somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেহ, চেতনা ও মন

১০ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেহ একটি জৈবিক বস্তুগত বিষয় যা নিয়ে কারো দ্বিমত নেই। এটা এক বা একাধিক কোষের সমন্বয়ে গঠিত হয়ে একটি স্বতন্ত্র জীবের রূপ পরিগ্রহ করে। কোষগুলো পাঁচ ধরণের অসংখ্য মৌলিক পদার্থের বিভিন্ন বিন্যাসে গঠিত।

এখন দেখা যাক চেতনা কি? চেতনা ভাষায় ব্যবহৃত একটি শব্দ যার উপর বিভিন্ন অর্থ আরোপ করা হয়েছে। সেই অর্থগুলো কি? প্রথমত চেতনা কোন জীবিত জীব আশ্রয়ী। যার মাধ্যমে জীবটি নিজের ও বাইরের জগত সম্পর্কে সচেতনতা লাভ করে। চেতন জীবের 'মন' আছে, যার মাধ্যমে সে চিন্তা করতে পারে, তার বিভিন্ন অনুভূতি আছে, পাপ পুণ্য, ভাল মন্দের ধারণা আছে। 'মন' আবার আত্মার সাথে সম্পর্কিত, যার অনুপস্থিতিতে দেহে কোন চেতনা থাকে না, তাকে মৃত বলা হয়। আত্মা আবার অবিনশ্বর! দেহ ছারাও তার অস্তিত্ব রয়েছে! দেহকে আবার অনেকে যন্ত্র বলে অবিহিত করেছেন। অর্থাৎ দেহ যন্ত্র একটি জিনিষ আর আত্মা বা চেতনা আর একটি। একটি গাড়ির সবগুলো যন্ত্রপাতি একসাথে জড়ো করে রাখলে যেমন তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে গাড়ীতে পরিণত হয় না তেমনি দেহ যন্ত্রও একাকী গঠিত হতে পারে না। এর জন্য দরকার কারিগর।

এভাবে 'চেতনা' শব্দটির সাথে অনেক অর্থ, ভাব ও ধারণা জড়িয়ে আছে।

এখন দেখা যাক বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ দ্বারা কি পাওয়া গেছে।

১। বহুকোষী জীব হল একটি আবদ্ধ কাঠামোয় বহু কোষের পরস্পর নির্ভরশীল সমষ্টি যারা একাধিক অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, তন্ত্র গঠন করে বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে পরিবেশ থেকে শক্তি ও প্রবৃদ্ধির উপাদান সংগ্রহ করে সক্রিয় থাকে এবং প্রতিলিপি তৈরি করে। কোষের এই সমষ্টিকে আমরা জীবের দেহ বলি। জীব দেহের অভ্যন্তরীণ সকল সক্রিয়তা ইলেক্ট্রো-রাসায়নিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার ফল।
৩। জীব দেহ একই সাথে একটি যন্ত্র যা জৈব মৌল পর্যায়ের যান্ত্রিক কৌশল ও কাঠামো দ্বারা গঠিত। এর মূল উপাদান হোল প্রোটিন পলিমার। DNA ও RNA-তে সংরক্ষিত মৌল সমূহের বিভিন্ন সজ্জা অসংখ্য ধরণের প্রোটিন তন্তু তৈরি করতে পারে। এই বিশেষ সজ্জা কম্পিউটারের স্মৃতি বিটের মত সংকেত ধারণ করে রাখে। এগুলো মৌলিক পদার্থের বিভিন্ন হাইড্রোজেন আয়নিক সজ্জা। এই ইলেকট্রিক আয়ন একটি মৌলের সাথে আর একটি মৌলের সংযোগ স্থাপন করে RNA-এর লম্বা চেইন তৈরি করে। এদের সজ্জা কোড হিসেবে কাজ করে। আবার একটি চেইনের আয়নিক সজ্জা অনুযায়ী দীর্ঘ বাহুর বিভিন্ন প্রোটিন তন্তু তৈরি হয়। প্রোটিন তন্তুগুলো আবার তাদের বহিঃস্থ আয়ন অনুযায়ী আকৃষ্ট হয়ে তন্তুর বিভিন্ন আকৃতির পিণ্ড গঠন করে। পিণ্ডের খাঁজে খাঁজে আয়নের বিন্যাস বিভিন্ন এনজাইম তৈরি করে। এই এনজাইমগুলোতে আয়নসমূহ বিদ্যুৎ গতিতে দেহস্থ প্রতিটি কোষে সংকেত গ্রহণ ও প্রেরণ করে থাকে। তন্তুর ভাঁজে আয়নের বিন্যাস কম্পিউটারের বিটের মত স্মৃতি সংরক্ষণ করেও রাখতে পারে। এভাবে দেহের অভ্যন্তরে একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা ও যৌথ স্মৃতি ধারক রয়েছে এবং এই সবই বস্তুগত। দেহের অভ্যন্তরে সকল কোষের যোগাযোগ ও কর্মকাণ্ড মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই চলতে থাকে। একটি কোষের অভ্যন্তরে সকল পুষ্টি ও শক্তি ভারসাম্য অবস্থায় থাকে। কোন কিছুর অভাব হলে এর আয়নিক সংকেত তার আবরণের বাইরে দরকারি উপাদান জমা করে এবং কোষের আবরণ প্রয়োজনীয় উপাদান সংগ্রহ করে নেয়। এভাবে সকল কোষের একই লক্ষ্য হোল বাইরে থেকে পুষ্টি ও শক্তি সংগ্রহ করে তার কর্মযজ্ঞ সচল রাখা।Krebs cycle

