গত ৩০ ডিসেম্বর হয়ে যাওয়া একাদশ জাতীয় নির্বাচন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪৭ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে নিকৃষ্ট প্রহসন হয়েছে। আগে থেকে প্রধান বিরোধীদলীয় নেতাকে কারাগারে রেখে বিএনপির সারাদেশে ৬৮ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার এবং একের পর এক গায়েবী মামলা দিয়ে হয়রানী, নির্বাচনে সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে, দেশের মানুষের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে ।
তবে আশার কথা হলো এতে ক্ষমাসীন স্বৈরাশাসক মহলেরই আসল পরাজয় হয়েছে ।
বিএনপির জন্য প্লাস পয়েন্টে হলো, সবাই আগে খালেদা জিয়ার সমালোচনা করেছে, অনেকে বলেছে তিনি রাজনীতি বুঝে না, এবং তাই ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী নির্বাচন বয়কট করে ভুল করেছে, এখন সেই ধারণা স্বৈরাচারীরা ভুল প্রমাণ করেছে, বিএনপির প্রথম থেকেই দাবি ছিলো নির্দলীয় সরকারের অধিনে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, কিন্তু হাসিনা একদম গায়ের জোরে দেশের সংবিধান পরিবর্তন করে প্রচলিত নির্বাচনী সিস্টেমই পাল্টে দিয়ে দলীয় সরকারে অধিনে নির্বাচন করার বিধান চালু করেছে বির্তকিত ভাবে ২০১৪ সালে একতরফা নির্বাচন করে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরেও প্রহসনের নির্বাচন কর, যা ২০১৪ থেকেও জঘণ্য ৫০ % ভোট প্রশাসনকে দিয়ে রাতেই দিয়ে দিলো । তবে বর্তমান স্বৈরাচার শাসক যদি দলীয় সরকারের অধিনে নিবার্চন বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য বা আগামীতে আবারো দলীয় সরকারের অধিনে নির্বাচন করতে চাইতো তবে এমন ডাকাতি করার সময় আরো সতর্ক থাকতে পারতো, গিলার সময় হুশ ছিলো না, এখন হজমটা বড় কঠিন হয়ে গেছে ।
বিএনপিকে কোন আসন দেয়নি তবে যদি বামজোটকে ৩/৪ আসন এবং ইসলামী ঐক্যজোট চরমোইনকে ৫/৬ টি আসন দিতো তবে এই ফাঁদ পেতে আবারো তার অধিনে নির্বাচন করতে পারতো হাসিনা, তা আর হবে না, আগামীতে কেউ তার অধিনে নির্বাচনে যাবে না। এই জায়গায় ধরা, এমন কারচুপি করেছে যা ৪৭ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্য, ঘৃণিত। দেশের মানুষের সাথে নিষ্ঠুর প্রতারণা, এবার সারাদেশের কোন রাজনৈতিক দল মরে গেলেও হাসিনার অধিনে নির্বাচনে যাবে না, বিএনপির দাবির সাথে সবাই ঐক্যবদ্ধ হবে সেটি এখন সময়ের ব্যাপার। আর সুষ্ঠু নির্বাচন হলে হাসিনার দলের ভরাডুবি হবে ইতিহাসের সবচেয়ে বাজেভাবে । সারাদেশে বিএনপির মতো একটা সর্ববৃহৎ দল নাকি ৫ আসন পায় !
অথচ আপনারা জানেন ফেনী জেলা বিএনপি ঘাঁটি সেখানে স্বাধীনতার পর কখনো লীগ জিতেনি সুষ্ঠু নির্বাচনে বা সিলেটে সদ্য মেয়র নির্বাচনে আরিফুল হক জিতেছে সেই ভোট গেলো কই? পুরা চট্টগ্রাম বিভাগে বিএনপির কোটি কোটি ভোট ব্যাংক তা গেলো কই?
এসব হাস্যকর রাতের আধাঁরের নির্বাচন জাতি বয়কট করেছে।
এখন বিএনপিকে যা করতে হবে আমি মনে করি :
আরো সক্রিয় হতে হবে, জামায়াতকে আপাতত ছেড়ে বামদলকে সঙ্গে রাখুন, আন্দোলনে গতি আনতে ইসলামী ঐক্যজোটের সাথে সমন্বয় করুন, তাহলে হেফাজতকেও পাশে পাবেন, কারণ হেফাজতের বেশীরভাগ চোরমোনাই পন্থী, আর সারাদেশে ত্যাগিদের দিয়ে তৃণমূলকে মূল্যায়ন করুন, মামলা - হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত নেতাকর্মীদের দায়িত্বভার নিন, ছাত্রদল থেকে অদক্ষ বুড়াদের বাদ দিয়ে নতুন করে সংগঠনটিকে সাজান, এবং দলে জিয়া পরিবারের সদস্যদের অন্তর্ভূক্ত করুন । ডা. জোবায়েদা রহমান দিয়েও করা যায়।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:৩২