somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোটগল্প- অশ্রুবিলাস...

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"রানী একটা সাধারন মেয়ে।কলেজে পড়ে।চোখে অনেক সপ্ন তার।ভবিষ্যতে সে নিজেকে স্বাবলম্বী দেখতে চায়।একটা উচ্চতায় যাওয়ার খুব শখ।

পড়াশোনায় ও সে খুব ভাল,রীতিমতন স্কলার বলা চলে।সপ্নে ভরা চোখদুটোও ভারী মিষ্টি।

চশমার ফাঁকে খুব একটা দেখা যায় না।তবে যে দেখে সে রানী কে নিয়ে সপ্ন দেখা শুরু করে।

তবে রানী এসব পাত্তা দেয় না।সে পড়াশোনায় ভারী ভীষণ আগ্রহী।অন্যকিছুতে নয়।বাবাকে রানী খুব শ্রদ্ধা করে।বাবার চাপ কমানোর জন্য ও টিউশনি করে।

ফলে নিজের খরচ নিজেই বহন করতে পারে মোটামুটি।

_


বেশ ভালই যাচ্ছিল তার দিন গুলো।এরই মধ্যে এল একজন।রানীর স্বাভাবিক জীবনকে পাল্টে দিল।ছেলেটার সঙ্গে দেখা হয় অনেকটা ভুল বোঝাবুঝির মধ্য দিয়ে।রানী একদিন এক নাম্বারে ফোন করতে গিয়ে অন্য নাম্বার চেপে বসে।সেখানেই পরিচয় হয় রনর সাথে।

রন প্রথমে ভাবে মেয়েটা ইচ্ছে করে ফোন দিয়েছে হয়ত।তাই কিছু ঝাড়ি দেয়।এতে রানী বেশ রেগে যায়।ফোন রেখে দেয়ার আগে রন কে ও বেশ কিছু বিষবাক্য শুনিয়ে দেয়।

রন বিষয় টা ধরতে পারে এবং কিছুক্ষন পর আবার ফোন করে।এভাবেই শুরু,রাত শেষ হয়ে যেত কিন্তু ওদের কথা শেষ হত না।

রনর সাথে কথা না বললে রানীর ভালই লাগত না।একবার রনর ফোন নষ্ট হওয়া তে রানী প্রায় পাগল হয়ে গিয়েছিল ৩ দিন।

সেখান থেকে দুজনই বুঝতে পারে ভালবাসা কি...

বন্ধুত্ব টা আস্তে আস্তে প্রেমে রূপ নেয়।

খুব বেশীই ভাল লাগত ছেলেটাকে।তাই ওর হাত ধরে অজানায় পাড়ি দিতে মন চাইত।

রন ওকে নিয়ে অনেক ঘুরত চারিদিকে।শহরটার অনেক জায়গায় ওরা হাটত।

খুব ভাল লাগত রানীর।রনর হাতটা ছাড়তে ইচ্ছে করত না।সবদিক থেকে নিজেকে অনেক ভাগ্যবতী মনে করত রানী।রনর হাত ধরে সারাজীবন

কাটিয়ে দিতে পারবে ও।

_

রন তখন মাত্র ভার্সিটি তে উঠবে।চেষ্টা করছিল ভাল কোথাও টিকার।চান্স ও পেয়ে যাচ্ছিল প্রায় কিন্তু এরই মধ্যে রনর মাথায় পাইলট হওয়ার ভুত চাপে।

অল্প দিনে ভাল পজিশনে যাবার ইচ্ছে।রানী ওর মতামতে বাধা দিত না।

রন ছিল এককথার মানুষ।পাইলট হওয়ার জন্য সত্যিই একদিন চলে গেল ও একটা বেসরকারী ইন্সটিটিউটে।

ওনেক খরচ ও বটে।রন ওখানে গিয়ে আস্তে আস্তে থিতু হতে লাগল।অনেক দিন লাগে পাইলট হতে,প্রায় ২ বছর।রন ও বেশভাল ছাত্র।

_

ভালই চলছিল।কিন্তু রানীর ভাল লাগছিল না।রনর সাথে আগের মতন কথা হয় না।ওর মনে হত রন বুঝি ওকে ভুলে গেছে।মাঝে মাঝে কথা হত।কিন্তু আগের মত না।রন কেমন যেন হয়ে গেছে।অনেক যান্ত্রিক।হাই/হ্যালো/কেমন আছ এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ।জিজ্ঞেস করলে বলত অনেক চাপে আছে তাই।কিন্তু রানী চায় আগের সেই রন কে।আস্তে আস্তে বুঝতে পারল সেটা সম্ভব না।রন

কে সে চাইলেই পেতে পারে না।কিছু বলতে ও পারত না।রানী ও ধীরে ধীরে গুটিয়ে যেতে লাগল...কিছু ভাল লাগে না তা আগের মতন,পোড়াশোনা ও না।

একদিন রনর কল আসে।কথায় কথায় তাদের কথা কাটাকাটি হয়।এক পর্যায়ে রন রেগে গিয়ে আর কথা বলবে না বলে।রানী অনেক রেগে যায় এতে।অনেক সহ্য করেছে।ও আর রন কে ভালবাসে না।এই শেষ...রন এখন রানী থেকে অনেক দুরে...অনেক......কিন্তু এখনো জ্যোৎস্না রাতে রানী বসে থাকে নীল আলোয়,যদি রন ডাক দেয় এই আশায়"

_

এইটুকু পড়েই রফিক সাহেব থামলেন।রানীর ড্রয়ারে সকালে তিনি একটা ডায়েরী পেয়েছেন।মেয়েটাকে দিবেন দিবেন করতেই দেখলেন উপরে ছোট্ট করে লিখা 'রনর রানীকে'।এই দেখে একটু উকি দিলেন ভেতরের পাতায়।পুরোটা পড়ে খুব বিস্মিত হলেন।মেয়েটা পারে ও বটে।এত কিছু চেপে আছে কিন্তু বাবা হয়ে তিনি কিছুই ধরতে পারলেন না।লজ্জিত ও হলেন।কি করা যায়??ডাক দিয়ে বকা দিবেন নাকি মাথায় হাত বুলিয়ে শান্তনা দিবেন??নাহ,আরো ভাল একটা জিনিস মাথায় এসেছে।

______________________________

______________________________

৭ দিন পর...........................রন এখন পুরোদস্তুর পাইলট।আর কয়দিন পরেই একটা বিদেশী কোম্পানী তে এপ্লাই করবে।চাকরি হবার সম্ভাবনা ৯০%।মন ভাল হবার কথা থাকলে ও ওর মন টা অনেক খারাপ।অনেক দিন হয়ে গেছে রানী কোন খবর নেই।মেয়েটা কি ওকে এতই ঘৃনা করে?নাকি অন্য কাউকে......

এমন সময় বাসায় একটা পার্সেল এল।পার্সেলটা রনর জন্য।রন খুলে দেখল একটা ডায়েরী...উপরে লিখা 'রনর রানীকে'..............................
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×