৪। পৃথিবীর আদি জলীয় পরিবেশে অণুজীবের বহিঃ-ত্বক সরাসরি জল থেকে পুষ্টি ও শক্তি শোষণ করতে পারত। এদের ত্বকে অবস্থিত প্রোটিন রজ্জুর সঞ্চালনের ফলে এরা এদিক সেদিক ঘুরে ঘুরে পুষ্টি সংগ্রহ করত। বিবর্তনের পথক্রমে সকল কোষের স্থলে কিছু অংগ বহিস্থ সংকেত ধরতে সক্ষম হয়; আয়নিক স্মৃতি সেগুলোকে উপকারী বা অপকারী হিসেবে চিহ্নিত করে এবং সেই অনুযায়ী কিছু অংগ সেইদিকে সঞ্চালিত হয়। ক্রমশ স্মৃতি কোষগুলো একত্রিত হয়ে মস্তিষ্ক তৈরি করে। মস্তিষ্কের কাজ বাইরের পরিবেশের সংকেত ধারণ করা, বিশ্লেষণ করা এবং সেই অনুযায়ী বিভিন্ন অঙ্গকে সচল করা। ফলে প্রাণী দেহ জলীয় আবাস থেকে নির্ভরতা কাটিয়ে স্থলভাগে বিচরণ করে তাদের পুষ্টি সংগ্রহ করতে শিখল। প্রাণী মস্তিষ্কের একমাত্র লক্ষ্য হোল দেহের জন্য পুষ্টি সংগ্রহ করা, দেহকে বিপদ থেকে মুক্ত রাখা ও যৌন সঙ্গীকে খুঁজে নেয়া।

৫। স্নায়ু তন্ত্রের মাধ্যমে প্রাপ্ত বিভিন্ন তথ্য দেহস্থ বিভিন্ন গ্রন্থি সমূহ থেকে বিভিন্ন রসায়ন নিঃসরণ ঘটায়। এগুলো বিভিন্ন অনুভূতি হিসেবে মস্তিষ্কের স্মৃতি কোষে জমা হয়। সুখানুভূতি, দুঃখ, ভয়, তৃপ্তি, অতৃপ্তি, ক্ষুধা, যৌন অনুভূতি, ক্ষোভ, রাগ, বিরাগ, কামনা, বাসনা, হিংসা ইত্যাদি হোল এইসব অনুভূতির সমাহার। এই সব অনুভূতি মূলত সুখানুভূতি ও দুখানুভুতির উপজাত। রাসায়নিক নিঃসরণ যখন স্নায়ু গ্রন্থিতে বা মস্তিষ্কে দেহের জন উপকারী সংকেত প্রেরণ করে, মস্তিষ্ক এই সংকেতকে স্মৃতি কোষে সুখানুভূতি হিসেবে জমা রাখে। অপকারী সংকেত দুখানুভূতি হিসেবে জমা হয়। মস্তিষ্কের নিউরন গুচ্ছ রিসেপ্টরের মধ্যমে যখন অনুভূতির তথ্য গ্রহণ করে তখন এই যোগাযোগটি হোল অনুভব।



