বর্তমান সময়ে Android Mobile একটি কমন নাম। প্রত্যেকের হাতে হাতেই এখন এন্ড্রয়েড দেখা যায়। কারন এন্ড্রয়েড দিয়েছে আমাদেরকে ক্রিয়েটিভিটি (অবশ্যই ভার্চুয়ালি) দেখানোর সুযোগ। এন্ড্রয়েড ছাড়া একটি দিন কল্পনাই করা যায় না।
Android চালিত মোবাইল ইউজারদের অনেক সুযোগ-সুবিধা থাকলেও সবারই একটাই অভিযোগ "ব্যাটারী ব্যাকআপ"। আমার নিজেরও এই অভিযোগ ছিল। কিন্তু কয়েকটি টিপস এবং এপ্লিকেশন ব্যবহার করে আপনি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
ব্যাটারী যে সকল কারণে বেশি খরচ হয়ঃ
১। ডিস্প্লে ব্রাইটনেসঃ এন্ড্রয়েডের ব্যাটারীর প্রায় ৫০% ব্যবহার করে এর ডিস্প্লে বা স্ক্রিন। এন্ড্রয়েড এর ডিস্প্লে ব্রাইটনেস কমিয়ে রাখলে ব্যাটারী অনেকক্ষন ব্যাকআপ পাওয়া যায়। কিন্তু এই ব্রাইটনেস কমানোরও একটা লিমিট দেওয়া হয় মোবাইল গুলোতে। ফলে চাইলেও আর ব্রাইটনেস কমানো যায় না।
২। সিপিউঃ মোবাইলের সিপিউ বা স্ট্যান্ডবাই মুড এও চার্জ ভালোই যায়। আপনি মোবাইলের স্ক্রীন অফ রাখলেও তো সিপিউ অফ করতে পারছেন না। তাই স্ক্রীন অফ রাখলেও ব্যাটারী কমে যায়।
৩। গেমিংঃ গেমিং এন্ড্রয়েড একটী অন্যতম বিষয়। টাইম পাসের জন্য একটু আধটু গেম খেলতেই পারেন। কিন্তু বেশিক্ষণ গেম খেললে ব্যাটারী অতি দ্রুত শেষ হয়।
মূলত উপরোক্ত কারণ সমূহেই ব্যাটারীর চার্জ বেশি খরচ হয়। এখন আমি আপনাদের বলব কিভাবে উপরোক্ত বিষয়গুলো কন্ট্রোল করবেন
For Non - Rooted User:
Step 1: সবার প্রথমে আপনার মোবাইলে Lux নামক এপলিকেশনটি ডাউনলোড করে ইন্সটল করুন
[[এইটা প্লে-স্টোর এর ফুল-ভার্শন এর লিঙ্ক, যাদের সামর্থ্য আছে তারা অনুগ্রহ করে এপ্লিকেশনটি কিনে তারপর ব্যবহার করবেন]]
এইবার এপটি অন করে ব্রাইটনেস বার বামে টেনে আনুন আর নিজের সুবিধামত ব্রাইটনেস এ সেট করুন।
Step 2: আপনি যদি স্যামসাং এর মালিক হন তাহলে এইটা আপনার জন্য। অন্য ডিভাইসের কথা আমি জানি না কিন্তু স্যামসাং এ বিল্ট-ইন এই সুবিধা দেওয়া আছে।
সেটিংস থেকে Power Saving মুডটা অন করে দিন।
এতে রুট না করেও আপনার মোবাইলের সিপিউ ইউজিং কম হবে, ফলে ব্যাটারী ব্যাকআপ বেড়ে যাবে। পরে গেম খেলতে সমস্যা হলে পুনরায় মুডটি অফ করে দিলেই হবে। কিন্তু পাওয়ার সেভিং মুড অন করেও অনেক গেম খেলা যায়। ভিডীও দেখতে কোন সমস্যা হয় না।
Step 3: এইটা খুব গুরুত্বপূর্ণ স্টেপ। আপনি যদি আমার টিউটোরিয়াল ফলো করেন তাহলে অনুগ্রহ করে কোন ব্যাটারী সেভার ব্যবহার করবেন না। কারণ ব্যাটারী সেভার নিজেই অনেক ব্যাটারী ব্যবহার করে। এতে কোন লাভ হয় না, শুধু শুধু র্যাম খরচ হয়। আর কোন প্রকার ব্যাটারী সেভার ইউজ না করে আমার টিউটোরিয়াল ফলে করে দেখুন ব্যাটারী ব্যাকআপ বেড়ে গেছে কি না
**তবে র্যাম ক্লিন করার জন্য র্যাম বুস্টার এপটি ব্যবহার করতে পারেন। এটি আমার ব্যবহারকৃত বেস্ট র্যাম ক্লিনার এপ্লিকেশন।
**এইবারের স্টেপ গুলো শুধুমাত্র রুটেড ইউজারদের জন্য**
For Rooted Users:
***স্টেপগুলা নিজ দায়িত্বে ফলো করবেন। মোবাইলের কোনরূপ ক্ষতির জন্য আমি দায়ী না***
Step 4: Set CPU for Rooted Uesrs এপটি ডাউনলোড করে নিন। এরপর এটিকে রুট এক্সেস দিন। এরপর একটা প্রোফাইল তৈরী করুন "Screen Off" নামে। তুলনামূলক কম সিপিউ ফ্রিকোয়েন্সি সেট করুন। নেক্সট থেকে প্রায়োরিটি দিন ৫০।
এরপর আরেকটা প্রোফাইল তৈরী করুন "Screen On" নামে। এইটাতে ম্যাক্সিমাম ফ্রিকোয়েন্সি দিন, প্রায়োরিটি দিন ১০০। এতে স্ক্রীন চালু থাকা অবস্থায় আপনার কাজ করতে সমস্যা হবে না।
Step 5: Greenify এপটি ডাউনলোড করে যেই এপটি ইচ্ছা তার ব্যাকগ্রাউন্ড রানিং হাইবারনেট করে দিন। এতে এপটি ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে পারবে না এবং র্যাম ও ব্যাটারী কম খরচ হবে।
আপাতত এইগুলাই। এই স্টেপ গুলা এবং এপ গুলা ফলো করলে আপনি দেখবেন আপনার ব্যাটারী ব্যাকআপ অনেক বেড়ে গেছে। আর লাক্স ব্যবহার করে রাতে ঘুমানোর সময় ব্রাইটনেস একেবারে লো করে রাখবেন। এতে রাতে ব্যাটারী আরো কম ব্যবহার করবে।
আমি নিজে এই টিপস ফলো করি। আগে আমার মোবাইলের ব্যাটারী ব্যাকআপ ছিল ১৬ঘন্টা। অনেক চেষ্টা করেও তা বাড়াতে পারি নাই, উলটা কমে গেছিলো। তখন বিভিন্ন ব্যাটারী সেভার এপ ইউজ করতাম। পরে এই টিপস গুলা ফলো করা শুরু করলাম আর দেখলাম ব্যাটারী ব্যাকআপ এখন ৪০ঘন্টাও পাই মাঝে মাঝে। হার্ড ইউজ করলেও ৩০ ঘন্টার কম কখনো ব্যাকআপ পাই না
আজ এ পর্যন্তই। ভালো থাকবেন সবাই। যে কোন দরকারে আমাকে জানাবেন
ফেসবুকে আমিঃ Mishuk Rahman