somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভার্সিটি লাইফে আমাদের সকালের নাশতা এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক জটিলতা....(মোটামুটি রম্য) !!!!!

০৫ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অনেকদিন পর ব্লগে লিখছি। উচিৎ ছিলো স্বরনীয় কিছু নিয়ে লেখা, অথবা হিট বা হট(!) কোন পোষ্ট দেওয়া। দুঃখের বিষয় আমি হিট পোষ্ট একেবারেই লিখতে পারিনা। চুপি চুপি বলি, মাঝে মাঝে মনে হয়- হিট তকমা পাবার জন্য দু একটা "১৮+" লিখে ফেলি। সাহস হয়না। পাছে আবার আপনারা বলেন, ভাতিজার মুখ খারাপ!!!!!। এক কাজ করলে কেমন হয়। কয়েকদিন আগের একটা সত্যি ঘটনা লিখি। পাঠকদের কাছে আগেই মিনতি, আমার ব্লগিং-এর হাইবারনেশন কাটানোর জন্যই এই লিখাটা। এটা ভাবলে চলবেনা, মহান কোন বিষয়ে আলোকপাত করার জন্য লিখছি। এই ঘটনাটার কোন মোরাল নাই, কোন ম্যানডেট নাই। আছে শুধু একজন ব্লগারের কিছু কথা শেয়ার করার সুতীব্র বাসনা।

পটভূমি: মাস্টার্স জীবনের সপ্তম বা অষ্টম ক্লাশ। এক ভার্সিটি থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসেছি আরেক ভার্সিটিতে। আসে পাশে সব অচেনা জন। আমি কিছুটা তো সংকুচিত। নতুন বন্ধুদের সাথে তখনও সেভাবে পরিচিত হতে পারিনি। স্যার ক্লাশ নিচ্ছেন। স্যারও নতুন মানুষ। তিনি পড়াচ্ছেন, খাদ্য-শশ্যে শ্বেতসার বা আমিষের পরিমান। স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের দৈনন্দিন জীবনে তিনবেলা খাবার দাবারের ভূমিকার কথা আসলো। স্যার জানতে চাচ্ছেন, আমরা সকালে কে কি নাশতা করি। স্যারের দৃষ্টি আমার দিকে- বললেন, তুমি কি নাশতা খেয়ে ক্লাশে আসো? আমি প্রস্তুত ছিলাম না(অবশ্য আনি কখনই ক্লাসে প্রস্তুত থাকিনা)। হতভম্ব হয়ে সিট ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম। আসে পাশে তাকিয়ে দেখি সবাই আমার দিকে অতি আগ্রহ সহকারে তাকিয়ে আছে। আমি জানি, আমার একটা উত্তর নতুন বন্ধুদের কাছে আমার সামাজিক অবস্থানকে প্রকাশ করে দিবে। সামান্য একটা উত্তর, অথচ কি তার ক্ষমতা!!! উদাহরন দিয়ে বুঝিয়ে দেই, যদি আমি বলি, স্যার , আমি রোজ ডিম/মুরগি ভুনা দিয়ে খিচুরী(ভার্সিটি ক্যাম্পাসে সবচেয়ে দামী নাশতা ডিম খিচুরী) খেয়ে ক্লাসে আসি- তাহলে আমি স্বচ্ছল ছাত্রদের কাতারে চলে যাবো। যদি আমি বলি, একটা কলা আর একটা বিস্কিট খেয়ে ক্লাসে আসি, তাহলে আমি চলে যাবো মধ্যবিত্তের কাতারে। একদম খাইনা বল্লে তো কথাই নেই। আমি চাইলাম না সমাজে আমার অবস্থান সম্পর্কে কারো কোন অনুমান নির্ভর ধারনা তৈরি হোক। আমি হাসি মুখে স্যারকে বল্লাম, আজকে তো স্যার কিছুই খাওয়ার সময় পাইনি। স্যার আবার জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি সচরাচর কি কি খেয়ে ক্লাসে আসো? আমি আবারও রহস্যের ছলে উত্তর দিলাম, ঠিক নাই স্যার কোন দিন একটা কলা খাই, কোনদিন পরটা আবার কোনদিন খাইনা। স্যার অবাক হয়ে বললেন, বল কি? তোমার তো নাশতার কোন ঠিক ঠিকানাই নাই, তুমিতো দেখি অন্য রকম লোক!

পাঠক, এটা স্বাভাবিক যে, দৈনন্দিন খাবারের মেনু মানুষের একটা পরিচিতি গড়ে দিতে পারে। ইনফ্যাক্ট, মানুষের মনে একটা ধারনা তৈরি করে দিতে পারে। কিন্তু এটা সামাজিক অবস্থানের আদৌ কোন প্যারামিটার হবার ক্ষমতা রাখে কি?

স্যার এবার অন্যান্যদের নাশতার মেনু জিজ্ঞাসা করলেন। আমার নতুন বন্ধু-বান্ধবীরা আমার সাথে সুর মিলিয়ে বললো, ঠিক নাই স্যার। একেকদিন একেক রকম। স্যার আমাদেরকে দৈনিক সুষম খাবার খাওয়া এবং সকালে অবশ্যই নাশতা করে আসার পরামর্শ দিলেন।



আমি সবার কাছ থেকে আমার সামাজিক অবস্থান সম্পর্কে ধারনা তৈরি হওয়াটা প্রতিহত করতে পারলাম। ধারনাটা তো ভূল অথবা ঠিক দুটোই হবার সম্ভাবনাই রাখে। তবে একটি কথা না বল্লেই নয়, বন্ধুদের কাছে আমাদের সামাজিক অবস্থানের কোন ভেদাভেদ নেই। অবস্থানকে ব্যতিরেকেই আমাদের বন্ধুত্ব। আমি গর্বিত নতুন বন্ধুদের নিয়ে(নতুন বন্ধুদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী, একটু তেল মারার জন্য)।


একটুখানি নীতিকথা:
১। খানা খাদ্যের সাথে সামাজিক অবস্থানের কোন সম্পর্ক নেই।
২। নিয়মিত সুষম খাবার খেতে হবে।
৩। সকালে নাশতা না করে ক্লাসে যাওয়া ঠিক না।
৪। খাওয়ার সময় বেশি কথা বলা উচিৎ না।


বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই পোষ্টের বিষয় বস্তু একান্তই ব্লগারের নিজস্ব চিন্তা ভাবনার বহিঃপ্রকাশ।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:২৭
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জলদস্যুরা কি ফেরেশতা যে ফিরে এসে তাদের এত গুণগান গাওয়া হচ্ছে?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭


জলদস্যুরা নামাজি, তাই তারা মুক্তিপণের টাকা ফেরত দিয়েছে? শিরোনাম দেখে এমনটা মনে হতেই পারে। কিন্তু আসল খবর যে সেটা না, তা ভেতরেই লেখা আছে; যার লিংক নিচে দেওয়া হলো।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×