সীমানা পেরিয়ে
সেন্ট মার্টিন বিষয়ক আগের পোস্টগুলো
সেন্ট মার্টিনের পথে ভ্রমন বাংলাদেশ-১
সেন্ট মার্টিনের পথে ভ্রমন বাংলাদেশ-২
সেন্ট মার্টিন বাজারে নেমেই প্রচন্ড খিদে পেয়ে বসলো এতোক্ষন ঢেউ এর সাথে যুদ্ধ করতে করতে খিদার কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছিলাম। যেহেতু এখন ট্যুরিস্ট মৌসুম নয় বাজারের কোন ভাল খাবার আশা করা বোকামী হবে তারপরেও একটু খোঁজ খবর নিয়ে সোনারগা হোটেলে সবাই মিলে জঘন্য পোয়া মাছ ফ্রাই দিয়ে খেলাম দুপুরের খাবার। এরই মধ্যে রিক্সা ভ্যানে আমাদের মালপত্র উঠানো হলো সবাই রিক্সা ভ্যানে করে আমাদের গন্তব্য "সীমানা পেরিয়ে" এর দিকে রওয়ানা দিলো। যেহেতু এখন অফসীজন এখানকার সবগুলো কটেজ খালি আর তাদের সব স্টাফ ছুটিতে আর ভ্রমন বাংলাদেশের সব ট্যুরে আমরা নিজেদের রান্না নিজেরাই করি তাই বাজার এবং লাকরী কেনার জন্য আমি আর টুটু ভাই রয়ে গেলাম। লাকরী আর বাজার সদাই করে আমি আর টুটু ভাই রিক্সা ভ্যানে "সীমানা পেরিয়ে" এর দিকে রওয়ানা দিলাম সেন্ট মার্টিনের সিমেন্ট বাধানো আঁকাবাকা পথ ধরে। সীমানা পেরিয়ে রিসোর্টের নাম করনের সার্থকতা বুঝলাম একটু পরেই একেবারে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের শেষ প্রান্ত অবস্থিত এই রিসোর্ট, কিন্তু যাওয়ার রাস্তা নেই। আমাদের রিক্সা ভ্যান অবকাশের গেটে এসে থেমে গেলো রাস্তা এখানেই শেষ। সামনে অবকাশের পেছনের সিবীচ দিয়ে বাকীটা পথ যেতে হবে হেটে। হেটে যেতে আপত্তি নেই কিন্ত আমাদের সাথের প্রায় একমন লাকরী আর অন্যান্য জিনিজপত্র নিয়ে বিপদে পড়লাম সামনে পৌনে এককিলোমিটারের মতো একটি সর্টকার্ট পথ আছে খেতের মধ্যে দিয়ে কিন্তু বর্ষার পানিতে খেত সয়লাব গেলে পানি মাড়িয়ে যেতে হবে কি করব মাথায় কিছু ঢুকছেনা। এমন সময় কয়েকটা লোকাল পিচ্ছিকে দেখলাম প্রতি আঁটি লাকরী(৫কেজির একটু বেশী) ১০টাকা করে রিসোর্টে পৌছে দিতে সানন্দে রাজি হলো। পিচ্ছি বাহিনী নিয়ে পানি মাড়িয়ে খেতের রাস্তায় রিসোর্টের দিকে রওয়ানা দিলাম।
রিসোর্ট পৌছে দেখি সবাই ফ্রেশ হয়ে মনের আনন্দে ঘুরাঘুরি করছে আমিও জিনিস পত্র রেখে তাড়াতাড়ি গোসল করে ফ্রেশ হয়ে নিলাম কারন সারাদিন সমুদ্রের ঢেউয়ের পানিতে ভিজে সারা শরীর লবন লবন হয়ে আছে। ফ্রেস হয়েই রিসোর্ট একটু ভাল করে ঘুরে দেখলাম বেশ গোছানো রিসোর্ট সমুদ্র সৈকতে ৩/৪ টি কাঠের বাড়ী ১ টি সমুদ্র দেখার মঞ্চও আছে এখানে। নানা রঙের ফুলের বাগান নারিকেল গাছ বেশ মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। সবছেয়ে ভালো লাগল রিসোর্টের মাঝখানে ছোট্ট পুকুরটি।
ডাব আসছে
ডাব খাওয়া হচ্ছে
এরই মাঝে সেন্ট মার্টিনের প্রধান আর্কষন ডাব এসে গেছে কিন্তু সমস্যা হলো সেল্প সার্ভিস, নিজের ডাব নিজে কেটে খাও। সবাই যার যার ডাব কেটে খাওয়া শুরু করলো , আমিও অনেক কসরত করে একটি ডাব কেটে পানি খাওয়া শুরু করলাম। জটিল স্বাদের ডাব মনে হচ্ছে ডাব নয় শরবত পান করছি আমার দেখা সব ডাবের সেরা ডাব সেন্ট মার্টিনের ডাব। পানি পান করেতে করতে হয়রান হলাম কিন্তু ডাবের পানি ফুরায় না সে এক কঠিন অবস্থা।
র্যাপলিং (পূরবী , হাসান ভাই, মঞ্জু ভাই )
দুপুরে একটু বিশ্রাম করে বিকাল বেলা শুরু হলো আমাদের মাউন্টেইনার বাবু ভাইয়ের র্যাপলিং বড় একটি গাছের সাথে দড়ি ঝুলিয়ে পর্বতারোহন প্রশিক্ষন। সবাই বেশ আগ্রহভরে দড়িতে ঝুললো । সব চাইতে মজার ব্যাপার হলে মঞ্জু ভাই যখন ঝুললেন বেচারা মাঝামাঝি গিয়ে আটকে গেলেন না পারেন উপরে উঠতে আর না পারেন নিচে নামতে সকলের মাঝে হাসির রোল।
একটু সন্ধ্যা ঘনাতেই আমাদের আড্ডার আসর বসে গেল সীবিচে রাজনীতে অর্থ্নীতি ব্লগ ফেসবুক ফটোগ্রাফী সব বিষয়েই বেশ ভাল আড্ডা জমে উঠল। এরই মাঝে চলে এলো টুটু ভাইয়ের গরম গরম চা, সমুদ্র সৈকতে শেষ বিকেলে বসে চা পান করার কি তৃপ্তি এই প্রথম বুঝলাম।
যতই সন্ধা ঘনিয়ে আসছে সাগর আর আকাশ তাদের রুপ বদলাচ্ছে। সাগর আর আকাশের যে এতো রুপ থাকতে পারে নিজের চোখে না দেখলে কখনো বিশ্বাস করতাম না।
সৈকতে বসে অতই আড্ডায় মশগুল ছিলাম কখন যে রাত হয়ে গেছে টেরই পেলাম না। হটাত রিসোর্টের ভেতরের দিক থেকে হইচই এর শব্দ শুনে সে দিকে ছুটে গেলাম.........
চলবে................................................

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




