সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগ যেভাবে তাদের কমিটি গঠন করছে, ইহাকে রাজনৈতিক দল না বলে, "পিরামিড ব্যবসার সংগঠন" বললে ভুল হবে না; আওয়ামী লীগের লোকজনকে এখন রাজনীতি করতে হয় না, তাদেরকে তাদের উপরের ম্যানেজমেন্টকে খুশী রাখতে হয়। তাদের রাজনীতি শুরু হয় স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে; বাংলাদেশের স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটির ছেলেমেয়েরা তাদের পাঠ্য বই না পড়ে পাশ করার চেষ্টা করে; যারা ছাত্ররাজনীতি করে, তারা তাদের টেক্ট বই'এর নামও জানে না। এদের পক্ষে রাজনীতি তো দুরের কথা, এদেরকে বিদেশে পাঠাতে হলে অদক্ষ শ্রমিক হিসেবে পাঠাতে হবে; এরা রাজনীতির বদলে "মাফিয়াগিরি" শিখে শিক্ষা জীবনে।
শেখ হাসিনা ৪০ বছরের বেশী সময় দলের সভাপতি; দলে যে গণতন্ত্র নেই, ইহার থেকে আরো বড় কোন প্রমাণের দরকার আছে? আওয়ামী লীগের নেতা, উপনেতা, পাতিনেতা, সবাই ক্ষমতাবলে দেশের বড় থেকে শুরু করে সকল ধরণের ব্যবসাগুলো হাতিয়ে নিচ্ছে: ব্যাংক থেকে শুরু করে শপিংমলের মালিকানা, ফুটপাথ দখল, সব কিছুতে আছে, ইহা অসততার প্রমাণ। শুধু একা শেখ সাহেবের নামে আওয়ামী লীগের সবাই জীবনে চাঁদাবাজি করেছে।
শেখ হাসিনার সময়ে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বেশী অধপতন ঘটেছে; ইহার মুল কারণ হচ্ছে, শেখ হাসিনা একাধারে ৪০ বছর দলের সভাপতি থাকায়, দলের মাঝে বাকীরা সহজে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতি চালু করতে পেরেছে। এলাকার নেতারা নিজেদের লোকদের দলের গুরুত্বপুর্ণ পদ দিয়েছে ও একই সাথে পদ নিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের তৃণমুলের কয়েক লাখ নেতার চাকুরী নেই, এরা বেকার; কিন্তু এদের জীবনযাত্রার মান চাকুরীজীবিদের থেকে অনেক উঁচু, এরা অসৎভাবে আয় করছে।
এখন দলের যেই ভয়ংকর দুরাবস্হা, শেখ হাসিনার শাসনের সমাপ্তি ঘটলে, এই দল কোনভাবে টিকে থাকতে পারবে না; দলটি নিজের ভারেই ভেংগে পড়বে। দেশে এই মহুর্তে সঠিক কোন রাজনৈতিক দল নেই, যারা নামেমাত্র আছে, তারা আমাদের জাতির জাতীয়তাবাদের সাথে যুক্ত নয়; ফলে, আওয়ামী লীগের প্রয়োজনীয়তা থেকে যাচ্ছে। এই দলটিতে আবার রাজনীতি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দরকার; ইহা করতে হলে, শেখ হাসিনাকে প্রাইম মিনিষ্ট্র ছেড়ে দিয়ে, দল গঠনে কাজ করতে হবে; মনে হয়, বেশ দেরী হয়ে গেছে, তবুও দলটিকে রক্ষা করতে হলে, উনাকে আজকেই এই কাজ শুরু করতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:৩৪