২০০৩ সালের ১৭ নভেম্বর হতে ২০০৪ সালের ০৪ জানুয়ারী পর্যন্ত বিভিন্ন পদে বেশ সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী এডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আমিও এ সময়ের মধ্যে নিয়োগ পাওয়া একজন। পরবর্তীতে ০৫ জানুয়ারী ২০০৪ তারিখে 'দৈনিক সংবাদ' সহ একাধিক জাতীয় পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে আমরা এডহক ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সহ আরো অনেকে সে সময় নির্দিষ্ট নিয়ম কানুন মেনে বিভিন্ন পদের বিপরীতে আবেদন করলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যাচাই বাচাই করে যাদের নামে সাক্ষাতকার পত্র প্রেরণ করে তারা সাক্ষাতকার বোর্ডে হাজির হন। পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষ আমাদের এবং আরো অনেকের নামে নিয়োগপত্র ইস্যু করলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করি এবং কর্তৃপক্ষ আমাদের যোগদানপত্র গ্রহণ করে ও অবেক্ষধীন সময় উল্লেখ করে আমাদের পত্র প্রেরণ করে। অবেক্ষধীন সময় শেষ হলে আমারে চাকুরী নিশ্চয়ন করা হয়।
উল্লেখ্য আমাদের এ নিয়োগকে কোড করে ২০০৪ এর ৩১ ডিসেম্বর ডাক্তার ফজলে রাব্বী মিয়া মহামান্য হাইকোটে একটি রিট পিটিশন দাখিল করলে বিজ্ঞ আদালত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকট একটি রুল জারী করে। পরে বিভিন্ন সময়ের শুনানী শেষে বিজ্ঞ আদালত ২০০৬ সালে রিটটি খারিজ করে দিলে রিটকারী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপিল না করলে রিটটির চুড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়।তবুও বিধি বহির্ভূতভাবে দীর্ঘ সময় পর ২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর এই মামলার বাদী না হয়েও গাজীপুর-১ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য এডভোকেট আকম মোজাম্মেল হক মামলাটি পুনরায় শুনানীর আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট এ বিষয়ে বিভিন্ন তথ্যে ডকুমেন্ট চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আদালতকে কোন ধরনের সহযোগীতা না করে বিধি বহির্ভূত মামলার বিধি বহির্ভূত বাদীর সাথে আতাত করে নিশ্চুপ থাকে। একসময় ২০১১ এর ২৩ আগষ্ট বিজ্ঞ আদালত বিবাদীর অনুপস্থিতে মামলার রায় দেন, ২০০৩ সালের ১৭ নভেম্বর হতে ২০০৪ সালের ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিয়োগ অবৈধ।
এ রায়ের কপি মামলার বাদী নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসে কর্তৃপক্ষকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে রায় কার্যকর করার জন্য চাপ দেন এবং কর্তৃপক্ষ জরুরী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মামলার রায় কার্যকর করার ব্যবস্থা করেন, যদিও কয়েকজন সদস্য এতে আপত্তি জানান।
চাকুরীচ্যুতরা এ স্থগিত করার জন্য চেম্বার জজ আদালতে যান। সেখানে আইনমন্ত্রী, শিক্ষা উপদেষ্টা, এটর্নী জেনারেল এবং আকম মোজাম্মল হক তার দল বল নিয়ে হাজির হলে বিচারপতি বিব্রতবোধ করেন।
আকম মোজাম্মল হকের এ ক্রোধের কারণ কি জানেন ?
যারা জানেন না তাদের জন্য বলছি, এই মোজাম্মেল সাহেব বিভিন্ন পরীক্ষায় বহিষ্কৃত তার মেয়েকে চাকুরীতে নিয়োগের জন্য আসলে, সে সময়ের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মোজাম্মেল সাহেবের মেয়েকে যোগ্যতার অতিরিক্ত পদে নিয়োগ দিতে অনীহা প্রকাশ করেন। তখন থেকেই তিনি সে সময়েই প্রমিজ করেন, যে সময়ে তার মেয়ে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী পায় নি, সে বিশ্ববিদ্যালয়ে তার শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকতে ঐ সময়ে নিয়োগ পাওয়া কাউকে চাকুরী করতে দিবেন না।
একজন সাংসদের ব্যক্তিগত হিংসার প্রতিফলন হিসেবে অবৈধভাবে ক্ষমতার প্রভাবে মামলা করে বিপূল সংখ্যক চাকুরীজীবিকে চাকুরীচ্যুত করা কতটা মানবিক সেটা বিচারের ভার পাঠক ও জ্ঞানী সমাজের নিকট থাকল।
আমাদের কোন অন্যায় আপনাদের চোখে ধরা পড়লে জানাবেন। তবুও একটা সান্তনা থাকবে, আমাদের অন্যায়ের কারণেই আমারা আজ চাকুরীচ্যুত।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ সকাল ৯:৫৪