somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার অযাচিত কষ্টের, শুরুর দিনটি........... :(

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ৯:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার ফোন ভাগ্য বরাবরই খারাপ। কোনদিনি রং কোন নাম্বারে আমার ফোন যায়নি আসেওনি। ভাগ্য আমার দিকে তাকায়না তাই বইল্লা আমি তো আর চুপ কইরা বইসা থাকবার পারিনা। তাই এক শুভাকাঙ্খির দেয়া নাম্বারে ফোন দিয়া বললাম রং নাম্বারে ফোন দিছি। ওই পাশে “হ্যালো” বলার পর মনে হলো এত সুন্দর কন্ঠও আল্লাহ মানুষকে দিছে! এত সুন্দর কন্ঠ পৃথীবিতে দেয়ার জন্য সৃষ্টিকর্তাকে মনে মনে ধন্যবাদ জানালাম। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা হয়তো তখন মুচকি হেসে বলছিলো, “ বাচ্চো ধন্যবাদ পরে দাও। আগে তো আগে বারো।” যেমন সুন্দর তাহার কন্ঠ তেমনি তাহার ব্যবহার।যেই না বললাম ভুল নাম্বারে ফোন দিয়েছি তখনি উনার ভুবন ভুলানো মিষ্টি স্বরের সাথে কর্কশ ব্যবহার। যদি আগের মত ল্যন্ডফোন থাকতো তাহলে নির্ঘাত ঘ্যাটাং করিয়া আওয়াজ হয়তো। আমি যতটুকু উতসাহিত হয়েছিলাম তার দ্বিগুন অনুতসাহিত হইয়া সৃষ্টিকর্তাকে দেয়া আমার ধন্যবাদ ফিরাইয়া লইলাম। আর বুঝলাম সুকন্ঠীর অধিকারী মাত্রেই সুব্যবহারী হয়না।
কয়দিন পর হঠাত আমার মনে হইলো, মেয়েটা তো আমাকে কিছুটা অপমান করিয়াছে। তাই রুমের আয়নার সামনে অনেকক্ষন প্র্যাকটিছ করিয়া ফোন দিলাম যাতে ঐ সুকন্ঠী কিছু বলার আগেই আমি দমাদম কিছু অপমানজনক কথা বলিয়া দিতে পারি। ফোন দিলাম। রিং হচ্ছে। আবার সেই “হ্যালো”। আর হ্যালো শুনিয়া আবার আমার হাত পা কাপাকাপি। কিছুক্ষন শুধু আমার কানে বাজতেছিলো…… হ্যালো হ্যালো হ্যালো। হঠাত বলিয়া বসিলো, কি চাই …? আমিও বাস্তবে ফিরিয়া আসিলাম আর উত্তর দিলাম… হুমম, তাইতো কি চাই…!! মেয়েটি বলিলো, আপনাকে জিজ্ঞাসা করেছি, কি চাই। ওহ তেমন কিছুনা আমি কাপা কাপা গলায় উত্তর দিলাম। আমাকে অবাক করিয়া দিয়া মেয়েটি হাসি দিলো। আর অতীব সুন্দর করে বললো, “ আর ফোন দিবেননা”। এত সুন্দর হাসি দিয়া কেউ কারো হৃদয় এমন করিয়া খাঙ্খান করিয়া ভাঙ্গিয়া দিতে পারে তা আমার জানা ছিলোনা। আর জানা থাকলে এমন করিয়া ফোনও দিতামনা।
অনেকদিন পর……………
তাহার সহিত দেখা করিতে হইবে এমন আদেশ আসিলো। এই কথা বলার পর রোমান্টিক হইবার বদলে কেমন যেনো আমার হাত পা কাপাকাপি শুরু হইলো। এতদিনে অবশ্য সম্পর্কটা তুমি তুমি পর্যায়ে চলে এসেছে। বসুন্ধরা শপিং মলে দেখা করিতে হইবে। পরদিন নির্ধারিত সময়ের এক ঘন্টা আগেই আমি বসুন্ধরায় যাইয়া পজিশন নিলাম। যেখান থেকে গ্রাউন্ড ফ্লোরের এস্কেলেটর টা দেখা যায়। ঐখানেই উনার দাঁড়িয়ে থাকার কথা ছিলো কিনা… প্রায় দুই ঘন্টা আমাকে পুলিশের সোর্সের মত দাড়া করিয়া রাইখা আমারে ফোন দিয়া বললো, “ কি পরছো”? আমি বললাম, শার্ট প্যান্ট। আবার কয়, “ আরে গাধা কোন কালার”? আমি অবাক হইয়া ভাবিলাম, শার্ট প্যান্ট পরার সাথে গাধা কোন রং্যের তা জানার দরকার কি!!! আমি বললাম, গাধা তো কয়েক কালারের হয় আর আমি বাস্তবে কোনদিন গাধা দেখিনাই। সে বলিলো, “ ওমা কোনদিন কি আয়নার