ভোট পদ্ধতির উপর আওয়ামী লীগের কোন শ্রদ্ধা আর বাকী আছে বলে মনে হয় না; যদিও ইহার পেছনে ঐতিহাসিক অনেক কারণ রয়েছে, অন্য দলসমুহের সমসাময়িক রাজনৈতিক অপকৌশলসমুহ কাজ করছে; তারপরও ভোট নিয়ে একজন আওয়ামী এমপি অন্য আওয়ামী এমপি'কে হৃদয় থেকে সন্মান করবে বলে মনে হয় না। বদি'র বউ কেন ভোট পেলো, এটা সালমান রহমানের মনের মাঝে একটা প্রশ্ন হয়ে থাকবে; পার্লামেন্ট ভবনে বদির বউ'এর সাথে সালমান রহমানের সাথে দেখা হলে, সালমান রহমান সত্যই হতবাক হওয়ার সম্ভাবনা আছে! আবার বদি'র বউ'এর জন্যও ভাবনার বিষয়, শেখ হাসিনা এত দায়িত্ব পালন করে, এত কৌশল করে, এত কথা বলে ভোট পেয়ে, উনার মতোই এমপি হয়েছেন; বদির বউ'কে কিছুই তেমন করতে হয়নি, বদি'কে বিয়ে করেই জনতার ভোটে এমপি হয়ে গেলেন, সত্যই আলাদিনের চেরাগ আছে বিশ্বে, সমস্যাটা হলো, সবাই পায় না।
এবারের ভোট আওয়ামী লীগ অতি সহজেই জয়ী হতে পারতো, এবারের ভোটে আওয়ামী লীগ দেশের ভোট পদ্ধতির পতিত-সন্মানকে টেনে কিছুটা উপরে তুলতে পারতো; সেজন্য গত ভোটে জয়ী হওয়ার পর থেকে জাতির ভোটারদের নাগরিক অধিকারের মান বাড়ানোর দরকার ছিলো; দেশে সরকারী প্রচেষ্টায় নাগরিক অধিকারের মান বাড়ছে বলে মনে হয় না; সরকারী লোকদের ও তাদের পরিবারের ব্যবসায়ীদের জীবনযাত্রার মান বাড়ার বাই-প্রোডাক্ট হিসেবে সাধরণ মানুষের কিছুটা উপকার হচ্ছে।
ভোটের আগে, ওবায়দুল কাদের, ড: হাছানসহ অনেক আওয়ামী লীগার প্রচার করেছে যে, ভোটে বিএনপি-জামাত জয়ী হলে, দেশে ভয়ংকর হত্যাকান্ড ঘটবে; এটা বেশ কাজ করেছে! মানুষ খেয়াল রেখেছে তাদের প্রতিবেশীদের উপর; এতে বিএনপি'র ভোট বেশ কমেছে; কিন্তু এটা বিএনপি'র মুল পরাজয়ের কারণ নয়। এবায়দুল কাছের যদি আওয়ামী লীগের বিজয় সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী হতেন, তিনি এই ধরণের প্রচারণা চালাতেন না। কিন্তু ওবায়দুল কাদেরের আত্মবিশ্বাসহীনতা শেখ হাসিনার জন্য সমস্যা সব সময়।
গত ভোটে বিএনপি ভোটে না আসাতে, আওয়ামী লীগের বিজয়কে আওয়ামী লীগারেরা সঠিক বিজয় হিসেবে নিয়েছিল; তারা বেগম জিয়ার হটকারীতে পরাজিত করে আনন্দিত ছিলো।
বিএনপি ভোট পাবার মতো কোন রাজনৈতিক অবদান রাখেনি জাতির জন্য; এরপরও, যদি ওরা ভোট পেয়ে যাবার সম্ভাবনা বাড়ে, তাতে জাতির ভোট দেয়ার মানসিকতা একটা জাতীয় সমস্যা জন্ম দেয়ার কথা; মনে হয়, জাতি এখন সেই স্তরে অবস্হান করছে।
আওয়ামী লীগ সরকার চালিয়ে, জাতির জন্য যতটুকু করছে, তাতে আওয়ামী লীগ মেন করছে যে, ভোট তাদেরই পাবার কথা; তারা আবার ভাবছে যে, জাতি তাদের ভোট না দেয়ার সম্ভাবনাও আছে; তারা এই ধরণের দোদুল্যতায় ভুগছে। যোগ বিয়োগ করলে, আওয়ামী লীগের প্রাপ্ত ভোটের পরিমাণ ও জাতির প্রতি তাদের সার্ভিসের সাথে মিল নেই; তারা কম সার্ভিস দিয়ে বেশী ভোট পেয়ে গেছে, এটা শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা কমাবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৪৮