somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এ প্রযুক্তির মাধ্যমে হাজার হাজার আলোকবর্ষ দুরের পথ পাড়ি দেয়া যাবে কয়েক মুহূর্তের মধ্যে

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




সাল ৪১২০, পৃথিবী। কয়েক মাস হয়ে গেল নানান ব্যস্ততার জন্য জেনি দেখা করতে পারছে না তার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু রউ-এর সাথে। আজ জেনির ছুটি। এই সুযোগে সে দেখা করে আসবে রউ-সাথে। ঘরের পাশে থাকা এক বিচিত্র যানের মধ্যে বসলো জেনি। মেশিনে তার দেয়া আছে পুরো মহাবিশ্বের মানচিত্র। ৭৮০ আলোক বর্ষ দূরে থাকা “ফুসচ” গ্রহের নাম চেপে জেনি অপেক্ষা করছে মেশিন চালু হবার। হঠাৎ করেই সে গায়েব !!
কয়েক মিনিট পর, “ফুসচ” গ্রহের স্পেসস্টেশন। “ স্বাগতম জেনি, ফুসচ গ্রহে তোমাকে স্বাগতম”

ঘটনা না খুব অদ্ভুত ও অবাস্তব মনে হলেও হয়তো দুই হাজার বছরের মধ্যে এমন প্রযুক্তিই আমাদের চিরাচরিত সমাজ ও জীবন ব্যবস্থাকে বদলে দিবে। আর প্রযুক্তিটির নাম “ কোয়ান্টাম ট্রান্সপোর্টেশন” ।

প্রথমে একটা বিষয় বুঝিয়ে বলি। যা প্রতিটি পদার্থের ভিতরে প্রতিনিয়ত ঘটে যাচ্ছে।
ধরুন, আপনার হাতের পাশে থাকা একটা গ্লাসে পানি আছে। কিছুক্ষণ পর তৃষ্ণার ওজুহাতে হয়তো এই পানিই আপনার পেটে জায়গা করে দিবে। আমরা সবাই জানি এই পানির মৌলিক উপাদান হচ্ছে ২ অনু হাইড্রোজেন ও এক অনু অক্সিজেন। এখন আরও ভিতরে প্রবেশ করি। এই হাইড্রোজেন বা অক্সিজেন এর পরমানু তৈরি হয় ইলেকট্রন, নিউট্রন ও প্রোটন দিয়ে। আরও ভিতরে যাওয়া যাক, যা কিনা এই সব ইলেকট্রন, প্রোটনকেও রূপ দিয়েছে। সেই জগতটি হল অতি-পরমানুর জগত। এ জগতে প্রতিটি অতি-পরমানুগুলো কিছু মুহূর্তের জন্য অস্তিত্ব পায় আর হঠাৎ উধাও হয়ে যায়। আবার হঠাৎ অন্য কোন জায়গায় আবার একে দেখা যায়।

ঘটনাটি কি শুধু গ্লাসের পানিতেই হচ্ছে তা নয় এই ধর্ম আছে মহাবিশ্ব-এর প্রতিটি জিনিসের মাঝে, আপনার মোবাইল বা পিসির স্ক্রিন থেকে আপনার শরীরের প্রতিটি অংশ পর্যন্ত।


এখন হয়তো আপনার কাছে প্রথম যে প্রশ্নটা আসবে তা হল “ তাহলে ঐ অতি-পরমানুগুলো উধাও হয়ে কোথায় যায় ? আমাদের মতো কি আরেকটা জগত আছে?”

উত্তর হচ্ছে, হ্যাঁ। যাকে বিজ্ঞানীরা বলে “প্যারালাল ইউনিভার্স” তবে ওটা কোন অন্য রকম জগত না। ঐ জগতটা ( বা জগতগুলো ) ঠিক আমাদের জগতের মতোই। ঠিক যেন আয়না।


“তাহলে কি আমরা একসাথে একাধিক দুনিয়াতে আছি ?”
উত্তর হচ্ছে, হ্যাঁ। প্রতিটি পরমানু থেকে বড় বড় গ্রহ সবই একসাথে একাধিক জগতে অস্তিত্বময়।

এখন হয়তো প্রশ্ন আসতে পারে “এই বিষয়ের সাথে হাজার হাজার আলোক বর্ষ পাড়ি দেয়ার কি সম্পর্ক? ”

উত্তরটা বেশ জটিল। তবে আমি চেষ্টা করছি উদাহরণ দিয়ে বুঝাতে।

ধরি, প্যারালাল ইউনিভার্স মোট ২ টা। এখন প্রথম ইউনিভার্স এ একটা অতি-পরমানু চলে গেল দ্বিতীয় ইউনিভার্স এ।