৬। অনুভব হোল এক ধরণের অনুবাদ। রিসেপ্টরের প্রেরিত সংকেত স্নায়ু বা মস্তিষ্ক তার মত করে অনুবাদ করে নেয়। বাইরে যখন তাপমাত্রা কমে বা বাড়ে ত্বকের রিসেপ্টর সেই সংকেত স্নায়ুতে প্রেরণ করে। স্নায়ুর স্টেম সেল ও মস্তিষ্কের নিউরন গুচ্ছ একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রার কম বা বেশী তাপমাত্রাকে ঠাণ্ডা বা গরম হিসেবে অনুবাদ করে নেয়। এটাই ঠাণ্ডা বা গরমের অনুভূতি। বাইরের তাপমাত্রার কোন অংশকে ঠাণ্ডা বা কোন অংশকে গরম অনুবাদ করবে সেটা স্নায়ু বা মস্তিষ্কের উপর নির্ভর করে। একইভাবে ত্বকে স্পর্শের সংকেত চাপের অনুভূতিতে অনুদিত হয়। বস্তু জগতের সংকেত এক জিনিষ আর সেটা কিভাবে স্মৃতি গুচ্ছে অনুদিত হবে সেটা আর এক জিনিষ। সব সংকেতই অনুভূতি হিসেবে অনুদিত হয়না, অনেক সংকেতই অনুভূতিহীন বা পরোক্ষ অনুভূতি হিসেবে অনুদিত হয়ে স্মৃতি কোষে জমা থাকে। সেন্সরগুলো বাস্তব জগতের ততটুকু সংকেতই গ্রহণ করে যতটুকুতে তার দেহের জৈবিক কর্মকাণ্ডের জন্য দরকার। তাই মস্তিষ্কের অনুবাদ বাস্তব জগতের আংশিক বিমূর্ত তথ্য মাত্র, সেটা বাস্তব জগতের সঠিক প্রতিফলন নয়।

৭। এইসব অনুভূতি দেহের সাথে স্মৃতির একটি সংযোগ স্থাপন করে। ফলে দেহ ও স্মৃতি পরস্পর নির্ভরশীল হয়ে উঠে। বহুকোষী প্রাণীর জন্য এই সংযোগ অতি গুরুত্বপূর্ণ। এই সংযোগ দেহ কোষ সমষ্টিকে এক কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। কেন্দ্র হোল মস্তিষ্ক। মস্তিষ্কের স্মৃতি হোল ভার্চুয়াল। সেন্সর বস্তু জগত থেকে যে সংকেত গ্রহণ করে মস্তিষ্ক তার মত করে সেই সংকেত অনুবাদ করে নেয়।

৮। কোন এক অনুভূতি মস্তিষ্কে যে ইলেক্ট্রো-কেমিক্যাল সংকেত তৈরি করে, মস্তিষ্ক তার স্মৃতি অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে সক্রিয় হওয়ার জন্য প্রস্তুত করে। স্মৃতির সাথে যাচাই বাছাই প্রক্রিয়া কিছুটা সময় সাপেক্ষ। এটাই চিন্তা। চিন্তা প্রক্রিয়ায় মস্তিষ্ক সবচেয়ে উপযোগী সক্রিয়তা গ্রহণ করে। এটা হোল সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া।

৯। দেহস্থ প্রতিটি কোষের আবরণের বাইরে ও ভিতরে ইলেকট্রিক্যাল আয়নের স্তর তথ্যের সেন্সর ও রিসেপ্টর হিসেবে কাজ করে। আবার কোষস্থ জিনে থাকে পূর্বের স্মৃতি। এগুলো একক কোষের সক্রিয়তা নির্ধারণ করে।

১০। জিনের স্মৃতি দেহের সকল কোষ ও অংগের যৌথ নিয়ন্ত্রক হিসেবেও কাজ করে। ফলে বিভিন্ন অংগের অবস্থান অনুযায়ী কোষের কাজও হয় বিভিন্ন। এটা হোল কোষের যৌথ জ্ঞান। এই জ্ঞান কোষেই থাকে, এর জন্য মস্তিষ্কের দরকার হয় না। একটি ভ্রূণ বিভাজিত হয়ে কোন কোষের অবস্থান কোন অঙ্গে থাকবে এবং দেহের কোন অবস্থানে কোন অংগ থাকবে তা নির্ধারিত হয় ঐ যৌথ স্মৃতি দ্বারা। দেহস্থ বিভিন্ন অংগের কার্যক্রমও এভাবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইলেকট্রিক আয়ন সংকেত দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। দেহস্থ সকল কোষের কাজের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হোল সম্মিলিত লক্ষ্য অর্জন করা। তারা সবাই মিলে তাদের সম্মিলিত জীবন চক্র সুষ্ঠভাবে চালনা করে ও বংশ বৃদ্ধি করে।
Michael Levin