সামনে দাড়াও নাই। হিহিহিহিহি। আরে গাধা তোমারে বলছি কোন কালারের ড্রেস পরছো”। ওহ… আমি কি চালাক কম আমিও জিজ্ঞাসা করিলাম, তুমি আগে বল তুমি কোন কালারের ড্রেস পরিয়াছো। সে বলিলো, সে টিয়া কালারের ড্রেস পরিয়াছে। যাই হোক, গ্রাউন্ড ফ্লোরে আসার আগে আমাকে ফোন দিয়া বলিলো, “ তুমি কোথায়”? আমি বলিলাম আছি। সে বলিলো আমি তো আসছি। ততক্ষনাত আমার চোখ ব্যস্ত হইয়া পরিলো টিয়া কালারের জামার খোজে। হঠাত সেই টিয়া কালারের জামা পরিহিতা মেয়েকে দেখিলাম। আমি রীতিমত মুগ্ধ। কিন্তু একি তাহার কোলে কে……? তাহার যে বাচ্চা আছে তাতো আমাকে বলে নাই। এত বড় মিথ্যাচার। আবার ফোন দিয়া ঝারি দিয়া কয়লো, ঐ কয় তুমি? দেখলাম বাচ্চা কোলে নেয়া আপুটার কানে ফোন নাই। আমি কহিলাম, এত বড় মিথ্যাচার আমার সাথে। তোমার বাচ্চা আছে এইটা বললে কি হইতো। ঐ আরো দ্বিগুন ঝারি দিয়া কয়লো, তুই কয়? তাহার এমুন অধঃপতনে বিস্মিত হইয়া বলিলাম আমি থার্ড ফ্লোরে। সে বলিলো, এক্ষুনি নীচে নাইমা আসো। আমি এস্কেলেটর এর পাশে দাড়াইয়া আছি। হঠাত করিয়া এস্কেলেটর এর পাশে নজর গেলো, দেখিলাম টিয়া কালারের একটা মেয়ে আর সাথে পিঙ্ক কালারের জামা পরা একটা মেয়ে দাড়াইয়া আছে। আমি আস্তে আস্তে ওদের পেছনে যেয়ে ফোন দিলাম…… দেখি রিং হচ্ছে। আর টিয়া কালারর জামা পরিহিতা মেয়েটি ফোন রিসিভ করিয়াছে। আমি বললাম, ম্যাডাম একটু পেছনে তাকাবেন। হঠাত দেখি উনি স্ট্যাচু হইয়া গিয়াছে। নড়েও না পেছনেও তাকায়না। উনার সাথে পিঙ্ক কালার জামা পরিহিতা মেয়েটারো একি অবস্থা। অবশেষে নিরুপায় হইয়া কম্পমান হাটুতে ভর দিয়া আমিই গিয়া উনার সামনে দাড়াইলাম। কিন্তু টিয়া কালারের জামার থেকে পিঙ্ক কালারের জামা পরা মেয়েটাই আমাকে কেমন যেনো টান্তেছিলো। কিন্তু আমি তো আর লুল ছেলে নয় তাই ওইদিকে নজর দিলামনা। হঠাত করিয়া পিঙ্ক কালারের জামা পরা মেয়েটা বলিয়া উঠিলো, “সেই সেই”। আমি তো পুরা ব্যাক্কল হইয়তা খাড়াইয়া রইলাম। আর তাদের দুজনের কি হাসি। এতটা অসহায় নিজেকে কখনো মনে হয়নি। যাই হোক, সৃষ্টিকর্তাকে আবার অন্তর থেকে একটা ধন্যবাদ জানাইলাম। আর মনে মনে ভাবিলাম, আমি ইহাকে পাইলাম। কিছু খাওয়ার পর এবার বিদায় নেয়ার পালা। আমার মনে হচ্ছিলো, সে সাত সমুদ্দুর তেরো নদীর ওপারে চলে যাচ্ছে। আমার মুখ দেখে বললো, কি হইছে? কালকা আবার দেখা করবোনে। সাথে সাথে আমার উদার একটা হাসি। আর তার উত্তর, এমন গাধার মত কইরা হাস্তাছো ক্যান। এই বইলা তারো একটা মুচকি হাসি। ওইদিনের জন্য আমার আর চাওয়ার কিছু ছিলোনা। আমরা ৮ম ফ্লোর দিয়ে নামতে ছিলাম। এস্কেলেটরের উঠতে জেয়ে একটু স্লিপ করছিলো, আর সাথে সাথে আমার হাত ধরে ফেললো। আবার আমার কাপাকাপি শুরু। আমি মেয়েটার দিকে তাকাতেও পারছিনা। দেখলাম তাকে যতটুকু এগিয়ে দিয়ে এসেছি বাসায় যাওয়ার জন্য তার পুরোটা পথই সে আমার হাত ধরে আছে। আর রাজ্যের কথা বলছে। আমার অবশ্য তার কোন কথা ই কানে আসছিলোনা। আমি আমার হাটু কাপানো থামাতেই ব্যস্ত ছিলাম কিনা।
বাসায় ফেরার পর মনের অজান্তেই বলেই ফেললাম, “ গড তুসি গ্রেট হো”……… :)
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×