বাংলাদেশে শিক্ষিতদের হার বাড়ছে, আশা ছিলো, ধর্মীয় সন্ত্রাস কমে আসবে; কিন্তু ধর্মীয় সন্ত্রাস বাড়ছে সামানুপাতিক হারে। ব্লগারেরা কিন্তু দুর্গা পুজা করেন না; সাম্প্রতিক সময়ে, সংখ্যার দিক থেকে হিন্দুদের চেয়ে ব্লগারেরা প্রাণ হারায়েছেন বেশী; ব্লগার হত্যায় হিন্দু ও মুসলিমরা সমানভাবে অংশ নিচ্ছে নাকি, সমস্যা তো দুর্গাপুজার চেয়েও বড়!
ভারতে, কোন হিন্দু মন থেকে কোরবাণী ঈদ সমর্থন করেন না; কারণ, কোরবাণী ঈদে গরু কোরবাণী দেয়া হয়; সবচেয়ে প্রগ্রেসিভ ভারতীয় হিন্দুও গরু কোরবাণীর পক্ষে নয়; ভারতে ঘোষণা দিয়ে মুসলমানেরা ছাগল ও ভেঁড়া কোরবাণী করলে এই অবস্হা থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে, মনে হয়।
বাংলাদোশে, দুর্গাপুজায় এমন কোন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান করা হয় না, যা মুসলমানদের মন-মানসিকতার বিপক্ষে যেতে পারে: মুসলমানদের বিশ্বাসে আঘাত করতে পারে এই ধরণের কোন আচার, অনুষ্ঠান, ইত্যাদি দুর্গাপুজায় পালন করা হয় না; তারপরও দুর্গাপুজা পালনে বাধা দেয়া হয় কেন? দুর্গা পুজায় ছাগল বলি দেয়া হয়, ছাগল তো মুসলমানদের মাতা নয়, সমস্যা কোথায়?
দুর্গাপুজা একটা উৎসব, ইহাতে ধর্মের কতটুকু আছে, বলা কঠিন; তবে, ইহা যে খুবই উৎসব মুখর একটি সপ্তাহ, এতে কোন সন্দেহ নেই! এমন কি দুর্গাপুজার সময় অনেক ছেলেমেয়ে জীবনে প্রথমবার জিং জিং করার সুযোগ পায়, ইহা এতটুকু উৎসব মুখর; এত উৎসব কি বাংলাদেশের মুসলমানেরা পছন্দ করেন না? হিন্দুধর্মে নাচগান আছে, প্রেমপ্রীতি আছে, নাটক আছে, যৌনতা আছে, এই জন্যই কি মুসলমানেরা ইহাকে অপছন্দ করে?
সব ধর্মের তুলনায় হিন্দু ধর্ম হচ্ছে সহজ, কোন ধরণের উপাসনা না করে ওরা স্বর্গে চলে যাবে, ইহাও কি শত্রুতার কারণ? মুসলমান ধর্মে হিজাব মিজাব করে মেয়েদের আব্রু রক্ষা করা হয়; আর দুর্গাপুজার সময়, কুমারীপুজায় কিশোরী মেয়ের সুন্দর যায়গা দেখতে দেয়, ইহা কি অনেককে ঈর্ষাপরায়ণ করে তোলে?
ধর্মকে হিংসার উৎস না করে, উৎসবের উৎস করার চেষ্টা করলে, হিন্দু মুসলমানেরা এক সাথে ভালোভাবে বাস করতে পারতো; শিক্ষিতদের জন্য ইহা তেমন কোন কঠিন সমস্যা নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:০৮