১০। অনেক প্রাণীর ক্ষেত্রে এই যৌথ সংকেত একক দেহের বাইরেও দেখা যায়। পিঁপড়া ও মৌমাছি জাতীয় প্রাণী যৌথ ভাবে তাদের জীবন চক্র চালিয়ে যায়। তাদের একক জ্ঞান যৌথ জ্ঞানের কাছে সমর্পিত।

১১। তবে সব প্রাণীরই সামাজিক ও যৌন কার্যক্রম যৌথ সংকেতের উপর নির্ভরশীল।

সংক্ষেপে বলা যায়, জীব দেহ হোল সক্রিয় কোষের সমষ্টি। সমষ্টিগত কোষগুলোর জীবন চক্রকে সচল রাখাই তাদের মূল কাজ, এছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্য এদের নাই। মস্তিষ্ক তাদের এই কাজের সহযোগী অঙ্গ মাত্র। মস্তিষ্ক কম্পিউটারের মত একটি গ্যাট সিস্টেম। এখানে সচল জীবন চক্রের সংগ্রহীত তথ্য জমা থাকে। সেন্সর থেকে প্রাপ্ত তথ্য সমূহ খুবই স্থূল কিন্তু জীবের জীবন চক্র বজায় রাখার জন্য যথেষ্ট। স্মৃতি কোষে তথ্য বা ইলেকট্রিক্যাল সিগনাল যাচাই বাছাই করার প্রক্রিয়া ও দেহের সাথে তার সংযোগই জীবের চেতনা। এই চেতনা খুবই তাৎক্ষনিক। অর্থাৎ সেন্সরে যখন যে তথ্য আসে, মস্তিষ্ক তার স্মৃতির সাথে সেগুলো মিলিয়ে দেখে এবং এই তথ্যের প্রতিক্রিয়া কি হবে সেটা অতীত অভিজ্ঞতা বা স্মৃতি থেকে প্রাক ধারণা করে নেয়। সেই অনুযায়ী অনুভূতির রসায়ন নিঃসরণ হয় এবং মস্তিষ্ক দেহের অংগ প্রত্যঙ্গ সেভাবে চালনা করে। এই প্রক্রিয়া একটি ইলেক্ট্রো- রাসায়নিক চেইন। এভাবেই দেহের সাথে স্মৃতি কোষের একটি সংযোগ স্থাপন হয় এবং এর প্রতিক্রিয়ায় দেহের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক কর্মকাণ্ড প্রকাশ পায়, যার মধ্যে চেতনার গুণাগুণ রয়েছে। কিন্তু এর কোন আত্ম সচেতনতা নাই।

অনুভূতি সমূহ দেহের বিভিন্ন অঙ্গে বিভিন্ন রকম পরিবর্তন বা এক্সপ্রেশন ঘটায়। এই এক্সপ্রেশন আবার অন্য প্রাণীর দেহ তথ্য হিসেবে গ্রহণ করে তার অনুভূতিকে জাগ্রত করে এবং তার আচরণও পরিবর্তন ঘটায়। ফলে উভয় দেহের মধ্যে একটা পারস্পরিক ইন্টারেকশন ঘটে। এই ইন্টারেকশন প্রাণীদের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। এই আচরণ অসচেতন ও প্রবৃত্তিগত, ইল্যাক্ট্রো-রসায়নের ফল। জীব দেহের এই সমস্ত কর্মকাণ্ড তার জীব কোষ সমূহের যৌথ কর্মকাণ্ড যার উদ্দেশ্য জীবন চক্রকে সক্রিয় রাখা। মস্তিষ্কের ইলেকট্রিক্যাল গ্যাট সিস্টেম সম্পূর্ণতই দেহ নির্ভর কিন্তু এর কর্ম কম্পিউটারের মত ভার্চুয়াল।

একটি দলের অনুভূতি অনুযায়ী একই ধরণের এক্সপ্রেশন ও তদনুযায়ী আচরণ যখন মস্তিষ্কের স্মৃতি কোষে জমা হয় তখন এক্সপ্রেশন পারস্পরিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। একজনের একটি এক্সপ্রেশন দেখে অন্য একজনের মস্তিষ্ক প্রাক ধারণা করতে পারে সেই এক্সপ্রেশনের অর্থ কি? অন্যের এক্সপ্রেশন নিজ দেহে অনুভূতির রসায়নের নিঃসরণ ঘটায়। মস্তিষ্কের রিসেপ্টর সেই তথ্য অনুভব আকারে গ্রহণ করে। মস্তিষ্ক চিহ্নিত করে কে তার শত্রু কে তার মিত্র, কে তার যৌন সঙ্গী।

