somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাস্তিকতা, এক মৌলিকভাবে ভুল আদর্শ

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম নাস্তিকতা নিয়ে একটা লেখা লিখব। বিষয়টা খুব কনট্রভারসাল তাই ইচ্ছা থাকা সত্তেও অনেক সময় লেখা হয়নি। যাইহোক, আজকে একটু অবসর ছিলাম তাই লেখেই ফেললাম।


প্রথমে বলে রাখি একটি লোক, ধার্মিক হোক, আস্তিক হোক, নাস্তিক হোক এটা তাঁর একান্ত ব্যাক্তিগত ব্যাপার। আমি মনে করি তাঁর
সম্পূর্ণ অধিকার কাছে তাঁর আদর্শ নিয়ে স্বাধীনভাবে চলার , তাঁর মতামতকে প্রকাশ্যে বলার যেঁ আমি নাস্তিক বা আমি ধামিক। দুর্ভাগ্যবশত নানা সমস্যা ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির কারনে সেটা সম্ভব হচ্ছে না। মধ্যযুগে ইহুদিদের ইউরোপে প্রকাশ্যে নিজেদের হিহুরি বলা খুব ঝুঁকিপূর্ণ ছিল বিশেষ করে স্পেন, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের মত দেশে। ভারতীয় উপমহাদেশেও প্রাচীরকালে অনার্যদের ভাল চোখে দেখা হত না। আর বর্তমানে পশ্চিমের দেশগুলোতে মুসলমানদের আর মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার কিছু দেশে নাস্তিকদের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হচ্ছে। যাই হোক ,সেটা আমার ব্লগের মুল বিষয় না। তবে এটা বলে রাখলাম এ জন্য যাতে আমাকে কেউ রেসিস্ট না মনে করে। নাস্তিকরা যদি আমার প্রশ্নের উত্তর দেয় তাহলে আমার মনে হয় ব্লগ কি সার্থকতা পাবে।

প্রথমে বলি নাস্তিক বলতে আসলে আমরা কি বুঝি। ইংরেজিতে যাকে বলে Atheist । Atheist কে বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায় "Lack of Theistic Belief" বা যার মধ্যে আস্তিকতাঁ লোপ পেয়েছে। নাস্তিকও প্রায় একই অর্থ বুঝায়। কিন্তু পার্থক্য হচ্ছে নাস্তিক নামে না + আস্তিক। অর্থাৎ যে আস্তিক না। সেই হিসেবে ঈশ্বরকে যারা বিশ্বাস করে না তারা সবাই নাস্তিক। Atheist এর ক্ষেত্রে তাঁর ঈশ্বরের কোন ব্যাপারে বিশ্বাস না থাকলে (হোক সেটা আংশিক বা সম্পূর্ণ) সেই atheist.


আমি ব্যাক্তিগতভাবে কোন নাস্তিককে চিনি না। চিনলে হয়তো ব্লগটা লিখার দরকার পরতো না, তাঁর থেকেই জেনে নিতে পারতাম ( যদি সে জ্ঞানি নাস্তিক হয়ে থাকে তাহলে)। তাই আমি ঘেটে দেখলাম বেশ কিছু তথাকথিত নাস্তিকদের সাক্ষতকার। কিছুদিন আগে DW আসিফ মহিউদ্দিনের সাক্ষাৎকার নিয়েছিল সেটাও একটু কাজে লেগেছে। মুল কথা হচ্ছে নাস্তিকরা বলে এখন পর্যন্ত ঈশ্বরের অস্তিত্বওর কোন প্রমান ওয়া যায়নি তাঁর মানে ঈশ্বর নেই।

ব্যাপারটা আমার কাছে খুব অবাক করলো। আমি বুঝতে পারলাম না কিভাবে তারা এই ক্লেইমটা করতে পারে? তাঁর মানে হচ্ছে ঈশ্বরের একটা সংজ্ঞা তাদের কাছে আছে। সংজ্ঞাটা আসলে কি। অনেকে হয়ত বলতে পারে ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে যেভাবে সঙ্গায়িত করা হয়েছে সেটাই তো। কিন্তু এখানেই আমার প্রস্ন। প্রথমত তারা তো ধর্মীয় গ্রন্থে বিশ্বাস করে না। তাহলে তারা কিভাবে ধর্মীয় গ্রন্থের ঈশ্বরের সংজ্ঞাকে গ্রহনযোগ্য মনে করলো ?

এখন ধরুন "আসিফ" একজন নাস্তিক। আসিফকে জিজ্ঞেস করা হল, আপনি কি ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন ? তিনি বললেন না। তাঁর মানে হচ্ছে
১. সে জানে ঈশ্বরের সংজ্ঞা কি
২. সে সেই সংজ্ঞার সাথে তাঁর যুক্তি মিলিয়ে বলছেন যে ঈশ্বর নেই।

এখন ধরুনই আসিফ আগে মুসলিম ছিল। এখন সে নাস্তিক। হয়ত সে ঈশ্বরের সংজ্ঞা বলতে আল্লাহকে বুঝিয়েছেন। আর আল্লাহর বৈশিষ্ট্যর সাথে সে অস্তিত্বযোগ্য কিছু পাচ্ছেন না। কিছু সে কিভাবে আল্লাহর সংজ্ঞাকে ঈশ্বরের সংজ্ঞা কিভাবে গ্রহন করতে পারে যখন কিনা সে মানেই না আল্লাহর সংজ্ঞা সে বইইয়ে আছে সেটা সঠিক? মানে এখানে সে বিশ্বাসই করলো সে এটাই আল্লাহর সংজ্ঞা। তাই না? নাহলে সে সরাসরি না বলে কিভাবে ?

এখন হয়ত অনেকে বলবেন তাহলে নাস্তিকদের উচিত আগে যেঁ তাকে জিজ্ঞেস করবে তাঁর থেকে আগে তার স্রষ্টার সংজ্ঞা জানার। পরে বলার যে সেই সংজ্ঞার স্রন্টা কি আছে কি না।
হ্যাঁ, এটাও হতে পারে। কিছু যদি এটা হয় তাহলে নাস্তিকতা কি একটা ভুল কনসেপ্ট হল না ? এখন ধরুন সেই আসিফকেই একজন লোক যার নাম "মুস্ফিক" সে বলল " আমি মনে করি মহাবিশ্বই স্রষ্টা, আমার কাছে। তাহলে কি ঈশ্বর আছে ? " । আসিফ হয়তো বলবে, " হ্যাঁ আছে , কারন মহাবিশ্ব আছে। "
তাহলে হয়ত মুস্ফিকের কাছে আসিফ আস্তিক। তাহলে আসিফ আসলে কি !! সে কি একাধারে আস্তিক ও নাস্তিক উভয়ই। নাকি আসিফ তাঁর সংজ্ঞার নিজের ঈশ্বরের সংজ্ঞার ব্যাপারে অহংকারি ।

যদি আগে সংজ্ঞা জেনে তাঁরপর ঈশ্বরের অস্তিত্ব/অনস্তিত্ব নির্ধারণ করতে হয় তাহলে তো "নাস্তিকতা"র কোন ভিক্তিই থাকলো না। আশা করি আমার কথা বুঝতে পেরেছেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৯
১৭টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×