কয়েকদিন ধরে লন্ডনভিত্তিক একটি ব্রিটিশ-বাংলাদেশি ব্যান্ড 'ক্ষ' এর গাওয়া বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতে সুর বিকৃতি নিয়ে আলোচনা চলছে পত্রিকা, ফেসবুক আর ব্লগ জুড়ে। গানটি ডাউনলোড করে শুনলাম ৪ বার। ভালোই গেয়েছে, ফিউশন দিয়েছে। তবে এই আধুনিকায়ন করতে গিয়ে সুরে একটু বিকৃতি ঘটেছে বটেই। আর সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হল গানটি শুরু হয়েছে ‘কি শোভা কি ছায়া গো...’ থেকে। শুনে আমিও অবাক হয়েছি।
গতকাল বাংলানিউজ ২৪.কম এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে যার শিরোনাম হল 'জাতীয় সঙ্গীতে বিকৃতি! ‘ক্ষ’র স্পর্ধা প্রতিহত এখনই'। এখানে দেশের প্রথিতযশা শিল্পীবৃন্দ ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
'জাতীয় সঙ্গীত ভুলভাবে গেয়ে কেউ পার পেয়ে যেতে পারে না, একথা বলেছেন রবীন্দ্র সঙ্গীত জগতের অন্যতম শিল্পী মিতা হক। অপর পুরোধা শিল্পী সাদি মহম্মদ বলেছেন জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার সুযোগ নেই। এ কাজ যারা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হওয়া উচিত। আর ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আনাম শাকিল বলেছেন এর এখনি প্রতিবাদ হওয়া উচিত। বাংলাদেশের নাগরিকতো বটেই কোন ভিনদেশিও বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতকে ভুলভাবে, উল্টো করে গাইতে পারেন না।' এছাড়া তিনি বলেন 'এই মুহ’র্তেই কড়া প্রতিবাদ করে এ গান বন্ধ করে দেওয়া উচিত।রবীন্দ্র সঙ্গীতের অনেক গানেই পশ্চিমবঙ্গসহ বাংলাদেশের কেউ কেউ নতুন সুর দিচ্ছেন। আমি সেগুলো মেনে নিতে চাই না। আর জাতীয় সঙ্গীতের এমন চর্চা মেনেই নেওয়া যায় না।''
আর সাদি মহম্মদ বলেছেন, এভাবে গানটি ছড়িয়ে পড়লে এক সময় নতুন প্রজন্ম ‘কি শোভা কি ছায়া গো...’ থেকে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া শুরু করবে। এদের এখনই প্রতিহত করা উচিত।
তবে ব্লগ বা ফেসবুকের এটার পক্ষে অনেকেই বলছেন গানটি শুধুমাত্র রবীন্দ্রসঙ্গীত হিসেবেই দেখা উচিত কিংবা তারা কোনো খারাপ কাজ করেনি। গানটি শুনে বা মিউজিক ভিডিও দেখে অনেকেই আবেগে আপ্লুত হয়েছে।
তবে আমার মনে হয় জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে এত পরীক্ষা নিরীক্ষা করা দরকার নেই বা সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে আমরা অনেক পুরোনো গানের ফিউশন শুনেছি এবং সেগুলো তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে খুব। তবে 'আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি' আমাদের এই জাতীয় সঙ্গীত সবসময়ই আমাদের নাড়া দেয়। আমরা যখন শুনি তখনই গায়ের লোম দাড়িয়ে যায়। এর জন্য নতুন ফিউশনের দরকার হয়না আর কোনোরকম বিকৃতি তো মানাই যায়না।