প্রাণী জগতের কর্মকাণ্ড (যেগুলোকে চেতন কর্মকাণ্ড বলে অবিহিত করা হয়) বস্তু জগতের প্রত্যক্ষ সংকেতের আয়নিক অনুবাদ এবং স্মৃতির সাথে তার মিথস্ক্রিয়া জনিত আয়নিক প্রতিক্রিয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। কোষস্থ স্মৃতি ও আয়নিক প্রতিক্রিয়া পুরু দেহের অভ্যন্তরীণ জৈবিক কর্মকাণ্ড সম্পাদন করে যার সাথে মস্তিষ্কের কোন সম্পর্ক নাই। স্টেম স্নায়ু দেহের অংগ সমূহের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে যার সাথে মস্তিষ্কের কিছুটা যোগাযোগ রয়েছে। মস্তিষ্ক প্রাণীর সাথে প্রাণীর, দেহের সাথে পরিবেশের সংযোগ ঘটায়। মস্তিষ্ক দেহের পুষ্টি সংগ্রহ ও বংশ বৃদ্ধির কাজে সহায়তা করে। তাই সকল প্রাণীরই প্রায় একই ধরণের জীবন চক্র দেখা যায়। খাদ্য সংগ্রহ, যৌন সংগম এবং যৌন সংগম সহায়ক কিছু সামাজিক বন্ধন। এই সামাজিক বন্ধন খুবই সরল, জটিল কোন সামাজিক সংগঠন তৈরি করার অথবা প্রাণীর সাথে প্রাণীর জটিল কোন সম্পর্ক তৈরির কোন ক্ষমতা এর নেই। এদের কোন আত্ম সচেতনতা ও বৈশ্বিক সচেতনতা বোধ নেই। পশু মানবও এর অন্তর্গত।

মানুষ কিভাবে আত্ম সচেতন হোল?

এক পর্যায়ে মানুষের মস্তিষ্কের তথ্য বিশ্লেষণ ক্ষমতা 'ভাষা' আবিষ্কারের মত গুরুত্বপূর্ণ বৈপ্লবিক কাজ করে ফেলে। ভাষা হোল এক্সপ্রেশনের সম্প্রসারিত রূপ। ভোকাল কর্ডের বিবর্তনীয় পরিবর্তনের ফলে মানুষ অনেক ধরণের মৌলিক ও যৌগিক ধ্বনি উৎসারিত করতে সক্ষম হয়। ফলে ধ্বনি নির্দিষ্ট এক্সপ্রেশন যোগাযোগের অনেক বেশী বৈচিত্র্য আনয়ন করে।

ভাষা হোল বিভিন্ন সংকেত বা শব্দের সমষ্টি যার উপর এমন অর্থ আরোপ করা হয়েছে যা দলের সকলেই বুঝতে পারে। সংকেত ও তার উপর আরোপিত অর্থ দুটি সম্পূর্ণ পৃথক জিনিষ। বস্তুগত ভাবে এ দুটোর মধ্যে কোন সংযোগ নেই। সংযোগ যা আছে সেটা হোল ভার্চুয়াল। বহির্জগতের সমস্ত তথ্য মস্তিষ্ক বিভিন্ন সংকেত আকারে গ্রহণ করে এবং স্মৃতি কোষ তার উপর বিভিন্ন অর্থ আরোপ করে জমা রাখে। মস্তিষ্ক হোল স্মৃতি ধরে রাখার পাত্র বা হার্ডওয়ার। স্মৃতির তথ্য আসে বাইরে থেকে। শব্দের তথ্যে মানুষ অর্থ আরোপ করে, তখন মস্তিষ্ক সেই তথ্য অর্থ সহ স্মৃতি কোষে জমা রাখে। মানুষ সহ সকল প্রাণী পরিবেশ থেকে যে তথ্য সংগ্রহ করে তা কেবল মাত্র জৈবিক দেহকে সচল রাখার কাজে ব্যবহৃত হয়। একমাত্র মানুষই তথ্যের উপর তথ্য বিচ্ছিন্ন বিমূর্ত অর্থ আরোপ করতে সক্ষম হয়েছে।

