ইতিহাস কয় যে জামাত সরকারি দলের, বিশেষ করে সামরিক বাহিনীর রক্ষিতা ছাড়া আর কিছুই না..হেদের গুরু মওদুদি "পাকিস্তান মুভমেন্টের" বিরোধীতা করসিল। পাকিস্তান হওয়ার পর এদের পজিশন বদলাইতে বিশেষ টাইম লাগে নাই। এরপর হেরা শুরু করল পাক আর্মির লেজুড়বৃততি এবং যথারীতি ১৯৭১ এ প্রভুভক্ত কুকুরের মত বাঙ্গালীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলতে দ্বিধা করে নাই। ফলাফল স্বরূপ স্বাধীনতা পরবর্তী বেশ কয়েক বছর তারা ছিল আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত, নিষিদ্ধ একটা দল। যথারীতি বাঙ্গালীদের সহনশীলতা আর অতীত খুব সহজেই ভুলে যাওয়ার প্রবণতার কারণে, আরও একবার এক সামরিক শাসকের হাত ধরে জামাত রাজনীতিতে ফিরে আসে এবং বাংলার সহজ সরল মানুষের ধর্মভীরুতার সুযোগ নিয়ে এবং মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটা দেশের আর্থিক সহায়তায় এখনো করে খাচ্ছে। জামায়াত এমন একটা দল যাদের এককভাবে সরকারের কোন ভুল পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কখনো কিছু বলার "গাটস" ছিল না। জামাতের এই সুযোগ সন্ধানী চরিত্রের রূপ জানার জন্য ইতিহাস না জানলেও চলে, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের দিকে একবার তাকালেই বোঝা যায়।
জামাতি অপপ্রচরনা:
"সচেতন ব্যক্তিবর্গ, আপনারা যারা জামাত-শিবির সম্পর্কে জানেন না, তাদের বলি, জামাত-শিবির করতে হলে আর বুঝতে হলে আপনাকে জামাত-শিবিরের পাঠ্য বই পড়তে হবে। তার মধ্যে তাদের পাকিস্তানী গুরু কথাশিল্পী মওদুদীর বই ও পবিএ কোরআনের ব্যাখ্যা "তাফহিমুল কোরআন" না পড়লে জামাত-শিবিরের জেহাদী জোশের স্বাদ পাবেন না। আধুনিক প্রকাশনী আর কাঁটাবন মসজিদের সামনে লাইব্রেরীতে গেলে সুলভ মূল্যে এই বইগুলো কিনতে পারবেন। মওদুদী প্রাতিষ্ঠানিক ধমর্ীয় শিক্ষা না পেলেও তার লেখাগুলো বেশ চমকদার ও উওেজনামূলক। তাই, জামাতীদের বাংলাদেশ বিরোধিতা নিয়ে যারা বেশী লাফালাফি করেন, তাদেরকে বলি, মওদুদী ও জামাতী চিন্তা কখনো স্বাধীনতার প েক্ষ ছিল না। তা 71'এ হোক আর 47'এ হোক।
বৃটিশদের হাত থেকে ভারত উপমহাদেশ স্বাধীন হওয়ার জন্য যখন বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে, তখন জামাতের নেতা মওদুদী সেই স্বাধীনতার আন্দোলনকে ভর্ৎসনা করে বৃটিশপ্রীতি দেখাতে গিয়ে বলেন, "যদি আপনার ইংরেজের সাথে শত্রুতা এজন্য যে, সে ইংরেজ, ছ'হাজার মাইল থেকে এসেছে, আপনার দেশের বাসিন্দা নয়, তবে আপনার এ শত্রুতা ইসলামী শত্রুতা নয়- অজ্ঞতাপ্রসূত শত্রুতা" (আবুল আলা মওদুদী, সিয়াসী কাশমকাশ, 1ম খন্ড, পৃষ্ঠা 35)। দয়া করে এবার বলেন না, এগুলো রাজাকার-জামাত বিরোধী প্রচারণা, ....."------------
জামাতি গো বাপ, মওদুদী মাদারির কিছু কথা পোস্ট করা ফরজ মনে করলাম । বাংলাদেশ বিরোধী রা কানে কর্ক দিয়া
রাখেন ।
ভারত বিভাগ ও পাকিস্তানের সিদ্ধান্ত ঘোষনার ঠিক আগে 10ই মে 1947 ''জামাতে ইসলামী কি দাওয়াৎ" নামে একটি
পুস্তিকায় মওদুদী বলেন,''এটা এখন নিশ্চিত যে দেশ বিভক্ত হবে । ভারতের একটি অংশ দেওয়া হবে মুসলসান
মংখ্যাগরিষ্টদেরকে এবং অন্য অংশটি নিয়ন্ত্রিত হবে অমুসলমানদের দ্্বারা ।প্রথম অংশে (পাকিস্তান) আমরা সংগঠিত হবো
যাতে পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র ইসলামী আইনের ভিত্তিতে প্রণীত হয় । অন্য অংশে আমরা হবো সংখ্যালঘু এবং আপনারা
