বাংগালী মুসলমানদের মাঝে কি মেয়ে ইমাম ও মুয়াজ্জিনের দরকার আছে, নাকি মেয়েরা ইসলামের দাওয়াত দেয়ার দরকার আছে? দরকার থাকলে ভালো, গার্মেন্টস কর্মী বা প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক হওয়ার ছেয়ে ভালো হবে; কমপক্ষে মৃত্যুর পর কিছু একটা উত্তম প্রতিদান পেতে পারে, খারাপ নয়। আর যদি মহিলা ইমাম বা মুয়াজ্জিনের দরকার না থাকে, তা'হলে মেয়েদেরকে মাদ্রাসায় কেন দেয়া হচ্ছে? হুজুরেরা মেয়েদের নিয়ে মহা সমস্যায় থাকে; উনাদের উপর মনে হয় দায়িত্ব থাকে মেয়েগুলোকে ভালো মা করে দেয়ার! স্কুলে যে অঘটন ঘটে না, তা সত্য নয়; তবু স্কুলের মাষ্টারেরা হয়তো কবিতা টবিতা পড়ে শোনায়, ভালোবাসার কথা টথা বলে হয়তো; হুজুরেরা ওসবের ধার ধারে না মনে হয়, উনারা সরাসরি এ্যকশনে চলে যায়!
মেয়েরা মা'দের কাছে হুজুরদের নামে খালি নালিশ করে; আমি আমার সমবয়স্ক মেয়েদের মাঝে হুজুরভীতি দেখেছি সব সময়, মেয়েরা স্কুলের শিক্ষদের বিপক্ষে নালিশ করতে কখনো শুনিনি। আমাদের স্কুলে, ছেলেমেয়েরা একসাথে পড়তাম; কোনদিন কোন অসুবিধা হয়নি; সবার সাথে সবার ভালো সম্পর্ক। নবম শ্রেণীতে মাদ্রাসা পাশকরা ৭ জন হুজুর এসে ভর্তি হলো; মেয়েরা এদের সাথে কোনদিনও মিশতো না, কথা বলতো না; এই হুজুরগুলোর বয়স বেশী ছিলো; উনারা চোখে সুরমা ও গায়ে আতর দিয়ে ক্লাশে আসতেন; মেয়েরা ওদের কাছ দিয়েও হাঁটতো না।
মাদ্রাসার মেয়েদের কি অবস্হা কথা বলতে পারবো না; আমাদের সময়, কেহ কোনদিন ভাবেনি যে, মেয়েদেরকে মাদ্রাসায় পড়তে হবে। মেয়েরা মা, বোন, দাদীর কাছে ধর্ম শিখে; গরীবের মেয়েরা মক্তবে যায়, নামাজের সুরা শিখে এতটুকু ছিলো আমাদের সময় ধর্ম। এখন তাদেরকে কেন আরবী ভাষায় দুনিয়ার কেতাব ইত্যাদি পড়তে হবে কে জানে!
মাদ্রাসা আগে চালাতেন হুজুরেরা গ্রামে গ্রামে চাঁদা তুলে; এখন উনারা টাকা পায় সৌদী আরব ও ইরান থেকে; এরা যাকে পায়, তাকে মাদ্রাসায় নিয়ে যায়। মাদ্রাসায় কোন নিয়ম কানুনের বালাই কখনো ছিলো না; ওখানে কি পড়ায়, কি হয় কেহ জানে না; মেয়েদের মায়েরাও জানে না। আমাদের ইমামের অভাব নেই, মুয়াজ্জিনের অভাব নেই; অকারণে, মাদ্রাসার মতো যায়গায় আমাদের মেয়েগুলোকে পাঠিয়ে দিয়ে পরিবারগুলো অকারণ সমস্যার সৃষ্টি করছে, মনে হয়।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৫:০৮