অর্থ কি? ধরুন জুলিয়েট দুর্গের গবাক্ষে একটা বাতি জ্বালাল। রোমিও দূর থেকে সেই বাতি দেখতে পেল। দুজনেরই মস্তিষ্কে নিছক আলোর তথ্য ধরা পড়ল। কিন্তু দুজনের কাছে সেই আলোর অর্থ 'এখন আস'। এই সংকেতের অর্থ শুধু তারা দুজনই বুঝতে পারে। আলোর সাথে এই অর্থের বস্তুগত কোন সম্পর্ক নেই। দুজনে মিলে আলোর উপর এই অর্থ আরোপ করেছে। মস্তিষ্কের স্মৃতি কোষে এই অর্থের কোন পূর্ব অস্তিত্ব ছিল না। কিন্তু অর্থ আরোপের পর স্মৃতি কোষ শুধুমাত্র সেই আলোর সাথে অর্থটিকেও সংরক্ষণ করেছে। এই অর্থটি হোল ভাষা। যার কোন বস্তুগত অস্তিত্ব নাই। ভাষা বিরাজ করে সামাজিকভাবে। ব্যক্তি মস্তিষ্কে সেই ভাষার কিছু অংশ অর্থ আকারে সাময়িক সময়ের জন্য সংরক্ষিত থাকে। কিন্তু সামাজিকভাবে ভাষা টিকে থাকে অনেকদিন এবং এটা সর্বদাই পরিবর্তনশীল।

ভাষা মানুষকে বস্তু জগত থেকে স্বতন্ত্র করে তুলেছে। বস্তু জগতের উপর বিভিন্ন অর্থ আরোপিত করে বস্তু জগতের বিকল্প একটি ভার্চুয়াল জগত তৈরি করেছে। প্রাথমিক অবস্থায় ভাষা ছিল যোগাযোগের মাধ্যম। কিন্তু ভাষার বিভিন্ন শব্দের উপর বিভিন্ন অর্থ আরোপের ফলে ভাষা হয়ে দাঁড়িয়েছে জ্ঞানের আধার। ভাষার মাধ্যমে বস্তু জগতের প্রতিটি বস্তুর নামকরণ করা হোল, মানুষের প্রতিটি ভাবের নামকরণ করা হোল, নামের সাথে যোগ করা হোল বিভিন্ন গুণাগুণ। ফলে একটি বস্তুর নাম বাস্তব জগতের কোন বস্তুকে চিহ্নিত করার পাশাপাশি তার বিভিন্ন গুণাগুণ এবং তার উপর আরোপিত বিমূর্ত ভাবও মস্তিষ্ক ধরে রাখে। ভাষা হয়ে দাড়ায় বাস্তব জগতের বিকল্প একটি ভার্চুয়াল জগত।

জুলিয়েটের বাতির কথাই ধরুন। চোখের সেন্সর আলোক তরঙ্গকে মস্তিষ্কে পাঠালে মস্তিষ্ক সেটাকে দ্যুতিময় কমলা রঙ হিসেবে অনুবাদ করে গ্রহণ করল। কমলা রঙ অনুবাদ করায় মস্তিষ্কের নিউরোনগুচ্ছে কমলা রঙ সম্পর্কিত সবগুলো স্মৃতি কোষ উজ্জীবিত হয়ে উঠলো। সম্পর্কিত স্মৃতি কোষগুলোতে যে অর্থ রয়েছে সেগুলো হোল, আলো, বাতি, তামা (কারণ বাতিটি তামার তৈরি), সূর্য, ঊষা, আলোকিত পথ, সত্যের পথ, শিক্ষা, আগুন, আগুনে ঝলসানো টার্কি, অন্ধকার, ভয় ইত্যাদি ইত্যাদি। রোমিও ও জুলিয়েট ছাড়া অন্য যারা আলোটি দেখেছে তাদের মস্তিষ্কের স্মৃতি কোষে শুধুমাত্র আলোর আধারটিই বেশী উজ্জীবিত হবে। কিন্তু রোমিওর স্মৃতি কোষে জুলিয়েটের ও জুলিয়েটের স্মৃতি কোষে রোমিওর মুখচ্ছবি উজ্জীবিত হবে, সাথে উজ্জীবিত হবে 'আস' অর্থটি এবং উভয়েরই মিলিত হওয়ার যৌন তাড়নার অনুভূতি জাগ্রত হবে। এই ভাব বা অনুভূতির সাথে আলোর কোন সম্পর্ক নেই, এই ভাব তাদের মস্তিষ্কেও নেই। সংকেতটি রয়েছে সামাজিক জ্ঞানে বা ভাষায় যেটা তাদের যৌন তাড়নার অনুভূতিকে জাগ্রত করেছে। সুতরাং মানুষের সচেতনতা তার মস্তিষ্কে নাই, আছে সামাজিক জ্ঞানে বা ভাষায়। যার মাধ্যমে স্বতন্ত্র দেহগুলো পরস্পর সম্পর্কিত হয়ে পড়ে।

