somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৃস্টিভেজা আটলান্টার সকাল

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ১২:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গতকাল রাতে গল্প করতে করতে ঘুমাতে গেলাম রাত সাড়ে তিনটায়। সকাল বেলা উঠলাম এগারটার দিকে। উঠে দেখি টেবিলে গরম ডাল পুড়ি, চা, মাংস আর পরটা। গরম গরম ডালপুড়ি চা দিয়ে খেয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে দেখি অন্ধকার ভর করেছে চারপাশ। কালকে সারারাত এখানে অঝোর ধারায় ঝরেছে। বৃস্টির শব্দে রাতে বেশ ক'বার ঘুম ভেংগে গেল। মনে হলো, গ্রামের বাড়ীতে গেছি। বৃস্টি ঝড়ছে। বৃস্টির শব্দগুলো মনটাকে আর্দ্র করে রেখেছে। তার মধ্যে কখন সকাল হয়ে গেল তা টেরই করতে পারিনি।

জর্জিয়া স্টেটে এবার ভাল খরা পড়েছে। তাই, একটু বৃস্টিকেও এরা আশীর্বাদ বলে মনে করছে। এবার বৃস্টির জন্য এখানে চার্চে আর মসজিদে একসাথে প্রার্থনা হয়েছে। তাই, এক ফোটা বৃস্টি পড়লেও এরা আনন্দিত। জর্জিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে হয় চাষাবাদ। আর এই চাষাবাদ কিন্তু এবার থমকে গিয়েছিল খরায়। পানির ব্যবহারের উপর এখানে অনেকদিন রেস্ট্রিকশন ছিল। পানি সংরক্ষণের জন্য কেউ বাগানে পানি দিতে পারবে না। গাড়ী ওয়াশ করতে পারবে না। রেস্টুরেন্টে পানি দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ৫৭ হাজার বর্গমাইল এলাকার জর্জিয়ার জনসংখ্যা এক কোটির চেয়েও কিছু কম। আর এখানে খরার প্রভাব ছিল ভয়াবহ ও দুর্বিসহ। প্রকৃতির রুদ্র মূর্তির প্রভাব সর্বত্রই একরকম। কিন্তু আজকের সকালে বৃস্টি ভার্জিনিয়া থেকে আগত আমার জন্য মোটেও সুখকর ছিল না। সকালে বাইরে বেরোবার প্ল্যানটা বাদ দিয়ে দিলাম।

বাসায় এক কাপ চা নিয়ে ল্যাপটপটা নিয়ে বসলাম। সামনে আমেরিকান ফুটবল খেলা হচ্ছে। জর্জিয়া বুলডগ আর হাওয়াই ইউনিভার্সিটির মধ্যে খেলা শুরু হবে। এদেশের ফুটবল খেলা আমার কখনও পছন্দ হয় না। আমি সকার ফ্যান। সকার ছাড়া আর কিছু রুচে না। তাও বসে বসে ধাক্কাধাক্কির ফুটবল খেলা দেখলে আমার ভাল লাগে না। তাই বসে বসে ব্লগাচ্ছি। বৃস্টিভেজা আটলান্টায় বিবর্ণ গাছগুলো একফোটা পানির স্পর্শে হয়তো সবুজ হয়ে উঠবে। কিন্তু তা ও সম্ভব না। শীত না যাওয়া পর্যন্ত এখানকার গাছগুলো বিবর্ণ থাকবে। বসন্তের আগমনে আবারও সবুজ পাতা নিয়ে প্রকৃতি সেজে উঠবে। মার্চ থেকেই সবুজ হতে থাকে। বিবর্ণ আটলান্টায় সবুজ ফিরে আসবে বসন্তের ছোঁয়ায়।

প্রতি বছরই এখানে শীতের ঝরাপাতায় বসে থাকা মানুষগুলো বসন্তের জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে। বসন্ত আসা মাত্রই শুরু হয় প্রাণের স্পন্দন। শুরু হয় বাইরের ছুটোছুটি। প্রকৃতি মানুষকে কি গভীর ভাবে স্পর্শ করে তা খুব কাছ থেকে দেখলেই বুঝা যায়। মানুষ আর প্রকৃতি এক সুতোয় বাঁধা। প্রকৃতিনির্ভর জীবনধারা প্রযুক্তির আঁচড় অতি সামান্য। তা আমেরিকা হোক আর বাংলাদেশ হোক। আটলান্টার বৃস্টিভেজা সকালে প্রকৃতির কাছে সমর্পিত জীবনে আমি অন্তরীণ হয়ে আছি। বৃস্টির কারণে বাইরে যাচ্ছি না। ট্রিপ প্ল্যান ভেস্তে গেল। আমি তারপরও আনন্দিত। প্রকৃতির আনন্দে আমাদের আনন্দ। তারই কিছুটা শেয়ার করলাম আপনাদের সবার সাথে।
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×