আমাদের দেশটা ও মাথার উকুন এবং অথৈ অধিকারময় চুলকানির শিকার। যার কারনে দেশ স্বাধীনের পর থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় সময় অস্হিরতা বিরাজ করেছে আমাদের ক্ষমতার কেন্দ্রে। অক্সিজেন বিহীন থাকা! আমরা যাদের বাহুগামী যৌনাচারের শিকার হয়ে নানাবিদ রোগে ভুগতাছি জন্মের পর থেকে তাদের কে শুধু কামনার অঙ্গ উৎপাদন করে দিয়ে-ই যাচ্ছি। তার প্রামন আমাদের ছাত্র এবং যুবারা। দেশের কথা কেউ ভাবে না.....
এই গত কয়েক দিন আগে কয়েকটা খবর পড়লাম পত্রিকায়, তা হচ্ছে জননেতা আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন কে নিয়ে। ভাষনের অংশ বিশেষ
ক. সন্ত্রাস করে কেউ রক্ষা পাবে না! যারা সৎ পথে( আবুল হাসনাতের পথে?) ফিরে আসবে তাদের পুর্নবাসন করা হবে।
খ. বিশাল সংবর্ধনা। কয়েক শত তোরণ, প্লাকার্ড,ব্যানার,পোষ্টার, গাড়ী শোভা যাত্রার কোন হিসেব নাই! এই যেন বঙ্গবন্ধুর স্বদেশে ফিরে আসা! এমনই হয়! যারা দেবীর চরণে পুজা দেয়। কিন্তু এই আয়োজনের অর্থ কোন সিন্দুক থেকে এসেছে? দিন বদলের কি? ১/১১ এর সময় পালিয়ে ছিলেন আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ। কত টাকা অবৈধ উপায়ে কামিয়েছেন আর কত টাকা কর ফাকি দিয়েছেন তা না হয় এখন দিন বদলের জন্য থাকুক। কিন্তু বিচারের কথা বলে কি হবে? আইন তো জননেতাদের পায়ে পায়ে উষ্ঠা খায়! আর সেই আইন-ই দাসের জন্য বেদের পবিত্র পন্ক্তি!!
অধিকারের কথা বলুন... না হয় বরং আমার পড়া গতকালকের সেরা উদ্ধৃতটি পড়ুন আমাদের দুদকের চেয়ারম্যান বলেছেন........
"দুর্নীতিবাজে দেশ ভরে গেছে....। কিন্তু আদালতের চোখে দেশে কোন দুর্নীতি এবং দুর্নীতিবাজ নেই।" - গোলাম রহমান।
উপরে আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহরে দেখে কি মনে হয়? গোলাম রহমান বা হাসান মাশহুদেরা মিথ্যাবাদী? যাক বাবা কেমনে জানি কয়েকবার ষড়যন্ত্র করে দেশটা কে দুর্নীতির বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান বানানো হয়ে ছিলো! অথচ আমাদের আদালতের রায়ে আমরা
সন্তুষ্ট থাকতে পারি যে দেশে কোন দুর্নীতি বা তেমন কোন দুর্নীতিবাজ নেই। আমাদের বিচারপতিরা সবাই যদি হক ভাইয়ের মতো হতো কতই না ভালো হইতো। আবেগ এবং দলের প্রতি অনুগত থাকার কি দারুন দৃষ্টান্ত । আশাকরি আমার ছেলেপুলে কে দেখাবো আর বলবো বাবা তুমি এমন হয়ো ....!
যাক শেষ কথা বলে যাই "আজকের রাজা আগামী কাল ফকির" এ রকম শ্লোক কিন্তু সবার জন্য নয়! যারা দেবীদের চরণে পুজা দেয়, ধুলো নিয়ে কপালে মাখে তারা ছাড়া।
আজকে আরেকটা খবর পড়লাম। আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি! যাই হোক খবরটা পড়ে গভীর ভাবে দিন বদল এবং অবাধ্যতার শাস্তির পার্থক্য নিয়ে চিন্তায় মগ্ন হয়ে ইতিহাস টান দিলাম.... " ১/১১ তে যখন আব্দুল জলিল গ্রেপ্তার হয়ে ছিলো তখন জননেত্রী এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট জিল্লু রহমান চাচায় কি বলে ছিলো? ষড়যন্ত্র এবং রাজনৈতিক হয়রানি মূলক কি? বিচারের নামে নির্যাতন করা হচ্ছে জননেতাদের। এবার আপ্নেরাই খবরটা বাহির করে পড়েন। কি পাইলেন?
যাই হোক প্রায় একই ধরনের দুর্নীতির মামলা এবং অন্য মামলার আসামী হয়ে একজন একশ তোরণ,লক্ষ পোষ্টার,গাড়ী বহর দিয়ে স্বজেলায় স্বাধীনতা ভোগ করে গনতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে! রাষ্ট এই জননেতাদের কাছে কিছু না! কাগুজী বাঘের নখ রাখাতে ও গনতান্ত্রিক অধিকার থেকে জননেতারা বন্চিত হতে পারে।
আর আরেক জন লন্ডন থেকে অবাধ্য ছেলে হয়ে ফিরে এসে কিছুই পায় নি! তোরণ, পোষ্টার কিছুই না। (কারনটা কি? নেত্রী বিরুধীতা? গনতন্ত্র কি বলে? )অথচ এই ব্যক্তি টি ৩ বছর পুর্বে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের ২য় ব্যক্তি ছিলো! ভাবতে পারেন? জননেত্রীর সব মামলা এবং ড.মহিউদ্দিন চৌধুরী এমন কি তারেক জিয়ার মামলা ও প্রত্যাহারিত হইলো। তাইলে কি? গত বছর গুলোতে আ.লীগের করা তারিকী দুর্নীতির অভিযোগ গুলো কি রাজনৈতিক ছিলো? জলিল কি অবাধ্য ছেলে? আমাদের রাজনীতিবিদেরা হিংস্রা নিয়ে বেঁচে আছে হিংস্র জন্তু জানোয়ারের মতো?
আপনাদের কি মনে হয় না? দুর্নীতিতে দেশ ভরে গেছে....। কিন্তু দেশে কোন দুর্নীতি এবং দুর্নীতিবাজ নেই!! আমাদের আদালত বিএনপি আ.লীগ হয়ে গেছে। সেটা বিচারক এবং আইনজীবিদের অতীত ইতিহাস এবং বর্তমান দেখলেই বুঝা যায়। ন্যায় বিচার এবং দেশপ্রেম প্রায় বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্ট মানুষদের নেই। যা কিছু শুধু দেবীদের জন্য...।
১/১১ এর সেই দিন গুলিতে দলীয় আইজীবিরা সংবাদ সম্মেলনের সময় ক্যামরামুখি বদনখানি একটু দেখানোর জন্য কি আপ্রান চেষ্টাই না করেছে। আর তখন আমার চোখে ভেসে উঠতো বড় বড় শুয়োর খামারের ক্ষুদার্থ শুয়োর গুলির চাপাচাপির দৃশ্য। নিয়ম শৃংখলা মানুষ এবং পশু।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১১:২৩