মানুষ ভাষার মাধ্যমেই মনে মনে কথা বলে অর্থাৎ চিন্তা করে। ভাষার বাক্য ও বাক্য সমূহ চিন্তায় একটা শৃঙ্খলা এনে দেয়। বাক্যের বড় বড় গাঁথুনি মস্তিষ্কের বড় বড় নিউরন গুচ্ছকে সম্পৃক্ত করতে পারে। এতে স্মরণ শক্তি বৃদ্ধি পায়। মানুষ কোন ঘটনাকে কাহিনী কবিতা গানের রূপ দিতে পারে। এই কাহিনীর গাঁথুনি ঘটনাকে মনে রাখতে সাহায্য করে। ভাষার লিখিত রূপ ও সর্বশেষে কম্পিউটারের ভার্চুয়াল আধার মানুষের জ্ঞান আন লিমিটেড ভাবে সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়। মানুষের ব্যক্তি মস্তিষ্ক প্রয়োজন অনুযায়ী এই জ্ঞান আরোহণ করতে পারে।

এভাবে ভাষার মাধ্যমে, বিভিন্ন ঘটনা বর্ণনার মাধ্যমে, বিভিন্ন কাহিনীর মাধ্যমে, বিভিন্ন ছায়াছবির মাধ্যমে, বিভিন্ন প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে, মানুষের মধ্যে এমন সব অনুভূতির সঞ্চার করা সম্ভব যার কোন বাস্তব ভিত্তি নাই। ভার্চুয়াল বর্ণনা দেহস্থ অনুভূতিকে জাগ্রত করে বলে তার চরিত্রগুলোকে বাস্তব চরিত্র বলে ভ্রম হয়। নিজেকে চেনা, অন্যকে চেনা, বিভিন্ন চরিত্রকে চেনা (যাদের কোন বাস্তব অস্তিত্ব নাই), বিভিন্ন ভাব ও ধারণাকে বাস্তব বলে জানা ভাষায় রক্ষিত ভার্চুয়াল কাহিনী দ্বারাই সম্ভব হয়। এভাবে মানুষের চেতনা সম্পর্কিত ভাব ও ধারনাগুলো অধিকাংশই ভার্চুয়াল। মানুষ এখন অন্যান্য প্রাণীর মত সারাদিন খাদ্য সংগ্রহ, যৌন আগ্রহ ও ঘুমানো নিয়ে পড়ে থাকে না। তার এখন একটি ভার্চুয়াল জগত তৈরি হয়েছে। সেই জগতে সে নিজেকে চিনেছে, পরিবারের সদস্যদের চিনেছে, অন্য মানুষদের চিনেছে, নিজের স্বার্থ বুঝেছে, বস্তু জগতকে চিনেছে, অন্যের স্বার্থের সাথে দ্বন্দ্ব সংগ্রামে জড়িয়ে পড়ছে ইত্যাদি ইত্যাদি।

