somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টার্গেট উচ্চ ও মধ্যবিত্ত তরুণ-তরুণী

২২ শে জুন, ২০১৩ রাত ২:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশে মাদকাসক্তের শতকরা ২৫ ভাগ এখন ইয়াবা ট্যাবলেটে আসক্ত৷ পরিবহন এবং সেবন সহজ হওয়ায় দ্রুত এর থাবা বিস্তৃত হচ্ছে৷ ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং উচ্চ ও মধ্যবিত্ত তরুণ-তরুণীরা ইয়াবা ব্যবসায়ীদের প্রধান টার্গেট৷

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, এই মুহূর্তে দেশে মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলোয় প্রায় ১২,৩০৪ জন মাদকাসক্ত রোগী চিকিত্‍সা নিচ্ছেন৷ তাদের বড় একটি অংশ হলো ইয়াবা ট্যাবলেটে আসক্ত৷ পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে দিন দিন ইয়াবা আসক্তের সংখ্যা বাড়ছে৷ আর আসক্তরা তরুণ এবং উচ্চ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্য৷ ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মশিউর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, ইয়াবা পরিবহণ এবং সেবন সহজ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়ানো যায়৷ তাই এর চোরাচালান বাড়ছে, বাড়ছে ইয়াবা আসক্তের সংখ্যা৷

ধারণা করা হয়, বাংলাদেশে এখন মাদকাসক্তের সংখ্যা ৫০ লাখ৷ এই মাদকাসক্তের বড় অংশ গাঁজা, হোরোইন এবং ফেনসিডিল-এ আসক্ত হলেও পরিস্থিতির নতুন মাত্রা আতঙ্কের৷ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা বিভাগের উপ-পরিচালক মজিবুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, এখন মাদকাসক্তের শতকরা ২৫ ভাগই ইয়াবা আসক্ত৷ মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে সারা দেশ থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট আটক করেছে৷ এর বাইরে ব়্যাব, পুলিশ এবং সীমান্ত এলাকায় বিজিবি এর আরো তিনগুণ ইয়াবা আটক করেছে৷ ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগ শুক্রবার ভোররাত পর্যন্ত টানা দু'দিনের অভিযান চালিয়ে ৩০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার এবং চোরাচালান ও অবৈধ ব্যবসা সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এক নারীসহ ছয় জনকে রাজধানী থেকে আটক করেছে৷ ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মশিউর রহমান জানান, এরা মূলত ঢাকায় ইয়াবা বিক্রির চক্রের সদস্য৷ কিন্তু যারা চোরাচালানের মাধ্যমে ইয়াবা ঢাকায় নিয়ে আসে, তাদের এখনো আটক করা যায়নি৷

তিনি জানান, এই ইয়াবা মূলত মিয়ানমার থেকে কক্সবাজার এবং টেকনাফ সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে৷ এসব পরিবহনের জন্য নারী ছাড়াও নানা কৌশল অবলম্বন করা হয়৷ মজিবর রহমান জানান, তাদের আটক করেও তেমন কাজ হয় না৷ গোয়েন্দাদের হাতে আটক মাদক ব্যবসায়ী ম্যানিলা চৌধুরীকে দু'বছর আগে তারা ঢাকা থেকেই ১৭ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটক করেছিলেন৷ আটকের পর তাঁর ছয় মাসের জেল হয়৷ জেল থেকে বের হয়ে সে আবার ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে৷

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, ঢাকায় ইয়াবা মাদকের অন্তত ২০টি চক্র সক্রিয় আছে৷ এইসব চক্রের সঙ্গে নানা পেশা ও শ্রেণির লোক জড়িত৷ এমনকি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রদের জড়িত থাকার তথ্যও রয়েছে তাদের কাছে৷ তিনি জানান, যারা এই ব্যবসা করে তারাও ইয়াবায় আসক্ত৷ ক্রেতা হিসেবে তাদের টার্গেট উচ্চবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরা৷ আর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাদের বিক্রেতারা সক্রিয়৷

মনিরুল ইসলাম বলেন, একটি সেলফোনের কভারের মধ্যে কমপক্ষে ৩০০ পিস ইয়াবা পরবিহন করা যায়৷ ট্যাবলেট হওয়ায় সহজে কেউ সন্দেহও করে না৷ ইয়াবা বিভিন্ন রঙ এবং ফ্লেভারে পাওয়া যায়৷ এর বিক্রি এবং সেবন উভয়ই সহজ৷ ফলে মাদকাসক্ত তরুণরা এখন ইয়াবার দিকেই ঝুঁকছে৷ পাইকারি এক পিস ইয়াবার দাম ১২০ টাকা হলেও, খুচরা ২৪০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে৷

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ডা. তাজুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, ইয়াবায় উত্তেজক এম সিটামিন এবং ক্যাফেইন রয়েছে৷ তাই ইয়াবা আসক্তরা শেষ পর্যন্ত মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে যেতে পারেন৷ এছাড়া যৌনক্ষমতা হ্রাস, মস্তিষ্ক ও কিডনির ক্ষতি এবং স্বাভাবিক কাজকর্মের ক্ষমতাও নষ্ট করে দেয় ইয়াবা৷ তিনি জানান, তার কাছে এখন চিকিত্‍সা নিতে আসা মাদকাসক্তদের অধিকাংশই ইয়াবায় আসক্ত৷ তারা জানিয়েছে, স্বাধারণত সাময়িক উত্তেজনার জন্য ইয়াবা গ্রহণ করা হয়৷ এমনটি বন্ধু-বান্ধবের দেয়া পার্টিতেও ইয়াবা সেবনের ব্যবস্থা থাকে বলে জানা যায়৷ ডা. তাজুল ইসলাম বলেন, এর বিরুদ্ধে ব্যপক জনসচেতনতা গড়ে তোলা প্রয়োজন৷ দরকার এর চোরাচালার বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া৷
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:০০
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×