০.০০০০০০০১ সেকেন্ডের মধ্যে সেটা আবার চলে আসলো প্রথম ইউনিভার্স এ। কিন্তু এখন মাত্র ১২ ন্যানোমিটার দূরে এটা ফিরে আসল। অর্থাৎ কোন দূরত্ব অতিক্রম না করেই অতি-পরমানুগুলো এই যাত্রা সম্পন্ন করতে পেড়েছে। যেখানে দ্রুততার নায়ক আলোকেও পথ পাড়ি করে আসতে হবে নতুন জায়গায়।


“তাহলে কি আলোর গতি থেকেও দ্রুত ?”



অবশ্যই না। আমরা জানি আলোই সবচেয়ে গতিময়। আর অধিকাংশ বিজ্ঞানীরাই এটা মানবে। আর যেখানে প্রশ্ন দ্রুততার, আলো কখনোই কোয়ান্টাম ট্রান্সপোর্টেশনের সব্জাতি নয়। কেননা কোয়ান্টাম ট্রান্সপোর্টেশন ঘটে কোনরকম গতি ছাড়াই আর আলোকে অতিক্রম করতে হয় স্থানের।

“ কি কি লাগবে কোয়ান্টাম ট্রান্সপোর্টেশন এর জন্য ?”


কোয়ান্টাম ট্রান্সপোর্টেশন এর জন্য আমাদের আগে নিয়ন্ত্রন করতে হবে কোয়ান্টাম ট্রান্সপোর্টেশন-এর পোর্ট। অর্থাৎ যে পথ ধরে এই অতি-পরমানু গুলো প্যারালাল ইউনিভার্স এ যাত্রা করতে পারে। এর আগ পর্যন্ত এটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

ধরুন, মানুষ এখন কোয়ান্টাম ট্রান্সপোর্টেশন করতে পারে তবে নিয়ন্ত্রন করতে পারে না কোথায় যাবে সেটা। ধরুন একটা নভোযান তৈরি করা হল যেটা যেকোন তাপমাত্রাকে সহ্য করতে পারবে। মেশিনটি মহাবিশ্বে ছেড়ে দেয়া হল কিন্তু দেখা গেল যানটি কোন ব্লাকহলের মধ্যে পরে গেল বা কোন গ্রহের কঠিন কোন স্থানে । তখন না সেটা ফিরে আসতে পারবে আর কোটি কোটি ডলারের প্রোজেক্টও বিফলে যাবে

তাই প্রথমে আমাদের কোয়ান্টাম ট্রান্সপোর্টেশন এর পোর্টকে নিয়ন্ত্রন করতে হবে। আর মহাবিশ্বের যে জায়গাই যাই না কেন আমাদের উদ্ঘাটন করার ক্ষমতা থাকতে হবে কোন স্থানে আমরা আছি।


“এর প্রযুক্তি আসার জন্য ২ হাজার বছর লেগে যেতে পারে!! কেন?”

উদ্ভাবন সময় বুঝে আসে না। এমনও হতে পারে আগামীকাল পত্রিকা খুলে দেখবেন কোয়ান্টাম ট্রান্সপোর্টেশন এর পথ মানুষ পেয়ে গিয়েছে। তবে এখনকার সমাজ এই প্রযুক্তির জন্য কতটা প্রস্তুত তা আসলে একটা চিন্তার বিষয়। আর কোয়ান্টাম ট্রান্সপোর্টেশন উদ্ভাবনের সাথে সাথে আমাদের পুরো মহাবিশ্ব-এর ম্যাপ, যেকোন আবহাওয়াতে মানানসই নভোযান, এক বৈশ্বিক শক্ত অর্থনৈতিক ক্ষমতা লাগবে এই প্রযুক্তিতে বাস্তবে নিয়ে আসার জন্য ও সার্বক্ষণিক সহযোগিতা দেয়ার জন্য।
এক সুন্দর ভবিষ্যতের আশার বিদায় জানাচ্ছি। ধন্যবাদ।

ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্লগঃ

ভবিষ্যৎ পৃথিবী (পর্ব-১) ( ২০১৩ থেকে ২২০০)
ভবিষ্যৎ পৃথিবী (পর্ব-২) ( ২২০০সাল থেকে ২৭০০)
ভবিষ্যৎ পৃথিবী (পর্ব-৩) ( ২৭০০ থেকে ৪০০০)- শেষ পর্ব
৬টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×