যেখানে জীব দেহের কোষ সমষ্টি মস্তিষ্ক(ইলেক্ট্রিক্যাল আয়নের সঞ্চালন) দিয়ে নিছক তাদের পুষ্টি ও শক্তি গ্রহণ ও অনুরূপ দেহ গঠনের কাজে ব্যবহার করত সেখানে মানুষের ভাষা আরও বহুবিধ উদ্দেশ্য সাধনে দেহের অনুভূতিকে এক্সপ্লয়েট করতে সক্ষম হোল। মানুষ আরও জটিল সামাজিক সম্পর্ক গঠন করতে শিখল। পশু মানবের প্রাথমিক সরল সমাজ ছিল প্রত্যক্ষ জৈবিক অনুভূতির ফল। সেখানে মাতৃত্ব, শিশু পালন, যৌন সম্পর্ক ছিল মৌলিক সামাজিক বন্ধন। কিন্তু ভাষা আবিষ্কারের পর মা, শিশু ও সমাজের অন্যান্য সদস্যদের নাম করণ করল। নামের উপর বিভিন্ন গুণাগুণ আরোপ করা হোল, সম্পর্কের নাম করণ এবং কে কি ভাবে কার সাথে সম্পর্কিত এই জটিল আন্ত সম্পর্ক ভাষার জ্ঞানে সংরক্ষণ করা হোল ইত্যাদি। পরিবারের সদস্যদের সাথে তাদের জন্ম, জন্ম থেকে বিভিন্ন সুখ দুখের কাহিনী, মৃত্যু, পূর্ব পুরুষদের কাহিনী, তারা কোথা থেকে এসেছিল, তাদের জীবন সংগ্রাম, তাদের জনপদের অবস্থান, অন্যান্য জনপদের সাথে তাদের সম্পর্ক ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয় গুলো কাহিনী আকারে ভাষায় সংরক্ষিত হতে লাগল। যেখানে পশু মানবদের সামাজিক যোগাযোগ শুধুমাত্র গ্রুমিং-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল সেখানে ভাষা পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগের এক মাত্র মাধ্যম হয়ে দাঁড়াল। এখন পরিবারের সকল সদস্য কথা বার্তার মাধ্যমে নিজেদের ভাবের আদান প্রদান করে, নিজেদের কাহিনী বর্ণনা করতে পারে এবং অনুভূতির জগতে ভাসতে থাকে। মানুষের চিন্তায় খাদ্য সংগ্রহ ও যৌন জীবন এখন আর মুখ্য নয়, এখন জীবন হোল মানুষে মানুষে সম্পর্ক। এই ভাব হোল বিভিন্ন সুখ দুখের কাহিনী যা তাদের জৈবিক অনুভূতির রসায়ন নিঃসৃত করে। এইসব কাহিনীগত অনুভূতির সাথে জৈবিক প্রত্যক্ষ অনুভূতির সম্পর্ক ক্ষীণ। বরং সামাজিক সম্পর্কগত অনুভূতিই প্রধান হয়ে পড়ে। আবার এই সম্পর্কের জটিলতা নিয়ে নিজের সাথে নিজে কথা বলা যায়, ফলে অনুভূতিগুলোর তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। মানুষের মধ্যে নিছক জৈবিক অনুভূতির বাইরে এমন কিছু অনুভূতির সংক্রমণ ঘটে যার বাস্তব কোন ভিত্তি নাই, সবটাই ভার্চুয়াল। মানুষের সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতে থাকে ভাষায় অবস্থিত ভার্চুয়াল কাহিনী দ্বারা। ভাষাই মানুষকে সচেতনতা, চিন্তা, জ্ঞান ইত্যাদি প্রদান করে।

কিন্তু প্রাণীর মস্তিষ্ক বিকশিত হয়েছিল বিচরণে সাহায্য করার জন্য, দেহের কোষ সমষ্টিকে পুষ্টি সরবরাহের জন্য, কিছু সামাজিক যোগাযোগের জন্য। কিন্তু মানুষের ভাষা মানুষের ব্যক্তি দেহকে একটা নাম দিয়েছে, আশেপাশের সকলের নামকরণ করেছে। তৈরি হয়েছে আত্মপরিচয়। দেহের সাথে মস্তিষ্কের ইল্যাক্ট্রো-রাসায়নিক সংযোগ আমিত্বের বিভ্রম ঘটিয়েছে। এখন ভাষায় তৈরি বস্তু জগতের সাথে সম্পর্কহীন ভার্চুয়াল কাহিনীও অনুভূতিকে জাগ্রত করছে এবং মানুষ সেই অনুযায়ী আচরণও করছে। ভাবের জগত দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এই সব আচরণই এখন মুখ্য। এটাই মানুষকে সচেতনা দান করেছে। ভাষা মানুষকে চিন্তাশীল করে তুলেছে, ভাষাকে আরও সমৃদ্ধ করছে। তবে সব মানুষই চিন্তার জটিল পথে ছুটতে চায়না। তারা ভাষার কল্প কাহিনী, প্রচার প্রচারণার উপরই নির্ভরশীল। তাই বলা যায় মানুষের সচেতনতা সামাজিক জ্ঞান হতে প্রাপ্ত যৌথ চেতনার অংশ মাত্র।

সর্বশেষ এডিট : ১০ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৫
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুহূর্ত কথাঃ সময়

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



সামুতে সবসময় দেখেছি, কেমন জানি ভালো ব্লগাররা ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়! যারা নিয়মিত লেখে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রচণ্ড নেগেটিভ স্বভাবের মানুষ। অন্যকে ক্রমাগত খোঁচাচ্ছে, গারবেজ গারবেজ বলে মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×