(হিন্দুরা) হবেন সংখ্যাগুরু । আমরা আপনাদেরকে অনুরোধ করবো রামচন্দ্র, কৃষ্ণজী,বুদ্ধ,নানক এবং অন্যান্য সাধুসন্তদের
জীবন ও শিক্ষা অধ্যয়ন করতে । দয়া করে বেদ,পুরাণ, শাস্ত্র এবং অন্যান্য বইপুস্তক পাঠ করুন । এইসব থেকে আপনারা যদি
কোন ঐশ্বরিক দিক-নির্দেশনা লাভ করেন তাহরে তার ভিত্তিতেই নিজেদের শাসনতন্ত্র তৈরী করুন । আমাদের সঙ্গে একেবারে
আপনাদের ধর্মের লাইন অনুযায়ী ব্যবহার করার জন্যই আমরা আপনাদের অনুরোধ করবো । এ নিয়ে আমরা কোন আপত্তি
করবো না ।'' .............. পাকিস্তানের বিরোধিতা করা সত্ত্বেও ভারতবিভাগের পর মওদুদী
রামচন্দ্র,কৃষ্ণজী,বেদ,পুরাণ ইত্যাদি শাস্ত্রের শাসনের অধীনে থাকার ব্যাবস্থা ভারতীয় মুসলমান দের জণ্যে প্রস্তাব করে নিজে
পশ্চিম পাকিস্তানে হিজরত করেন এবং সেখানে ''ইসলামী রাষ্ট্র'' কায়েমের সংগ্রামে নিযুক্ত হন । এই চিন্তা দ্্বারা উদ্্বুদ্ধ
হয়ে তিনি সেখানে কোন উল্লেখ যোগ্য অমুসলমান প্রতিপক্ষ না দেখে কাদিয়ানিদেরকে অমুসলমান আখ্যা দিয়ে তাদেরকে পাকিস্তান
থেকে শুধু বিতাড়িত করা নয়, শারীরিকভাবে নিমর্ূল করার উদ্দেশ্যে 1953 সালে পাঞ্জাবে, বিশেষত লাহোরে , এক
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধান ।সেই দাঙ্গায় অসংখ্য কাদিয়ানি নৃশংস ভাবে নিহত হন । শেষ পর্যন্ত পাকিস্থান সরকারকে সামরিক
বাহিনি নামিয়ে দাঙ্গা থামাতে হয় । দাঙ্গার পর পাকিস্তান সরকার সুপ্রীম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি কমিশনকে
দাঙ্গার তদন্ত ও বিচারের ভার দেন । বিচারে মওদুদীর ফাসির আদেশ হয় । কিন্তু পরে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন করে তাকে প্রথমে
যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং পরে মুক্তি দেওয়া হয় । এই ব্যাপারে তখন আমেরিকার পাওচাটা কুত্তা সৌদি আরবের আইজ্জাও তদবির
করছিল । আর পাকিস্তান সরকার তো জন্ম থিকাই স্যাম চাচার ডাকে জায় নামায ছাইড়া দৌড় দেওয়ার অভ্যাস ।
তো সেই বিচার চলাকালীন সময়ে জিজ্ঞাসাবাদের একটা অংশ ইদ্ধৃত করা গেল : বিচারপতি মুনির : আমাদের এখানে
পাকিস্তানে যদি একটি ইসলামী রাষ্ট্র হয় তাহলে, আপনি কি হিন্দুদের তাদের শাসনতন্ত্র, তাদের ধর্মের ভিত্তিতে গঠনের
অনুমতি দেবেন ? মওদুদী : ভারতের মুসলমানেরা ওইধরনের সরকারে যদি ম্লেচ্ছ ও শুদ্র হিসেবেও বিবেচিত হয় ও সেখানে
মনুর আইন জারি হয় এবং তারা সরকারে অংশগ্রহনের ও নাগরিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত হয় তাতেও আমি কোন আপত্তি
করবো না ।(Report of the Court of Enquiry Constituted under Panjab
Act 2 of 1954 to enquire in the Panjab disturbances of 1953,
P.228 )
মুসলিম উম্মাহ র পরম হিতাথর্ী জামাতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা মওলানা আবুল হালা মওদুদী ভারতের মুসলমানদেরকে নাগরিক
অধিকার থেকে বঞ্চিত করার কথা যেভাবে বলেছেন তা বিজেপি তো দুরের কথা, ভারতের চরম প্রতিক্রিয়াশীল হিন্দু ফ্যাসিস্ট
সংগঠন আরএসএস, শিবসেনারাও বলেনা । সূত্র: বাংলাদেশে ইসলামী মৌলবাদীদের রাজনৈতিক ভূমিকা, বদরুদ্দিন উমর,
নতুন দিগন্ত, 4র্থ বর্ষ 2য় সংখ্যা
কৃতজ্ঞতা: অমিত
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০০৭ রাত ৯:৩২